আবাদপুরের শাল by অপু তালুকদার শিপলু
দেলদুয়ারের
শাল এখন সবখানে। চমৎকার ডিজাইন এবং দক্ষ কারিগরদের হাতে এ শাল তৈরি হচ্ছে।
শুধু টাঙ্গাইলের সবখানেই নয় এখন দেশের বাইরেও এ শাল পাওয়া যাচ্ছে। দিন যতই
যাচ্ছে দেলদুয়ারের শালের চাহিদাও তত বাড়ছে। আবাদপুর গ্রাম। এ গ্রামেই এখন
তৈরি হচ্ছে শাল। নানা রঙের এবং ডিজাইনের। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, শীতকে
কেন্দ্র করে ক্রেতাদের দৃষ্টিনন্দন করতে তাঁতিরা নানা রঙের সুতার
কারুকার্যে আধুনিক ডিজাইনের বাহারি শাল তৈরি করছেন। সাধারণ ক্রেতা ও
মহাজনদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার শাল শ্রমিকরা।
রুচিশীল ও অত্যাধুনিক ডিজাইনের শাল তৈরিকারক হিসেবে এ উপজেলার তাঁতিদের
যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। উপজেলার আবাদপুর ও এলাসিন, লাউহাটী গ্রামের প্রায় ৩০০
পরিবার শাল তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বিশেষ করে মোট উৎপাদনের
সিংহভাগ হচ্ছে আবাদপুর গ্রামে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিখ্যাত করটিয়ার হাট
থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ক্রেতাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে এ শাল।
তবে এখানকার অধিকাংশ তাঁতিই পত্তনের মাধ্যমে শাল উৎপাদন করছেন। তাঁতিদের
সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩০০ থেকে ৫০০ আবার কোন শাল ১ হাজার টাকা পর্যন্ত
বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তাঁতে দিনে ৬-৭টি শাল তৈরি করা যায়। শাড়ি ও শাল
তৈরির প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম। ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে ৫৫ থেকে ৮৫ টাকা
মজুরি পেয়ে থাকে একজন তাঁত মালিক। সেখান থেকে মজুরি হিসেবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা
দিতে হয় শ্রমিককে। আর তাঁতির প্রতিটি শালে লাভ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এসব
তথ্য জানিয়েছেন আবাদপূর গ্রামের তাঁত মালিক মুন্নাফ ও আজাহার মিয়া। দুই
সুতি পাইর, কিরকিরি, নয়নতারা বহুরুপিসহ হরেক রকম ডিজাইনের নকশা করা শাল
তৈরি করে যাচ্ছে এখানকার তাঁতিরা। প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার পিস শাল সারা
দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ইমরান নামের একজন মহাজন জানান, ক্রেতাদের
দৃষ্টিনন্দন করতে বাহারি ডিজাইনের শাল তৈরি করার জন্য তাঁতিদের আগে থেকেই
তাগিদ দেয়া হয়। চাহিদার ওপর তাঁতিরা শাল তৈরি করে। তবে তাদের নিজস্ব ডিজাইন
ছাড়াও ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরাও নতুন নতুন ডিজাইন দিয়ে থাকেন।
No comments