চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে জীবাণু by মহিউদ্দীন জুয়েল
আমরা
ওয়াসার পানি খাই না। ওয়াসার পানি খাইলে পেট ব্যথা করে। গন্ধ। বমি আসে।
সেদিন পানি থেকে কেঁচো পাওয়া গেছে। ফুটালেও গন্ধ যায় না। এভাবেই চট্টগ্রাম
ওয়াসার পানি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন নগরীর আগ্রাবাদ সরকারি কলোনির
বাসিন্দা চৌধুরী সারোয়ার। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও তার ৪ সন্তান। রয়েছেন বৃদ্ধ
মা। গত দু’দিন ধরে পানিতে জীবাণু পাওয়ায় তিনি বাজার থেকে বোতলবদ্ধ ফিল্টার
পানি কিনে খাচ্ছেন। দূরের এক আত্মীয়ও কয়েকদিন ধরে বাইরে থেকে পানি দিয়ে
যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু চৌধুরী সারোয়ারের মতো ওই এলাকার অন্তত আরও ৪০০
মানুষ রয়েছেন যারা সবাই ওয়াসার পানি নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কেবল ওই
এলাকা নয়, সরজমিন গতকাল সকালে নগরীর আরও বেশ কয়েকটি স্থানের পানিতেও জীবাণু
ভেসে ওঠার কথা জানিয়েছেন সাধারণ লোকজন। ভুক্তভোগীরা জানান, গত এক সপ্তাহ
ধরে নগরীর গণপূর্ত অধিদপ্তরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি, ষোলশহর দুই নম্বর
গেইট, চান্দগাঁও বি-ব্লক, বাকলিয়া, চকবাজার ডিসি রোডের একাধিক বাসিন্দা
ওয়াসার পানি নিয়ে কষ্ট পাচ্ছেন।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তাদের পানির কল থেকে পাওয়া যাচ্ছে জোঁক, কেঁচোসহ নানা ধরনের পোকামাকড়। কেবল তাই নয়, পাওয়া যাচ্ছে মাটির আয়রনও। এ ব্যাপারে ওয়াসার লোকজন জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। এই সময় তারা দাবি করেন দীর্ঘদিন ধরে পুরানো হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় পানির লাইন থেকে এমনটি হতে পারে। তবে তারা বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেন বলে জানান। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় আগ্রাবাদ সরকারি কলোনিতে গিয়ে শোনা যায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। তারা জানান, ৭ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ওয়াসার কর্মকর্তাদের কারও দেখা নেই সেখানে। ফলে ময়লা পানি খেয়েই তারা দিনাতিপাত করছেন। আফসার আহমেদ নামের ওই এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, আমাদের এখানে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ লোক আছে। সবারই একই চিত্র। বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে কতদিন আর পানি খাবো। তাছাড়া, পরিবারের সদস্যরা সবাই পানি না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রেশমা বেগম নামের এক গৃহিণী সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর বাড়ির জানালা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভাই লিখে দিয়েন ওয়াসার লোকজন এখানে আসে না। পানির লাইন ফুটো হয়ে গেছে। তাই সব পোকামাকড় ঢুকে পড়ছে। পানির একমাত্র ট্যাঙ্কটি পরিষ্কার হয়নি বহুদিন। চান্দগাঁও বি-ব্লকের হারুন নামের এক বাসিন্দার অভিযোগ, এখানকার পানি ফুটানোর পরও অধিক রকম দুর্গন্ধ থাকে। তাই তা পানের অযোগ্য। ১৫ দিন আগে বেশ কয়েকবার ঘোলাটে পানি পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ ওয়াসার পানিতে কোন ময়লা নেই বলে দাবি করেন। তবে অনেক সময় পানির পাইপের মধ্যে সমস্যা হলে এমনটি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে বলে তার অভিমত। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল ও নগরীর ৪টি বেসরকারি ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই সেখানে জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ওয়াসার দূষিত পানি খেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের চর্মরোগ, চুলপড়া, জন্ডিসসহ একাধিক রোগ দেখা দিচ্ছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাজাহান মানবজমিনকে বলেন, পানি থেকে প্রচুর রোগ হচ্ছে। বিশেষ করে জন্ডিসের রোগী বেশি। আমরা মানুষজনকে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। তারপরও নাকি গন্ধ থাকে এমনটা তারা প্রায় সময় জানায় আমাদের।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সন্তোষজনক নয় বলে জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ওয়াসার ৪৮ দশমিক ছয় শতাংশ গ্রাহক তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন পানি পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ নয়। আর ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন পানিতে ময়লা। বাকিদের সবার অভিযোগ পানি ঘোলা নয়তো দুর্গন্ধযুক্ত কিংবা জোঁক ও পোকা রয়েছে।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তাদের পানির কল থেকে পাওয়া যাচ্ছে জোঁক, কেঁচোসহ নানা ধরনের পোকামাকড়। কেবল তাই নয়, পাওয়া যাচ্ছে মাটির আয়রনও। এ ব্যাপারে ওয়াসার লোকজন জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। এই সময় তারা দাবি করেন দীর্ঘদিন ধরে পুরানো হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় পানির লাইন থেকে এমনটি হতে পারে। তবে তারা বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেন বলে জানান। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় আগ্রাবাদ সরকারি কলোনিতে গিয়ে শোনা যায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। তারা জানান, ৭ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ওয়াসার কর্মকর্তাদের কারও দেখা নেই সেখানে। ফলে ময়লা পানি খেয়েই তারা দিনাতিপাত করছেন। আফসার আহমেদ নামের ওই এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, আমাদের এখানে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ লোক আছে। সবারই একই চিত্র। বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে কতদিন আর পানি খাবো। তাছাড়া, পরিবারের সদস্যরা সবাই পানি না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রেশমা বেগম নামের এক গৃহিণী সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর বাড়ির জানালা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভাই লিখে দিয়েন ওয়াসার লোকজন এখানে আসে না। পানির লাইন ফুটো হয়ে গেছে। তাই সব পোকামাকড় ঢুকে পড়ছে। পানির একমাত্র ট্যাঙ্কটি পরিষ্কার হয়নি বহুদিন। চান্দগাঁও বি-ব্লকের হারুন নামের এক বাসিন্দার অভিযোগ, এখানকার পানি ফুটানোর পরও অধিক রকম দুর্গন্ধ থাকে। তাই তা পানের অযোগ্য। ১৫ দিন আগে বেশ কয়েকবার ঘোলাটে পানি পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ ওয়াসার পানিতে কোন ময়লা নেই বলে দাবি করেন। তবে অনেক সময় পানির পাইপের মধ্যে সমস্যা হলে এমনটি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে বলে তার অভিমত। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল ও নগরীর ৪টি বেসরকারি ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই সেখানে জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ওয়াসার দূষিত পানি খেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের চর্মরোগ, চুলপড়া, জন্ডিসসহ একাধিক রোগ দেখা দিচ্ছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাজাহান মানবজমিনকে বলেন, পানি থেকে প্রচুর রোগ হচ্ছে। বিশেষ করে জন্ডিসের রোগী বেশি। আমরা মানুষজনকে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। তারপরও নাকি গন্ধ থাকে এমনটা তারা প্রায় সময় জানায় আমাদের।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সন্তোষজনক নয় বলে জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ওয়াসার ৪৮ দশমিক ছয় শতাংশ গ্রাহক তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন পানি পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ নয়। আর ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন পানিতে ময়লা। বাকিদের সবার অভিযোগ পানি ঘোলা নয়তো দুর্গন্ধযুক্ত কিংবা জোঁক ও পোকা রয়েছে।
No comments