৫ই জানুয়ারি মিছিল-সমাবেশ করবে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা
৫ই জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। শনিবার সকালে সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এসময় নেতারা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ ও ‘একতরফা’ আখ্যা দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দেশের সাধারণ মানুষকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত ৫ জানুয়ারি ২০১৪ একটি ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিজেদেরকে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে। নিজেদেরই এক অংশকে বিরোধী দল বানিয়ে এবং সেই দলেরই আরেক অংশকে সরকারে নিয়ে তারা গণতন্ত্রের নামে একটা তামাশা মঞ্চস্থ করে। এবং এর মাধ্যমে দেশে শাসকরা নিজেদের মধ্যে যে তথাকথিত গণতন্ত্র চালু রেখেছিলো সেটাও বাতিল হয়ে একটা স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতা তার সর্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। সরকারের এই ধরনের ক্ষমতার এক বছর অতিক্রান্ত হতে যাচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও তার বুদ্ধিজীবীরা প্রায়ই আস্থার সাথে দাবি করেন ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস হতো। দেশে বর্তমানে গণতান্ত্রিক শাসন চলছে এটা যেন স্বতঃসিদ্ধ সত্য। এর জন্য কোনো যুক্তি প্রমাণের দরকার নাই! অথচ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভোটাররা হাতে গোনা সংখ্যায় ভোট দিতে গিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্রগুলো ছিল পুরোপুরিই ফাঁকা। আর ১৫৩ আসনে ভোট দেবারই কোনো দরকার হয় নি, সেখানে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংবিধানে জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য ও সরকার নির্বাচিত হবার বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে এমনকি জনগণের ভোট ছাড়াই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ সম্ভব। অর্থাৎ নির্বাচনের নামে এক তামাশার মঞ্চায়নের মাধ্যমেই এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। অথচ এখন সেই তামাশাকেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভবিষ্যতের নির্বাচনের মডেল হিসেবে দাবি করছে সরকার ও তার সমর্থকরা। আসলে এই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন নামের যে লেবাসকে গণতন্ত্রের একমাত্র স্মারক হিসাবে এখানকার শাসকরা প্রতিষ্ঠা করেছে তারও অপসারণ ঘটেছে। বর্তমানে সম্পূর্ণ জনপ্রতিনিধিত্বহীন, স্বৈরতান্ত্রিক যে শাসন বাংলাদেশে চলছে তা প্রায়ই তার নখ-দাঁত লুকিয়ে রাখতে পারছে না। ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন গণবিরোধী, দেশবিরোধী, ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে তা প্রকাশিত হয়েছে এবং ধীরে ধীরে আরও বেশি করে সামনে আসছে। এ পরিস্থিতিতে ‘স্বৈরতান্ত্রিক একতরফা নির্বাচন জনগণ মানে না, নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও জনগণের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করুন’- আহ্বান নিয়ে আগামী ৫ই জানুয়ারি বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছে।
No comments