কান্দাপাড়ায় ফিরছে যৌনকর্মীরা
হাইকোর্টের
নির্দেশনায় উচ্ছেদ হওয়া টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়ার যৌনপল্লীর যৌনকর্মীরা
পুনরায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সোমবার রাতেই জেলা
প্রশাসক পৌরসভার কর্মকর্তাদের ডেকে এনে বৈঠক করেছেন। আজ এ বিষয়ে অসামাজিক
কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা
প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন এক সভার আহ্বান করেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার
দিকে শতাধিক যৌনকর্মী কান্দাপাড়া ফিরে এসে অবস্থান নিয়েছেন। গতকালও বেশ
কয়েকজন যৌনকর্মী কান্দাপাড়ায় এসেছেন। ক্রমান্বয়ে এর সংখ্যা বাড়বে বলে
যৌনকর্মীদের স্বার্থ রক্ষার সংগঠন নারী মুক্তি সংঘের সভাপতি আকলিমা বেগম
আঁখি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া বেগম জানান,
টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়া যৌন কর্মীদের সংগঠন নারী মুক্তি সংঘের সভাপতি
আকলিমা বেগম আঁখি উচ্ছেদ হওয়া যৌনপল্লীতে ফিরে যাওয়া ও নিরাপদে বসবাসের
জন্য আইনগত নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ই ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন
করেন। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে
গঠিত বেঞ্চ যৌনকর্মীদের তাদের জায়গায় নিরাপদে অবস্থানের ব্যবস্থা নিতে
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব, টাঙ্গাইলের
জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি
মাওলানা আব্দুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল জলিলকে নির্দেশনা দেন।
সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে যৌনপল্লীতে গিয়ে দেখা যায় বিধ্বস্ত একটি ভবনে
শতাধিক যৌনকর্মী অবস্থান করছেন। কেউ আগুন জ্বেলে শীত নিবারণ করছেন, কেউ
রান্না চড়িয়ে দিয়েছেন। আয়েশা বেগম নামের এক যৌনকর্মী জানান, আমাদের জমিতে
আমাদের থাকার অধিকার রয়েছে। অদালত সে কথা বলে দিয়েছেন। টাঙ্গাইলের জেলা
প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন জানান, যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশনা
সংবলিত হাইকোর্টের একজন আইনজীবীর সনদপত্র (ল’ইয়ার সার্টিফিকেট) তারা
পেয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্মরণীর নির্বাহী পরিচালক মঞ্জু রানী
প্রামাণিক বলেছেন, হাইকোর্টের রায়ের বাস্তবায়ন হলেই যৌনকর্মীরা তাদের
অধিকার ফিরে পাবেন। তিনি বলেন, যে ভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল সেটা ছিল
মানবতাবিরোধী। উল্লেখ্য, গত ১১ই জুলাই টাঙ্গাইলের আওয়ামী রাজনীতিতে বহুল
আলোচিত খান পরিবারের ক্যাডারদের হুমকি এবং অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ
কমিটির আন্দোলনের মুখে টাঙ্গাইলের যৌনপল্লীর কর্মীরা চলে যেতে বাধ্য হন। গত
৩রা সেপ্টেম্বর যৌনকর্মীরা সেখানে ফিরে এসেছিলেন। তখন অসামাজিক কার্যকলাপ
প্রতিরোধ কমিটি আন্দোলন শুরু করে। পরে প্রশাসন ৫ই সেপ্টেম্বর পুনর্বাসনের
কথা বলে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
No comments