সৌদি আরবে ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশী পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা
সৌদি আরবে অত্যন্ত কম মজুরি পাচ্ছেন বাংলাদেশের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তাদের বেতন এতই কম, তারা বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ খবর দিয়েছে সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা সৌদি গেজেট। এতে বলা হয়, বাংলাদেশী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে যারা রাস্তা পরিষ্কার করেন তাদের মাসিক বেতন মাত্র ২৫০ থেকে ৩৫০ রিয়াল। এ অর্থে জীবন ধারণের ব্যয় মেটানো দুরূহ। দেশে অর্থ পাঠানো তো দূরের কথা, নিজেরাই ঠিকমতো চলতে পারেন না। এতে আরও বলা হয়েছে, শফিক নামের এক বাংলাদেশী কর্মী বলেন, ১০ বছর ধরে তিনি একই মজুরিতে কাজ করছেন। মাসিক ২৭৫ রিয়ালে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ১০ বছর আগে তা বাড়িয়ে ৩৭৫ রিয়াল করা হয়। এখনও মজুরি সেই একই আছে। শফিক বলেন, দেশে আমার তিন সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। তাদের ভরণপোষণ আমাকে বহন করতে হয়। বাংলাদেশী শ্রমিকদের যে মজুরি দেয়া হয় তার কোন উন্নতি হয় নি। ভারতীয় এবং অন্য দেশের নাগরিকদের এর থেকে ভাল বেতন দেয়া হয়, যা মাসে ৭৫০ রিয়াল পর্যন্ত। সাংবাদিকদের কাছে এ সব তথ্য প্রকাশ করতে শফিককে বারণ করেছিলেন তার সুপারভাইজার। কিন্তু শফিক মুখ খুলেছেন। অপর এক বাংলাদেশী কর্মী নাম প্রকাশ করতে চান না। তিনি বলেছেন, নিম্ন মজুরিতে বাংলাদেশী শ্রমিকরা কি কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তা বর্ণনা করা যাবে না। প্রতি মাসে যে অর্থ পাই তাতে এক মাস চলতে আমারই কষ্ট হয়। দেশে পরিবারের কথা তো বাদই দিলাম। দেশে রয়েছে তার ৪ সন্তান ও স্ত্রী। অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি রাস্তায় পড়ে থাকা বাতিল নানা জিনিসপত্র কুড়িয়ে কম মূল্যে বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া, পথচারীদের কাছ থেকে কদাচিৎ অর্থ সাহায্য পান। এভাবে কোন রকম দিন পার করছেন তিনি। তার মতো ভিক্ষাবৃত্তিতে নিবৃত্ত হয়েছেন অনেকে। আরমান নামের এক বাংলাদেশী চাকরির পাশাপাশি খালি কৌটা সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। কখনও রাতের বেলা গাড়ি পরিষ্কার করার কাজ করেন। একটি পরিচ্ছন্ন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আহমেদ সেলিম দাবি করেন, রাস্তা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কম মজুরি পাওয়ার প্রধান কারণ তাদের নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান থাকা, বসবাসের অনুমোদন নবায়ন এবং যাতায়াতের ব্যয় বহন করে থাকে।
No comments