এইচএসসিতেও এবার নেয়া হচ্ছে বাড়তি ফি by নুর মোহাম্মদ
হাইকোর্ট ও বোর্ডের সতর্কতা না মেনে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত ফি আদায় না করতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের হুঁশিয়ারির পরও এ টাকা আদায় করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বোর্ডের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ১৪০০ টাকা ফি’র পরিবর্তে অভিভাবকদের গুনতে হচ্ছে কলেজভেদে পাঁচ থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফরম পূরণের সঙ্গে কোচিং ফি, মডেল টেস্ট ফি, বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী, বার্ষিক চার্জ, পরিবহন, পরীক্ষা পর্যন্ত বেতন, পিকনিক ইত্যাদি নানা খাত দেখিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এ মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। প্রায় সব কলেজেই আগামী তিন মাসের জন্য সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বাধ্যতামূলক কোচিং ও মডেল টেস্ট ফি নিচ্ছে। স্কুলভেদে এই ফি দেড় থেকে সাড়ে চার হাজার টাকার মতো। রাজধানীর বনানী বিদ্যা নিকেতন স্কুলের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীর এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, গতকাল টেস্ট পরীক্ষা ফল প্রকাশ করা হয়েছে। কলেজের অফিস থেকে জানানো হয়েছে এবার ফরম পূরণে জন্য ৮৫০০ টাকা দিতে হবে। কোন ধরনের খাত ছাড়াই এ টাকা দিতে হচ্ছে। তিনি জানান, এ টাকার কোন ভাউচার আমাদের দেয়া হয় না। কোন খাতে কিভাবে টাকা নেয়া হয়েছে তা-ও পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কালাম বলেন, গতকাল টেস্ট পরীক্ষা ফল প্রকাশ হয়েছে। গভর্নিং বডির সঙ্গে বসে টাকা নির্ধারণ করা হবে। অফিস থেকে যে টাকার কথা বলা হয়েছে তা-ই হবে। একটু কম-বেশি হতে পারে। এ টাকার খাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত এক শিক্ষার্থীর বেতন, কোচিং ফিসহ অন্যান্য ভাতা নিতে হয়। অনেক সময় বোর্ডের নির্ধারিত টাকার মধ্যে আমাদের থাকা সম্ভব হয় না। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরম পূরণের সঙ্গে ৬ মাসের বেতন, সেশন, কোচিং ও মডেল টেস্ট ফি ইত্যাদি মিলিয়ে মণিপুর হাইস্কুলে ৯৫০০ টাকা, ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫৫০০ টাকা, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫০০০, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ৬৫০০, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৬৫০০, নেয়ার নোটিস দিয়েছে। গত ১০ই নভেম্বর এসএসসি ফরম পুরণে অতিরিক্ত টাকা আদায় করায় হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন। এরপর বোর্ড তিন সদস্যের কমিটি ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেয়া নির্দেশ দেয়। এরপরও ২১টি প্রতিষ্ঠান টাকা ফেরত না দেয়ায় তাদের শোকজ করা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শোকজ করা হয়েছে তারা এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণেও বাড়তি ফি আদায় করছে।
রাজধানী যাত্রাবাড়ীর দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে সাত গুণ বেশি অর্থ আদায় হচ্ছে। কলেজে এক অভিভাবক জানান, ফরম পূরণের জন্য নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ৭০৭৫ টাকা অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৭১৭৫ টাকা প্রদানের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও টাকা আদায়ের রশিদ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত আরও ২০০ টাকা। অভিভাবকদের অভিযোগ, কারও কারও কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকাও আদায় করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জরিমানা আদায় করতে বিভিন্ন বিষয়ে অকৃতকার্য করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মু. সাহাদত হুসাইন বলেন, বোর্ড তো আমাদের উন্নয়ন ফিসহ অন্যান্য খাত উল্লেখ করেনি। তিনি বলেন, কোচিংয়ে টাকা আর কলেজের উন্নয়নের টাকা তো সরকার দেয় না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই কলেজের উন্নয়ন করতে হয়।
এ বিষয়ে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ জানান, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় কোন প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি আদায় করলে তাদের ব্যাপারে কঠোর হবো। ইতিমধ্যে বোর্ডের ওয়েবসাইটে একটি সতর্কতা নোটিস দেয়া হয়েছে। এরপর যদি কেউ অমান্য করে তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে একটি হুঁশিয়ারি সংবলিত সতর্ক বার্তা জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়, বোর্ডের নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি টাকার আদায় করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বোর্ডের তথ্য মতে, এইচএসসিতে এবার বিভিন্ন খাত মিলিয়ে পরীক্ষা ফি হিসেবে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা ফি আদায় করা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি পত্রের জন্য ৭৫ টাকা হারে ১২ পেপারের জন্য ৯০০ টাকা, কেন্দ্র ফি ৩০০, ব্যবহারিক ফি প্রতি পত্রের জন্য ২৫ টাকা, ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৫০, সনদ ফি ১০০, রোভারস্কাউট বা গার্লস গাইড ১৫ এবং শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা। এর বাইরে ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ ও অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা যথাক্রমে ৩০০ ও ১০০ টাকা করে শিক্ষার্থীপ্রতি নেয়া যাবে। এছাড়াও ফরম পূরণকালে কেবল দুটি খাতে ফি আদায়ের ব্যাপারে বোর্ড নির্দেশনা দিয়েছেন। এই দুটি খাত হচ্ছে- বোর্ড নির্দেশিত ফি এবং ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত কোচিং ফি। এর অতিরিক্ত ফি ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে বোর্ড।
আগামী ১লা এপ্রিল এ পরীক্ষা শুরুর কথা। সারা দেশে ফরম পূরণ ১৫ই ডিসেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ২৪শে ডিসেম্বর। তবে বিলম্ব ফিসহ ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য কোচিং করানোর ব্যবস্থা রেখেছে সরকার। ২০১২ সালের ২০শে জুন এ ব্যাপারে জারিকৃত পরিপত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা করে নেয়ার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, ফরম পূরণের টাকা আদায়েল ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বোর্ডগুলোই ভূমিকা রাখতে পারে। মাউশি কেবল এমপিও বন্ধ করতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান এমপিও নেয় না। সে ক্ষেত্রে বোর্ডগুলোই বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শুধু এইচএসসি নয়, সব পাবলিক পরীক্ষায় নানা খাতের অজুহাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এদের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও বোর্ড, মাউশি ও মন্ত্রণালয় থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
রাজধানী যাত্রাবাড়ীর দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে সাত গুণ বেশি অর্থ আদায় হচ্ছে। কলেজে এক অভিভাবক জানান, ফরম পূরণের জন্য নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ৭০৭৫ টাকা অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৭১৭৫ টাকা প্রদানের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও টাকা আদায়ের রশিদ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত আরও ২০০ টাকা। অভিভাবকদের অভিযোগ, কারও কারও কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকাও আদায় করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জরিমানা আদায় করতে বিভিন্ন বিষয়ে অকৃতকার্য করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মু. সাহাদত হুসাইন বলেন, বোর্ড তো আমাদের উন্নয়ন ফিসহ অন্যান্য খাত উল্লেখ করেনি। তিনি বলেন, কোচিংয়ে টাকা আর কলেজের উন্নয়নের টাকা তো সরকার দেয় না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই কলেজের উন্নয়ন করতে হয়।
এ বিষয়ে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ জানান, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় কোন প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি আদায় করলে তাদের ব্যাপারে কঠোর হবো। ইতিমধ্যে বোর্ডের ওয়েবসাইটে একটি সতর্কতা নোটিস দেয়া হয়েছে। এরপর যদি কেউ অমান্য করে তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে একটি হুঁশিয়ারি সংবলিত সতর্ক বার্তা জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়, বোর্ডের নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি টাকার আদায় করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বোর্ডের তথ্য মতে, এইচএসসিতে এবার বিভিন্ন খাত মিলিয়ে পরীক্ষা ফি হিসেবে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা ফি আদায় করা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি পত্রের জন্য ৭৫ টাকা হারে ১২ পেপারের জন্য ৯০০ টাকা, কেন্দ্র ফি ৩০০, ব্যবহারিক ফি প্রতি পত্রের জন্য ২৫ টাকা, ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৫০, সনদ ফি ১০০, রোভারস্কাউট বা গার্লস গাইড ১৫ এবং শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা। এর বাইরে ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ ও অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা যথাক্রমে ৩০০ ও ১০০ টাকা করে শিক্ষার্থীপ্রতি নেয়া যাবে। এছাড়াও ফরম পূরণকালে কেবল দুটি খাতে ফি আদায়ের ব্যাপারে বোর্ড নির্দেশনা দিয়েছেন। এই দুটি খাত হচ্ছে- বোর্ড নির্দেশিত ফি এবং ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত কোচিং ফি। এর অতিরিক্ত ফি ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে বোর্ড।
আগামী ১লা এপ্রিল এ পরীক্ষা শুরুর কথা। সারা দেশে ফরম পূরণ ১৫ই ডিসেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ২৪শে ডিসেম্বর। তবে বিলম্ব ফিসহ ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য কোচিং করানোর ব্যবস্থা রেখেছে সরকার। ২০১২ সালের ২০শে জুন এ ব্যাপারে জারিকৃত পরিপত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা করে নেয়ার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, ফরম পূরণের টাকা আদায়েল ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বোর্ডগুলোই ভূমিকা রাখতে পারে। মাউশি কেবল এমপিও বন্ধ করতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান এমপিও নেয় না। সে ক্ষেত্রে বোর্ডগুলোই বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শুধু এইচএসসি নয়, সব পাবলিক পরীক্ষায় নানা খাতের অজুহাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এদের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও বোর্ড, মাউশি ও মন্ত্রণালয় থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
No comments