২৫ দিনের চাকরিতেই গাড়ি! -মধুসূদনকে ওয়ার্নিং
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মধুসূদন সরকারকে সতর্ক করেছে জেলা
প্রশাসন। সোমবার মধুসূদনের অফিসের এক সহকারী পাসপোর্টের ১৭টি ফাইলসহ
হাতেনাতে ধরা পড়েন নেজারত ডেপুটি কালেকটরের (এনডিসি) হাতে। প্রথমে আটক ওই
কর্মচারীকে দালাল মনে করেন এনডিসি। পরে নিশ্চিত হন সে পাসপোর্ট অফিসের
কর্মচারী। এরপরই পাসপোর্টের সহকারী পরিচালক মধুসূদন সরকারকে ডেকে নিয়ে
যাওয়া হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নাজমা বেগমের কক্ষে। সেখানে
মধুসূদনের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিবরণ দিয়ে এডিএম তাকে শাসান। বলেন এই
প্রথমবারের মতো বলে ছেড়ে দেয়া হলো। দ্বিতীয়বার আর রক্ষে নেই। রোববার দৈনিক
মানবজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মধুসূদনকে নিয়ে
একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টের পরই সোমবার জেলা প্রশাসনের এনডিসি
সাব্বির আহমেদ সরজমিনে পাসপোর্ট অফিসের চিত্র প্রত্যক্ষ করতে সেখানে যান।
তখনই এক যুবককে অনেক ফাইল হাতে নিয়ে যেতে দেখে আটক করেন। পরে তার পরিচয়
পাওয়া যায়। আটক যুবকের নাম হোসেন। সে পাসপোর্ট অফিসের একজন কর্মচারী।
এনডিসি সাব্বির আহমেদ বলেন, আমরা এতকিছু জানতাম না। মানবজমিনের রিপোর্ট পড়ে
অবস্থা বুঝতে পেরে সোমবার ওই অফিসে গিয়ে সাধারণের মতো অবস্থান করতে থাকি।
তখন এক যুবককে এতগুলো ফাইল নিয়ে যেতে দেখে আমার সন্দেহ হয়। এরপর তাকে আটক
করি। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বেগম বলেন পরদিন বিজয়
দিবস। দিবসের কর্মসূচি নিয়ে আমরা ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি নিয়ে বেশিদূর যায়নি।
তবে পাসপোর্টের সহকারী পরিচালককে বলে দিয়েছি আমরা নজর রাখবো। আবার ধরা পড়লে
রক্ষে নেই। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে-ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পাসপোর্ট অফিসে মধুসূদন যোগদান করার পর শতকরা ৯০ ভাগ পাসপোর্ট করা হচ্ছে
দুর্নীতির মাধ্যমে। ১০ ভাগ সাধারণ লোকজন সোজাপথে পাসপোর্ট করার সুযোগ
পাচ্ছেন। মধুসূদন সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাসপোর্ট অফিসে যোগ দিয়েছেন গত ২০শে
নভেম্বর। যোগদানের পরই আলোচনায় চলে আসেন এই কর্মকর্তা। সোমবার এ ঘটনার পর
সরকারের একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদান করার ২৫ দিনের
মধ্যে মধুসূদন সাড়ে ১০ লাখ টাকায় গাড়ি কিনে ফেলেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন ৩/৪ শ’ পাসপোর্ট হয়। যার প্রায় সবই হয় দালালদের
হাত ধরে। পাসপোর্ট পিছু এক হাজার টাকা করে ঢুকে সহকারী পরিচালকের (মধুসূদন)
পকেটে। একদিনে ৩শ’ পাসপোর্ট হলে মাসের ২২ কর্মদিবসে (ছুটি ছাড়া) পাসপোর্ট
হয় ৬ হাজার ৬শটি প্রায়। এই হিসেবে ২২ কর্মদিবসে শুধু পাসপোর্টের সহকারী
পরিচালকের পকেটে ঢুকে ৬৬ লাখ টাকা। মধুসূদন এখানে যোগদানের ৩দিন পরই শহরের
কাউতলী এলাকায় তার ভাড়া করা বাসায় পাসপোর্ট অফিসের দালালদের নিয়ে বৈঠক
করেন। এর পরই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাসপোর্ট অফিসে দালালদের তৎপরতা কয়েকগুণ বেড়ে
যায়। মধুসূদন প্রতি পাসপোর্টে ১ হাজার টাকা করে তাকে দেয়ার রেট নির্ধারণ
করে দেন।
জানা যায়, এখানে বদলি হয়ে আসতে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দেন পাসপোর্টের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে। মধুসূদন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার আগে ছিলেন সিলেট। সেখানে তার কর্মকাল ছিল মাত্র ২৮ দিন। ওয়াকেবহাল সূত্রমতে, সিলেটে বদলি হতে খরচ করেছিলেন আড়াই লাখ টাকা। জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান-মধুসূদন রাঙ্গামাটিতে চাকরি করেছেন এক সময়। সেখানেও অনিয়ম-দুর্নীতি করেন। আমিও সেখানে কর্মরত ছিলাম বলে তাকে ভালভাবে চিনি।
জানা যায়, এখানে বদলি হয়ে আসতে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দেন পাসপোর্টের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে। মধুসূদন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার আগে ছিলেন সিলেট। সেখানে তার কর্মকাল ছিল মাত্র ২৮ দিন। ওয়াকেবহাল সূত্রমতে, সিলেটে বদলি হতে খরচ করেছিলেন আড়াই লাখ টাকা। জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান-মধুসূদন রাঙ্গামাটিতে চাকরি করেছেন এক সময়। সেখানেও অনিয়ম-দুর্নীতি করেন। আমিও সেখানে কর্মরত ছিলাম বলে তাকে ভালভাবে চিনি।
No comments