ইরানি নারীর গোপন জানালা- ডয়েচ ভেলে
রাষ্ট্রের আইন আর ধর্মের শাসন ডিঙিয়ে
ইরানি নারীদের জন্য সাইবার সমাজে এক গোপন জানালা খুলে দিয়েছেন প্রবাসী এক
তরুণী, যাঁর পথ ধরে শতাধিক নারীর খোলা চুলে স্পর্শ করেছে মুক্তির আলো৷
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক মাসিহ আলিনেজাদ গত মাসের শুরুতে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে তাঁকে হিজাববিহীন অবস্থায় ইরানের একটি শহরে গাড়ি চালাতে দেখা যায়৷ গত এক মাসে তাঁর ফেসবুক পৃষ্ঠা মাই স্টেলথি ফ্রিডম পছন্দ (লাইক) করেছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ৷ মাসিহ আলিনেজাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেই পৃষ্ঠায় নিজেদের হিজাববিহীন ছবি পোস্ট করেছেন শতাধিক নারী৷
আলিনেজাদ ওই ফেসবুক পৃষ্ঠায় লিখেছেন, কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে এই উদ্যোগের কোনো সম্পর্ক নেই৷ আইন ও সামাজিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে বন্দি ইরানি নারীদের মুক্তির প্রত্যাশা থেকেই এর শুরু৷
১৯৭৯ সালে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হওয়ার পর নারীদের প্রকাশ্যে চলাফেরার ক্ষেত্রে হিজাব বা মাথা ঢাকা পোশাক ধারণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়৷ এ নিয়ম ভাঙার কারণে বহু নারীকে জেল-জরিমানারও শিকার হতে হয়েছে৷
এর বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রথম প্রতিবাদ দানা বাঁধতে থাকে ২০১২ সালে৷ ইরান লিবারেল স্টুডেন্ট অ্যান্ড গ্র্যাজুয়েট নামের একটি সংগঠন আনভেইল উইমেনস রাইট টু আনভেইল শিরোনামে একটি প্রচারণা শুরু করে, যা ৬৫ হাজার লাইক পায়৷ আর এবার মাসিহ আলিনেজাদের স্টেলথি ফ্রিডম সেই আন্দোলনকে দিয়েছে নতুন মাত্রা৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ইরানি নারীরা আসলে কেমন, বিশ্বের কাছে তা তুলে ধরতেই এ আয়োজন৷ এখানে যাঁরা নিজেদের স্কার্ফবিহীন ছবি দিয়েছেন, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি৷ নিজেদের ছবিগুলোও তাঁরা তুলেছেন গোপনে৷ হিজাব নিয়ে তাঁদের মতামত এবং মুক্ত জীবনের প্রত্যাশার কথা সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে ছবির সঙ্গে৷
একটি ছবিতে এক নারীকে দেখা যায় পাহাড়ের ওপরে দাঁড়িয়ে স্কার্ফ খুলে তুলে ধরেছেন দুই হাতে৷ ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, পাহাড় কখনো নিজেকে অবগুণ্ঠনে আড়াল করে না৷ তাই পাহাড়ে এসে আমিও নিজেকে আড়ালে রাখিনি৷
মাই স্টেলথি ফ্রিডম পৃষ্ঠায় যাঁরা ছবি দিয়েছেন, তাঁরা অনেকেই ছবি তুলেছেন পেছন থেকে, যাতে চেহারা দেখা না যায়৷ কারো কারো মুখ দেখা গেলেও তাঁরা পরে নিয়েছেন চোখ ঢাকা সানগ্লাস৷ অবশ্য তেহরানের কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা চত্বর এবং সাবওয়ে স্টেশনেও কেউ কেউ হিজাব খুলে ক্যামেরার সামনে এসেছেন৷
একটি ছবিতে কালো পোশাকের এক নারীকে দেখা যায় মরুভূমিতে পেছন ফিরে দাঁড়ানো৷ তাঁর মাথা ঢাকার লাল স্কার্ফ উড়ছে তাঁর হাতে৷ তিনি লিখেছেন, এ ধরনের একটি আন্দোলনের জন্য আমি বহু বছর অপেক্ষা করেছি৷ আমার বিশ্বাস, শিগগিরই সেই দিন আসবে, যখন আমাদের এই মুক্তির আনন্দ আর গোপন করে রাখতে হবে না৷
ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ইরানি নারীদের এই মুক্তির স্বপ্নকে আলোয় আনলেও ইরানের আইন আর বিধিনিষেধ নিজস্ব গতিতেই চলছে৷ সম্প্রতি বাড়ির ছাদে ফ্যারেল উইলিয়ামসের বিখ্যাত হ্যাপি গানের সঙ্গে হিজাববিহীন অবস্থায় নাচার পর সেই ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করে জেলে যেতে হয়েছে তেহরানের ছয় তরুণ-তরুণীকে৷ অবশ্য পরে তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করে জামিনে মুক্তি পান৷
মাই স্টেলথি ফ্রিডম আন্দোলনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেও ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ৷ এঁদের মধ্যে একজন বলেছেন, হিজাবের চেয়ে আরো অনেক বড় সমস্যা ইরানি নারীদের জীবনে রয়েছে৷ লুকিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ার এ বিষয়টিকে স্ববিরোধী বলেও আখ্যায়িত করেছেন একজন৷
মাসিহ আলিনেজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, সব মতের নারী-পুরুষের খোলামেলা আলোচনার এরকম একটি জায়গাই আমি তৈরি করতে চেয়েছি, যেখানে তাঁদের সেন্সরশিপের ভয় করতে হবে না, মুক্তচিন্তা প্রকাশের জন্য শাস্তির মুখে পড়তে হবে না৷
ইরানের মতো একটি দেশে যেখানে ইন্টারনেটের ওপর কড়া নজরদারি চলে, সেখানেও প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার লাইক পড়ছে আলিনেজাদের ফেসবুক পৃষ্ঠায়৷ আর শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আর ভার্চুয়াল দুনিয়াতেই আটকে থাকছে না৷
হ্যাপি গানের সঙ্গে ইরানি তরুণীর নাচের ভিডিও নিয়ে শোরগোলের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক বার্তায় বলেন, আনন্দ প্রকাশের অধিকার আমাদের জনগণের রয়েছে৷ আর আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে কারো আচরণ নিয়ে খুব বেশি কঠোর হওয়া আমাদের উচিত নয়৷ অবশ্য মজলিসে শুরার বৈঠকে বা কোনো রাষ্ট্রীয় ফরমানে তিনি এ কথা বলেননি৷ ইরানি প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য এসেছে টুইটারের মাধ্যমে৷
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক মাসিহ আলিনেজাদ গত মাসের শুরুতে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে তাঁকে হিজাববিহীন অবস্থায় ইরানের একটি শহরে গাড়ি চালাতে দেখা যায়৷ গত এক মাসে তাঁর ফেসবুক পৃষ্ঠা মাই স্টেলথি ফ্রিডম পছন্দ (লাইক) করেছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ৷ মাসিহ আলিনেজাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেই পৃষ্ঠায় নিজেদের হিজাববিহীন ছবি পোস্ট করেছেন শতাধিক নারী৷
আলিনেজাদ ওই ফেসবুক পৃষ্ঠায় লিখেছেন, কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে এই উদ্যোগের কোনো সম্পর্ক নেই৷ আইন ও সামাজিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে বন্দি ইরানি নারীদের মুক্তির প্রত্যাশা থেকেই এর শুরু৷
১৯৭৯ সালে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হওয়ার পর নারীদের প্রকাশ্যে চলাফেরার ক্ষেত্রে হিজাব বা মাথা ঢাকা পোশাক ধারণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়৷ এ নিয়ম ভাঙার কারণে বহু নারীকে জেল-জরিমানারও শিকার হতে হয়েছে৷
এর বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রথম প্রতিবাদ দানা বাঁধতে থাকে ২০১২ সালে৷ ইরান লিবারেল স্টুডেন্ট অ্যান্ড গ্র্যাজুয়েট নামের একটি সংগঠন আনভেইল উইমেনস রাইট টু আনভেইল শিরোনামে একটি প্রচারণা শুরু করে, যা ৬৫ হাজার লাইক পায়৷ আর এবার মাসিহ আলিনেজাদের স্টেলথি ফ্রিডম সেই আন্দোলনকে দিয়েছে নতুন মাত্রা৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ইরানি নারীরা আসলে কেমন, বিশ্বের কাছে তা তুলে ধরতেই এ আয়োজন৷ এখানে যাঁরা নিজেদের স্কার্ফবিহীন ছবি দিয়েছেন, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি৷ নিজেদের ছবিগুলোও তাঁরা তুলেছেন গোপনে৷ হিজাব নিয়ে তাঁদের মতামত এবং মুক্ত জীবনের প্রত্যাশার কথা সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে ছবির সঙ্গে৷
একটি ছবিতে এক নারীকে দেখা যায় পাহাড়ের ওপরে দাঁড়িয়ে স্কার্ফ খুলে তুলে ধরেছেন দুই হাতে৷ ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, পাহাড় কখনো নিজেকে অবগুণ্ঠনে আড়াল করে না৷ তাই পাহাড়ে এসে আমিও নিজেকে আড়ালে রাখিনি৷
মাই স্টেলথি ফ্রিডম পৃষ্ঠায় যাঁরা ছবি দিয়েছেন, তাঁরা অনেকেই ছবি তুলেছেন পেছন থেকে, যাতে চেহারা দেখা না যায়৷ কারো কারো মুখ দেখা গেলেও তাঁরা পরে নিয়েছেন চোখ ঢাকা সানগ্লাস৷ অবশ্য তেহরানের কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা চত্বর এবং সাবওয়ে স্টেশনেও কেউ কেউ হিজাব খুলে ক্যামেরার সামনে এসেছেন৷
একটি ছবিতে কালো পোশাকের এক নারীকে দেখা যায় মরুভূমিতে পেছন ফিরে দাঁড়ানো৷ তাঁর মাথা ঢাকার লাল স্কার্ফ উড়ছে তাঁর হাতে৷ তিনি লিখেছেন, এ ধরনের একটি আন্দোলনের জন্য আমি বহু বছর অপেক্ষা করেছি৷ আমার বিশ্বাস, শিগগিরই সেই দিন আসবে, যখন আমাদের এই মুক্তির আনন্দ আর গোপন করে রাখতে হবে না৷
ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ইরানি নারীদের এই মুক্তির স্বপ্নকে আলোয় আনলেও ইরানের আইন আর বিধিনিষেধ নিজস্ব গতিতেই চলছে৷ সম্প্রতি বাড়ির ছাদে ফ্যারেল উইলিয়ামসের বিখ্যাত হ্যাপি গানের সঙ্গে হিজাববিহীন অবস্থায় নাচার পর সেই ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করে জেলে যেতে হয়েছে তেহরানের ছয় তরুণ-তরুণীকে৷ অবশ্য পরে তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করে জামিনে মুক্তি পান৷
মাই স্টেলথি ফ্রিডম আন্দোলনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেও ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ৷ এঁদের মধ্যে একজন বলেছেন, হিজাবের চেয়ে আরো অনেক বড় সমস্যা ইরানি নারীদের জীবনে রয়েছে৷ লুকিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ার এ বিষয়টিকে স্ববিরোধী বলেও আখ্যায়িত করেছেন একজন৷
মাসিহ আলিনেজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, সব মতের নারী-পুরুষের খোলামেলা আলোচনার এরকম একটি জায়গাই আমি তৈরি করতে চেয়েছি, যেখানে তাঁদের সেন্সরশিপের ভয় করতে হবে না, মুক্তচিন্তা প্রকাশের জন্য শাস্তির মুখে পড়তে হবে না৷
ইরানের মতো একটি দেশে যেখানে ইন্টারনেটের ওপর কড়া নজরদারি চলে, সেখানেও প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার লাইক পড়ছে আলিনেজাদের ফেসবুক পৃষ্ঠায়৷ আর শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আর ভার্চুয়াল দুনিয়াতেই আটকে থাকছে না৷
হ্যাপি গানের সঙ্গে ইরানি তরুণীর নাচের ভিডিও নিয়ে শোরগোলের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক বার্তায় বলেন, আনন্দ প্রকাশের অধিকার আমাদের জনগণের রয়েছে৷ আর আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে কারো আচরণ নিয়ে খুব বেশি কঠোর হওয়া আমাদের উচিত নয়৷ অবশ্য মজলিসে শুরার বৈঠকে বা কোনো রাষ্ট্রীয় ফরমানে তিনি এ কথা বলেননি৷ ইরানি প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য এসেছে টুইটারের মাধ্যমে৷
No comments