ধর্ষণের বিরুদ্ধে নগ্ন প্রতিবাদ
বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। হক কথা?
না, নিভৃতে কেঁদে যে বিচার পাওয়া যায় না, তা ভারতের মানুষ ঠেকে শিখেছে বা
বলা ভালো ঠেকে শিখছে। এই সোচ্চার প্রতিবাদের বাণী দেশের কিছুসংখ্যক মানুষকে
বোধহয় চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে শিখিয়েছিলেন ভারতের মণিপুরের সাহসী নীরা। সেনা
জওয়ানের হাতে ধর্ষণ এবং নিগ্রহের প্রতিবাদে নগ্ন মিছিল করেছিলেন মণিপুরের
রাজপথে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সহ্যশক্তি এবং লজ্জার পরত জমতে থাকে
প্রতিবাদের ভাষার ওপর। কিন্তু মানুষ যে এখনো নধরকান্তি মেষশাবক হয়ে যায়নি
তা আরও একবার প্রমাণ করলেন নির্ভয়া। মৃত্যুর আগে নিজের মধ্যে জ্বলতে থাকা
প্রতিবাদের আগুন সঞ্চারিত করেছিলেন আমজনতার মধ্যে। তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল
সারাদেশ। কিন্তু তাতে পৈশাচিকতায় কোনো ভাটা পড়েনি।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhflLvWBLU2W4KtszTH9PDXONZFrgW0kJSEKuUlJrYT2FG9vAnPTNDhyphenhyphen50GEGLjL7hUSpb483qmZOZ4XoKvb7iwRzkaOLRhPkA8aWt6YufrR9TS_Q8MCxMeyIGSxnXD03vyqOGeLsTq5QQ/s1600/IndiaNogno.jpg)
কথায় বলে রক্ষকই ভক্ষক। কিন্তু সেই রক্ষককের শরীরে যদি পড়ে ধর্ষণের আঁচড়? তখন কোথায় মুখ লুকায় গণতন্ত্র? সেই প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলেও একদল সাহসী মহিলা আইনজীবী যে তাদের সহকর্মীর ওপর হওয়া পৈশাচিক অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে নেবেন না তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন। হোক না সেই সহকর্মী অপরিচিত। তাতে কি যায়-আসে! মনুষ্যত্বের কর্তব্য তো অপরিচিত নয়। সেই কর্তব্যের তাগিদেই উত্তর প্রদেশের মহিলা বিচারকের সঙ্গে হওয়া ধর্ষণের প্রতিবাদে কেরল-এর হাইকোর্টের মহিলা আইনজীবীরা নগ্ন হয়ে পথে হাঁটলেন। গায়ের ওপর আলগা হয়ে পড়ে রইল সাদা, গেরুয়া এবং সবুজ কাপড়। পাশাপাশি দাঁড়ালে তবেই যে পূর্ণ হয় ভারতের পতাকা। কিন্তু একজনও ছিটকে গেলে হারিয়ে যায় পতাকার বা দেশের অস্তিত্বও। কোচির রাজপথ সাক্ষী থাকল এই ধিক্কারের। বদল কি আসবে? নাকি ক্রমেই আরও বিপন্ন হয়ে উঠবে এদেশের বুকে নারীদের অস্তিত্ব। প্রশ্নটা এলোমেলো হয়ে ঘুরে বেড়ায় এদেশেরই পথেঘাটে।
No comments