বামঘাঁটি জয় করতে পারবেন দেব?
মমতার সঙ্গে মঞ্চে দেব ছবি: প্রথম আলো |
যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, জনজোয়ার। কখনো কাঁধে তুলে নিয়ে নাচছেন ভক্তরা, কখনো ভক্তদের পুষ্পবৃষ্টিতে পুষ্পস্নান করছেন। তিনি দেব। কলকাতার চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা। আসল নাম দীপক অধিকারী। বয়স ৩১। এই দেবকে এবার রাজনীতিতে নামিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল আসনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন পেয়েই ময়দানে নেমে পড়েছেন তিনি। ঘুরছেন ঘাটাল আসনের অলিগলি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে অন্তত ১০ জন তারকা প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দেব মমতার অত্যন্ত আস্থাভাজন তারকা। এর আগে মমতার ডাকে তাঁর বড় বড় জনসভায় হাজির হয়েছেন দেব। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আছে লোকসভার তিনটি আসন। ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর। এই পশ্চিম মেদিনীপুর আবার বাম অধ্যুষিত জেলা। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেলার তিনটি আসনেই জিতেছিল বামফ্রন্টের প্রার্থীরা। ঘাটালে বামফ্রন্টের শরিক সিপিআইয়ের নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত জিতলেও এবার তিনি নির্বাচনে নেই। এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সিপিআইয়ের আরেক নেতা সন্তোষ কুমারকে। গুরুদাস জিতেছিলেন এক লাখ ৪৭ হাজার ১৮৪ ভোটের ব্যবধানে।
বিজেপির প্রার্থী মতিলাল খাটুয়া পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার চার ভোট। এবার এই আসনে কে জিতবে, তা নিয়ে তৃণমূল আর বাম শিবিরে চলছে হিসাব-নিকাশ। বামদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও এই আসনটি এবার দখল করতে চান মমতা। তাই প্রার্থী করেছেন এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা দেবকে। দেবের পাশাপাশি জেলার মেদিনীপুর আসনে প্রার্থী করিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়কে। দেব ও সন্ধ্যা রায়কে জয়ী করতে মাঠে নেমেছেন মমতাও। সভা করেছেন দেব ও সন্ধ্যাকে নিয়ে। তবে সিপিআই বলছে, বাম দলের নির্দিষ্ট ভোট আছে। গত নির্বাচনে তারা এক লাখের বেশি ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়েছিল। এবার দেবকে হারিয়ে তাদের প্রার্থীই জিতবেন। এই আসনে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীও একেবারে ফেলনা নন। মানস ভুইয়া রাজ্য কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও বিধানসভার মন্ত্রী ছিলেন। তিনিও বেশ ভোট টানবেন। আর বিজেপির প্রার্থী মহম্মদ আলম। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, মমতার তারকা প্রার্থীদের মধ্যে দেব জিতবেন। এই প্রজন্মের নতুন ভোটাররা দেবকে বিমুখ করবেন না। দেব রাজনীতিতে নতুন এলেও পা দিচ্ছেন বুঝেশুনে। প্রথম প্রচারণায় নেমেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী বাম প্রার্থী সন্তোষের বড়িতে গিয়ে চা খেয়ে আসেন। এতে দেবের ভক্তরা উল্লসিত। তবুও রাজনীতিতে শেষকথা বলতে কিছু নেই। তৃণমূল যদি এবার বামঘাঁটিতে আঘাত করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও বিজেপির ভোট ভাগাভাগিতে ভাগ্য খুলে যেতে পারে বাম প্রার্থীর।
No comments