বিদেশিদের নাক গলানো আর কত by আদনান মনোয়ার হুসাইন
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে বিদেশি
কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যাবে_ এটাকে নিয়তিসিদ্ধ বলেই আমরা ধরে নিতে
পারি। কিন্তু এবার নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরও বিদেশিরা বিশ্রাম নিতে পারছেন
না। সাবেক বিরোধীদলীয় নেতার বাসায় তাদের কাউকে কাউকে এ ক'দিনে যেতে দেখা
গেছে। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরও তারা কেন এখনও এত ব্যস্ত, তা জানা যাচ্ছে
না। কারণ পত্রিকায় সাক্ষাতের খবর আসছে, আলাপের বিষয়বস্তু প্রকাশ পাচ্ছে না।
আমাদের দেশে ভদ্রতার কিছু রেওয়াজ আছে, যেমন_ শোকগ্রস্ত কাউকে সান্ত্বনা
দিতে, বিপদগ্রস্তকে বুদ্ধি দিতে মানুষ এগিয়ে আসে। কিন্তু গুলশানে ঠিক কী
হচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে না।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি নিয়ে হাজারো বিতর্ক আছে। এমন নির্বাচন কারও কাম্য ছিল না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যে হয়নি, তা বিজয়ীরাও অস্বীকার করতে পারছেন না। আবার এ নির্বাচনের যে বিকল্প ছিল না, তার পক্ষেও হাজারটা যুক্তি আছে। নির্বাচনটি যাতে সবাইকে নিয়ে হয়, সে জন্য বিদেশি বন্ধুরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। দফায় দফায় ফোন, চিঠি, দূত পাঠানো সবই হয়েছে। দুই পক্ষকে জলাধার পর্যন্ত নেওয়া গেলেও জল পান করানো যায়নি। ৪২ বছরের স্বাধীন জাতির জন্য বিদেশিদের এ তৎপরতা অপমানজনক হলেও, নিয়তি বলে তখন তা মেনে নেওয়া গেছে। কিন্তু যে প্রকারেই হোক নির্বাচন হয়ে গেছে। কয়েকটি দল অংশও নিয়েছে। ৩০০ এমপি আমরা পেয়েও গেছি। নির্বাচন নিয়ে সরকার ও সাবেক প্রধান বিরোধী দল যার যার অবস্থানে অনড় রয়েছে। এখনও কেউ গোঁ ছাড়েনি, আবার নতুন করে কোনো জটিলতাও দেখা দেয়নি। বরং সবাই আশা করছে এখন পরিস্থিতি শান্ত হবে, আন্দোলন গড়াবে আলোচনার দিকে।
বিদেশি বন্ধুরা কেন তারপরও দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন, তা প্রশ্ন জাগায়। এটি কিছুটা দৃষ্টিকটুও বৈকি। সংকটকালে তারা এগিয়ে এসেছিলেন, ভালো কথা। কিন্তু তাই বলে একটি দেশের রাজনীতিতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত হয়ে যাওয়া কি কূটনৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে? তারা যেটি চেয়েছিলেন তা হয়নি, স্বাভাবিক নিয়মে তাদের এখন নিজস্ব বলয়ে ফিরে যাওয়ার কথা। বিবদমান পক্ষগুলো সমঝোতায় যায় কি-না সে জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু তা না করে তারা কী বার্তা দিতে চাচ্ছেন? এ দেশের নিজস্ব রাজনীতিকে তারা কি নিজেদের পছন্দমতো রূপ দিতে চাচ্ছেন? নিজেদের এ দেশের রাজনীতির খেলোয়াড় বলে মনে করছেন?
খোলা চোখে তাদের নির্বাচন-পূর্ব তৎপরতা বা চেষ্টাকে অনেকেই সাধুবাদ জানাবেন। সাধারণত কূটনৈতিক তৎপরতার তলার নাগাল আম জনতা কখনোই পায় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের মনোবাসনার পথে ভারত বাগড়া দেওয়ায় হাঁড়ির খবর এখন খুব বেশি গোপন নেই। তাদের ঝগড়ার ফাঁকে এটা আমাদের জানা হয়ে গেছে, বাংলাদেশে তারা এমন একটি গোষ্ঠীর পক্ষে লড়ছেন, অনেক দেশেই ঠিক তার সমজাতীয় গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করছেন। তাদের চেষ্টা সফল হলে জামায়াত-শিবিরের মতো উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠন ফের বৈধতা পেত। তারা সরকারের ওপর যতটা চাপ দিয়েছেন, একটি জঙ্গি সংগঠনকে ছেড়ে পরিষ্কার হয়ে নির্বাচনে আসতে বিএনপিকে ততটা বুঝিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। এ জামায়াতেরই অনেক কর্মী আফগানিস্তানে তালেবানের হয়ে লড়েছে, দেশে ফিরে তারা নানা জঙ্গি সংগঠন খুলেছে। আফগানিস্তানে তালেবান খারাপ হলে বাংলাদেশে তাদের মাসতুতো ভাইরা কীভাবে ভালো হয়ে গেল? গোটা দেশ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়, জঙ্গিমুক্ত, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ চায়, তখন দেশজুড়ে জামায়াত কী করছে তা কি মানবাধিকারভক্ত ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিদেশি বন্ধুরা দেখতে পাচ্ছেন না! শুধু একটি নির্বাচনেই দেশে স্থিতিশীলতা আসে না। যদি তাই হতো, তাহলে আফগানিস্তানে ন্যাটোর এক যুগ পার করতে হতো না।
সাংবাদিক
৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি নিয়ে হাজারো বিতর্ক আছে। এমন নির্বাচন কারও কাম্য ছিল না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যে হয়নি, তা বিজয়ীরাও অস্বীকার করতে পারছেন না। আবার এ নির্বাচনের যে বিকল্প ছিল না, তার পক্ষেও হাজারটা যুক্তি আছে। নির্বাচনটি যাতে সবাইকে নিয়ে হয়, সে জন্য বিদেশি বন্ধুরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। দফায় দফায় ফোন, চিঠি, দূত পাঠানো সবই হয়েছে। দুই পক্ষকে জলাধার পর্যন্ত নেওয়া গেলেও জল পান করানো যায়নি। ৪২ বছরের স্বাধীন জাতির জন্য বিদেশিদের এ তৎপরতা অপমানজনক হলেও, নিয়তি বলে তখন তা মেনে নেওয়া গেছে। কিন্তু যে প্রকারেই হোক নির্বাচন হয়ে গেছে। কয়েকটি দল অংশও নিয়েছে। ৩০০ এমপি আমরা পেয়েও গেছি। নির্বাচন নিয়ে সরকার ও সাবেক প্রধান বিরোধী দল যার যার অবস্থানে অনড় রয়েছে। এখনও কেউ গোঁ ছাড়েনি, আবার নতুন করে কোনো জটিলতাও দেখা দেয়নি। বরং সবাই আশা করছে এখন পরিস্থিতি শান্ত হবে, আন্দোলন গড়াবে আলোচনার দিকে।
বিদেশি বন্ধুরা কেন তারপরও দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন, তা প্রশ্ন জাগায়। এটি কিছুটা দৃষ্টিকটুও বৈকি। সংকটকালে তারা এগিয়ে এসেছিলেন, ভালো কথা। কিন্তু তাই বলে একটি দেশের রাজনীতিতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত হয়ে যাওয়া কি কূটনৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে? তারা যেটি চেয়েছিলেন তা হয়নি, স্বাভাবিক নিয়মে তাদের এখন নিজস্ব বলয়ে ফিরে যাওয়ার কথা। বিবদমান পক্ষগুলো সমঝোতায় যায় কি-না সে জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু তা না করে তারা কী বার্তা দিতে চাচ্ছেন? এ দেশের নিজস্ব রাজনীতিকে তারা কি নিজেদের পছন্দমতো রূপ দিতে চাচ্ছেন? নিজেদের এ দেশের রাজনীতির খেলোয়াড় বলে মনে করছেন?
খোলা চোখে তাদের নির্বাচন-পূর্ব তৎপরতা বা চেষ্টাকে অনেকেই সাধুবাদ জানাবেন। সাধারণত কূটনৈতিক তৎপরতার তলার নাগাল আম জনতা কখনোই পায় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের মনোবাসনার পথে ভারত বাগড়া দেওয়ায় হাঁড়ির খবর এখন খুব বেশি গোপন নেই। তাদের ঝগড়ার ফাঁকে এটা আমাদের জানা হয়ে গেছে, বাংলাদেশে তারা এমন একটি গোষ্ঠীর পক্ষে লড়ছেন, অনেক দেশেই ঠিক তার সমজাতীয় গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করছেন। তাদের চেষ্টা সফল হলে জামায়াত-শিবিরের মতো উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠন ফের বৈধতা পেত। তারা সরকারের ওপর যতটা চাপ দিয়েছেন, একটি জঙ্গি সংগঠনকে ছেড়ে পরিষ্কার হয়ে নির্বাচনে আসতে বিএনপিকে ততটা বুঝিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। এ জামায়াতেরই অনেক কর্মী আফগানিস্তানে তালেবানের হয়ে লড়েছে, দেশে ফিরে তারা নানা জঙ্গি সংগঠন খুলেছে। আফগানিস্তানে তালেবান খারাপ হলে বাংলাদেশে তাদের মাসতুতো ভাইরা কীভাবে ভালো হয়ে গেল? গোটা দেশ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়, জঙ্গিমুক্ত, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ চায়, তখন দেশজুড়ে জামায়াত কী করছে তা কি মানবাধিকারভক্ত ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিদেশি বন্ধুরা দেখতে পাচ্ছেন না! শুধু একটি নির্বাচনেই দেশে স্থিতিশীলতা আসে না। যদি তাই হতো, তাহলে আফগানিস্তানে ন্যাটোর এক যুগ পার করতে হতো না।
সাংবাদিক
No comments