রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাংকের ব্যবসা নির্ভর করছে by আলী রেজা ইফতেখার
ব্যাংকের
প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি)
চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের এমডি ও
সিইও আলী রেজা ইফতেখার। ব্যাংকিং খাতে ২৬ বছরের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ইফতেখার
দেশি-বিদেশি ব্যাংকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৭ সাল থেকে
ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার
মধ্যে ব্যাংকের ব্যবসা, এ খাতের ভবিষ্যৎসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন সমকালের
সঙ্গে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ওবায়দুল্লাহ রনি
সমকাল :গেল বছর ব্যাংকের ব্যবসা কেমন গেছে?
ইফতেখার :সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের পরিচালন মুনাফা কমেছে। আমরা একটা খসড়া হিসাব করি যে, পরিচালন মুনাফার ২০ শতাংশের মতো নিট মুনাফা হয়। ২০১৩ সালে পরিচালন মুনাফা থেকে কর ও প্রভিশন রাখার পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা যা দাঁড়াবে, তা আগের বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম হবে বলে ধারণা করছি। অনেকের জন্য ভালো লভ্যাংশ দেওয়া কঠিন হবে।
সমকাল :বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, প্রভিশন সংরক্ষণে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। এর প্রভাব কেমন হবে?
ইফতেখার :ব্যাংকগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। এ কারণে ২০১৩ সালের হিসাব কষলে দেখা যাবে, ব্যাংকগুলো বেঁচে থাকবে। একজন ঋণ গ্রহীতা পণ্য উৎপাদন করে বিক্রি করতে না পারলে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করবেন কীভাবে। এ কারণে ব্যাংকগুলো কেস টু কেস ভিত্তিতে উদ্যোক্তাদের ঋণের মেয়াদ বাড়াচ্ছে। ডাউনপেমেন্ট ছাড়া পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই ছাড় না দিলে অবস্থা খুব খারাপ হতো।
সমকাল :২০১৪ সালে ব্যাংকের ব্যবসা কেমন যাবে বলে মনে করছেন?
ইফতেখার :২০১৩ সালে আমরা ভালো ব্যবসা করতে পারিনি। যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে যায়, তাতে ব্যাংক খাতের অবস্থা আরও খারাপ হবে। সমস্যা আরও বাড়বে। কেননা ২০১৩ সালের কিছু সমস্যা নতুন বছরে নিয়ে এসেছি। এর সঙ্গে যোগ হবে এ বছরের সমস্যা। দু'বছরের সমস্যা নিয়ে এবার ব্যবসা খুব একটা ভালো যাবে বলে মনে হয় না। ব্যাংকগুলোকে টিকে থাকতে হলে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে ব্যাংক খাত ভালো ব্যবসা করতে পারবে। এ কারণে আমাদের সবারই কাম্য, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক।
সমকাল :গত বছর খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ কী মনে করেন?
ইফতেখার :চারটি কারণে ২০১৩ সালে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। প্রথমত, হরতাল-অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণীকরণ। তৃতীয়ত, বিভিন্ন কারণে জাহাজ নির্মাণ, আবাসনসহ বিভিন্ন খাত ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী আছেন, যারা সব সময়ই এ ধরনের সময়ের অপেক্ষায় থাকেন। তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে থাকেন। নতুন বছরে খেলাপি ঋণ আদায়ের ওপর ব্যাংকগুলোকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে নিজ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
সমকাল :রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব সুবিধা দিয়েছে, ব্যাংকগুলো তা কতটা কাজে লাগাতে পারছে?
ইফতেখার :পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংকগুলো নিজেদের থেকেই কিছু গ্রাহকের ঋণ পুনঃতফসিল, ঋণের মেয়াদ বাড়ানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সময় দিয়েছে। ব্যাংকগুলো প্রকৃত গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সব সময়ই আগ্রহী থাকে। অনেক সময় অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে অনেক ব্যাংক এলসি খুলছে না। এ অভিযোগ একেবারে সঠিক নয়। প্রকৃত কোনো গ্রাহক এলসি খুলতে পারেননি_ এমন নজির নেই। তবে হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহসহ বিভিন্ন বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে এলসি খোলার ক্ষেত্রে কেউ কেউ কিছুটা সতর্কতা দেখাচ্ছে।
সমকাল :দেশে বিনিয়োগে ধীরগতি থাকলেও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে; বিষয়টি আসলে কী?
ইফতেখার :পণ্য আমদানি-রফতানির আড়ালে কেউ অর্থ পাচার করলে সেটা ধরা খুব কঠিন কাজ। যেমন, ব্যাংকে এলসি খোলার সময় কেউ বলল, এই যন্ত্রের দাম এক মিলিয়ন ইউরো। ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেল, এক মিলিয়ন ইউরোর ওই ধরনের মেশিন রয়েছে। আবার এর চেয়ে অনেক কম দামেও একই ধরনের মেশিন বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কেউ কম দামের পণ্য এনে বেশি দামের কথা বললে সেটা যাচাই করা খুব কঠিন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষেও এটা ধরা কঠিন। তার পরও ব্যাংকগুলো এ ক্ষেত্রে সতর্ক রয়েছে।
সমকাল :নতুন বছরে ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
ইফতেখার :ইস্টার্ন ব্যাংক আগের মতোই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং খেলাপি ঋণ আদায় এ দুটি বিষয়কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সমকাল :এবিবি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
ইফতেখার :ব্যাংকের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে এবিবির কর্মকাণ্ড বিভিন্ন পক্ষকে জানানো হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে সাব-কমিটি করে একেকটি কমিটি একেক ধরনের দায়িত্ব পালন করবে।
সমকাল :ব্যাংকগুলোর করপোরেট কর কমানোর দাবির বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে?
ইফতেখার :ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফার ওপর বর্তমানে সাড়ে ৪২ শতাংশ হারে কর দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে করপোরেট কর কমানোর দাবি করা হলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার কিছুটা হলেও ছাড় দেবে বলে আমরা আশা করছি।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ওবায়দুল্লাহ রনি
সমকাল :গেল বছর ব্যাংকের ব্যবসা কেমন গেছে?
ইফতেখার :সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের পরিচালন মুনাফা কমেছে। আমরা একটা খসড়া হিসাব করি যে, পরিচালন মুনাফার ২০ শতাংশের মতো নিট মুনাফা হয়। ২০১৩ সালে পরিচালন মুনাফা থেকে কর ও প্রভিশন রাখার পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা যা দাঁড়াবে, তা আগের বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম হবে বলে ধারণা করছি। অনেকের জন্য ভালো লভ্যাংশ দেওয়া কঠিন হবে।
সমকাল :বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, প্রভিশন সংরক্ষণে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। এর প্রভাব কেমন হবে?
ইফতেখার :ব্যাংকগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। এ কারণে ২০১৩ সালের হিসাব কষলে দেখা যাবে, ব্যাংকগুলো বেঁচে থাকবে। একজন ঋণ গ্রহীতা পণ্য উৎপাদন করে বিক্রি করতে না পারলে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করবেন কীভাবে। এ কারণে ব্যাংকগুলো কেস টু কেস ভিত্তিতে উদ্যোক্তাদের ঋণের মেয়াদ বাড়াচ্ছে। ডাউনপেমেন্ট ছাড়া পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই ছাড় না দিলে অবস্থা খুব খারাপ হতো।
সমকাল :২০১৪ সালে ব্যাংকের ব্যবসা কেমন যাবে বলে মনে করছেন?
ইফতেখার :২০১৩ সালে আমরা ভালো ব্যবসা করতে পারিনি। যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে যায়, তাতে ব্যাংক খাতের অবস্থা আরও খারাপ হবে। সমস্যা আরও বাড়বে। কেননা ২০১৩ সালের কিছু সমস্যা নতুন বছরে নিয়ে এসেছি। এর সঙ্গে যোগ হবে এ বছরের সমস্যা। দু'বছরের সমস্যা নিয়ে এবার ব্যবসা খুব একটা ভালো যাবে বলে মনে হয় না। ব্যাংকগুলোকে টিকে থাকতে হলে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে ব্যাংক খাত ভালো ব্যবসা করতে পারবে। এ কারণে আমাদের সবারই কাম্য, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক।
সমকাল :গত বছর খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ কী মনে করেন?
ইফতেখার :চারটি কারণে ২০১৩ সালে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। প্রথমত, হরতাল-অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণীকরণ। তৃতীয়ত, বিভিন্ন কারণে জাহাজ নির্মাণ, আবাসনসহ বিভিন্ন খাত ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী আছেন, যারা সব সময়ই এ ধরনের সময়ের অপেক্ষায় থাকেন। তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে থাকেন। নতুন বছরে খেলাপি ঋণ আদায়ের ওপর ব্যাংকগুলোকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে নিজ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
সমকাল :রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব সুবিধা দিয়েছে, ব্যাংকগুলো তা কতটা কাজে লাগাতে পারছে?
ইফতেখার :পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংকগুলো নিজেদের থেকেই কিছু গ্রাহকের ঋণ পুনঃতফসিল, ঋণের মেয়াদ বাড়ানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সময় দিয়েছে। ব্যাংকগুলো প্রকৃত গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সব সময়ই আগ্রহী থাকে। অনেক সময় অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে অনেক ব্যাংক এলসি খুলছে না। এ অভিযোগ একেবারে সঠিক নয়। প্রকৃত কোনো গ্রাহক এলসি খুলতে পারেননি_ এমন নজির নেই। তবে হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহসহ বিভিন্ন বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে এলসি খোলার ক্ষেত্রে কেউ কেউ কিছুটা সতর্কতা দেখাচ্ছে।
সমকাল :দেশে বিনিয়োগে ধীরগতি থাকলেও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে; বিষয়টি আসলে কী?
ইফতেখার :পণ্য আমদানি-রফতানির আড়ালে কেউ অর্থ পাচার করলে সেটা ধরা খুব কঠিন কাজ। যেমন, ব্যাংকে এলসি খোলার সময় কেউ বলল, এই যন্ত্রের দাম এক মিলিয়ন ইউরো। ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেল, এক মিলিয়ন ইউরোর ওই ধরনের মেশিন রয়েছে। আবার এর চেয়ে অনেক কম দামেও একই ধরনের মেশিন বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কেউ কম দামের পণ্য এনে বেশি দামের কথা বললে সেটা যাচাই করা খুব কঠিন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষেও এটা ধরা কঠিন। তার পরও ব্যাংকগুলো এ ক্ষেত্রে সতর্ক রয়েছে।
সমকাল :নতুন বছরে ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
ইফতেখার :ইস্টার্ন ব্যাংক আগের মতোই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং খেলাপি ঋণ আদায় এ দুটি বিষয়কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সমকাল :এবিবি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
ইফতেখার :ব্যাংকের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে এবিবির কর্মকাণ্ড বিভিন্ন পক্ষকে জানানো হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে সাব-কমিটি করে একেকটি কমিটি একেক ধরনের দায়িত্ব পালন করবে।
সমকাল :ব্যাংকগুলোর করপোরেট কর কমানোর দাবির বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে?
ইফতেখার :ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফার ওপর বর্তমানে সাড়ে ৪২ শতাংশ হারে কর দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে করপোরেট কর কমানোর দাবি করা হলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার কিছুটা হলেও ছাড় দেবে বলে আমরা আশা করছি।
No comments