অবশেষে ঐকমত্যের সরকার:আজ শপথ by শাহেদ চৌধুরী ও শরীফুল ইসলাম
সামনে
অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুনে-পুরাতনে 'ঐকমত্যে'র সরকার গঠন করছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নয়া মন্ত্রিসভার সদস্যরা আজ রোববার বিকেল সাড়ে
৩টায় বঙ্গভবনে শপথ নেবেন। শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
জাতীয় পার্টিসহ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বেশিরভাগ দলের অংশগ্রহণে সরকার গঠন
করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় থাকছেন পার্টির
তিন প্রেসিডিয়াম সদস্য। ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে যাত্রা
শুরু করছে নতুন সরকার। নির্বাচনের আগে থেকে দেশব্যাপী শুরু হওয়া রাজনৈতিক
সহিংসতা এখন কিছুটা কমে এলেও সরকার স্বস্তিতে নেই। ইতিমধ্যে শক্ত হাতে যে
কোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন
সরকারে অনেক বিতর্কিত সাবেক মন্ত্রী ও নেতা বাদ পড়ছেন। কেউ কেউ রয়ে গেছেন।
যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন মুখ। তাদের অনেকে নবীন, কেউ কেউ প্রবীণ। প্রধান
বিরোধী দল বিএনপি এ নির্বাচনকে 'তামাশা' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। উন্নয়ন
সহযোগীরাও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, দেশজুড়ে বিরাজমান সংক্ষুব্ধ রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করাই নতুন সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই বিএনপিকে সামাল দিতে হবে সরকারকে। এরপর জামায়াতের সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত এবং যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকরের মতো শক্ত পরিস্থিতিও মোকাবেলা করতে হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠানে সরকার গঠনের পর পরই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
গতকাল শনিবার নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) শীর্ষ নেতারা নতুন মন্ত্রিসভায় থাকবেন। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার সদস্যরা থাকবেন বিরোধী দলে। গতকাল রাতে মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের বিষয়ে জাতীয় পার্টি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় থাকছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙা। শপথ গ্রহণের পর আজকের মধ্যেই নতুন মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করার প্রস্তুতি রয়েছে। মন্ত্রীদের শপথের পর প্রধানমন্ত্রী তার উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেবেন।
নয়া মন্ত্রিসভায় কমপক্ষে ২৭ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা আপাতত ৫০-এর মধ্যে সীমিত থাকতে পারে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য প্রায় এক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন। তবে জামায়াতে ইসলামের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩২ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ইতিমধ্যে সংবিধান অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, আজ শপথ গ্রহণের জন্য শেখ হাসিনা মাঝারি আকারের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। পুরনো ও নতুনদের সংমিশ্রণে গড়া নয়া মন্ত্রিসভায় একাধিক টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীও থাকছেন। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন এমপিও মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন। নয়া মন্ত্রিসভায় অপেক্ষাকৃত তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আমলা, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিও রয়েছেন মন্ত্রিসভায়। ২৯ সদস্যের বর্তমান সর্বদলীয় সরকারের একাধিক হোমরা-চোমরা বাদ পড়ছেন।
নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বেলায় শেখ হাসিনা আত্মীয়তা, অভিযুক্ত ও কথিত সংস্কারবাদীদের বিষয়ে বেশ সংযত। মন্ত্রিসভায় পুরনো ১৯ জেলার এমপিরা প্রাধান্য পেয়েছেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে মন্ত্রিসভায় না রেখে সাংগঠনিক দায়িত্বে রাখা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন_ এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগদলীয় এমপিদের আগ্রহ বেশি। এ নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছেন সর্বদলীয় সরকার গঠনের আগে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও। সবাই উদগ্রীব হয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সর্বশেষ খবর রাখছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সাত বিভাগের প্রতিনিধি থাকছেন নতুন মন্ত্রিসভায়। এ ছাড়াও পুরনো ১৯ জেলায়ও মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। কোনো জেলার প্রতিনিধি বাদ পড়লে সংশ্লিষ্ট জেলার যে কোনো একজন এমপিকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় হুইপ করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। কমপক্ষে তিন দফায় বিজয়ী এমপিদের অনেকেই এবারকার মন্ত্রিসভায় থাকবেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। এসব এমপির অনেকেই অচেনা; কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞ। এ কারণেই তাদের মন্ত্রিসভায় রাখতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে ওইসব এমপির অভিজ্ঞতা প্রশাসনিক কাজে লাগানোর উদ্যোগ রয়েছে। সমকাল গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের তালিকা সংগ্রহ করেছে। তবে এই তালিকায় শেষ মুহূর্তে রদবদলও হতে পারে।
তারকারা থাকছেন : নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদের দুই সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। এবার তারা মন্ত্রিসভায় থাকছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ওবায়দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মন্ত্রিসভায় থাকছেন।
এ ছাড়াও দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক নুুরুল ইসলাম নাহিদ, ফরিদপুর-৩ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কুমিল্লা-১১ আসনের এমপি মুজিবুল হক, মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খান এবং ময়মনসিংহ-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সর্বদলীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারও মন্ত্রিসভায় থাকছেন।
কক্ষচ্যুত তারকা : মহাজোট সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীরউত্তম নতুন সরকারে থাকছেন না। তার ভাতিজা খন্দকার আজিজুল হক আরজু পাবনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সাবেক শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, সাবেক বিমানমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক মৎস্যমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এনামুল হক, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, সাবেক বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী বাদ পড়ছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
নতুন মুখ : মন্ত্রিসভায় থাকছেন অনেক নতুন মুখ। তাদের মধ্যে রয়েছেন নীলফামারী-২ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান নূর, জামালপুর-৩ আসনের এমপি মির্জা আজম, চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের এমপি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, ঢাকা-৩ আসনের এমপি নসরুল হামিদ বিপু, নাটোর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক, গাজীপুর-৪ আসনের এমপি সিমিন হোসেন রিমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, নওগাঁ-৪ আসনের এমপি ইমাজউদ্দিন প্রামানিক, বান্দরবানের বীর বাহাদুর উশৈ সিং, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, খুলনা-৫ আসনের এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, শেরপুর-১ আসনের এমপি আতিউর রহমান আতিক, গাজীপুর-১ আসনের এমপি আ ক ম মোজাম্মেল হক, মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি সৈয়দ মহসিন আলী, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মানিকগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এমপি ছায়েদুল হক, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এমএ মান্নান, পাবনা-৪ আসনের এমপি শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদার, ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নেত্রকোনা-২ আসনের এমপি আরিফ খান জয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এ দফায় না হলেও পরবর্তী সময়ে মন্ত্রী হতে পারেন।
অনিশ্চয়তা : মহাজোট এবং সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নতুন মন্ত্রিসভায় থাকা না-থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। মন্ত্রিসভায় স্থান না পেলেও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়ার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা থাকার সম্ভাবনা বেশি। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, এবং বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ ছাড়াও সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা, সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন, সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মজিবুর রহমান ফকির, সাবেক মৎস্য প্রতিমন্ত্রী আবদুল হাইয়ের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কম।
নতুন আইনমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মহাজোট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। এবার তাকে আইনমন্ত্রী করার কথা শোনা গেলেও শেষতক তা হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আইনমন্ত্রী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম আবারও আইন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন বলে শোনা গেছে।
কে হচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন না_ এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে আপাতত পররাষ্ট্রমন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে আগ্রহী।
মুহিত অর্থমন্ত্রী :অর্থমন্ত্রী কে হচ্ছেন এ নিয়ে নানা গুজব-গুঞ্জন রয়েছে। নির্বাচনের পর আবুল মাল আবদুল মুহিতকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন ওঠে। তার বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন সরকারের নাম আলোচনায় উঠে আসে। কিন্তু পরে সেটা কেটে গেছে। শেষতক আবুল মাল আবদুল মুহিতই অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মহাজোট সরকারে উপমন্ত্রী না থাকলেও নতুন সরকারে দু'জন উপমন্ত্রী থাকছেন। তাদের মধ্যে থাকতে পারেন ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নেত্রকোনা-২ আসনের এমপি আরিফ খান জয়।
টেকনোক্র্যাট : ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এবং জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাত টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হচ্ছেন।
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ড. গওহর রিজভীকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, দেশজুড়ে বিরাজমান সংক্ষুব্ধ রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করাই নতুন সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই বিএনপিকে সামাল দিতে হবে সরকারকে। এরপর জামায়াতের সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত এবং যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকরের মতো শক্ত পরিস্থিতিও মোকাবেলা করতে হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠানে সরকার গঠনের পর পরই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
গতকাল শনিবার নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) শীর্ষ নেতারা নতুন মন্ত্রিসভায় থাকবেন। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার সদস্যরা থাকবেন বিরোধী দলে। গতকাল রাতে মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের বিষয়ে জাতীয় পার্টি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় থাকছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙা। শপথ গ্রহণের পর আজকের মধ্যেই নতুন মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করার প্রস্তুতি রয়েছে। মন্ত্রীদের শপথের পর প্রধানমন্ত্রী তার উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেবেন।
নয়া মন্ত্রিসভায় কমপক্ষে ২৭ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা আপাতত ৫০-এর মধ্যে সীমিত থাকতে পারে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য প্রায় এক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন। তবে জামায়াতে ইসলামের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩২ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ইতিমধ্যে সংবিধান অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, আজ শপথ গ্রহণের জন্য শেখ হাসিনা মাঝারি আকারের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। পুরনো ও নতুনদের সংমিশ্রণে গড়া নয়া মন্ত্রিসভায় একাধিক টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীও থাকছেন। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন এমপিও মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন। নয়া মন্ত্রিসভায় অপেক্ষাকৃত তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আমলা, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিও রয়েছেন মন্ত্রিসভায়। ২৯ সদস্যের বর্তমান সর্বদলীয় সরকারের একাধিক হোমরা-চোমরা বাদ পড়ছেন।
নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বেলায় শেখ হাসিনা আত্মীয়তা, অভিযুক্ত ও কথিত সংস্কারবাদীদের বিষয়ে বেশ সংযত। মন্ত্রিসভায় পুরনো ১৯ জেলার এমপিরা প্রাধান্য পেয়েছেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে মন্ত্রিসভায় না রেখে সাংগঠনিক দায়িত্বে রাখা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন_ এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগদলীয় এমপিদের আগ্রহ বেশি। এ নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছেন সর্বদলীয় সরকার গঠনের আগে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও। সবাই উদগ্রীব হয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সর্বশেষ খবর রাখছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সাত বিভাগের প্রতিনিধি থাকছেন নতুন মন্ত্রিসভায়। এ ছাড়াও পুরনো ১৯ জেলায়ও মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। কোনো জেলার প্রতিনিধি বাদ পড়লে সংশ্লিষ্ট জেলার যে কোনো একজন এমপিকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় হুইপ করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। কমপক্ষে তিন দফায় বিজয়ী এমপিদের অনেকেই এবারকার মন্ত্রিসভায় থাকবেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। এসব এমপির অনেকেই অচেনা; কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞ। এ কারণেই তাদের মন্ত্রিসভায় রাখতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে ওইসব এমপির অভিজ্ঞতা প্রশাসনিক কাজে লাগানোর উদ্যোগ রয়েছে। সমকাল গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের তালিকা সংগ্রহ করেছে। তবে এই তালিকায় শেষ মুহূর্তে রদবদলও হতে পারে।
তারকারা থাকছেন : নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদের দুই সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। এবার তারা মন্ত্রিসভায় থাকছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ওবায়দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মন্ত্রিসভায় থাকছেন।
এ ছাড়াও দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক নুুরুল ইসলাম নাহিদ, ফরিদপুর-৩ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কুমিল্লা-১১ আসনের এমপি মুজিবুল হক, মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খান এবং ময়মনসিংহ-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সর্বদলীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারও মন্ত্রিসভায় থাকছেন।
কক্ষচ্যুত তারকা : মহাজোট সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীরউত্তম নতুন সরকারে থাকছেন না। তার ভাতিজা খন্দকার আজিজুল হক আরজু পাবনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সাবেক শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, সাবেক বিমানমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক মৎস্যমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এনামুল হক, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, সাবেক বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী বাদ পড়ছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
নতুন মুখ : মন্ত্রিসভায় থাকছেন অনেক নতুন মুখ। তাদের মধ্যে রয়েছেন নীলফামারী-২ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান নূর, জামালপুর-৩ আসনের এমপি মির্জা আজম, চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের এমপি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, ঢাকা-৩ আসনের এমপি নসরুল হামিদ বিপু, নাটোর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক, গাজীপুর-৪ আসনের এমপি সিমিন হোসেন রিমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, নওগাঁ-৪ আসনের এমপি ইমাজউদ্দিন প্রামানিক, বান্দরবানের বীর বাহাদুর উশৈ সিং, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, খুলনা-৫ আসনের এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, শেরপুর-১ আসনের এমপি আতিউর রহমান আতিক, গাজীপুর-১ আসনের এমপি আ ক ম মোজাম্মেল হক, মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি সৈয়দ মহসিন আলী, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মানিকগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এমপি ছায়েদুল হক, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এমএ মান্নান, পাবনা-৪ আসনের এমপি শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদার, ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নেত্রকোনা-২ আসনের এমপি আরিফ খান জয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এ দফায় না হলেও পরবর্তী সময়ে মন্ত্রী হতে পারেন।
অনিশ্চয়তা : মহাজোট এবং সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নতুন মন্ত্রিসভায় থাকা না-থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। মন্ত্রিসভায় স্থান না পেলেও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়ার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা থাকার সম্ভাবনা বেশি। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, এবং বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ ছাড়াও সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা, সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন, সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মজিবুর রহমান ফকির, সাবেক মৎস্য প্রতিমন্ত্রী আবদুল হাইয়ের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কম।
নতুন আইনমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মহাজোট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। এবার তাকে আইনমন্ত্রী করার কথা শোনা গেলেও শেষতক তা হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আইনমন্ত্রী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম আবারও আইন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন বলে শোনা গেছে।
কে হচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন না_ এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে আপাতত পররাষ্ট্রমন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে আগ্রহী।
মুহিত অর্থমন্ত্রী :অর্থমন্ত্রী কে হচ্ছেন এ নিয়ে নানা গুজব-গুঞ্জন রয়েছে। নির্বাচনের পর আবুল মাল আবদুল মুহিতকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন ওঠে। তার বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন সরকারের নাম আলোচনায় উঠে আসে। কিন্তু পরে সেটা কেটে গেছে। শেষতক আবুল মাল আবদুল মুহিতই অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মহাজোট সরকারে উপমন্ত্রী না থাকলেও নতুন সরকারে দু'জন উপমন্ত্রী থাকছেন। তাদের মধ্যে থাকতে পারেন ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নেত্রকোনা-২ আসনের এমপি আরিফ খান জয়।
টেকনোক্র্যাট : ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এবং জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাত টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হচ্ছেন।
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ড. গওহর রিজভীকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
No comments