উপাচার্য আমি আর আমরা!
পারিবারিক ব্যবসা প্রচলিত, পারিবারিক রাজনীতিও কম প্রচলিত নয়। তাই একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার ঘটনাও বিচিত্র কিছু নয়। সব সম্ভবের দেশে এটাও সম্ভব যে একজন উপাচার্য তাঁর ভাই, ভায়রা, কন্যা, ভাগনি, দূরসম্পর্কের শ্যালক আর ভাইঝির দেবরসহ কাছে-দূরের আত্মীয়স্বজন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন! এ রকম দায়িত্বশীল অভিভাবক কজন আছেন? কতজন পারেন বাসার পাচক-ড্রাইভার ইত্যাদিকে সরকারি অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি জুটিয়ে দিতে? দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের ৪৩টি পদের ২২টিই যিনি এলাকাবাসীকে দিয়ে ভরাতে পারেন, তাঁর মতো জনদরদি আর কে আছেন? ধন্য রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ধন্য তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়। দুর্ভাগ্য কেবল শিক্ষার্থীদের আর উচ্চশিক্ষার।
গত বুধবারের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত না হলে দেশবাসী এ রকম এক স্বজনপ্রিয়, বন্ধুবৎসল, এলাকা-অন্তঃপ্রাণ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারত না। তাঁর কৃতিত্ব তুলনাহীন, মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর নিয়োগ পাওয়ামাত্রই অল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পরিবার-পরিজন দিয়ে ভরিয়ে ফেলতে পারা কম কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রারও কম যান না, অনিয়মের পাহাড়ে বসে থেকেও এসব তাঁর চোখে ‘চাঁদের কলঙ্ক’ মাত্র। চাঁদের কলঙ্ক চাঁদের সৌন্দর্য বাড়ায়, উপাচার্যের কলঙ্ক নিশ্চয়ই তাঁর ‘যোগ্যতা ও সুনামের’ প্রমাণ। এমন তুখোড় যিনি, শিক্ষক নিয়োগের বেলায়ও তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁকে কেবল চাঁদ বলে খাটো না করে নক্ষত্রই বলা উচিত।
কান টানলে মাথা আসে, দুর্নীতির ব্যাপারে অর্থকড়ির বিষয় থাকবেই। এতসব নিয়োগের বিনিময়ে কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন কি না, কেউ তার ভাগ পেয়েছেন কি না তা জানা দরকার। জানা দরকার এই অনিয়মের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের কোনো ব্যাপার জড়িত ছিল কি না? সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কি এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিল? জানলে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?
ঘটনাটি চরম হলেও বিরল নয়। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেই এ রকম আত্মীয়করণ, দলীয়করণ, অনুগতকরণের ঘটনা গণমাধ্যমে আসে। অবস্থা এমন, যে যেভাবে পারেন পদ, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা খাটিয়ে এ রকম স্বেচ্ছাচার চালান। এ ধারা আর কতকাল চলবে?
গত বুধবারের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত না হলে দেশবাসী এ রকম এক স্বজনপ্রিয়, বন্ধুবৎসল, এলাকা-অন্তঃপ্রাণ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারত না। তাঁর কৃতিত্ব তুলনাহীন, মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর নিয়োগ পাওয়ামাত্রই অল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পরিবার-পরিজন দিয়ে ভরিয়ে ফেলতে পারা কম কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রারও কম যান না, অনিয়মের পাহাড়ে বসে থেকেও এসব তাঁর চোখে ‘চাঁদের কলঙ্ক’ মাত্র। চাঁদের কলঙ্ক চাঁদের সৌন্দর্য বাড়ায়, উপাচার্যের কলঙ্ক নিশ্চয়ই তাঁর ‘যোগ্যতা ও সুনামের’ প্রমাণ। এমন তুখোড় যিনি, শিক্ষক নিয়োগের বেলায়ও তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁকে কেবল চাঁদ বলে খাটো না করে নক্ষত্রই বলা উচিত।
কান টানলে মাথা আসে, দুর্নীতির ব্যাপারে অর্থকড়ির বিষয় থাকবেই। এতসব নিয়োগের বিনিময়ে কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন কি না, কেউ তার ভাগ পেয়েছেন কি না তা জানা দরকার। জানা দরকার এই অনিয়মের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের কোনো ব্যাপার জড়িত ছিল কি না? সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কি এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিল? জানলে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?
ঘটনাটি চরম হলেও বিরল নয়। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেই এ রকম আত্মীয়করণ, দলীয়করণ, অনুগতকরণের ঘটনা গণমাধ্যমে আসে। অবস্থা এমন, যে যেভাবে পারেন পদ, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা খাটিয়ে এ রকম স্বেচ্ছাচার চালান। এ ধারা আর কতকাল চলবে?
No comments