কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'আবিষ্কার কাজী' by মাসুম বিল্লাহ
বুঝলি রাব্বি! বিজ্ঞানের নিত্য নতুন আবিষ্কার আমার কাছে ভীষণ ভাল লাগে। ধর আমি যদি আরো ৫০ বছর পরে জন্মাতাম তবে তখন বিজ্ঞানের নজরকাড়া অনেক বেশি কিছু আমি দেখতে পেতাম।
ইশ্! আমি যদি বিজ্ঞানী হতে পারতাম- জীবনটা ধন্য মনে হতো।
হ্যাঁ, বুঝেছি। আর তুই যখন ধরতেই বলেছিস তখন তুই ধর এর চেয়েও আরো ৫০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেছিস্। তখন কি তুই দেখতে পেতি না অনেক কিছু আবিষ্কৃত হয়ে গেছে? আর তোর বিজ্ঞানী হওয়া? হুঁ! যা স্বপ্ন তোর, না হেসে পারি না। আচ্ছা বলতো তুই কী আবিষ্কার করতে চাস্?
মুন্না বললো, ধর ঐ চারাগাছটা একটা বীজ থেকে কেমন করে গাছে পরিণত হলো, যার কোনো তার নেই, আইসি নেই। কিভাবে সম্ভব? মনে কর আমার এমন এক সময় জন্ম হলো ঠিক তখন বিজ্ঞানীরা এমন একটি ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করলেন যেটা কিছু দিনের ভেতরে মোবাইলে পরিণত হবে। তার পর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে কম্পিউটারে পরিণত হবে। সেখান থেকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার, তার পর সুপার কম্পিউটার তার পর এর চেয়েও অনেক বড় কিছু।
তুই কি পাগল নাকি? মুন্নার কথার পিঠে রাব্বি বলল। এসব কোন দিন সম্ভব হবে না। কোন মানুষ গবেষকের পক্ষে এসব করা অসম্ভব, বুঝেছিস।
ওহ! তুই বুঝিস্ না। বিরক্ত হয় মুন্না। ধর একটা মোটর সাইকেল আমি তৈরি করবো। কিছুদিনের মধ্যে সেটা তেল খেয়ে খেয়ে জিপে পরিণত হবে। সেখান থেকে বাস তার পর অ্যারোপ্লেন তার পর জাহাজ। এটা কি মজার জিনিস না? তোর কি বিমানে চড়ার শখ নেই? জাহাজে চড়ার শখ নেই? বল!
হ্যাঁ আছে , তবে তোর মত এমন কল্পনা আমার মনে হয় কোন পাগলেও করে না।
দেখ রাব্বি, আমি একটা বিষয় গবেষণা করছি, আর তুই আমাকে পাগল বলছিস! তাহলে এবার আমি তোকে একটা বাস্তব উদাহরণ দিই। ধর তুই ছোটবেলায় প্রাইমারি স্কুলে পড়েছিস। সেখান থেকে এখন হাইস্কুলে। হাইস্কুল পাস হলে তারপর যাবি কলেজে এবং সেখান থেকে ভার্সিটিতে। তাহলে বল প্রাইমারি থেকে ভার্সিটি বৃদ্ধি পেয়েছে কি-না?
হা-হা-হা.., হাসে রাব্বি। আসলেই তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। খবরটা খুব দ্রুত তোর বাবা মা-কে জানানো দরকার। আমার ভয়ই লাগছে কেন তুই এসব কথা ভাবছিস।
শোন রাব্বি, তুই আমার কথা বুঝতে চেষ্টা কর, আমিও তো একজন বিজ্ঞানী হতে চাই। আর বিজ্ঞানের কাজই নতুন নতুন কিছু আবিষ্কার করা। বাদ দিই, তুই ওসব কথা শুনতে চাস না। তাহলে শোন, আমি তোকে বলি, ধর আমি এমন একটি এনালগ সিস্টেমের লাঠি তৈরি করলাম যেটা দিয়ে আমাদের নকুল স্যার ক্লাস করাতে এলেন। যখন তিনি সেটা দিয়ে আমাদেরকে মারতে যাবেন অমনি সেটা কলমে পরিণত হলো। আবার যখন সেটা দিয়ে তিনি আমাদেরকে অঙ্ক করাতে যাবেন অমনি সেটা লাঠিতে পরিণত হবে। স্যার তখন আর আমাদেরকে মারতে পারবে না। দারুণ মজা হবে না বল?
সেটা করতে পারলে ভালই হয়, একটু নরম হলো রাব্বি। তবে কি জানিস! তুই, তোর অন্য সকল শুভাকাক্সক্ষী মিলেও যদি চেষ্টা করিস্ তাহলেও সম্ভব হবে না।
তোর এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক, কারণ বিজ্ঞান নিয়ে তোর একদমই আগ্রহ নেই। তোদের বংশের কেউ বিজ্ঞানীও ছিলেন না। কিন্তু দেখ রাব্বি, আমার আব্বা একজন বিজ্ঞানী। তাইতো আমি এসব বিষয় চিন্তা করছি।
হ্যাঁ বুঝেছি, সেদিন আমি তোর আব্বুকে কী একটা জিনিস নিয়ে গবেষণা করতে দেখেছি।
তাহলেই বোঝ, আমার রক্তে মিশে আছে বিজ্ঞানীর লক্ষণ।
যাক, আমিও তোকে দোয়া করি তুই যাতে একজন ভালো বিজ্ঞানী হতে পারিস। আর সবচেয়ে বেশি দোয়া করি যাতে তুই সেই লাঠিটা খুব দ্রুত তৈরি করতে পারিস। আর শোন, তোর কলমটা আমাকে দিয়ে যা।
কেন? তুই আমার কলম দিয়ে কী করবি? জিজ্ঞেস করল মুন্না।
রাব্বি জবাবে বলল, আমার কলমটা হারিয়ে গেছে, বাসায় গিয়ে আম্মুকে বললে আমাকে ভীষণ বকা দেবে। ভয় করিস না, কাল আবার তোকে ফেরত দিয়ে দেব।
মুন্না বলল, এতো করে যখন বলছিস তখন না দিয়ে উপায় কী। নে-ধর আমার ব্যাগটা। আমি ব্যাগের পকেট থেকে তোকে বের করে দিচ্ছি।
যেই না ব্যাগের পকেট খুলল মুন্না, অমনি সেখান থেকে একটি বড় লাঠি বের হলো। চমকে উঠে জিজ্ঞেস করল মুন্না, কিরে রাব্বি, এটা এলো কোথা থেকে? আমার কলম কোথায়?
রাব্বি বলল, আমার মনে হয় তোর কলমটা লাঠিতে পরিণত হয়েছে। বলতে দেরি, ব্যাগটা ফেলে রেখে দৌড়ে পালাতে একদম দেরি করল না। একশ মাইল বেগে দৌড়!
মুন্না তো হতভম্ব হয়ে গেল। এটা কিভাবে সম্ভব? সে তো এখনও গবেষণা শুরুই করেনি। তাহলে কলম লাঠিতে পরিণত হলো কিভাবে?
মুখ তুলে রাব্বির গমন পথের দিকে তাকাল ও।
==============================
কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'ছায়াহীন আগন্তুক' by আমিনুল ইসলাম আকন্দ কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'জায়ান্ট হান্টার' by মহিউদ্দিন আকবর গল্প- 'হাসে বাঁকা চাঁদ' by আহসান হাবিব বুলবুল গল্প- 'বড়বাড়ির জঙ্গলে' by শরীফ আবদুল গোফরান গল্প- 'পরিবর্তন' by বিশ্বাস আবুল কালাম গল্প- 'মিতুর জ্যোৎস্না রাত' by আবদুল্লাহ আল হোসাইন গল্প- 'জিয়ানার আনন্দ-অভিমান' by বেগম রাজিয়া হোসাইন গল্প- 'এক মুঠো স্বপ্ন' by কাজী রিচি ইসলাম গল্প- 'মাটির গন্ধ' by জুবায়ের হুসাইন গল্প- 'বোকাইকে কেউ বুঝি ডাকলো' by ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ গল্প- 'নাকিবের একা একা ঝিল দেখা' by হারুন ইবনে শাহাদাত গল্প- 'উসামার বায়না ও আইলার জন্য ভালোবাসা' by চেমনআরা গল্প- 'উরুমকিতে আর্তনাদ' by আহমদ মতিউর রহমান গল্প- 'টবের গোলাপ' by দিলারা মেসবাহ রম্য গল্প- 'তুচ্ছ ঘটনা' by মোহাম্মদ লিয়াকত আলী গল্প- 'নদী কত দূর' by অজিত হরি সাহু, অনুবাদ- হোসেন মাহমুদ গল্প- 'নতুন জীবনের গল্প' by মুহিব্বুর রহমান রাফে গল্প- 'বুবুর জন্য' by জুবায়ের হুসাইন গল্প- 'দ্বীপ রহস্য-০০১' by হারুন ইবনে শাহাদাত গল্প- 'নীয়নের মোবাইল পকেট' by ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ গল্প- 'শুভরা জানতে চায়' by জুবাইদা গুলশান আরা গল্প- 'জোড়া ঘোড়া' by মাখরাজ খান গল্প- 'গর্ব' by আবদুল ওহাব আজাদ গল্প- 'তিতিরের ঘুড়ি' by ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ গল্প- 'একটি বাঘের কথা' by মুহম্মদ জাফর ইকবাল
কিশোরকন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ কাজী মাসুম বিল্লাহ
এই গল্প'টি পড়া হয়েছে...
লেখকঃ কাজী মাসুম বিল্লাহ
এই গল্প'টি পড়া হয়েছে...
No comments