সচিব পদে রদবদল
জনপ্রশাসনের ২১ সচিব পদের রদবদল এবং চারজনের ওএসডি হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে। এ সরকারের ২২ মাসের শাসনামলে জনপ্রশাসনে একসঙ্গে এত বড় রদবদল আর ঘটেনি। সাধারণভাবে মনে করা হয়, এ ধরনের রদবদলের পেছনে সরকারের দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করে থাকে। অবশ্য সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউকে ওএসডি করা, কিংবা এক পদ থেকে অন্য পদে দেওয়া হয়নি।
সরকারের মোট ৪৭টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২১টির সচিব পদে একসঙ্গে রদবদলের অর্থ বলা চলে, গোটা সরকারের প্রায় অর্ধাংশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে পরিবর্তন। একসঙ্গে এত বড় পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সরকার বোধ করেছে—এটা স্বস্তিকর নয়। যেমন স্বস্তিকর ছিল না খোদ প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ যে জনপ্রশাসনে গতিশীলতার পথে বাধা তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসনযন্ত্রের ভেতরেই যদি নিজস্ব গতিশীলতার প্রতিবন্ধকতা কাজ করে, তবে তা ভালো কথা নয়। এই প্রতিবন্ধকতার স্বরূপ যদি রাজনৈতিক হয়, তবে তা প্রজাতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। সহজ কথায়, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে গুরুত্বপ্রাপ্ত বা সমাদৃত কর্মকর্তারা যদি পরবর্তী সরকারের আমলে অবহেলিত বা ওএসডি হন এবং তার কারণ যদি হয় সম্পূর্ণভাবে ওই কর্মকর্তার দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্য, তবে জনপ্রশাসনের দক্ষতা ও গতিশীলতা অনিশ্চিত ও ভঙ্গুর হয়ে পড়তে বাধ্য। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সচিবসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৪৬ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল, ১৫ সচিব পদে রদবদল করেছিল এবং সাতজন সচিবকে ওএসডি করেছিল। আর বর্তমান মহাজোট সরকার গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মধ্যে ১০ সচিবকে ওএসডি করেছে। সর্বশেষ চার সচিবের ওএসডি হওয়ার পর সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ওএসডির সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭৩। এটা স্পষ্টতই জনপ্রশাসনের গতিশীলতা নির্দেশ করে না, বরং জনবল ও অর্থের বিপুল অপচয়েরই দৃষ্টান্ত।
মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে ঘন ঘন রদবদল কাজের ধারাবাহিকতা ও গতিশীলতা ক্ষুণ্ন করে। কিন্তু দলীয় রাজনৈতিক ধারায় জনপ্রশাসনে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে রদবদল অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে বলেই সম্ভবত আমরা গত কয়েক মেয়াদে এ ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে আসছি। এমনকি ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আগের আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগ করা সব জেলা প্রশাসককে একসঙ্গে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ কাজটি করেছিল সম্ভবত এই ধারণা থেকে যে ওই জেলা প্রশাসকেরা নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ না-ও করতে পারেন। অর্থাৎ জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের দলীয় আনুগত্যের অভিযোগ বা ধারণা যা-ই বলা হোক না কেন, এক জটিল বাস্তবতা হয়ে উঠেছে।
সচিবদের এই রদবদল জনপ্রশাসনের গতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক হবে—এই প্রত্যাশা পূরণ হোক। তবে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান যেমনটি বলেছেন, রদবদলের পরও যদি জনপ্রশাসনের কাজে গতিশীলতা সৃষ্টি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, খোদ পদ্ধতির মধ্যেই ত্রুটি আছে। আমাদের মনে হয়, জনপ্রশাসন পরিচালনা, তথা পদায়ন-পদোন্নতি-বদলির পুরো ব্যবস্থাটি নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার সময় এসেছে।
সরকারের মোট ৪৭টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২১টির সচিব পদে একসঙ্গে রদবদলের অর্থ বলা চলে, গোটা সরকারের প্রায় অর্ধাংশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে পরিবর্তন। একসঙ্গে এত বড় পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সরকার বোধ করেছে—এটা স্বস্তিকর নয়। যেমন স্বস্তিকর ছিল না খোদ প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ যে জনপ্রশাসনে গতিশীলতার পথে বাধা তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসনযন্ত্রের ভেতরেই যদি নিজস্ব গতিশীলতার প্রতিবন্ধকতা কাজ করে, তবে তা ভালো কথা নয়। এই প্রতিবন্ধকতার স্বরূপ যদি রাজনৈতিক হয়, তবে তা প্রজাতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। সহজ কথায়, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে গুরুত্বপ্রাপ্ত বা সমাদৃত কর্মকর্তারা যদি পরবর্তী সরকারের আমলে অবহেলিত বা ওএসডি হন এবং তার কারণ যদি হয় সম্পূর্ণভাবে ওই কর্মকর্তার দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্য, তবে জনপ্রশাসনের দক্ষতা ও গতিশীলতা অনিশ্চিত ও ভঙ্গুর হয়ে পড়তে বাধ্য। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সচিবসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৪৬ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল, ১৫ সচিব পদে রদবদল করেছিল এবং সাতজন সচিবকে ওএসডি করেছিল। আর বর্তমান মহাজোট সরকার গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মধ্যে ১০ সচিবকে ওএসডি করেছে। সর্বশেষ চার সচিবের ওএসডি হওয়ার পর সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ওএসডির সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭৩। এটা স্পষ্টতই জনপ্রশাসনের গতিশীলতা নির্দেশ করে না, বরং জনবল ও অর্থের বিপুল অপচয়েরই দৃষ্টান্ত।
মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে ঘন ঘন রদবদল কাজের ধারাবাহিকতা ও গতিশীলতা ক্ষুণ্ন করে। কিন্তু দলীয় রাজনৈতিক ধারায় জনপ্রশাসনে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে রদবদল অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে বলেই সম্ভবত আমরা গত কয়েক মেয়াদে এ ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে আসছি। এমনকি ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আগের আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগ করা সব জেলা প্রশাসককে একসঙ্গে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ কাজটি করেছিল সম্ভবত এই ধারণা থেকে যে ওই জেলা প্রশাসকেরা নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ না-ও করতে পারেন। অর্থাৎ জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের দলীয় আনুগত্যের অভিযোগ বা ধারণা যা-ই বলা হোক না কেন, এক জটিল বাস্তবতা হয়ে উঠেছে।
সচিবদের এই রদবদল জনপ্রশাসনের গতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক হবে—এই প্রত্যাশা পূরণ হোক। তবে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান যেমনটি বলেছেন, রদবদলের পরও যদি জনপ্রশাসনের কাজে গতিশীলতা সৃষ্টি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, খোদ পদ্ধতির মধ্যেই ত্রুটি আছে। আমাদের মনে হয়, জনপ্রশাসন পরিচালনা, তথা পদায়ন-পদোন্নতি-বদলির পুরো ব্যবস্থাটি নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার সময় এসেছে।
No comments