দলমত-নির্বিশেষে কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখা হবে
দলমত-নির্বিশেষে কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখা হবে। এ ক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য বিষয় হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার এ কথা জানানো হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, এনবিআর গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের মতো কর ফাঁকির বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখবে কি না। জবাবে এনবিআরের সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, কর ফাঁকির বিরুদ্ধে তাঁদের দুই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি জরিমানাসহ কর আদায় করা ও অন্যটি আদালতে মামলা করা। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কর ফাঁকির মতো ঘটনায় কারও রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাছে বড় নয়।’
মূলত চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতি নিয়ে এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২১ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৭২২ কোটি টাকা বা ১০৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে দুই হাজার ২০৯ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা আশা করছি, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির এ ধারা আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এ জন্য করদাতাদের উদ্বুদ্ধকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, সারা দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু লোকবলের অভাবে সেই সব জায়গায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক মন্দার প্রভাবে আমদানি হ্রাস এবং বিনিয়োগ কম হওয়া সত্ত্বেও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি কীভাবে সম্ভব হলো—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক মাসে ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে, মন্দা কাটতে শুরু করায় আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। এসব কারণে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বকেয়া কর পরিশোধ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায় আট হাজার ৮১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ২৪ দশমিক ৮১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ আদায় হয়েছে সাত হাজার ৯৪৮ কোটি ৬৪ টাকা। আর আয়কর আদায় হয়েছে চার হাজার ৬৮০ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে অন্যান্য কর বিশেষত ভ্রমণ করের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মনে করেন, ভ্রমণ কর কমে যাওয়ার পেছনে মৌসুমগত কারণের পাশাপাশি এনবিআরের সীমাবদ্ধতাও দায়ী। তবে অন্যান্য খাতে কর আহরণের হার আরও বাড়ানো সম্ভব।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও শুল্ক আইনে কিছু কিছু সংস্কার দরকার। ইতিমধ্যে এসব আইন সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নাসিরউদ্দিন আহমেদ উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভ্যাট আইন করা হয়েছে ১৯৯১ সালে। কিন্তু এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে মূল আইনের চেয়ে বাস্তবতার অনেক অমিল তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজেও আইন ও বিধি দুটোই সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি জানান, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে একটি বড় ধরনের মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে এ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী অর্থবছরের বাজেটের অর্থবিলেই বিষয়টি সংযুক্ত করা যায়।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, চলতি বছরের বাজেটে চার লাখ নতুন করদাতাকে করের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এনবিআর জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। কাজটিতে আরও গতি আনতে উদ্বুদ্ধকরণের কাজে প্রয়োজনে বাইরের সমর্থন বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন (পিএসআই) কোম্পানির মেয়াদ আজ বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু লোকবল সমস্যা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে পিএসআই ব্যবস্থা আরও ছয় মাস থেকে এক বছর বাড়ানো হবে। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত হলো, ধীরে ধীরে এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের সদস্য জাহানারা সিদ্দিকী, ফরিদ উদ্দিন ও আবদুল মান্নান পাটোয়ারিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার এ কথা জানানো হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, এনবিআর গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের মতো কর ফাঁকির বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখবে কি না। জবাবে এনবিআরের সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, কর ফাঁকির বিরুদ্ধে তাঁদের দুই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি জরিমানাসহ কর আদায় করা ও অন্যটি আদালতে মামলা করা। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কর ফাঁকির মতো ঘটনায় কারও রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাছে বড় নয়।’
মূলত চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতি নিয়ে এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২১ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৭২২ কোটি টাকা বা ১০৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে দুই হাজার ২০৯ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা আশা করছি, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির এ ধারা আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এ জন্য করদাতাদের উদ্বুদ্ধকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, সারা দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু লোকবলের অভাবে সেই সব জায়গায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক মন্দার প্রভাবে আমদানি হ্রাস এবং বিনিয়োগ কম হওয়া সত্ত্বেও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি কীভাবে সম্ভব হলো—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক মাসে ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে, মন্দা কাটতে শুরু করায় আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। এসব কারণে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বকেয়া কর পরিশোধ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায় আট হাজার ৮১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ২৪ দশমিক ৮১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ আদায় হয়েছে সাত হাজার ৯৪৮ কোটি ৬৪ টাকা। আর আয়কর আদায় হয়েছে চার হাজার ৬৮০ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে অন্যান্য কর বিশেষত ভ্রমণ করের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মনে করেন, ভ্রমণ কর কমে যাওয়ার পেছনে মৌসুমগত কারণের পাশাপাশি এনবিআরের সীমাবদ্ধতাও দায়ী। তবে অন্যান্য খাতে কর আহরণের হার আরও বাড়ানো সম্ভব।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও শুল্ক আইনে কিছু কিছু সংস্কার দরকার। ইতিমধ্যে এসব আইন সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নাসিরউদ্দিন আহমেদ উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভ্যাট আইন করা হয়েছে ১৯৯১ সালে। কিন্তু এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে মূল আইনের চেয়ে বাস্তবতার অনেক অমিল তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজেও আইন ও বিধি দুটোই সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি জানান, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে একটি বড় ধরনের মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে এ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী অর্থবছরের বাজেটের অর্থবিলেই বিষয়টি সংযুক্ত করা যায়।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, চলতি বছরের বাজেটে চার লাখ নতুন করদাতাকে করের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এনবিআর জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। কাজটিতে আরও গতি আনতে উদ্বুদ্ধকরণের কাজে প্রয়োজনে বাইরের সমর্থন বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন (পিএসআই) কোম্পানির মেয়াদ আজ বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু লোকবল সমস্যা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে পিএসআই ব্যবস্থা আরও ছয় মাস থেকে এক বছর বাড়ানো হবে। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত হলো, ধীরে ধীরে এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের সদস্য জাহানারা সিদ্দিকী, ফরিদ উদ্দিন ও আবদুল মান্নান পাটোয়ারিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
No comments