সোমালীয় স্বপ্নচারীদের দুর্দশা
ইউসুফ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ। বয়স মাত্র ১৬ বছর। স্বপ্ন ছিল ইংল্যান্ডে পাড়ি জমাবে। সেখানে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ উপার্জন করে বাড়ি পাঠাবে। বাবা-মা, ভাই-বোনের মুখে হাসি ফোটাবেন। কিন্তু আদম ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে তার স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রতারকেরা তাকে ইংল্যান্ডের কথা বলে পাঠিয়েছে নেপালে। যেখানকার মানুষজন কিনা নিজেরাই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে। ইউসুফের সঙ্গে প্রতারণার এ ঘটনা ঘটেছে ২০০৭ সালে। আর তখন থেকেই দুঃস্বপ্ন শুরু সোমালীয় এই কিশোরের।
ইংল্যান্ডে আসার জন্য আদম ব্যবসায়ীকে চার হাজার ডলার দেয় ইউসুফ। শুধু ইউসুফ নয়, তার মতো আরও অনেক সোমালীয় কিশোর ও তরুণ প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে খুইয়েছে সবকিছু। তাদের সবারই ঠিকানা এখন ইউরোপ নয়, কাঠমান্ডুর শরণার্থী শিবির। যেখানে ছোট ছোট ঘরে গাদাগাদি করে কোনোমতে দিন পার করছে তারা।
‘আমি প্রথম যখন এখানে আসি, আমি ভেবেছি ইউরোপে এসেছি। কিন্তু কখনোই এখানে কোনো সাদা মানুষের দেখা পাইনি। সোমালিয়ায় কোনো পশ্চিমা টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না। এ কারণে কোনো দিন সাদা মানুষের মুখ দেখার সুযোগ হয়নি। তাই নেপালকেই ইংল্যান্ড ভেবেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পরই আবিষ্কার করতে পারি, বাস্তবে আমি কোথায় আছি।’ এক রাশ হতাশার ছাপ নিয়ে বলছিল ইউসুফ।
ইউসুফের মতো আরও ৮০ জন সোমালীয় প্রতারিত হয়ে নেপালের শরণার্থী শিবিরে উঠেছে। একদিকে বাড়ি যাওয়ার সামর্থ্য যেমন তাদের নেই, তেমনি নেপালের শরণার্থী হওয়ার মর্যাদাও পাচ্ছে না তারা। কেননা, জাতিসংঘ শরণার্থী সমঝোতায় স্বাক্ষর করেনি নেপাল।
নেপালে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ডিয়ান গুডম্যান বলেন, নেপালে কাজ করার সুযোগ নেই শরণার্থীদের। মানবিক সাহায্যই এখন একমাত্র ভরসা তাদের।
গুডম্যান বলেন, ‘১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী সমঝোতা এবং ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে নেপাল স্বাক্ষর করেনি ঠিকই, কিন্তু তারা শরণার্থীদের প্রতি উদারতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিপদগ্রস্ত লোকজনকে আশ্রয় দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের আর্থিক সহায়তা, চিকিত্সাসেবা ও প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে জাতিসংঘ। প্রত্যেক শরণার্থীকে মাসে ৬০ ডলার করে দেওয়া হয়।’
আশা আলী ম্যাউ। প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ২০০৬ সালে নেপালে আসেন ৩১ বছরের এই সোমালীয় নারী। আশা বলেন, ‘এখানকার জীবন খুবই দুর্বিষহ। ছোট একটি ঘরে খাওয়া, ঘুম সবই করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ আমাদের যে অর্থ দেয় তা যথেষ্ট নয়। কেবল পানির পেছনেই মাসে ১৬ ডলার খরচ করতে হয় আমাদের।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, আদম ব্যবসায়ীরা নেপালের শিথিল অভিবাসন আইনের সুযোগ নিয়ে সেখানে লোকজনকে পাঠাচ্ছে। শরণার্থীরা নেপাল ছাড়তে চায়। কিন্তু অর্থের অভাবে তারা তা পেরে উঠছে না। এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ছয় ডলার করে জরিমানা গুনতে হয় তাদের। এমনকি যেসব শিশু শরণার্থী শিবিরে জন্ম নিয়েছে তাদেরও জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
ওসমান বাদরি তাহির আর নেপালে থাকতে চান না। ২০০৬ সালে নেপালে আসা এই যুবক বলেন, ‘সোমালিয়ায় আমি অন্তত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে থাকতে পারব। কিন্তু নেপালে আমি কী করছি, তা আমি নিজেই জানি না।’ তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের সামনে তিনটি সুযোগ থাকে। প্রত্যাবাসন, অঙ্গীভূতকরণ অথবা তৃতীয় কোনো দেশে বসতি স্থাপন। কিন্তু আমাদের সামনে এর কোনোটিই নেই।’
ইংল্যান্ডে আসার জন্য আদম ব্যবসায়ীকে চার হাজার ডলার দেয় ইউসুফ। শুধু ইউসুফ নয়, তার মতো আরও অনেক সোমালীয় কিশোর ও তরুণ প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে খুইয়েছে সবকিছু। তাদের সবারই ঠিকানা এখন ইউরোপ নয়, কাঠমান্ডুর শরণার্থী শিবির। যেখানে ছোট ছোট ঘরে গাদাগাদি করে কোনোমতে দিন পার করছে তারা।
‘আমি প্রথম যখন এখানে আসি, আমি ভেবেছি ইউরোপে এসেছি। কিন্তু কখনোই এখানে কোনো সাদা মানুষের দেখা পাইনি। সোমালিয়ায় কোনো পশ্চিমা টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না। এ কারণে কোনো দিন সাদা মানুষের মুখ দেখার সুযোগ হয়নি। তাই নেপালকেই ইংল্যান্ড ভেবেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পরই আবিষ্কার করতে পারি, বাস্তবে আমি কোথায় আছি।’ এক রাশ হতাশার ছাপ নিয়ে বলছিল ইউসুফ।
ইউসুফের মতো আরও ৮০ জন সোমালীয় প্রতারিত হয়ে নেপালের শরণার্থী শিবিরে উঠেছে। একদিকে বাড়ি যাওয়ার সামর্থ্য যেমন তাদের নেই, তেমনি নেপালের শরণার্থী হওয়ার মর্যাদাও পাচ্ছে না তারা। কেননা, জাতিসংঘ শরণার্থী সমঝোতায় স্বাক্ষর করেনি নেপাল।
নেপালে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ডিয়ান গুডম্যান বলেন, নেপালে কাজ করার সুযোগ নেই শরণার্থীদের। মানবিক সাহায্যই এখন একমাত্র ভরসা তাদের।
গুডম্যান বলেন, ‘১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী সমঝোতা এবং ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে নেপাল স্বাক্ষর করেনি ঠিকই, কিন্তু তারা শরণার্থীদের প্রতি উদারতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিপদগ্রস্ত লোকজনকে আশ্রয় দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের আর্থিক সহায়তা, চিকিত্সাসেবা ও প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে জাতিসংঘ। প্রত্যেক শরণার্থীকে মাসে ৬০ ডলার করে দেওয়া হয়।’
আশা আলী ম্যাউ। প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ২০০৬ সালে নেপালে আসেন ৩১ বছরের এই সোমালীয় নারী। আশা বলেন, ‘এখানকার জীবন খুবই দুর্বিষহ। ছোট একটি ঘরে খাওয়া, ঘুম সবই করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ আমাদের যে অর্থ দেয় তা যথেষ্ট নয়। কেবল পানির পেছনেই মাসে ১৬ ডলার খরচ করতে হয় আমাদের।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, আদম ব্যবসায়ীরা নেপালের শিথিল অভিবাসন আইনের সুযোগ নিয়ে সেখানে লোকজনকে পাঠাচ্ছে। শরণার্থীরা নেপাল ছাড়তে চায়। কিন্তু অর্থের অভাবে তারা তা পেরে উঠছে না। এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ছয় ডলার করে জরিমানা গুনতে হয় তাদের। এমনকি যেসব শিশু শরণার্থী শিবিরে জন্ম নিয়েছে তাদেরও জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
ওসমান বাদরি তাহির আর নেপালে থাকতে চান না। ২০০৬ সালে নেপালে আসা এই যুবক বলেন, ‘সোমালিয়ায় আমি অন্তত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে থাকতে পারব। কিন্তু নেপালে আমি কী করছি, তা আমি নিজেই জানি না।’ তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের সামনে তিনটি সুযোগ থাকে। প্রত্যাবাসন, অঙ্গীভূতকরণ অথবা তৃতীয় কোনো দেশে বসতি স্থাপন। কিন্তু আমাদের সামনে এর কোনোটিই নেই।’
No comments