পরিচালকদের ঋণ বন্ধে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিমত -বার্ষিক সভা অনুষ্ঠানে ব্যর্থতা ও লভ্যাংশ না দেওয়া by ফখরুল ইসলাম
বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করলে এবং বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দিলে কোম্পানির পরিচালকেরা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাবেন না—পুঁজিবাজারের সংস্কার কার্যক্রমসংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং ১৯৯৩ সালের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের মাধ্যমে। এই দুই আইনে শুধু ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ না দেওয়ার বিধান রয়েছে। লভ্যাংশ না দেওয়া ও এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থতায় কোম্পানির পরিচালককে ঋণ না দেওয়ার বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। আর দুটি বিষয়ই কোম্পানির সুশাসন সম্পর্কিত, ব্যাংকিং সম্পর্কিত নয়। সুতরাং এ বিষয়ে ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও বাংলাদেশ ব্যাংক নয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজারের সংস্কার কার্যক্রমসংক্রান্ত এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে।
ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেকের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এজিএম না করা বা লভ্যাংশ না দেওয়ার বিষয়টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি), যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাখ্যা করে বলেছে, ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রত্যেক কোম্পানিকে বছরে একবার এজিএম করতে হয়। না করলে ওই আইনেই দণ্ডের বিধান রয়েছে। একই কারণে এসইসি কোম্পানির পরিচালকদের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপসহ নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আর ডিএসই ও সিএসই সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ‘জেড’ শ্রেণীভুক্ত করে, এমনকি তালিকাভুক্তি থেকে বাদ দিয়ে শেয়ার লেনদেনও বন্ধ করে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, কোনো একক ব্যক্তির সিদ্ধান্তে একটি কোম্পানি পরিচালিত হয় না। কোম্পানিতে একক ব্যক্তি বা পরিচালকের নিয়ন্ত্রণ থাকাও স্বাভাবিক নয়। এজিএম অনুষ্ঠান ও লভ্যাংশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কোম্পানির কোনো পরিচালক তাঁর অন্য কোনো কোম্পানিতে সফল হতে পারেন—যে কোম্পানি নিয়মিত এজিএম করে ও লভ্যাংশও দেয়।
সুতরাং এই পরিচালককে বা তিনি পরিচালক আছেন এমন কোনো কোম্পানিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করলে তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত, নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা এবং ওই পরিচালকের বিদ্যমান ঋণও তখন খেলাপি ঋণে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি লিমিটেড কোম্পানি একেকটি পৃথক সত্তা। এতে পরিচালকদের দায়দায়িত্ব শেয়ারমূল্যের মাধ্যমে নির্ধারিত। অর্থাত্ এক কোম্পানির দায়দায়িত্ব অন্য কোম্পানির ওপর বর্তায় না। তবে পরিচালকেরা যেহেতু সাধারণ শেয়ারধারকদের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাই বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে সাধারণ শেয়ারধারকেরা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে সমষ্টিগতভাবে এবং সদস্যদের আলাদাভাবে দোষী সাব্যস্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে এসইসি।
তবে এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থতা ও লভ্যাংশ না দেওয়ার বিদ্যমান শাস্তি উপযুক্ত ও সময়োপযোগী নয় বলেও মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কোম্পানি আইন, এসইসি অধ্যাদেশ এবং ডিএসই ও সিএসই বিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, শেয়ারের শ্রেণী পরিবর্তন বা তালিকাচ্যুত করে স্টক এক্সচেঞ্জ বরং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অনুরূপ অনিয়ম অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়কে দেওয়া পত্রে কোম্পানিতে সুশাসন আনা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় নিয়মিত এজিএম করতে ও লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ কোম্পানির বিরুদ্ধে তিনটি বিকল্প পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পদক্ষেপগুলো হচ্ছে: সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অপসারণ বা জরিমানা করা, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা এবং কোম্পানির অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং ১৯৯৩ সালের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের মাধ্যমে। এই দুই আইনে শুধু ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ না দেওয়ার বিধান রয়েছে। লভ্যাংশ না দেওয়া ও এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থতায় কোম্পানির পরিচালককে ঋণ না দেওয়ার বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। আর দুটি বিষয়ই কোম্পানির সুশাসন সম্পর্কিত, ব্যাংকিং সম্পর্কিত নয়। সুতরাং এ বিষয়ে ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও বাংলাদেশ ব্যাংক নয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজারের সংস্কার কার্যক্রমসংক্রান্ত এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে।
ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেকের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এজিএম না করা বা লভ্যাংশ না দেওয়ার বিষয়টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি), যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাখ্যা করে বলেছে, ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রত্যেক কোম্পানিকে বছরে একবার এজিএম করতে হয়। না করলে ওই আইনেই দণ্ডের বিধান রয়েছে। একই কারণে এসইসি কোম্পানির পরিচালকদের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপসহ নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আর ডিএসই ও সিএসই সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ‘জেড’ শ্রেণীভুক্ত করে, এমনকি তালিকাভুক্তি থেকে বাদ দিয়ে শেয়ার লেনদেনও বন্ধ করে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, কোনো একক ব্যক্তির সিদ্ধান্তে একটি কোম্পানি পরিচালিত হয় না। কোম্পানিতে একক ব্যক্তি বা পরিচালকের নিয়ন্ত্রণ থাকাও স্বাভাবিক নয়। এজিএম অনুষ্ঠান ও লভ্যাংশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কোম্পানির কোনো পরিচালক তাঁর অন্য কোনো কোম্পানিতে সফল হতে পারেন—যে কোম্পানি নিয়মিত এজিএম করে ও লভ্যাংশও দেয়।
সুতরাং এই পরিচালককে বা তিনি পরিচালক আছেন এমন কোনো কোম্পানিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করলে তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত, নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা এবং ওই পরিচালকের বিদ্যমান ঋণও তখন খেলাপি ঋণে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি লিমিটেড কোম্পানি একেকটি পৃথক সত্তা। এতে পরিচালকদের দায়দায়িত্ব শেয়ারমূল্যের মাধ্যমে নির্ধারিত। অর্থাত্ এক কোম্পানির দায়দায়িত্ব অন্য কোম্পানির ওপর বর্তায় না। তবে পরিচালকেরা যেহেতু সাধারণ শেয়ারধারকদের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাই বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে সাধারণ শেয়ারধারকেরা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে সমষ্টিগতভাবে এবং সদস্যদের আলাদাভাবে দোষী সাব্যস্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে এসইসি।
তবে এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থতা ও লভ্যাংশ না দেওয়ার বিদ্যমান শাস্তি উপযুক্ত ও সময়োপযোগী নয় বলেও মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কোম্পানি আইন, এসইসি অধ্যাদেশ এবং ডিএসই ও সিএসই বিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, শেয়ারের শ্রেণী পরিবর্তন বা তালিকাচ্যুত করে স্টক এক্সচেঞ্জ বরং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অনুরূপ অনিয়ম অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়কে দেওয়া পত্রে কোম্পানিতে সুশাসন আনা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় নিয়মিত এজিএম করতে ও লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ কোম্পানির বিরুদ্ধে তিনটি বিকল্প পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পদক্ষেপগুলো হচ্ছে: সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অপসারণ বা জরিমানা করা, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা এবং কোম্পানির অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়া।
No comments