মিয়ানমার নগরীতে উচ্চপ্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার, গুপ্তচরগিরির ভয় বৃদ্ধি by শুন নাইঙ
একসময়
রাজদরবার সমৃদ্ধ উত্তর মিয়ানমারের মান্দালয়কে ১৬২ বছরের ইতিহাসে
গোলযোগপূর্ণ অধ্যায় বিবেচনা করা হতো। এখানেই বার্মার শেষ রাজবংশের পতন ঘটে
কয়েক দশকের উপনিবেশিক শাসনের সূচনা ঘটেছিল। এখন কর্মকর্তারা সাবেক রাজকীয়
রাজধানীকে দেশটির প্রথম ‘স্মার্ট নগরী’তে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
মিয়ানমারে অন্যান্য স্থানের কর্মকর্তারা যেখানে মোটামুটি কলম-কালি নিয়ে ঘাম ঝরান, চারপাশে কাগজের স্তুপ জড়ো করে রাখেন, সেখানে মান্দালয় কর্তৃপক্ষ সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যারসহ নতুন নতুন প্রযুক্তিতে শান দিয়ে যাচ্ছেন, এমনকি অলস আমলাতন্ত্রকে চাঙ্গা করতে ড্রোনও কাজে লাগান।
মিয়ানমারে ২০১১ পর্যন্ত সামরিক শাসক কর্তৃপক্ষের আমলে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরীর লোকজন মনে হয় টেরও পেত না যে কে তাদের কর্তা। এখন তারা ফেসবুকে মেয়রের সাথে কথা বলে, কিউআর কোড দিয়ে পরিষেবার বিল প্রদান করে। অথচ দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনেও এমন সুবিধা নেই।
কর্তৃপক্ষ জিপিএস দিয়ে আবর্জনা চিহ্নিত করে, রিমোর্ট সেন্সরের মাধ্যমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে।
৫৫ বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক কি থিন বলেন, আমরা যে এখন মেয়রের সাথে এভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি, তা ভালো বিষয়। আগে আমরা কেবল তাদের মোটর বহর দেখতাম।
আগে এই নগরী ছিল সামরিক-সম্পর্কিত লোকজনের প্রাধান্যবিশিষ্ট ও দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার উর্বর ক্ষেত্র। তবে বেসামরিক প্রাধান্যবিশিষ্ট নগরীর প্রথম মিউনিসিপ্যাল সরকার আঞ্চলিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে নতুন পরিকল্পনা হাজির করেছে।
পরিবর্তনের গতি আঞ্চলিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি মে মাসে প্রবাসী বর্মীরা মেয়রকে ‘সিটিজেন অব বার্মা’ পুরস্কারেও ভূষিত করেছে।
তবে কিছু কিছু পরিবর্তন বাধার মুখে পড়েছে। তবে তা কেবল মান্ধাত্যার আমলের আমলাতন্ত্রের কাছ থেকেই নয়, অ্যাক্টভিস্টরাও এর বিরুদ্ধে রয়েছে। তারা আশঙ্কা করছে, পর্যান্ত নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই স্মার্ট প্রযুক্তি প্রযোগ করা হলে তা তাদের ওপর ঘনিষ্ঠভাবে নজরদারি করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
সিঙ্গাপুরে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ওই সময়কার আসিয়ান চেয়ারম্যান ২৬টি স্মার্ট নগরীর একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। দীর্ঘ দিন ধরে বিরাজমান কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এটাই একমাত্র প্রতিকার বলে তিনি জানান।
এ কাজের জন্য মিয়ানমারের তিনটি নগরী বাছাই করা হলেও দেশের মধ্যভাগে থাকা মান্দালয়ই প্রস্তাবটি সবচেয়ে উষ্ণভাবে গ্রহণ করে।
ওই সময়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল মান্দালয়। ট্যাপের পানি পান করা যেত না, রাস্তাগুলো ছিল জ্যামে বিশ্রি অবস্থায়, রাস্তায় রাস্তায় ছিল গর্ত। ময়লা আবর্জনা ছিল পুরো শহরে।
অনেকেই সাবেক চক্ষু সার্জন মেয়র ইয়ে লউইনকে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কৃতিত্ব দিয়ে থাকে। ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর বেসামরিক সরকার তাকেই মেয়র পদে নিয়োগ করে। তিনি ফেসবুক পেইজে প্রতি দিন নজর রাখতেন, অধীনস্তদের নির্দেশ দিতেন।
মিয়ানমারের সবচেযে জনপ্রিয় বর্মি ভাষার ফ্রন্ট সৃষ্টিকারী আইটি বিশেষজ্ঞ ইয়ে মিত থু বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন নগরী সৃষ্টি করা, যা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না। আমরা এমন নগরী গড়তে চাই যা হবে অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য ভালো। তিনি বলেন, আমরা তা করার জন্যই প্রযুক্তির ব্যবহার করছি।
তিনি বলেন, আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় উন্নতির জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক কিছু টাকা দিলেও বেশির ভাগ সংস্কার করা হয়েছে করের টাকায়।
কর্তৃপক্ষ নগরীর ডিজিটাল সার্ভে করেছে, ড্রোন দিয়ে ৩ডি ইমেজ ব্যবহার করেছে, জিএসপি সরঞ্জাম নিয়ে মিউনিসিপ্যাল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্যও সংগ্রহ করেছে।
অবশ্য পরিবর্তন খুব সহজে আসেনি। আমলাতন্ত্রের কাছ থেকে বিপুল বাধার মুখে পড়তে হয়েছে এজন্য।
আবার ডিজিটাল সরঞ্জাম দিয়ে গুপ্তচর বৃত্তির কার্যক্রম পরিচালনা করা হতে পারে বলেও অভিযোগ ওঠছে। বিশেষ করে চীনের কাছ থেকে ১.২৪ মিলিয়ন ডলারের সিসিটিভি ক্যামেরা কেনা, চীনা হুওয়ে প্রযুক্তির সহায়তা গ্রহণকে অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।
তবে কর্তৃপক্ষ হাল ছাড়ার লোক নয়। এমসিডিসির এয় মিত থু বলেন, আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি। আমরা আমাদের নিজেদের মতো করে সবকিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি।
মিয়ানমারে অন্যান্য স্থানের কর্মকর্তারা যেখানে মোটামুটি কলম-কালি নিয়ে ঘাম ঝরান, চারপাশে কাগজের স্তুপ জড়ো করে রাখেন, সেখানে মান্দালয় কর্তৃপক্ষ সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যারসহ নতুন নতুন প্রযুক্তিতে শান দিয়ে যাচ্ছেন, এমনকি অলস আমলাতন্ত্রকে চাঙ্গা করতে ড্রোনও কাজে লাগান।
মিয়ানমারে ২০১১ পর্যন্ত সামরিক শাসক কর্তৃপক্ষের আমলে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরীর লোকজন মনে হয় টেরও পেত না যে কে তাদের কর্তা। এখন তারা ফেসবুকে মেয়রের সাথে কথা বলে, কিউআর কোড দিয়ে পরিষেবার বিল প্রদান করে। অথচ দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনেও এমন সুবিধা নেই।
কর্তৃপক্ষ জিপিএস দিয়ে আবর্জনা চিহ্নিত করে, রিমোর্ট সেন্সরের মাধ্যমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে।
৫৫ বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক কি থিন বলেন, আমরা যে এখন মেয়রের সাথে এভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি, তা ভালো বিষয়। আগে আমরা কেবল তাদের মোটর বহর দেখতাম।
আগে এই নগরী ছিল সামরিক-সম্পর্কিত লোকজনের প্রাধান্যবিশিষ্ট ও দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার উর্বর ক্ষেত্র। তবে বেসামরিক প্রাধান্যবিশিষ্ট নগরীর প্রথম মিউনিসিপ্যাল সরকার আঞ্চলিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে নতুন পরিকল্পনা হাজির করেছে।
পরিবর্তনের গতি আঞ্চলিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি মে মাসে প্রবাসী বর্মীরা মেয়রকে ‘সিটিজেন অব বার্মা’ পুরস্কারেও ভূষিত করেছে।
তবে কিছু কিছু পরিবর্তন বাধার মুখে পড়েছে। তবে তা কেবল মান্ধাত্যার আমলের আমলাতন্ত্রের কাছ থেকেই নয়, অ্যাক্টভিস্টরাও এর বিরুদ্ধে রয়েছে। তারা আশঙ্কা করছে, পর্যান্ত নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই স্মার্ট প্রযুক্তি প্রযোগ করা হলে তা তাদের ওপর ঘনিষ্ঠভাবে নজরদারি করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
সিঙ্গাপুরে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ওই সময়কার আসিয়ান চেয়ারম্যান ২৬টি স্মার্ট নগরীর একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। দীর্ঘ দিন ধরে বিরাজমান কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এটাই একমাত্র প্রতিকার বলে তিনি জানান।
এ কাজের জন্য মিয়ানমারের তিনটি নগরী বাছাই করা হলেও দেশের মধ্যভাগে থাকা মান্দালয়ই প্রস্তাবটি সবচেয়ে উষ্ণভাবে গ্রহণ করে।
ওই সময়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল মান্দালয়। ট্যাপের পানি পান করা যেত না, রাস্তাগুলো ছিল জ্যামে বিশ্রি অবস্থায়, রাস্তায় রাস্তায় ছিল গর্ত। ময়লা আবর্জনা ছিল পুরো শহরে।
অনেকেই সাবেক চক্ষু সার্জন মেয়র ইয়ে লউইনকে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কৃতিত্ব দিয়ে থাকে। ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর বেসামরিক সরকার তাকেই মেয়র পদে নিয়োগ করে। তিনি ফেসবুক পেইজে প্রতি দিন নজর রাখতেন, অধীনস্তদের নির্দেশ দিতেন।
মিয়ানমারের সবচেযে জনপ্রিয় বর্মি ভাষার ফ্রন্ট সৃষ্টিকারী আইটি বিশেষজ্ঞ ইয়ে মিত থু বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন নগরী সৃষ্টি করা, যা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না। আমরা এমন নগরী গড়তে চাই যা হবে অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য ভালো। তিনি বলেন, আমরা তা করার জন্যই প্রযুক্তির ব্যবহার করছি।
তিনি বলেন, আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় উন্নতির জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক কিছু টাকা দিলেও বেশির ভাগ সংস্কার করা হয়েছে করের টাকায়।
কর্তৃপক্ষ নগরীর ডিজিটাল সার্ভে করেছে, ড্রোন দিয়ে ৩ডি ইমেজ ব্যবহার করেছে, জিএসপি সরঞ্জাম নিয়ে মিউনিসিপ্যাল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্যও সংগ্রহ করেছে।
অবশ্য পরিবর্তন খুব সহজে আসেনি। আমলাতন্ত্রের কাছ থেকে বিপুল বাধার মুখে পড়তে হয়েছে এজন্য।
আবার ডিজিটাল সরঞ্জাম দিয়ে গুপ্তচর বৃত্তির কার্যক্রম পরিচালনা করা হতে পারে বলেও অভিযোগ ওঠছে। বিশেষ করে চীনের কাছ থেকে ১.২৪ মিলিয়ন ডলারের সিসিটিভি ক্যামেরা কেনা, চীনা হুওয়ে প্রযুক্তির সহায়তা গ্রহণকে অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।
তবে কর্তৃপক্ষ হাল ছাড়ার লোক নয়। এমসিডিসির এয় মিত থু বলেন, আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি। আমরা আমাদের নিজেদের মতো করে সবকিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি।
No comments