ট্রাম্প-ইমরান বৈঠকের পর শান্তির আশা by আতা রাসুল মালিক
যুক্তরাষ্ট্রে
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাম্প্রতিক সফর নিয়ে মিডিয়ায়
ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। ২২ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে
ইমরানের বৈঠকটি উভয় দেশের জন্যই ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই পুরনো
বন্ধু ও মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান দৃশ্যত কোনো কারণ ছাড়াই একে অপরের
প্রতি উদাসিন হয়ে পড়েছিল।
আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করেই পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, এমনকি সাধারণ পাকিস্তানি নাগরিকেরা পর্যন্ত কষ্ট অনুভব করতে থাকে। একইসাথে ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন। অবশ্য যে তালেবানের ওপর পাকিস্তানের কিছুটা প্রভাব রয়েছে, তারা পাশ্চাত্য বাহিনীর মুখ রক্ষাকর প্রত্যাহারে সম্মত হচ্ছিল না।
অন্য কথায় বলা যায়, ইমরান-ট্রাম্প বৈঠকটি বেশ আগ্রহ সৃষ্টিকারী ছিল। দুই নেতাই স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত, তারা তাদের সম্পর্ক ও কঠিন জাতীয় স্বার্থগুলোর সমাধান নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। অনেকের কাছে এই বৈঠকের ফলাফল মনে হয়েছে অনিশ্চিত। অবশ্য সবশেষে, সবকিছুই ঠিকমতো হয়েছে। দুই নেতা একে অপরের দৃষ্টিকোণ থেকে পরস্পরকে বুঝতে পেরেছেন, এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। আফগান সরকারের সাথে ‘যথার্থ’ ক্ষমতার ভাগাভাগিতে তালেবানকে রাজি করাবে পাকিস্তান। আর আফগানিস্তানে ভারতের ‘নেতিবাচক’ প্রভাব নিয়ন্ত্রণে ও কাশ্মির প্রশ্নে ভারতের সাথে বিদ্যমান দীর্ঘ দিনের সমস্যা সুরাহা করতে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র সফর করে দেশে ফিরলে ইমরান খানকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয়। ইসলামাবাদ বিমানবন্দরের সংবর্ধনায় ইমরান খান পর্যন্ত বিস্মিত হয়ে পড়েন।
আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও ইমরান খানের যুক্তরাষ্ট্র সফর বেশ সাড়া ফেলে। মূলধারার ও সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে সফরটির কথা প্রচার করা হয়। আফগানিস্তানে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তিনি মর্যাদাপূর্ণ প্রস্থানের জন্য তালেবানের সাথে চুক্তি চান। আর তিনি তা করতে চান ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা গত কয়েক সপ্তাহে অনেক অগ্রগতি হাসিল করেছি। এই অগ্রগতিতে পাকিস্তান সহায়তা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক ভালো কিছু ঘটছে। ইমরানের নেতৃত্ব পাকিস্তানেও ভালো অনেক কিছু হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনেক আত্মবিশ্বাস ও আশাবাদ প্রদর্শন করেন।
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তি আলোচনায় পাকিস্তান অন্যতম পক্ষ। আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের রয়েছে ২,৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত, তাছাড়া ১০ লাখের বেশি আফগান উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানের কাছ থেকে ট্রাম্প সবচেয়ে কঠিন একটি সমস্যা সমাধানে সহায়তা পাবেন। এতে করে আগামী সাধারণ নির্বাচনে রিপাবলিকানেরা বেশি ভোট পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে বিপুল সফট ও হার্ড পাওয়ার। আবার পাকিস্তানের আন্তরিকতা প্রমাণের অবকাশও রয়েছে সামান্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত শনিবার আফগান সীমান্তে পাকিস্তান তার ১০ সৈন্যকে হারিয়েছে। সেখানে ভারতীয় সম্পৃক্ততাকে মোকাবিলা করা/সংযত করার পর্যাপ্ত গোয়েন্দা সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে চীনকে সংযত করার জন্য ভারতের গুরুত্ব অনুভব করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ভারত নিজেকে স্থানীয়ভাবে শক্তিধর মনে করছে, ভাবছে সে ওয়াশিংটনের কাছে অপরিহার্য।
চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র- প্রত্যেককে কিছু না কিছু দিয়ে সবাইকেই খুশি রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে ভারত। এ কারণেই ২০১৮ সাল থেকে চীনের সাথে সম্পর্ক পুনঃবিন্যাস করছে ভারত, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপত্তা (সিওএমসিএএসএ) চুক্তি সই করেছে।
আবার ট্রাম্পের আন্তরিক মধ্যস্ততার প্রস্তাব গ্রহণ করার বদলে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে আরো ১০ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে। ভারত এই অঞ্চলে আগে থেকেই ৫ লাখ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সৈন্য মোতায়েন রেখেছে। ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধা থাকা-সংবলিত ধারা ৩৭০ ও ৩৫এ বাতিল করার পরিকল্পনা থেকেই নতুন করে সৈন্য মোতায়েন করা হচ্ছে।
পাকিস্তান, ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস, কাশ্মিরের হুরিয়াত কনফারেন্স, জম্মু ও কাশ্মিরের আঞ্চলিক দলগুলো সংবিধানের ৩৫এ ও ৩৭০ ধারা বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। তারা বলছে, এটি জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার।
ভারত ও পাকিস্তান কয়েকটি যুদ্ধে লড়াই করেছে, দুদেশই মনে করে কাশ্মির একটি রাজনৈতিক সমস্যা, এটি শক্তির মাধ্যমে সমাধান করা যাবে না। উভয় দেশই চায় মুখ রক্ষাকারী সমাধান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে বাস্তব অন্তর্দৃষ্টি। এ কারণেই তিনি মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি কাশ্মির বিরোধের সমাধানের মাধ্যমে শতাব্দীর সেরা চুক্তি করতে পারেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি নির্ভর করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার ওপর। এটি সন্দেহাতীতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী ইমরানের উচিত হবে সাম্প্রতিক বৈঠকের সময়কার প্রতিশ্রুতির ওপর অনড় থাকা।
আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করেই পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, এমনকি সাধারণ পাকিস্তানি নাগরিকেরা পর্যন্ত কষ্ট অনুভব করতে থাকে। একইসাথে ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন। অবশ্য যে তালেবানের ওপর পাকিস্তানের কিছুটা প্রভাব রয়েছে, তারা পাশ্চাত্য বাহিনীর মুখ রক্ষাকর প্রত্যাহারে সম্মত হচ্ছিল না।
অন্য কথায় বলা যায়, ইমরান-ট্রাম্প বৈঠকটি বেশ আগ্রহ সৃষ্টিকারী ছিল। দুই নেতাই স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত, তারা তাদের সম্পর্ক ও কঠিন জাতীয় স্বার্থগুলোর সমাধান নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। অনেকের কাছে এই বৈঠকের ফলাফল মনে হয়েছে অনিশ্চিত। অবশ্য সবশেষে, সবকিছুই ঠিকমতো হয়েছে। দুই নেতা একে অপরের দৃষ্টিকোণ থেকে পরস্পরকে বুঝতে পেরেছেন, এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। আফগান সরকারের সাথে ‘যথার্থ’ ক্ষমতার ভাগাভাগিতে তালেবানকে রাজি করাবে পাকিস্তান। আর আফগানিস্তানে ভারতের ‘নেতিবাচক’ প্রভাব নিয়ন্ত্রণে ও কাশ্মির প্রশ্নে ভারতের সাথে বিদ্যমান দীর্ঘ দিনের সমস্যা সুরাহা করতে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র সফর করে দেশে ফিরলে ইমরান খানকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয়। ইসলামাবাদ বিমানবন্দরের সংবর্ধনায় ইমরান খান পর্যন্ত বিস্মিত হয়ে পড়েন।
আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও ইমরান খানের যুক্তরাষ্ট্র সফর বেশ সাড়া ফেলে। মূলধারার ও সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে সফরটির কথা প্রচার করা হয়। আফগানিস্তানে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তিনি মর্যাদাপূর্ণ প্রস্থানের জন্য তালেবানের সাথে চুক্তি চান। আর তিনি তা করতে চান ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা গত কয়েক সপ্তাহে অনেক অগ্রগতি হাসিল করেছি। এই অগ্রগতিতে পাকিস্তান সহায়তা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক ভালো কিছু ঘটছে। ইমরানের নেতৃত্ব পাকিস্তানেও ভালো অনেক কিছু হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনেক আত্মবিশ্বাস ও আশাবাদ প্রদর্শন করেন।
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তি আলোচনায় পাকিস্তান অন্যতম পক্ষ। আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের রয়েছে ২,৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত, তাছাড়া ১০ লাখের বেশি আফগান উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানের কাছ থেকে ট্রাম্প সবচেয়ে কঠিন একটি সমস্যা সমাধানে সহায়তা পাবেন। এতে করে আগামী সাধারণ নির্বাচনে রিপাবলিকানেরা বেশি ভোট পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে বিপুল সফট ও হার্ড পাওয়ার। আবার পাকিস্তানের আন্তরিকতা প্রমাণের অবকাশও রয়েছে সামান্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত শনিবার আফগান সীমান্তে পাকিস্তান তার ১০ সৈন্যকে হারিয়েছে। সেখানে ভারতীয় সম্পৃক্ততাকে মোকাবিলা করা/সংযত করার পর্যাপ্ত গোয়েন্দা সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে চীনকে সংযত করার জন্য ভারতের গুরুত্ব অনুভব করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ভারত নিজেকে স্থানীয়ভাবে শক্তিধর মনে করছে, ভাবছে সে ওয়াশিংটনের কাছে অপরিহার্য।
চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র- প্রত্যেককে কিছু না কিছু দিয়ে সবাইকেই খুশি রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে ভারত। এ কারণেই ২০১৮ সাল থেকে চীনের সাথে সম্পর্ক পুনঃবিন্যাস করছে ভারত, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপত্তা (সিওএমসিএএসএ) চুক্তি সই করেছে।
আবার ট্রাম্পের আন্তরিক মধ্যস্ততার প্রস্তাব গ্রহণ করার বদলে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে আরো ১০ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে। ভারত এই অঞ্চলে আগে থেকেই ৫ লাখ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সৈন্য মোতায়েন রেখেছে। ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধা থাকা-সংবলিত ধারা ৩৭০ ও ৩৫এ বাতিল করার পরিকল্পনা থেকেই নতুন করে সৈন্য মোতায়েন করা হচ্ছে।
পাকিস্তান, ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস, কাশ্মিরের হুরিয়াত কনফারেন্স, জম্মু ও কাশ্মিরের আঞ্চলিক দলগুলো সংবিধানের ৩৫এ ও ৩৭০ ধারা বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। তারা বলছে, এটি জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার।
ভারত ও পাকিস্তান কয়েকটি যুদ্ধে লড়াই করেছে, দুদেশই মনে করে কাশ্মির একটি রাজনৈতিক সমস্যা, এটি শক্তির মাধ্যমে সমাধান করা যাবে না। উভয় দেশই চায় মুখ রক্ষাকারী সমাধান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে বাস্তব অন্তর্দৃষ্টি। এ কারণেই তিনি মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি কাশ্মির বিরোধের সমাধানের মাধ্যমে শতাব্দীর সেরা চুক্তি করতে পারেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি নির্ভর করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার ওপর। এটি সন্দেহাতীতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী ইমরানের উচিত হবে সাম্প্রতিক বৈঠকের সময়কার প্রতিশ্রুতির ওপর অনড় থাকা।
No comments