মিয়ানমারের অনিশ্চিত রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ by ল্যারি জ্যাগান
রাশিফল,
কুসংস্কার এবং ভবিষ্যৎ বক্তাদের বিশেষ কদর রয়েছে মিয়ানমারে। সবসময় তাদের
পরামর্শ চাওয়া হয় এবং ধর্মীয়ভাবে সেটার অনুসরণও করা হয়। ব্যবসায়ী,
রাজনীতিবিদ ও সমাজের নেতা সবাই জ্যোতির্বিদদের অনুমানকে বিশেষ গুরুত্ব দেন।
চলতি মাসটাও এখানে সেরকমই। ভবিষ্যদ্বক্তারা বলেছেন যে, দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসন্ন, তাই সর্বত্র এখন ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। জ্যোতির্বিদদের ধারণা অনুযায়ী একটা সামরিক অভ্যুত্থান অত্যাসন্ন। তাদের ভবিষ্যদ্বাণীতে অবশ্য বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা অত গুরুত্ব দেন না, কিন্তু এরপরও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্রমেই অস্থির ও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
১৯৮৮ সালে যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হয়েছিল, সেটা স্মরণ করা হয় এই আগস্ট মাসে। সে কারণে এই মাসটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ বছরও কোন ব্যতিক্রম নয়। দেশ, বিশেষ করে রাজনীতিবিদরা ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। আসলে এই মুহূর্তে সবখানেই প্রাধান্য বিস্তার করেছে ‘সিনড্রম ২০২০’, যদিও মূল মনোযোগ হলো সংবিধান পরিবর্তনের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির প্রচেষ্টা।
ছয় মাস আগে, সরকার একটি পার্লামেন্টারি কমিটি গঠন করেছিল – যেখানে পার্লামেন্টের সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলি নিয়ে এই কমিটিতে আলোচনা হয়েছে এবং সেটা গত মাসে পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে। এখন এটা নিয়ে আলোচনা ও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের পালা।
অধিকাংশ বিশ্লেষকের মতো, পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্ত একটা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করতে যাচ্ছে এবং এটা বেসামরিক সরকারকে সমারিক বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে। উল্লেখ্য সামরিক বাহিনীর এমপিরা সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে, আসন্ন পার্লামেন্ট অধিবেশনে তারা নীরব থাকবে।
তবে সিনিয়র এনএলডি এমপি অং কি নাইউন্ত – যিনি সংবিধান সংশোধন কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন – তিনি মনে করেন যে, এই পার্লামেন্টারি বিতর্ক বরং ভবিষ্যতে সংবিধান নিয়ে সঙ্ঘাতের পথ বন্ধ করে দেবে।
তবে, তিনি স্বীকার করেন যে, সফল হতে হলে দেশের নেতাদের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজন। এটা ঘটতে হবে, যতি সেনা অভ্যুত্থানের বিপদ কাটিয়ে উঠতে হয়।
এনএলডির দিক থেকে দেশের গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সংবিধান পরিবর্তন করাটা জরুরি। নিম্নকক্ষের এনএলডি এমপি ই মোন বলেন, “সংবিধান যদি সংশোধন করা না হয়, তাহলে জনগণ কখনই দায়িত্বশীল একটা সরকার পাবে না, আর সেটা না হলে আমরা কখনই বলতে পারবো না যে, আমরা গণতান্ত্রিক দেশে আছি”।
এনএলডি দলের বিশিষ্ট এমপি ও সাবেক রাজনৈতিক কর্মী বো বো উ সাউথ এশিয়ান মনিটরকে সম্প্রতি বলেন, ২০১৫ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়টি একটা প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল। তিনি আরও বলেন, তাই পার্লামেন্টারি কমিটি গঠন করাটা হলো এই প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রথম ধাপ।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এনএলডি সরকারের কৌশলের মূলেই রয়েছে এটা – দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং সরকারের মধ্যে বর্ধিত মাত্রায় দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে আসা।
দেশের বেসামরিক নেতা স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি নিজের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি কখনও গোপন রাখেননি যে, তিনি চান যাতে সেনারা ব্যারাকে ফিরে যায় এবং যাতে তিনি সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে যেতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি ‘প্যাংলং’ শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যবহারের চেষ্টা করেন, যেখানে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলো এবং রাজনৈতিক দলগুলো একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ‘ফেডারেল, গণতান্ত্রিক’ রাজ্য গঠন করবে। কিন্তু সেটা একটা দীর্ঘ ও জটিল পথ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই অচলাবস্থার অবসানের জন্য, স্টেট কাউন্সিলর পার্লামেন্টে ফিরে গেছেন যাতে সংবিধান পরিবর্তনের চেষ্টাকে এগিয়ে নেয়া যায়।
সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের আগেই সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন এনএলডির। স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, আর কিছু না হলেও এটা এনএলডিকে আগামী নির্বাচনে একটা শক্ত ভিত্তি তৈরি করে দেবে। কিন্তু এই জায়গাটা বিপজ্জনক কারণ এটা সন্দেহাতীতভাবে এনএলডিকে সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে, যদি ক্রমবর্ধনাম উত্তেজনা প্রশমন এবং সঙ্ঘাত এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়া হয়।
কার্যত এনএলডি নেতৃবৃন্দ সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে একটা শক্তিশালী, কৌশলগত পথ অবলম্বন করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা থেকে বিরত আছেন তারা। অং কি নাইউন্ত ব্যাখ্যা করে বলেন, সংবিধান সংশোধনের চেষ্টাটা সরাসরি সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে যাওয়ার জন্য নয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক নেতা এসএএমকে বলেন যে, গণতান্ত্রিক ক্ষমতা বদলের রোডম্যাপ সম্পূর্ণ করার জন্য এটা হলো প্রথম পদক্ষেপ। এনএলডির প্রস্তাবনার মধ্যে এটাকে সেইভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে যেটা পার্লামেন্টে সামরিক বাহিনীর কোটাকে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিয়ে আনবে এবং ২৫% থেকে তাদের প্রতিনিধিত্ব শূণ্যে নামিয়ে আনা হবে।
কিন্তু এটাকে ইতিবাচক শোনালেও এবং এখানে সুস্পষ্ট ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা থাকলেও এটা তখনই সফল হবে যদি সব নেতা, স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি এবং কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইংয়ের মধ্যে এ ব্যাপারে ঐক্যমত থাকে।
এ জন্য দুই পক্ষকে আলোচনা ও দর কষাকষিতে বসতে হবে। এখন পর্যন্ত এমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না যে সেটা হতে চলেছে, কিন্তু এটা প্রায় নিশ্চিত যে, সেদিকেই যেতে হবে। অবশ্যই, সফল হতে হলে গোপনীয়তাও বজায় রাখতে হবে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর উপর যে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক হামলা হচ্ছে – যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং জাতিসংঘ তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে তাদের উভয়ের জন্য একসাথে কাজ করাটা জরুরি।
জাতিসংঘের আহ্বানের জবাবে সরকার দ্রুততার সাথে প্রত্যাখ্যার করেছে, যদিও সেটা ছিল দুর্বল। তবে এর মাধ্যমে ইঙ্গিত মিলেছে যে, সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে কিছু অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে।
কিন্তু এটাকে সংবিধান পরিবর্তনের জায়গায় নেয়ার জন্য বহু দূর যেতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখানে মিন অং লাইংয়ের ভবিষ্যৎ। সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সূত্র মতে, আগামী বছরের মাঝামাঝি তিনি অবসরে যাবেন, যদিও গুঞ্জন রয়েছে যে, মেয়াদের আগেই আগাম অবসরে যেতে পারেন তিনি। এরপর সবকিছুই নির্ভর করবে মিন অং লাইংয়ের ভবিষ্যতের ব্যাপারে তার নিজের পরিকল্পনার উপর। এখন পর্যন্ত এটা ধারণা করা হয় যে, ২০২০ সালের নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট হওয়ার দিকে তার আগ্রহ রয়েছে।
চলতি মাসটাও এখানে সেরকমই। ভবিষ্যদ্বক্তারা বলেছেন যে, দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসন্ন, তাই সর্বত্র এখন ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। জ্যোতির্বিদদের ধারণা অনুযায়ী একটা সামরিক অভ্যুত্থান অত্যাসন্ন। তাদের ভবিষ্যদ্বাণীতে অবশ্য বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা অত গুরুত্ব দেন না, কিন্তু এরপরও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্রমেই অস্থির ও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
১৯৮৮ সালে যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হয়েছিল, সেটা স্মরণ করা হয় এই আগস্ট মাসে। সে কারণে এই মাসটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ বছরও কোন ব্যতিক্রম নয়। দেশ, বিশেষ করে রাজনীতিবিদরা ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। আসলে এই মুহূর্তে সবখানেই প্রাধান্য বিস্তার করেছে ‘সিনড্রম ২০২০’, যদিও মূল মনোযোগ হলো সংবিধান পরিবর্তনের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির প্রচেষ্টা।
ছয় মাস আগে, সরকার একটি পার্লামেন্টারি কমিটি গঠন করেছিল – যেখানে পার্লামেন্টের সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলি নিয়ে এই কমিটিতে আলোচনা হয়েছে এবং সেটা গত মাসে পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে। এখন এটা নিয়ে আলোচনা ও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের পালা।
অধিকাংশ বিশ্লেষকের মতো, পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্ত একটা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করতে যাচ্ছে এবং এটা বেসামরিক সরকারকে সমারিক বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে। উল্লেখ্য সামরিক বাহিনীর এমপিরা সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে, আসন্ন পার্লামেন্ট অধিবেশনে তারা নীরব থাকবে।
তবে সিনিয়র এনএলডি এমপি অং কি নাইউন্ত – যিনি সংবিধান সংশোধন কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন – তিনি মনে করেন যে, এই পার্লামেন্টারি বিতর্ক বরং ভবিষ্যতে সংবিধান নিয়ে সঙ্ঘাতের পথ বন্ধ করে দেবে।
তবে, তিনি স্বীকার করেন যে, সফল হতে হলে দেশের নেতাদের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজন। এটা ঘটতে হবে, যতি সেনা অভ্যুত্থানের বিপদ কাটিয়ে উঠতে হয়।
এনএলডির দিক থেকে দেশের গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সংবিধান পরিবর্তন করাটা জরুরি। নিম্নকক্ষের এনএলডি এমপি ই মোন বলেন, “সংবিধান যদি সংশোধন করা না হয়, তাহলে জনগণ কখনই দায়িত্বশীল একটা সরকার পাবে না, আর সেটা না হলে আমরা কখনই বলতে পারবো না যে, আমরা গণতান্ত্রিক দেশে আছি”।
এনএলডি দলের বিশিষ্ট এমপি ও সাবেক রাজনৈতিক কর্মী বো বো উ সাউথ এশিয়ান মনিটরকে সম্প্রতি বলেন, ২০১৫ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়টি একটা প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল। তিনি আরও বলেন, তাই পার্লামেন্টারি কমিটি গঠন করাটা হলো এই প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রথম ধাপ।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এনএলডি সরকারের কৌশলের মূলেই রয়েছে এটা – দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং সরকারের মধ্যে বর্ধিত মাত্রায় দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে আসা।
দেশের বেসামরিক নেতা স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি নিজের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি কখনও গোপন রাখেননি যে, তিনি চান যাতে সেনারা ব্যারাকে ফিরে যায় এবং যাতে তিনি সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে যেতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি ‘প্যাংলং’ শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যবহারের চেষ্টা করেন, যেখানে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলো এবং রাজনৈতিক দলগুলো একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ‘ফেডারেল, গণতান্ত্রিক’ রাজ্য গঠন করবে। কিন্তু সেটা একটা দীর্ঘ ও জটিল পথ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই অচলাবস্থার অবসানের জন্য, স্টেট কাউন্সিলর পার্লামেন্টে ফিরে গেছেন যাতে সংবিধান পরিবর্তনের চেষ্টাকে এগিয়ে নেয়া যায়।
সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের আগেই সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন এনএলডির। স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, আর কিছু না হলেও এটা এনএলডিকে আগামী নির্বাচনে একটা শক্ত ভিত্তি তৈরি করে দেবে। কিন্তু এই জায়গাটা বিপজ্জনক কারণ এটা সন্দেহাতীতভাবে এনএলডিকে সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে, যদি ক্রমবর্ধনাম উত্তেজনা প্রশমন এবং সঙ্ঘাত এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়া হয়।
কার্যত এনএলডি নেতৃবৃন্দ সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে একটা শক্তিশালী, কৌশলগত পথ অবলম্বন করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা থেকে বিরত আছেন তারা। অং কি নাইউন্ত ব্যাখ্যা করে বলেন, সংবিধান সংশোধনের চেষ্টাটা সরাসরি সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে যাওয়ার জন্য নয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক নেতা এসএএমকে বলেন যে, গণতান্ত্রিক ক্ষমতা বদলের রোডম্যাপ সম্পূর্ণ করার জন্য এটা হলো প্রথম পদক্ষেপ। এনএলডির প্রস্তাবনার মধ্যে এটাকে সেইভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে যেটা পার্লামেন্টে সামরিক বাহিনীর কোটাকে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিয়ে আনবে এবং ২৫% থেকে তাদের প্রতিনিধিত্ব শূণ্যে নামিয়ে আনা হবে।
কিন্তু এটাকে ইতিবাচক শোনালেও এবং এখানে সুস্পষ্ট ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা থাকলেও এটা তখনই সফল হবে যদি সব নেতা, স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি এবং কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইংয়ের মধ্যে এ ব্যাপারে ঐক্যমত থাকে।
এ জন্য দুই পক্ষকে আলোচনা ও দর কষাকষিতে বসতে হবে। এখন পর্যন্ত এমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না যে সেটা হতে চলেছে, কিন্তু এটা প্রায় নিশ্চিত যে, সেদিকেই যেতে হবে। অবশ্যই, সফল হতে হলে গোপনীয়তাও বজায় রাখতে হবে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর উপর যে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক হামলা হচ্ছে – যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং জাতিসংঘ তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে তাদের উভয়ের জন্য একসাথে কাজ করাটা জরুরি।
জাতিসংঘের আহ্বানের জবাবে সরকার দ্রুততার সাথে প্রত্যাখ্যার করেছে, যদিও সেটা ছিল দুর্বল। তবে এর মাধ্যমে ইঙ্গিত মিলেছে যে, সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে কিছু অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে।
কিন্তু এটাকে সংবিধান পরিবর্তনের জায়গায় নেয়ার জন্য বহু দূর যেতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখানে মিন অং লাইংয়ের ভবিষ্যৎ। সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সূত্র মতে, আগামী বছরের মাঝামাঝি তিনি অবসরে যাবেন, যদিও গুঞ্জন রয়েছে যে, মেয়াদের আগেই আগাম অবসরে যেতে পারেন তিনি। এরপর সবকিছুই নির্ভর করবে মিন অং লাইংয়ের ভবিষ্যতের ব্যাপারে তার নিজের পরিকল্পনার উপর। এখন পর্যন্ত এটা ধারণা করা হয় যে, ২০২০ সালের নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট হওয়ার দিকে তার আগ্রহ রয়েছে।
No comments