সর্বত্র রক্ত চেয়ে আবেদন by মারুফ কিবরিয়া
‘সরকারি
কর্মচারী হাসপাতালে এক বৃদ্ধের রক্তের প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। যত
দ্রুত সম্ভব তার জন্য চার ব্যাগ রক্ত লাগবে। তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে
চারদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। ‘স্বেচ্ছায় রক্ত দিন জীবন বাঁচান’ নামের
স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন গত ১লা জুলাই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে
পোস্ট করে। হাসপাতালের নামের পাশাপাশি রোগীর আত্মীয়র মোবাইল নম্বর,
হাসপাতালের বেড, ওয়ার্ডসহ যাবতীয় তথ্যও সেই পোস্টে দেয়া রয়েছে। ‘স্বেচ্ছায়
রক্ত দিন জীবন বাঁচান’-এর মতো এমন অনেক সংগঠন এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও
রক্তের আবেদন করছেন অনেকে। দেশব্যাপী ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে।
ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে ব্যাপক হারে। কারো মা, কারো বোন, কারো বাবা কিংবা ভাইকে বাঁচাতে স্বজনরা রক্তের জন্য ছুটছেন এখানে সেখানে। নিকটজনরা কেউ ব্যর্থ হলে দ্বারস্থ হচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও।
আবেদন করছেন রক্তের। দেশের সর্বত্রই চলছে এই আবেদন। ‘স্বেচ্ছায় রক্ত দিন, জীবন বাঁচান’ নামের ওই সংগঠনের ফেসবুক পেজে আরো দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে কয়েকশ রক্তের আবেদন। ৩১শে জুলাই পেজটি থেকে পোস্ট করা হয়, আদ দ্বীন হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। একইদিন ওই পেজে আরো দেখা যায়, আসাদগেটের কেয়ার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য ও পজিটিভ গ্রুপের ৩ ব্যাগ রক্ত দরকার।
এই রোগী হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। ‘ব্লাড ডোনেশন বাংলাদেশ’ নামের আরেকটি স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের ফেসবুক পেজেও একই চিত্র। পেজের শুরু থেকে নিচের দিকে নামতেই শুধু রক্তের আবেদন। যার বেশির ভাগই রয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ পজিটিভ রক্তের আবেদন করে পেজটি শেয়ার করে একটি পোস্ট। এতে জানানো হয়, রোগীর জন্য গতকালই দিনের মধ্যে লাগবে দুই ব্যাগ রক্ত। একই সময়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া এক নারীর জন্য এ পজিটিভ রক্তের আবেদন জানিয়ে পোস্ট করা হয়। ব্লাড ডোনেশন বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে শুধু ঢাকার ভেতর নয়, ঢাকার বাইরের অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্যও রক্তের আবেদন করতে দেখা গেছে। স্বেচ্ছাসেবী এসব সংগঠন ছাড়াও ফেসবুককেন্দ্রিক বেশ কয়েকটি গ্রুপ থেকেও অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্ত চেয়ে আবেদন করছেন। এগুলোর মধ্যে এসএসসি ব্যাচ-২০০৫ ও এইচএসসি ব্যাচ-২০০৭, আওয়ার কালারস, স্টুডেন্ট কমিউনিটি অব স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ব্যাচ- ২০০৫ অব বাংলাদেশসহ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এ ছাড়া অনেকে নিজ উদ্যোগেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনেই শেয়ার করছেন রক্তের আবেদন চেয়ে। শাহানা আক্তার নামের এক নিয়মিত রক্তদাতা ১লা জুলাই তিনটি পোস্ট করেছেন নিজের ওয়ালে। তিনি জানান, এদের মধ্যে কেউই তার কাছের কেউ নন। শুধু এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তিনি নিজেও কিছুদিন পর পর রক্ত দিচ্ছেন। শাহানা বলেন, আমি নিয়মিত রক্তদাতা। বাঁধনের হয়েও অনেক কাজ করেছি। এখন ডেঙ্গু যে প্রকট আকার ধারণ করেছে, দেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আক্রান্ত রোগীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। কারো কাছে খবর পেলেই ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করে সবাইকে জানান দিচ্ছি। নিজে না পারলেও অন্যদের বলছি, এই ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
এটা একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব বলেই করছি। সাংবাদিক ও গীতিকার মাহতাব হোসেন জানান, আমি নিয়মিত ডোনার। এ পর্যন্ত ৪০ বার রক্ত দিয়েছি। বাঁধন থেকে সনদও পেয়েছি। ডেঙ্গু আক্রান্তদের পাশে থাকার জন্যও বেশ চেষ্টা চালাচ্ছি। নিজে না দিতে পারলে অন্যদের আহ্বান জানাচ্ছি। আমি মনে করি, এত ভয়াবহ অবস্থা বাংলাদেশে আর কখনোই হয়নি। এটা একটা শঙ্কাও বটে। তবে আমাদের সবার উচিত যাদের রক্তের দরকার ফেসবুকে হোক আর যেভাবেই হোক রক্ত সংগ্রহ করে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের এই দায়িত্বটুকু সবারই পালন করা উচিৎ।
রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন জানায়, ডেঙ্গু দেশজুড়ে মহামারী রূপ ধারণ করার পর থেকে রক্তের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। প্রতিদিনই প্রচুর মানুষের রক্ত লাগছে। বাঁধনও পর্যাপ্ত রক্ত সংগ্রহ করছে। যাতে কোনোভাবে সংকট সৃষ্টি না হয়। বাঁধনের এক সদস্য হাসান আল আরিফ জানিয়েছেন, আমি নিজেও নিয়মিত ডোনার। যখনই কারো রক্তের দরকার পড়ছে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এর মধ্যে একাধিকবার ফেসবুক পোস্ট ও পরিচিতদের মধ্য থেকে কয়েক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করেছি।
ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে ব্যাপক হারে। কারো মা, কারো বোন, কারো বাবা কিংবা ভাইকে বাঁচাতে স্বজনরা রক্তের জন্য ছুটছেন এখানে সেখানে। নিকটজনরা কেউ ব্যর্থ হলে দ্বারস্থ হচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও।
আবেদন করছেন রক্তের। দেশের সর্বত্রই চলছে এই আবেদন। ‘স্বেচ্ছায় রক্ত দিন, জীবন বাঁচান’ নামের ওই সংগঠনের ফেসবুক পেজে আরো দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে কয়েকশ রক্তের আবেদন। ৩১শে জুলাই পেজটি থেকে পোস্ট করা হয়, আদ দ্বীন হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। একইদিন ওই পেজে আরো দেখা যায়, আসাদগেটের কেয়ার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য ও পজিটিভ গ্রুপের ৩ ব্যাগ রক্ত দরকার।
এই রোগী হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। ‘ব্লাড ডোনেশন বাংলাদেশ’ নামের আরেকটি স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের ফেসবুক পেজেও একই চিত্র। পেজের শুরু থেকে নিচের দিকে নামতেই শুধু রক্তের আবেদন। যার বেশির ভাগই রয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ পজিটিভ রক্তের আবেদন করে পেজটি শেয়ার করে একটি পোস্ট। এতে জানানো হয়, রোগীর জন্য গতকালই দিনের মধ্যে লাগবে দুই ব্যাগ রক্ত। একই সময়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া এক নারীর জন্য এ পজিটিভ রক্তের আবেদন জানিয়ে পোস্ট করা হয়। ব্লাড ডোনেশন বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে শুধু ঢাকার ভেতর নয়, ঢাকার বাইরের অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্যও রক্তের আবেদন করতে দেখা গেছে। স্বেচ্ছাসেবী এসব সংগঠন ছাড়াও ফেসবুককেন্দ্রিক বেশ কয়েকটি গ্রুপ থেকেও অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্ত চেয়ে আবেদন করছেন। এগুলোর মধ্যে এসএসসি ব্যাচ-২০০৫ ও এইচএসসি ব্যাচ-২০০৭, আওয়ার কালারস, স্টুডেন্ট কমিউনিটি অব স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ব্যাচ- ২০০৫ অব বাংলাদেশসহ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এ ছাড়া অনেকে নিজ উদ্যোগেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনেই শেয়ার করছেন রক্তের আবেদন চেয়ে। শাহানা আক্তার নামের এক নিয়মিত রক্তদাতা ১লা জুলাই তিনটি পোস্ট করেছেন নিজের ওয়ালে। তিনি জানান, এদের মধ্যে কেউই তার কাছের কেউ নন। শুধু এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তিনি নিজেও কিছুদিন পর পর রক্ত দিচ্ছেন। শাহানা বলেন, আমি নিয়মিত রক্তদাতা। বাঁধনের হয়েও অনেক কাজ করেছি। এখন ডেঙ্গু যে প্রকট আকার ধারণ করেছে, দেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আক্রান্ত রোগীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। কারো কাছে খবর পেলেই ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করে সবাইকে জানান দিচ্ছি। নিজে না পারলেও অন্যদের বলছি, এই ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
এটা একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব বলেই করছি। সাংবাদিক ও গীতিকার মাহতাব হোসেন জানান, আমি নিয়মিত ডোনার। এ পর্যন্ত ৪০ বার রক্ত দিয়েছি। বাঁধন থেকে সনদও পেয়েছি। ডেঙ্গু আক্রান্তদের পাশে থাকার জন্যও বেশ চেষ্টা চালাচ্ছি। নিজে না দিতে পারলে অন্যদের আহ্বান জানাচ্ছি। আমি মনে করি, এত ভয়াবহ অবস্থা বাংলাদেশে আর কখনোই হয়নি। এটা একটা শঙ্কাও বটে। তবে আমাদের সবার উচিত যাদের রক্তের দরকার ফেসবুকে হোক আর যেভাবেই হোক রক্ত সংগ্রহ করে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের এই দায়িত্বটুকু সবারই পালন করা উচিৎ।
রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন জানায়, ডেঙ্গু দেশজুড়ে মহামারী রূপ ধারণ করার পর থেকে রক্তের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। প্রতিদিনই প্রচুর মানুষের রক্ত লাগছে। বাঁধনও পর্যাপ্ত রক্ত সংগ্রহ করছে। যাতে কোনোভাবে সংকট সৃষ্টি না হয়। বাঁধনের এক সদস্য হাসান আল আরিফ জানিয়েছেন, আমি নিজেও নিয়মিত ডোনার। যখনই কারো রক্তের দরকার পড়ছে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এর মধ্যে একাধিকবার ফেসবুক পোস্ট ও পরিচিতদের মধ্য থেকে কয়েক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করেছি।
No comments