যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলংকা ও সোফা: চীনের বিপরীতে ভারসাম্যের বিষয়? by লিন্ডসে হিউজেস
জুনের
শেষের দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যখন ইন্দো-প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অঞ্চল সফর করেন, তখন তিনি শ্রীলংকা সফর বাতিল করেছিলেন। ওই সফরে
তিনি তিনটি দেশে গিয়েছিলেন। কলম্বোর মার্কিন দূতাবাস সে সময় জানিয়েছিল যে
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সূচিতে সমস্যা হওয়ায় তিনি কলম্বো আসতে পারেননি এবং এ
জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এমন একটা সময়ে আমরা বাস করছি, যখন কূটনৈতিক
বলয়ে এ ধরনের সফর বাতিলের ঘটনা ঘটেই থাকে। তবে কলম্বোতে গুজব রটিয়ে পড়ে
যে, শ্রীলংকার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে স্ট্যাটাস অব ফোর্সেস এগ্রিমেন্ট (সোফা)
চুক্তি করতে না পারায় তিনি তার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন সফর বাতিলের
মাধ্যমে।
এই দাবির পেছনে কিছু সত্যতা থাকতেও পারে, তবে এখানে আরও একটি ইস্যু জড়িত, সেটা হলো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওয়াশিংটনের চীনকে মোকাবেলার পরিকল্পনা। এই আশঙ্কা হয়তো সত্য যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বিরক্ত হয়েছেন, কারণ এ ব্যাপারে তার প্রচেষ্টাটা সাময়িকভাবে থমকে গেছে। এই বিষয়টির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
অর্থনৈতিক নিম্নগতির কারণে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমমনা দেশগুলোর সাথে জোট গড়ার মাধ্যমে চীনকে মোকাবেলার চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কথায় আছে, “রাজনীতিতে এক সপ্তাহ অনেক সময়”। গত তিন বছরের ঘটনাবলী সেটা প্রমাণ করে। এক সময় ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের দুটো বড় কারণ ছিল। প্রথমত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে পরিবহন করা তাদের জ্বালানি জাহাজের নিরাপত্তা বিধান। দ্বিতীয়ত, ভারত মহাসাগরে চীনের বিপরীতে শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখা।
মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর ওয়াশিংটনের নির্ভরতা এখন কমে গেছে, কিন্তু ভারত মহাসাগরে চীনের বিরুদ্ধে ভারসাম্য বজায়ের প্রচেষ্টা আরও বেড়ে গেছে তাদের।
আর এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শ অংশীদার হতে পারে শ্রীলংকা। শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা তার আমলে তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইতি টানার জন্য চীনের সাহায্য চেয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, চীন শ্রীলংকাকে বিপুল অর্থ ঋণ দেয়, যেটা পরিশোধ করা শ্রীলংকার মতো দেশের জন্য ছিল কঠিন। ফলে হামবানতোতা বন্দরটি চীনের হাতে ৯৯ বছরের জন্য তুলে দেয় শ্রীলংকা। ওয়াশিংটন যদি এই দেশটিকে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে সেটা হবে চীনের জন্য একটা বড় ধরনের আঘাত।
শ্রীলংকায় ওয়াশিংটনের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পেছনে অন্য উদ্দেশ্যও রয়েছে। এখানে ঘাঁটি গাড়তে পারলে শ্রীলংকার কাছ দিয়ে যাওয়া চীনা জাহাজের উপর চোখ রাখা যাবে। তাছাড়া চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের উপর নজরদারির মাধ্যমে এ অঞ্চলে চীনা প্রভাবকেও কমিয়ে আনা যাবে।
সেই সাথে শ্রীলংকায় ঘাঁটি গাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ রয়েছে। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশান অঞ্চলে এখন যেখানে মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে, সেটা স্থাপন করার জন্য সেখানকার আদিবাসী চাগোসিয়ান জনগোষ্ঠীকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এই জনগোষ্ঠি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে দ্বীপটিকে চাগোস জনগোষ্ঠির কাছে ফিরিয়ে দেয়া হতে পারে। সেটা হলে ভারত মহাসাগরে প্রভাব ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ঘাঁটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে হবে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এ জন্য শ্রীলংকার পাশাপাশি মালদ্বীপ ও সিসেলসের কাছেও প্রস্তাব নিয়ে গেছে।
কলম্বো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ২০০৭ সালে অ্যাকুইজিশান অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসেস এগ্রিমেন্ট হয়, যা ২০১৭ সালে আবার নবায়ন করা হয়। ওই চুক্তির অধীনে দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে লজিস্টিক্যাল সহায়তা, সরবরাহ, সেবা এবং ‘জরুরি পরিস্থিতিতে’ একে অপরের বিমান বন্দর ও বন্দর ব্যবহারের সুবিধা।
এই দাবির পেছনে কিছু সত্যতা থাকতেও পারে, তবে এখানে আরও একটি ইস্যু জড়িত, সেটা হলো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওয়াশিংটনের চীনকে মোকাবেলার পরিকল্পনা। এই আশঙ্কা হয়তো সত্য যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বিরক্ত হয়েছেন, কারণ এ ব্যাপারে তার প্রচেষ্টাটা সাময়িকভাবে থমকে গেছে। এই বিষয়টির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
অর্থনৈতিক নিম্নগতির কারণে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমমনা দেশগুলোর সাথে জোট গড়ার মাধ্যমে চীনকে মোকাবেলার চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কথায় আছে, “রাজনীতিতে এক সপ্তাহ অনেক সময়”। গত তিন বছরের ঘটনাবলী সেটা প্রমাণ করে। এক সময় ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের দুটো বড় কারণ ছিল। প্রথমত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে পরিবহন করা তাদের জ্বালানি জাহাজের নিরাপত্তা বিধান। দ্বিতীয়ত, ভারত মহাসাগরে চীনের বিপরীতে শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখা।
মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর ওয়াশিংটনের নির্ভরতা এখন কমে গেছে, কিন্তু ভারত মহাসাগরে চীনের বিরুদ্ধে ভারসাম্য বজায়ের প্রচেষ্টা আরও বেড়ে গেছে তাদের।
আর এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শ অংশীদার হতে পারে শ্রীলংকা। শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা তার আমলে তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইতি টানার জন্য চীনের সাহায্য চেয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, চীন শ্রীলংকাকে বিপুল অর্থ ঋণ দেয়, যেটা পরিশোধ করা শ্রীলংকার মতো দেশের জন্য ছিল কঠিন। ফলে হামবানতোতা বন্দরটি চীনের হাতে ৯৯ বছরের জন্য তুলে দেয় শ্রীলংকা। ওয়াশিংটন যদি এই দেশটিকে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে সেটা হবে চীনের জন্য একটা বড় ধরনের আঘাত।
শ্রীলংকায় ওয়াশিংটনের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পেছনে অন্য উদ্দেশ্যও রয়েছে। এখানে ঘাঁটি গাড়তে পারলে শ্রীলংকার কাছ দিয়ে যাওয়া চীনা জাহাজের উপর চোখ রাখা যাবে। তাছাড়া চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের উপর নজরদারির মাধ্যমে এ অঞ্চলে চীনা প্রভাবকেও কমিয়ে আনা যাবে।
সেই সাথে শ্রীলংকায় ঘাঁটি গাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ রয়েছে। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশান অঞ্চলে এখন যেখানে মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে, সেটা স্থাপন করার জন্য সেখানকার আদিবাসী চাগোসিয়ান জনগোষ্ঠীকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এই জনগোষ্ঠি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে দ্বীপটিকে চাগোস জনগোষ্ঠির কাছে ফিরিয়ে দেয়া হতে পারে। সেটা হলে ভারত মহাসাগরে প্রভাব ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ঘাঁটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে হবে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এ জন্য শ্রীলংকার পাশাপাশি মালদ্বীপ ও সিসেলসের কাছেও প্রস্তাব নিয়ে গেছে।
কলম্বো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ২০০৭ সালে অ্যাকুইজিশান অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসেস এগ্রিমেন্ট হয়, যা ২০১৭ সালে আবার নবায়ন করা হয়। ওই চুক্তির অধীনে দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে লজিস্টিক্যাল সহায়তা, সরবরাহ, সেবা এবং ‘জরুরি পরিস্থিতিতে’ একে অপরের বিমান বন্দর ও বন্দর ব্যবহারের সুবিধা।
চীনের তৈরি হামবানতোতা বন্দর প্রশাসন ভবন |
No comments