রোহিঙ্গা নিয়ে কী আলোচনা হবে চীনে -মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশ্ন by মিজানুর রহমান
রোহিঙ্গা
ইস্যুতে চীনের কাছে কি সহায়তা চাইতে পারে বাংলাদেশ? জানতে চেয়েছে মার্কিন
প্রতিনিধি দল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের প্রেক্ষাপটে গতকাল
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক বৈঠকে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে জানতে
চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার অল্প আগে
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে মার্কিন একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়।
সেখানে মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জ্যেষ্ঠ
কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরজমিন দেখতে বাংলাদেশ সফর
করছেন মার্কিন কংগ্রেস সংশ্লিষ্ট দু’জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (কংগ্রেসনাল
স্টাফার) রবার্ট কারেন এবং পল গ্রোভ।
রবার্ট কারেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার ফর সিনেট মেজরিটি লিডার মিচ ম্যাককনেল এবং পল গ্রোভ, সিনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েট কমিটি (সেক)-এর ফরেন অপারেশন্স অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেশনাল স্টাফ মেম্বার। গুরুত্বপূর্ণ ওই দুই কর্মকর্তা সফরের প্রথম দু’দিন কক্সবাজারেই কাটিয়েছেন। জেলার উখিয়া ও টেকনাফে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা নিজের চোখে দেখেছেন।
তাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেছেন।
ক্যাম্পের জীবনে তারা কতটা স্বস্তির মধ্যে রয়েছেন, তাদের জীবনমানের উন্নয়নে মার্কিন সহায়তা কতটা কাজে লেগেছে সেটা জানা-বুঝার চেষ্টা করেছেন। গতকাল ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে বসেন তারা। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারও অংশ নেন। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সোয়া ঘণ্টার ওই বৈঠকে পুঞ্জীভূত রোহিঙ্গা সংকটের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয়। প্রাসঙ্গিকভাবেই আলোচনায় স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর অত্যাসন্ন বেইজিং সফর প্রসঙ্গ। এজেন্ডায় না থাকলেও মার্কিন প্রতিনিধিরা আগ্রহভরে জানতে চান, সরকার প্রধানের চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্টভাবে কি আলোচনা হতে পারে? তাদের এ-ও জিজ্ঞাসা ছিল- চীনের কাছ থেকে কি ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ? ঢাকার তরফে সফর নিয়ে আগাম কোনো মন্তব্য বা আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়নি। এ নিয়ে ‘আলোচনা হবে’ জানিয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।
একই সঙ্গে ক্যাম্প পরিদর্শনের মার্কিন দলের প্রতিক্রিয়া বা অভিজ্ঞতা কেমন তা জানতে চাওয়া হয়। বৈঠক শেষে উপস্থিত এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আমাদের পাশে আছে। তারা রাজনৈতিক ও মানবিক- উভয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের আগস্টের আগে এবং পরের ঘটনাগুলো তাদের নখদর্পণে রয়েছে। তারা রাখাইন এবং কক্সবাজার থেকে নিজেদের মতো করে রিপোর্ট সংগ্রহ করে। কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে তারা ঢাকার বৈঠকে তোলে। কক্সবাজার সফরকারী প্রতিনিধিদলটি তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেই সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চেয়েছিল দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, তাদের কিছু বিষয় জানার ছিল। আমরা আমাদের মতো করে তা বলেছি। ডিপ্লোমেসিতে সবকিছু ‘অন ক্যামেরা’ হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, অংশীদার বা স্ট্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোতভাবে আমাদের পাশে আছে। তারা সেটি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে গেছেন।
ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা এবং পরিস্থিতির উন্নতিতে সরকারের প্রচেষ্টাতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় এসেছে। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনই যে বাংলাদেশের একমাত্র চাওয়া- সেটি আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি। তারা আমাদের এ নিয়ে রাজনৈতিক সাপোর্ট অর্থাৎ বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে নিয়মিতভাবে তোলা এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ ধরে রাখার কথা বলে গেছেন। আমাদের চাওয়া এবং তাদের পদক্ষেপের মধ্যে খুব একটি তফাৎ নেই মন্তব্য করে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখানে প্রত্যেকের নিজস্ব গোল বা টার্গেট রয়েছে। এটা বুঝেই আমরা দুইয়ের মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করি। ওই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে চায়। আমরাও চাই রোহিঙ্গাদের প্রতি যে বর্বরতা হয়েছে তার জন্য দায়ীদের শাস্তি হোক। কিন্তু আমরা সবার আগে চাই বাস্তুচ্যুতদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ।
তাদের চির দিনের জন্য ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে। এ জন্য বাংলাদেশ তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় দু’টি পথেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা আলোচনার দ্বার যেমন খোলা রাখছে তেমনি বৈশ্বিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপও অব্যাহত রেখেছে। কর্মকর্তারা বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুর বাইরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। বিশেষ করে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
রবার্ট কারেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার ফর সিনেট মেজরিটি লিডার মিচ ম্যাককনেল এবং পল গ্রোভ, সিনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েট কমিটি (সেক)-এর ফরেন অপারেশন্স অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেশনাল স্টাফ মেম্বার। গুরুত্বপূর্ণ ওই দুই কর্মকর্তা সফরের প্রথম দু’দিন কক্সবাজারেই কাটিয়েছেন। জেলার উখিয়া ও টেকনাফে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা নিজের চোখে দেখেছেন।
তাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেছেন।
ক্যাম্পের জীবনে তারা কতটা স্বস্তির মধ্যে রয়েছেন, তাদের জীবনমানের উন্নয়নে মার্কিন সহায়তা কতটা কাজে লেগেছে সেটা জানা-বুঝার চেষ্টা করেছেন। গতকাল ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে বসেন তারা। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারও অংশ নেন। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সোয়া ঘণ্টার ওই বৈঠকে পুঞ্জীভূত রোহিঙ্গা সংকটের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয়। প্রাসঙ্গিকভাবেই আলোচনায় স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর অত্যাসন্ন বেইজিং সফর প্রসঙ্গ। এজেন্ডায় না থাকলেও মার্কিন প্রতিনিধিরা আগ্রহভরে জানতে চান, সরকার প্রধানের চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্টভাবে কি আলোচনা হতে পারে? তাদের এ-ও জিজ্ঞাসা ছিল- চীনের কাছ থেকে কি ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ? ঢাকার তরফে সফর নিয়ে আগাম কোনো মন্তব্য বা আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়নি। এ নিয়ে ‘আলোচনা হবে’ জানিয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।
একই সঙ্গে ক্যাম্প পরিদর্শনের মার্কিন দলের প্রতিক্রিয়া বা অভিজ্ঞতা কেমন তা জানতে চাওয়া হয়। বৈঠক শেষে উপস্থিত এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আমাদের পাশে আছে। তারা রাজনৈতিক ও মানবিক- উভয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের আগস্টের আগে এবং পরের ঘটনাগুলো তাদের নখদর্পণে রয়েছে। তারা রাখাইন এবং কক্সবাজার থেকে নিজেদের মতো করে রিপোর্ট সংগ্রহ করে। কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে তারা ঢাকার বৈঠকে তোলে। কক্সবাজার সফরকারী প্রতিনিধিদলটি তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেই সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চেয়েছিল দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, তাদের কিছু বিষয় জানার ছিল। আমরা আমাদের মতো করে তা বলেছি। ডিপ্লোমেসিতে সবকিছু ‘অন ক্যামেরা’ হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, অংশীদার বা স্ট্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোতভাবে আমাদের পাশে আছে। তারা সেটি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে গেছেন।
ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা এবং পরিস্থিতির উন্নতিতে সরকারের প্রচেষ্টাতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় এসেছে। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনই যে বাংলাদেশের একমাত্র চাওয়া- সেটি আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি। তারা আমাদের এ নিয়ে রাজনৈতিক সাপোর্ট অর্থাৎ বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে নিয়মিতভাবে তোলা এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ ধরে রাখার কথা বলে গেছেন। আমাদের চাওয়া এবং তাদের পদক্ষেপের মধ্যে খুব একটি তফাৎ নেই মন্তব্য করে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখানে প্রত্যেকের নিজস্ব গোল বা টার্গেট রয়েছে। এটা বুঝেই আমরা দুইয়ের মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করি। ওই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে চায়। আমরাও চাই রোহিঙ্গাদের প্রতি যে বর্বরতা হয়েছে তার জন্য দায়ীদের শাস্তি হোক। কিন্তু আমরা সবার আগে চাই বাস্তুচ্যুতদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ।
তাদের চির দিনের জন্য ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে। এ জন্য বাংলাদেশ তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় দু’টি পথেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা আলোচনার দ্বার যেমন খোলা রাখছে তেমনি বৈশ্বিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপও অব্যাহত রেখেছে। কর্মকর্তারা বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুর বাইরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। বিশেষ করে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
No comments