প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান বিশিষ্টজনরা
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ বিরোধী অভিযোগ করা প্রিয়া
সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। বলছেন, প্রিয়া
যে অভিযোগ করেছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি যা বলেছেন তা সত্য নয়। দেশে
নানা ধরনের নির্যাতনের ঘটনা আছে। তবে তা সার্বিক। কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের
ওপর নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। তিনি এ ধরনের অভিযোগ করে দেশের বিরুদ্ধে
অবস্থান নিয়েছেন। এ বিষয়ে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, এটা একেবারেই মিথ্যাচার। অত্যন্ত দুঃখজনক যে এমন একটি মিথ্যা তথ্য তিনি পরিবেশন করেছেন। এটা কিছুতেই মানা যায় না। আমাদের সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত দৃঢ়। সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। তাকে দেশে এনে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। মিথ্যাচার করে দেশের নামে বদনাম দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সমস্ত ধর্মের লোকদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য আছে।
প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখন নিপীড়ন কেবল বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হচ্ছে না। এখানে গুম, বিচারবর্হিভুত হত্যা, দারিদ্র, নিরাপত্তাহীনতা, সড়কে মৃত্যু এগুলোতো বাংলাদেশের সাধারণ সমস্যা। এগুলো আলাদা কোনো সমস্যা না। সংখ্যালঘুদের যে সমস্যাটা এটা আমি মনে করি যে সাধারণ সমস্যারই একটি অংশ। তিনি যদি উপস্থাপন করতেন যে এখানে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই, এখানে বিচারহীনতা আছে, ধর্ষণ চলছে, শিশুহত্যা হচ্ছে এগুলো যদি তিনি তুলে ধরতেন তাহলে ভালো করতেন।
এখানে দুর্বলদের উপর নানা রকম নিপীড়ন করে। এগুলো আসল সত্য। নানান ধরনের মানুষই নির্যাতিত হচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদেরটা তুলে ধরা মানেই হলো এটা আরেকটি স্থানে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু এটা সাম্প্রদায়িক সমস্যা না। এটা হচ্ছে বৈষম্যের সমস্যা।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেছেন তারা নাকি জানেন না কি হয়েছে। শুনেছি তার স্বামী সরকারি চাকরি করেন। সরকারি চাকরি করা একজনের স্ত্রী আমেরিকায় পৌঁছাল কিভাবে? যতটুকু জানি যে সরকারি চাকরিরত অবস্থায় সরকারের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারির পরিবার বিদেশ যেতে হলে সরকারের অনুমতি লাগে। সে আমেরিকা যেতে সরকারের কোনো ক্লিয়ারেন্স নিয়েছে কি না তা জানি না। এটাতো একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাবার্তা। বাংলাদেশে যে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান আছে এটাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিনষ্ট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে তারা বরং ভালো আছে। হঠাৎ এই সরকারের অবস্থানকে নিচু করে দেখানোর জন্য সরকারের বিরুদ্ধেই হয়তো একটি ষড়যন্ত্র হতে পারে। বাংলাদেশের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কারো হয়ে কাজ করছে কি না সেটাও হতে পারে। এখানে যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং মুসলমানদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক তা উপমহাদেশে আর কোথাও নেই। শ্রীলংকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি এবং একটি অসুস্থ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের কোনো সংখ্যালঘু লোক আমেরিকা বা অন্য কোথাও গিয়ে অভিযোগ করেছে তা আমি শুনিনি। তাহলে আমাদের দেশের মানুষের কি দেশপ্রেমের অভাব আছে নাকি? এটাও একটি প্রশ্ন হতে পার। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে এত উচ্চপদস্থ পর্যায়ে সংখ্যালঘুরা কর্মরত আছেন তারপরেও এ ধরনের অভিযোগ করার উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই মহৎ বলে মনে হয় না। এই বক্তব্যকে নিঃসন্দেহে একজন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে আমি গ্রহণ করতে পারি না। আমি আশা করব সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, কি বলবো। বলার কিছু নাই। পুরোপুরিই বানোয়াট এবং মিথ্যা কথা। তার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ তাকে না পাঠালে সে ওখানে গেলো কিভাবে। সরকারকে এ বিষয়টি সিরিয়াসভাবে দেখা উচিত। এই মিথ্যা কথা বলার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই কাজটি প্রিয়া সাহা সঠিক করেননি। ট্রাম্পের কাছে সে কেন অভিযোগ করতে গেল? তিনি বলেন, সে যা বলেছে তার তথ্যের ভিত্তি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রথমত তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণ অবাস্তব। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য এটা হুমকি স্বরূপ। এটা শুধু বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেনি। বিদেশে বাংলাদেশের যেসব মানুষ আছে আমেরিকা তাদের জন্য আরো বেশি নিরাপত্তা এবং হয়রানির ঝুঁকি তৈরি করেছে। প্রিয়া সাহা কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসা মানুষ না। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক, বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের নেত্রী। হঠাৎ করে তার অবস্থানের একটি মানুষ এ কথা বলতে পারে না। নিশ্চয় এই ধরনের চিন্তার চর্চা, এভাবে অবাধ দোষারোপ করা বা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সম্পর্কে দোষারোপ করার চিন্তার চর্চা এই সমাজে কোথাও না কোথাও হয়। না হলে চট করে একথাটা বলার কথা না তার মতো বয়সে এবং অবস্থানের মানুষের। এই ধরনের চিন্তার চর্চা কারা করে এটাই আসলে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ থেকে অবিলম্বে তাকে বহিষ্কার করা উচিৎ। তারা যদি সত্যিই মনে করে এটা তাদের বক্তব্য না তাহলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা উচিৎ।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমরা বিভিন্ন ফেসবুক পেজ-এ দেখতে পাচ্ছি যে প্রিয়া সাহার নাকি দুই মেয়ে আমেরিকায় থাকে। তার স্বামী সামান্য চাকরি করে। সামান্য চাকরি করা মানুষের দুই সন্তান আমেরিকাতে থাকবে কিভাবে। কোথা থেকে এই খরচ আসে সরকারের এগুলো তদন্ত করে দেখা উচিত। যে একটি পরিবার বাংলাদেশে থাকে এবং তার স্বামী এমন চাকরি করে তার দুই মেয়েকেই আমেরিকায় পড়াতে পারে। এখানে যদি তার এত অভিযোগ থাকে তাহলে আমাদের তদন্ত করে দেখা উচিত তাদের এতো স্বাচ্ছন্দের উৎসটা কি। বাংলাদেশ থেকে যদি তারা কিছুই না পায়, বাংলাদেশে তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলেছে, দখল করে ফেলেছে, তারা নির্যাতিত হচ্ছে তাহলে এই বিত্ত এবং স্বাচ্ছন্দের উৎসটা কোথায়? এটা সরকারেরই তদন্ত করা উচিৎ। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমি মনে করি, প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সুযোগে আবার ঢালাওভাবে যেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে দোষারোপ করা না হয়। সেটাও আমাদের দেখতে হবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এটা অসম্ভব একটি দাবি এবং খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের তাদের নিপীড়ন, বৈষম্য এবং নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব কিছু বিষয় আছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে লড়াইও বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে সাধারণভাবেই নিরাপত্তাহীনতা আছে। সাম্প্রদায়িকভাবে বা জাতিগত বিদ্বেষ থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, তাদের জমি দখল, দেশ থেকে তাড়ানোর প্রবণতা বা চেষ্টা কারো কারো মাঝে দেখা যায়। সেটার বিরোধী যে আন্দোলন, শক্তি বা মতামত বাংলাদেশে এটাও অনেক শক্তিশালী। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদ হয়। এবং তার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে একটি চেষ্টা আছে সবসময় যাতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন না হয়।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, এটা একেবারেই মিথ্যাচার। অত্যন্ত দুঃখজনক যে এমন একটি মিথ্যা তথ্য তিনি পরিবেশন করেছেন। এটা কিছুতেই মানা যায় না। আমাদের সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত দৃঢ়। সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। তাকে দেশে এনে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। মিথ্যাচার করে দেশের নামে বদনাম দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সমস্ত ধর্মের লোকদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য আছে।
প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখন নিপীড়ন কেবল বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হচ্ছে না। এখানে গুম, বিচারবর্হিভুত হত্যা, দারিদ্র, নিরাপত্তাহীনতা, সড়কে মৃত্যু এগুলোতো বাংলাদেশের সাধারণ সমস্যা। এগুলো আলাদা কোনো সমস্যা না। সংখ্যালঘুদের যে সমস্যাটা এটা আমি মনে করি যে সাধারণ সমস্যারই একটি অংশ। তিনি যদি উপস্থাপন করতেন যে এখানে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই, এখানে বিচারহীনতা আছে, ধর্ষণ চলছে, শিশুহত্যা হচ্ছে এগুলো যদি তিনি তুলে ধরতেন তাহলে ভালো করতেন।
এখানে দুর্বলদের উপর নানা রকম নিপীড়ন করে। এগুলো আসল সত্য। নানান ধরনের মানুষই নির্যাতিত হচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদেরটা তুলে ধরা মানেই হলো এটা আরেকটি স্থানে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু এটা সাম্প্রদায়িক সমস্যা না। এটা হচ্ছে বৈষম্যের সমস্যা।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেছেন তারা নাকি জানেন না কি হয়েছে। শুনেছি তার স্বামী সরকারি চাকরি করেন। সরকারি চাকরি করা একজনের স্ত্রী আমেরিকায় পৌঁছাল কিভাবে? যতটুকু জানি যে সরকারি চাকরিরত অবস্থায় সরকারের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারির পরিবার বিদেশ যেতে হলে সরকারের অনুমতি লাগে। সে আমেরিকা যেতে সরকারের কোনো ক্লিয়ারেন্স নিয়েছে কি না তা জানি না। এটাতো একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাবার্তা। বাংলাদেশে যে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান আছে এটাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিনষ্ট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে তারা বরং ভালো আছে। হঠাৎ এই সরকারের অবস্থানকে নিচু করে দেখানোর জন্য সরকারের বিরুদ্ধেই হয়তো একটি ষড়যন্ত্র হতে পারে। বাংলাদেশের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কারো হয়ে কাজ করছে কি না সেটাও হতে পারে। এখানে যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং মুসলমানদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক তা উপমহাদেশে আর কোথাও নেই। শ্রীলংকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি এবং একটি অসুস্থ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের কোনো সংখ্যালঘু লোক আমেরিকা বা অন্য কোথাও গিয়ে অভিযোগ করেছে তা আমি শুনিনি। তাহলে আমাদের দেশের মানুষের কি দেশপ্রেমের অভাব আছে নাকি? এটাও একটি প্রশ্ন হতে পার। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে এত উচ্চপদস্থ পর্যায়ে সংখ্যালঘুরা কর্মরত আছেন তারপরেও এ ধরনের অভিযোগ করার উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই মহৎ বলে মনে হয় না। এই বক্তব্যকে নিঃসন্দেহে একজন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে আমি গ্রহণ করতে পারি না। আমি আশা করব সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, কি বলবো। বলার কিছু নাই। পুরোপুরিই বানোয়াট এবং মিথ্যা কথা। তার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ তাকে না পাঠালে সে ওখানে গেলো কিভাবে। সরকারকে এ বিষয়টি সিরিয়াসভাবে দেখা উচিত। এই মিথ্যা কথা বলার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই কাজটি প্রিয়া সাহা সঠিক করেননি। ট্রাম্পের কাছে সে কেন অভিযোগ করতে গেল? তিনি বলেন, সে যা বলেছে তার তথ্যের ভিত্তি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রথমত তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণ অবাস্তব। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য এটা হুমকি স্বরূপ। এটা শুধু বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেনি। বিদেশে বাংলাদেশের যেসব মানুষ আছে আমেরিকা তাদের জন্য আরো বেশি নিরাপত্তা এবং হয়রানির ঝুঁকি তৈরি করেছে। প্রিয়া সাহা কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসা মানুষ না। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক, বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের নেত্রী। হঠাৎ করে তার অবস্থানের একটি মানুষ এ কথা বলতে পারে না। নিশ্চয় এই ধরনের চিন্তার চর্চা, এভাবে অবাধ দোষারোপ করা বা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সম্পর্কে দোষারোপ করার চিন্তার চর্চা এই সমাজে কোথাও না কোথাও হয়। না হলে চট করে একথাটা বলার কথা না তার মতো বয়সে এবং অবস্থানের মানুষের। এই ধরনের চিন্তার চর্চা কারা করে এটাই আসলে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ থেকে অবিলম্বে তাকে বহিষ্কার করা উচিৎ। তারা যদি সত্যিই মনে করে এটা তাদের বক্তব্য না তাহলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা উচিৎ।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমরা বিভিন্ন ফেসবুক পেজ-এ দেখতে পাচ্ছি যে প্রিয়া সাহার নাকি দুই মেয়ে আমেরিকায় থাকে। তার স্বামী সামান্য চাকরি করে। সামান্য চাকরি করা মানুষের দুই সন্তান আমেরিকাতে থাকবে কিভাবে। কোথা থেকে এই খরচ আসে সরকারের এগুলো তদন্ত করে দেখা উচিত। যে একটি পরিবার বাংলাদেশে থাকে এবং তার স্বামী এমন চাকরি করে তার দুই মেয়েকেই আমেরিকায় পড়াতে পারে। এখানে যদি তার এত অভিযোগ থাকে তাহলে আমাদের তদন্ত করে দেখা উচিত তাদের এতো স্বাচ্ছন্দের উৎসটা কি। বাংলাদেশ থেকে যদি তারা কিছুই না পায়, বাংলাদেশে তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলেছে, দখল করে ফেলেছে, তারা নির্যাতিত হচ্ছে তাহলে এই বিত্ত এবং স্বাচ্ছন্দের উৎসটা কোথায়? এটা সরকারেরই তদন্ত করা উচিৎ। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমি মনে করি, প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সুযোগে আবার ঢালাওভাবে যেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে দোষারোপ করা না হয়। সেটাও আমাদের দেখতে হবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এটা অসম্ভব একটি দাবি এবং খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের তাদের নিপীড়ন, বৈষম্য এবং নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব কিছু বিষয় আছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে লড়াইও বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে সাধারণভাবেই নিরাপত্তাহীনতা আছে। সাম্প্রদায়িকভাবে বা জাতিগত বিদ্বেষ থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, তাদের জমি দখল, দেশ থেকে তাড়ানোর প্রবণতা বা চেষ্টা কারো কারো মাঝে দেখা যায়। সেটার বিরোধী যে আন্দোলন, শক্তি বা মতামত বাংলাদেশে এটাও অনেক শক্তিশালী। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদ হয়। এবং তার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে একটি চেষ্টা আছে সবসময় যাতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন না হয়।
No comments