ছেলেধরা আতংকে দেশের মানুষ: হুজুগে পিটিয়ে মানুষ হত্যা by মো. ওসমান গনি
সারাদেশে
মানুষের মনে ছেলে ধরা আতংক বিরাজ করছে।যা নিয়ে দেশের মানুষের অস্থিরতা
বিরাজ করছে। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’- ফেসবুকে এমন স্ট্যাস্টাস
দিয়ে গুজব রটানোর পর সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১০ দিনে
রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জেলায় ছেলেধরা সন্দেহে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত ২০জুলাই এরুপ সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে তিনজন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এরুপ গুজব ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করেছে পদ্মাসেতু প্রকল্প পরিচালক।
তা ছাড়া গুজব রটানোর অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। তারপরও আতঙ্কে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। আবার স্কুলে পাঠালেও তাদের সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছেন তারা।
তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হতে বলা হয়েছে, পদ্মাসেতুতে মাথা লাগার বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। এমন সন্দেহে (ছেলেধরা) গণপিটুনিতে হত্যা করা ফৌজদারী অপরাধ। আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার আহ্বান ও জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
গত ১০জুলাই থেকে ২০জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকায় ছেলেধরা সন্দেহে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি জেলায় একই সন্দেহে বেশ কয়েকজন গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন।
সর্বশেষ রাজধানীর উত্তর বাড্ডায়, নারায়ণগঞ্জ ও কেরাণীগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উত্তর বাড্ডায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয়দের দাবি, বোরকা পরিহিতি তিন নারী সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই বিদ্যালয় ও এর পাশে একটি
মাদরাসার কাছে যান। তারা স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাধার মুখে দু’জন পালিয়ে গেলেও আরেকজন গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা যান।
নিহতের নাম তাসলিমা (৪০)। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর। সে আসলে ছেলেধরা
ছিল না। সন্দেহবশত তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
অপরদিকে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দুই স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো এক নারী।
মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকায় আইডিয়াল ইসলামিক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্লে-গ্রুপের এক শিক্ষার্থীকে সকাল ৮টার দিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল এক যুবক। ওই শিক্ষার্থী তাকে দেখে স্যার স্যার বলে চিৎকার করলে যুবকটি তাকে নিজের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়। এ সময় ওই যুবককে দাঁড়াতে বললে সে একটি রিকশা নিয়ে চলে যাওয়ার
চেষ্টা করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে শারমিন বেগম (৩৫) নামে এক নারী এক প্রবাসীর বাড়িতে গেলে
তাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়। তবে নিহত যুবক ও আহত নারীর কেউ-ই ছেলেধরা নয় বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিন পারভেজ।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে গত শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার
দিকে ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত পরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯জুলাই (বৃহস্পতিবার) নেত্রকোনা শহরের নিউ টাউন এলাকায় সজীব নামে
সাত বছর বয়সী এক শিশুর কাটা মাথা ব্যাগে ভরে ঘোরাফেরা করার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। চলতি মাসের ১০ তারিখে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের চাঁদগেটে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। প্রথমে তার পরিচয় জানা যায়নি। পরে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। এবং সে
ছেলেধরা ছিল না বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস।
একই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত (৩০) এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া, ছেলেধরা সন্দেহে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে রেহেনা বেগম (৪৫) নামের এক নারীকে
আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মমতাজ খাতুন (৪৫) নামে আরেক নারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এক বাচ্চাকে আদর করতে গেলে সন্দেহবশত তাকে মারধর করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় গলাকাটায় জড়িত
সন্দেহে মালেকা খাতুন (৩৫) নামে এক নারীকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। পাবনার চাটমোহরে উপজেলার বনগ্রাম বাজারে রাসেল রানা (৩২) নামে এক যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
চট্টগ্রামের পটিয়াতে ২০ জুলাই (শুক্রবার) মধ্যরাতে একই সন্দেহে গণধোলাইয়ের শিকার
ব্যক্তির নাম মাসুদ (৩৮) নামে ব্যক্তি। তবে এরা কেউ-ই ছেলেধরা নয়; প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি নিশ্চিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
দিনকে দিন ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ও আহত হওয়া নিয়ে পুলিশের সদর দফতর হতে বলা হচ্ছে, গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল
পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল এবং গণপিটুনি দিয়ে মৃত্যু ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ। ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এসব ঘটনা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য মানুষের মাথা লাগবে বলে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, মূলত তা থেকে এই ছেলেধরা গুজব রটানো হচ্ছে। তবে এই গুজবের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। গত ৯ তারিখে পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবের
বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি মহল সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ব্রিজ নির্মাণে মানুষের মাথা প্রয়োজন হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরুপ গুজব রটানোর অভিযোগ গত ১৩ তারিখে নড়াইল, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও রাজবাড়ী থেকে মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
যারা এরুপ গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে আইন-শৃংখলা বাহিনী
সোচ্চার রয়েছে। এই ছেলে ধরা গুজব বন্ধ করতে হলে দেশের আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে সাথে দেশের সচেতন মানুষদের কে এগিয়ে আসতে হবে।সাথে সাথে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,মসজিদে,মন্দির গুলোতে ব্যাপক প্রচার -প্রচারনা চালাতে হবে।পাড়া-মহল্লায় এলাকার লোকজনদের কে মিটিং করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
>>>লেখক- মো. ওসমান গনি (সাংবাদিক ও কলামিস্ট)
রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জেলায় ছেলেধরা সন্দেহে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত ২০জুলাই এরুপ সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে তিনজন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এরুপ গুজব ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করেছে পদ্মাসেতু প্রকল্প পরিচালক।
তা ছাড়া গুজব রটানোর অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। তারপরও আতঙ্কে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। আবার স্কুলে পাঠালেও তাদের সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছেন তারা।
তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হতে বলা হয়েছে, পদ্মাসেতুতে মাথা লাগার বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। এমন সন্দেহে (ছেলেধরা) গণপিটুনিতে হত্যা করা ফৌজদারী অপরাধ। আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার আহ্বান ও জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
গত ১০জুলাই থেকে ২০জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকায় ছেলেধরা সন্দেহে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি জেলায় একই সন্দেহে বেশ কয়েকজন গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন।
সর্বশেষ রাজধানীর উত্তর বাড্ডায়, নারায়ণগঞ্জ ও কেরাণীগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উত্তর বাড্ডায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয়দের দাবি, বোরকা পরিহিতি তিন নারী সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই বিদ্যালয় ও এর পাশে একটি
মাদরাসার কাছে যান। তারা স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাধার মুখে দু’জন পালিয়ে গেলেও আরেকজন গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা যান।
নিহতের নাম তাসলিমা (৪০)। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর। সে আসলে ছেলেধরা
ছিল না। সন্দেহবশত তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
অপরদিকে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দুই স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো এক নারী।
মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকায় আইডিয়াল ইসলামিক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্লে-গ্রুপের এক শিক্ষার্থীকে সকাল ৮টার দিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল এক যুবক। ওই শিক্ষার্থী তাকে দেখে স্যার স্যার বলে চিৎকার করলে যুবকটি তাকে নিজের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়। এ সময় ওই যুবককে দাঁড়াতে বললে সে একটি রিকশা নিয়ে চলে যাওয়ার
চেষ্টা করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে শারমিন বেগম (৩৫) নামে এক নারী এক প্রবাসীর বাড়িতে গেলে
তাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়। তবে নিহত যুবক ও আহত নারীর কেউ-ই ছেলেধরা নয় বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিন পারভেজ।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে গত শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার
দিকে ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত পরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯জুলাই (বৃহস্পতিবার) নেত্রকোনা শহরের নিউ টাউন এলাকায় সজীব নামে
সাত বছর বয়সী এক শিশুর কাটা মাথা ব্যাগে ভরে ঘোরাফেরা করার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। চলতি মাসের ১০ তারিখে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের চাঁদগেটে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। প্রথমে তার পরিচয় জানা যায়নি। পরে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। এবং সে
ছেলেধরা ছিল না বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস।
একই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত (৩০) এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া, ছেলেধরা সন্দেহে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে রেহেনা বেগম (৪৫) নামের এক নারীকে
আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মমতাজ খাতুন (৪৫) নামে আরেক নারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এক বাচ্চাকে আদর করতে গেলে সন্দেহবশত তাকে মারধর করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় গলাকাটায় জড়িত
সন্দেহে মালেকা খাতুন (৩৫) নামে এক নারীকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। পাবনার চাটমোহরে উপজেলার বনগ্রাম বাজারে রাসেল রানা (৩২) নামে এক যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
চট্টগ্রামের পটিয়াতে ২০ জুলাই (শুক্রবার) মধ্যরাতে একই সন্দেহে গণধোলাইয়ের শিকার
ব্যক্তির নাম মাসুদ (৩৮) নামে ব্যক্তি। তবে এরা কেউ-ই ছেলেধরা নয়; প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি নিশ্চিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
দিনকে দিন ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ও আহত হওয়া নিয়ে পুলিশের সদর দফতর হতে বলা হচ্ছে, গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল
পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল এবং গণপিটুনি দিয়ে মৃত্যু ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ। ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এসব ঘটনা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য মানুষের মাথা লাগবে বলে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, মূলত তা থেকে এই ছেলেধরা গুজব রটানো হচ্ছে। তবে এই গুজবের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। গত ৯ তারিখে পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবের
বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি মহল সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ব্রিজ নির্মাণে মানুষের মাথা প্রয়োজন হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরুপ গুজব রটানোর অভিযোগ গত ১৩ তারিখে নড়াইল, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও রাজবাড়ী থেকে মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
যারা এরুপ গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে আইন-শৃংখলা বাহিনী
সোচ্চার রয়েছে। এই ছেলে ধরা গুজব বন্ধ করতে হলে দেশের আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে সাথে দেশের সচেতন মানুষদের কে এগিয়ে আসতে হবে।সাথে সাথে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,মসজিদে,মন্দির গুলোতে ব্যাপক প্রচার -প্রচারনা চালাতে হবে।পাড়া-মহল্লায় এলাকার লোকজনদের কে মিটিং করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
>>>লেখক- মো. ওসমান গনি (সাংবাদিক ও কলামিস্ট)
No comments