ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া সেই তরুণী পা হারাতে বসেছেন by মরিয়ম চম্পা
ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ১১৩ নম্বর ওয়ার্ড। এক নম্বর
ইউনিটের এফএনপি বি-৫ ওয়ার্ডের শেষ মাথার একটি বেডে গোঙানির শব্দ। যন্ত্রণায়
চিৎকার করছে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী। গত ১লা মে রাতে কথিত প্রেমিকের আহ্বানে
সাড়া দিতে গেলে যৌন নির্যাতনে ব্যর্থ হয়ে তরুণীকে ছাদ থেকে ফেলে দেয় এক
বখাটে। এ ঘটনায় তরুণীর মুখের সামনে ও উপরের অংশের চারটি দাঁত ভেঙ্গে যায়।
নির্মম ওই ঘটনায় দু’পা ভেঙে যায়। এর মধ্যে একটি পা কেটে বাদ দেয়া হতে পারে
বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ফারুককে (২৫) আটক করে
কারাগারে পাঠিয়েছে। মামলার হাত থেকে বাঁচতে ও আপস মীমাংসা করতে অভিযুক্ত
ফারুকের পরিবার আহত তরুণীর পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে। আহত তরুণী
গতকাল মানবজমিনকে বলেন, পুরো শরীর জুড়ে ব্যথা।
আমার পা দুটো আর নাই। আজকেও ড্রেসিং করার সময় মনে হচ্ছিল প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি আর বাঁচতে চাই না। ওর হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি। বাঁচতে চেয়েছি। অনুনয় করে বলেছি ভাই তুমি আমাকে মাফ করে দাও। তুমিতো আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। কিন্তু পাষণ্ডের মন গলেনি। ও আমাকে দয়া করেনি। আমি ওর শাস্তি চাই। ওর ফাঁসি চাই। পেশায় গাড়ি চালক ফারুক ঘটনার দিন একের পর এক ফোন দিয়ে বলে, আমি ৭ থেকে ৮ মাসের জন্য কাজে চলে যাবো। তাই যাওয়ার আগে তোমাকে একটু দেখতে চাই। তুমি আমার সামনে আসো। তোমার সাথে শুধু একটু কথা বলবো। এ সময় আমি অনেকবার মানা করেছি। তারপরও ফারুকের একই কথা মাত্র একবার আসো। আমরা একই এলাকায় আমতলা নামক স্থানে ভাড়া থাকি। ওদের বাসা আর আমাদের বাসা প্রায় পাশাপাশি।
ফারুক ছিল আমার ভাইয়ের বন্ধু। আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে ওর সাথে আমার পরিচয়। দোকানের সামনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তার সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ষোলপাড়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। ছাদে নেয়ার পরে বারবার আমার পরনের জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করে। আমাকে কু-কাজে বাধ্য করে। আমি প্রবলভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে ছাদের একেবারে শেষ প্রান্তে নিয়ে হঠাৎ করে আমার দু’পা জাপটে ধরে তিন তলা থেকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেয়। এরপর কি হয়েছে জানিনা। আমার পা দুটো গুড়ো হয়ে গেছে। সামনের অনেকগুলো দাঁত পড়ে গেছে। মাড়ির দাঁত নড়ছে। আমি মরে গেলেও এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই। ওর শাস্তি হোক। আর কিছু চাইনা। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমি চাইনা ও ভালো থাকুক। একটু পানি ছাড়া আর কিছুই খেতে পারিনা। আমার ডান পা শেষ হয়ে গেছে। পা না থাকলে বেঁচে থেকে কি হবে। গত ১৫ দিন ধরে আমি এভাবেই বিছানায় শুয়ে আছি। উঠে বসতে পারিনা।
ওই তরুণী বলেন, ভাইদের অনেক স্বপ্ন ছিল আমাকে অনেক ভালো যায়গায় বিয়ে দিবে। অনেক বড় করে অনুষ্ঠান করবে। ঘটনার শিকার তরুণীর মা হেলেনা বেগম বলেন, আমার মেয়ে যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে, একই ধরনের শাস্তি চাই ফারুকের। আমার মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার পর ফারুকের ছোট বোন এসে আমাদের খবর দেয়। বলে, আপু আমাদের বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। আমার মেয়ের সঙ্গে ওর কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিলনা। আমি জেনে শুনে ওই মাদকাসক্ত ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবো? কখনো না। আমার স্বামী মো. আব্দুল দুই বছর আগে মারা গেছেন। তাই আর বেশি পড়াতে পারেনি। ৪ বোন ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সে। আমার ছেলেদের উপার্জনে সংসার চলে।
গ্রামের বাড়ি ভোলায়। ছোট বোনের জন্য এখনো তারা বিয়ে করেনি। আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। কতো আশা ছিল মেয়েকে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিবো। পা ছাড়া মেয়েকে এখন কে বিয়ে করবে। তরুণীর মেজো ভাই মামুন বলেন, আমার বোনটার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আমার বোন হয়তো আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেনা। ঘটনার পরপরই বখাটে ফারুকের নামে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে সে জেলে আছে। ডাক্তার বলেছে, আমার বোনের ডান পায়ে ৪টি স্থানে ভেঙ্গে গেছে। পায়ের অবস্থা খুব গুরুতর। ডান পায়ের হাঁটুর হাড় বেরিয়ে গিয়ে ইনফেকশন হয়ে গেছে।
ইনফেকশন ভালো না হলে পা কেটে বাদ দিতে হবে। অন্যথায় শরীরে পচন ধরতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নির্মল কান্তি বিশ্বাস বলেন, তার দুই পায়ের হাড় একেবারে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। সামনের চারটি দাঁত ভেঙে গেছে। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর চিকিৎসা চলছে। সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনার পর থানা-পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ বখাটে ফারুক হোসেনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ওই তরুণীর ভাই বাদী হয়ে ফারুক ও তার সহযোগী শাহীন মিয়ার নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
আমার পা দুটো আর নাই। আজকেও ড্রেসিং করার সময় মনে হচ্ছিল প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি আর বাঁচতে চাই না। ওর হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি। বাঁচতে চেয়েছি। অনুনয় করে বলেছি ভাই তুমি আমাকে মাফ করে দাও। তুমিতো আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। কিন্তু পাষণ্ডের মন গলেনি। ও আমাকে দয়া করেনি। আমি ওর শাস্তি চাই। ওর ফাঁসি চাই। পেশায় গাড়ি চালক ফারুক ঘটনার দিন একের পর এক ফোন দিয়ে বলে, আমি ৭ থেকে ৮ মাসের জন্য কাজে চলে যাবো। তাই যাওয়ার আগে তোমাকে একটু দেখতে চাই। তুমি আমার সামনে আসো। তোমার সাথে শুধু একটু কথা বলবো। এ সময় আমি অনেকবার মানা করেছি। তারপরও ফারুকের একই কথা মাত্র একবার আসো। আমরা একই এলাকায় আমতলা নামক স্থানে ভাড়া থাকি। ওদের বাসা আর আমাদের বাসা প্রায় পাশাপাশি।
ফারুক ছিল আমার ভাইয়ের বন্ধু। আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে ওর সাথে আমার পরিচয়। দোকানের সামনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তার সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ষোলপাড়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। ছাদে নেয়ার পরে বারবার আমার পরনের জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করে। আমাকে কু-কাজে বাধ্য করে। আমি প্রবলভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে ছাদের একেবারে শেষ প্রান্তে নিয়ে হঠাৎ করে আমার দু’পা জাপটে ধরে তিন তলা থেকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেয়। এরপর কি হয়েছে জানিনা। আমার পা দুটো গুড়ো হয়ে গেছে। সামনের অনেকগুলো দাঁত পড়ে গেছে। মাড়ির দাঁত নড়ছে। আমি মরে গেলেও এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই। ওর শাস্তি হোক। আর কিছু চাইনা। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমি চাইনা ও ভালো থাকুক। একটু পানি ছাড়া আর কিছুই খেতে পারিনা। আমার ডান পা শেষ হয়ে গেছে। পা না থাকলে বেঁচে থেকে কি হবে। গত ১৫ দিন ধরে আমি এভাবেই বিছানায় শুয়ে আছি। উঠে বসতে পারিনা।
ওই তরুণী বলেন, ভাইদের অনেক স্বপ্ন ছিল আমাকে অনেক ভালো যায়গায় বিয়ে দিবে। অনেক বড় করে অনুষ্ঠান করবে। ঘটনার শিকার তরুণীর মা হেলেনা বেগম বলেন, আমার মেয়ে যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে, একই ধরনের শাস্তি চাই ফারুকের। আমার মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার পর ফারুকের ছোট বোন এসে আমাদের খবর দেয়। বলে, আপু আমাদের বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। আমার মেয়ের সঙ্গে ওর কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিলনা। আমি জেনে শুনে ওই মাদকাসক্ত ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবো? কখনো না। আমার স্বামী মো. আব্দুল দুই বছর আগে মারা গেছেন। তাই আর বেশি পড়াতে পারেনি। ৪ বোন ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সে। আমার ছেলেদের উপার্জনে সংসার চলে।
গ্রামের বাড়ি ভোলায়। ছোট বোনের জন্য এখনো তারা বিয়ে করেনি। আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। কতো আশা ছিল মেয়েকে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিবো। পা ছাড়া মেয়েকে এখন কে বিয়ে করবে। তরুণীর মেজো ভাই মামুন বলেন, আমার বোনটার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আমার বোন হয়তো আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেনা। ঘটনার পরপরই বখাটে ফারুকের নামে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে সে জেলে আছে। ডাক্তার বলেছে, আমার বোনের ডান পায়ে ৪টি স্থানে ভেঙ্গে গেছে। পায়ের অবস্থা খুব গুরুতর। ডান পায়ের হাঁটুর হাড় বেরিয়ে গিয়ে ইনফেকশন হয়ে গেছে।
ইনফেকশন ভালো না হলে পা কেটে বাদ দিতে হবে। অন্যথায় শরীরে পচন ধরতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নির্মল কান্তি বিশ্বাস বলেন, তার দুই পায়ের হাড় একেবারে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। সামনের চারটি দাঁত ভেঙে গেছে। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর চিকিৎসা চলছে। সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনার পর থানা-পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ বখাটে ফারুক হোসেনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ওই তরুণীর ভাই বাদী হয়ে ফারুক ও তার সহযোগী শাহীন মিয়ার নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
No comments