কালও আপনি এই অবস্থায় থাকবেন কিনা- কে বলতে পারে! by হাবীবাহ্ নাসরীন
শুধু
অহঙ্কারের কারণেই অনেকের জীবন সিনেমার কাহিনীর মতো ট্র্যাজেডিক হতে
দেখেছি। এক কাকির মেয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছিল। যাকে বিয়ে করেছে, তার বাবার
মাছের আড়ত আছে। ‘মাছওয়ালার ছেলে’ বলে মেয়েকে সেখান থেকে জোর জবরদস্তি করে
ছাড়িয়ে এনে আরেক জায়গায় বিয়ে দিয়েছে। পরের জামাইটি নেশাখোর, জুয়াড়ি আর
পরনারীতে আসক্ত! এদিকে কাকিদের বিশাল ব্যবসা, বাড়ি সব হারাতে হলো। এক সময়
ভিখারীর মতো দশা হলো। সেই মেয়েটির বাচ্চা ডেলিভারি করার টাকাও ছিল না।
মেয়ের মা তখন গিয়ে হাত পাতলেন সেই মাছওয়ালার ছেলের কাছেই! এক ব্যবসায়ীকে
জানি, সে প্রেম করেছিল মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ের সঙ্গে। টাকার অহঙ্কারে
মেয়েটিকে কাঁদিয়ে চলে গেল ছেলেটি। চাইলেই সে অনেক বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করতে
পারে, সে কথা জানিয়ে যেতেও ভুললো না। মেয়েটি কেঁদেছিল অনেক। চোখের পানির
কোনো মূল্য আছে কি জানি না। তবে ছেলেটি ধনী লোকের এক মেয়েকে বিয়ে করলো এবং
বিয়ের বছরখানেক পর ছাদ থেকে পড়ে বিছানা নিলো। টাকা তো শেষ হলোই,
ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠলো। মেরুদণ্ড না থাকলে আর কী থাকে মানুষের! আজকে
আপনার গায়ে শক্তি আছে বলে ধরাকে সরা জ্ঞান করতেই পারেন। আপনার টাকা আছে বলে
অন্যের দরিদ্রতা নিয়ে উপহাসও করতে পারেন। তবে কালও আপনি এই অবস্থায় থাকবেন
কিনা, কে বলতে পারে! দেখা গেল, লাথি দেয়ার জন্য যে পা দু’খানা, তাই-ই
প্যারালাইজড হয়ে আছে! লাথি কিভাবে দেবেন জীবন সিনেমার মতো নয়। কখনো কখনো
সিনেমার থেকেও ট্র্যাজেডিক! সিনেমার তবু হ্যাপি এন্ডিং থাকে, কারো কারো
জীবনে তাও থাকে না! সবই যেহেতু আমাদের কর্মফল, তাই কাজগুলো এমন হোক, যেন
ফলগুলো মধুর হয়। কখনো কাঁদতে গিয়ে যেন কাউকে কাঁদানোর অনুশোচনায় ভুগতে না
হয়!
No comments