হলি আর্টিজান এখন যেমন
জঙ্গি হামলার যে ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল দেশবাসী, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি ও হলি আর্টিজান বেকারি নামটি। হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু আর জিম্মি উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতার পর বন্ধ হয়ে যায় হলি আর্টিজান বেকারি। ছয় মাস পর এ বছরের ১০ জানুয়ারি নতুন ঠিকানায় যাত্রা শুরু করে বেকারিটি। আর রেস্তোরাঁ তুলে দিয়ে নিজেই থাকার জন্য বাড়িটি সংস্কার করছেন এর মালিক। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে একদল জঙ্গির হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন প্রাণ হারান। পরদিন সকালে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে হলি আর্টিজানের নিয়ন্ত্রণ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। জঙ্গি হামলা ও কমান্ডো অভিযানের কারণে বেকারির সীমানা দেয়াল ও ভবনের বেশির ভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভেতরে থাকা মালামালও নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নতুন ঠিকানায় গুলশান এভিনিউয়ের র্যাংগস আর্কেডের দ্বিতীয় তলায় স্বল্পপরিসরে হলি আর্টিজানের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে সেখানে সাতজন কর্মী কাজ করছেন। হলি আর্টিজানের ব্যবস্থাপক সাদাত মেহেদী যুগান্তরকে বলেন, মানুষের জীবনে ভালো সময় আসে, খারাপ সময় আসে, আমাদের ব্যবসায়ও একটা খারাপ সময় এসেছিল। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা চেষ্টা আমরা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ৫০০ বর্গফুট জায়গায় বেকারিটি চালু করেছি। আগে ছিল দুই হাজার বর্গফুট জায়গা।’ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হলি আর্টিজান বেকারি (গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের বাড়ি) এখন সংস্কার করা হচ্ছে বসবাসের জন্য। বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, চলছে ঘষামাজা আর রঙের কাজ। আনা হচ্ছে নতুন আসবাবপত্র। ফটকে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত বছরের ১২ নভেম্বর মালিকের হাতে ভবনটি হস্তান্তর করেন। এরপর শুরু হয় সংস্কার কাজ। সবকিছু ঠিকঠাক হলে উঠবেন মালিক সামিরা আহম্মদ ও তার স্বামী সাদাত মেহেদী। জানা গেছে, সাদাতের স্ত্রী সামিরা উত্তরাধিকার সূত্রে এ বাড়ির মালিক। ১৯৭৯ সালে ‘আবাসিক ভবন কাম ক্লিনিক গড়ে তোলার জন্য’ ডা. সুরাইয়া জাবিনকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল বাড়িটি। ১৯৮২ সালে ওই প্লটের একপাশে গড়ে তোলা হয় লেকভিউ ক্লিনিক। সুরাইয়া জাবিনের মৃত্যুর পর প্লটের মালিক হন তার মেয়ে সামিরা ও সারা আহম্মদ। সামিরার স্বামী সাদাত মেহেদী তার বন্ধু নাসিমুল আলম পরাগসহ কয়েকজন মিলে ২০১৪ সালের জুনে গড়ে তোলেন হলি আর্টিজান বেকারি।
No comments