আটক তিথি নব্য জেএমবির আমির আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার বামনপাড়া ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে আটক তিন নারীকে জঙ্গি দাবি করে পুলিশ বলছে, তাদের মধ্যে তিথি নামের এক নারী নব্য জেএমবির বর্তমান আমির আইয়ুব বাচ্চু ওরফে সজিবের স্ত্রী। এছাড়া আটক আরেক নারী সুমাইয়াকে নব্য জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ডারের স্ত্রী বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে নব্য জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ডারের নাম নিশ্চিত করা হয়নি। ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেন খন্দকার বলেন, বামনপাড়া ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে তিন নারীকে আটকের সময় তিথি ও সুমাইয়ার দুই শিশু সন্তান তাদের সঙ্গে ছিল। ওই দুই ‘নারী জঙ্গির’ শিশু সন্তানদের পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের বামনপাড়া তলতলা মসজিদের পাশে একটি টিনসেডের এক তলা বাড়িতে ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ। কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসানের ভাষ্য, অভিযানের একপর্যায়ে রাত ৩টার দিকে নব্য জেএমবির আমির আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী তিথি সুইসাইডাল ভেস্ট পরিহিত অবস্থায় পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। তবে বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। এরপর পর্যায়ক্রমে ওই ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে সুমাইয়া ও টলি বেগম নামে আরও দুই নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, তিথি ও সুমাইয়ার বাড়ি নাটোরে। দু’জনের দুটি শিশু সন্তান এসময় তাদের সঙ্গে ছিল। আটকের পর ওই শিশুদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া আটক আরেক নারী টলি বেগমের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উপজেলার ঠাকুর দৌলতপুর গ্রামে।
পুলিশের দাবি, আটক নারীরা জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার জানান, ঘটনাস্থল থেকে কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য, একটি অত্যাধুনিক পিস্তল ও হাত বোমা উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া বাড়িটির ভেতরে প্রচুর বিস্ফোরক দ্রব্য ও সুইসাইডাল ভেল্ট পড়ে থাকতে পারে। পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে কাউন্টার টেররিজমের আরেকটি ইউনিট এবং বোমা ডিসপোজাল (নিষ্ক্রিয়) টিম ঘটনাস্থালের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বর্তমানে বাড়ির আশপাশের এলাকা থেকে সাধারণ জনগণকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেনের ভাষ্য, আটক তিন নারী ‘জঙ্গিকে’ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে তিথি বর্তমানে নব্য জেএমবির আমীর আইয়ুব বাচ্চুর ওরফে সজিবের স্ত্রী ও সুমাইয়া নিউ জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ডারের স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি আস্তানার’ বাড়িটির মালিক মাসুদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি বয়স্ক। দুই মাস আগে তার স্ত্রী ১২শ’ টাকায় বাড়িটি আরমান নামে এক ব্যক্তিকে ভাড়া দিয়েছিলেন। সে পেশায় ডিস ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছিল। তিনি স্ত্রী নিয়ে থাকার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাড়িটিতে কোনও পুরুষ সদস্য পাওয়া যায়নি। ওসি জানান, বাড়ির মালিককে দেয়া আরমানের স্থায়ী ঠিকানায় আমরা খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তবে আরমানের সন্ধানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তাকে পাওয়া গেলে অনেক তথ্য মিলবে।
No comments