কবরীর অন্য ভুবন-২: তলে তলে করাপশন করবেন, এটা কোন চেতনা? by বিল্লাল হোসেন রবিন
একটা
আত্মজীবনী লিখবেন কবরী। এখন নাটক ও ছবির স্ক্রিপ্ট লিখছেন। ধারাবাহিক নাটক
বানাচ্ছেন। কবরী বলেন, নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আমি দেশ থেকে
সহযোগিতা না পাই। আমি যখন অনুদান চাই, তখন মন্ত্রী বলেন এটা আমার হাতে নেই।
তাহলে কার হাতে আছে? আমি যখন ওই সেক্টরের দায়িত্বে ছিলাম তখন তো জানি কার
হাতে আছে আর কার হাতে নেই। আমি কী টাকাটা নিজের কাজের জন্য নিচ্ছি? আমাকে
আরও পরীক্ষা দিতে হবে? আমি ভাল ছবি বানাতে পারি? ৫০ বছরেরও কী আমার পরীক্ষা
শেষ হয়নি? আমার খুব কষ্ট লেগেছে। কিন্তু আমি তো আমার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত
হয়েছি। এখন কী আমাকে টেনে নামাতে পারবে? আমার মতো মানুষ ২৪ ঘণ্টা হাত-পা
নাচিয়ে কাজ করতে চাই। আজকে আমি কষ্ট করে এখানে এসেছি। আমার যে কী ভাল লাগে।
একটা প্যান্ট পরে ঘুরে বেড়াতাম, সেই মিনা পাল গ্রামের মেঠো প্রান্তে। আজ
আমি কোথায় এসে পৌঁছেছি।
মানবজমিনকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাতকারে কবরী বলেন, আমার ছেলেরা যখন ভাল রেজাল্ট করে, আমি যখন সেমিনারে যাই, তখন খুব ভাল লাগে। আমি একজন প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছি। জুনিয়র শিল্পীদের সম্পর্কে বলেন, আমি চাই তারা যেন আমার চেয়েও ভাল করে। নামকরা শিল্পী হতে পারে। সবাই যেন বলতে পারে কবরী যাকে এনেছেন সে কবরীর চেয়ে ভাল করছেন। সৃষ্টি আমাকে আনন্দ দেয়। ছোটবেলা থেকেই আমি স্যোসাল ওয়ার্ক করি। আমার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ছবির সময় লাহোরে একজন লোক মারা গেছে। অবজারভার পত্রিকার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। আমি তখন ৮০০ টাকা সাহায্য করেছিলাম। সেই থেকে আমার সোস্যাল ওয়ার্ক শুরু।
আমি অনেক ছবি বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। আজিম ভাইয়ের রংবাজ ছবিতে পয়সা নেইনি। আমার গুরু দত্ত দা। খান আতা আমার একজন প্রিয় মানুষ। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। তার কথা বলা, ডায়লগ বলার স্টাইল, অভিনয় শেখানো, সবকিছু মিলিয়ে বহুগুণের প্রতিভা ছিল তার মধ্যে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
কবরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তলে তলে করাপশন করবেন, এটা কোন চেতনা? আমাদের দেশটা সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেন উদ্ভাসিত হয়। শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করলে হবে না। আমার সেক্টরকে আপনি তালাবদ্ধ করে রাখছেন। গ্রামের স্কুলগুলো সম্পূর্ণ রাজনীতি দিয়ে চালিত করা হচ্ছে। এটা চেতনা হলো মুক্তিযুদ্ধের? এতে মুক্তিযুদ্ধকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এই কথা যদি বলি আমাকে মেরে ফেলবেন? মেরে ফেলেন, আমি চাই মেরে ফেলাই ভাল। এরকম ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে আমাদের মতো লোকদের ব্রাশফায়ারে মেরে ফেলা ভাল। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ভাঙ্গিয়ে এবং বিক্রি করে খাচ্ছে, তারা কী করবেন? তারা আরও টাকা বানাবেন, মিথ্যা কথা বলবেন। আমাদের অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখেন কত টাকা আছে। কী সম্পদ বানিয়েছি। একটা স্বাধীন দেশে যদি আমি কথা বলতে না পারি তাহলে কীভাবে চলবো। বিএনপি জ্বালাইছে না? কম জ্বালায় নাই। যখন জুরিবোর্ড আমাদের ছবি সিলেক্ট করেছে, তখন কবরী আওয়ামী লীগ করে বলে আমাদের ছবি রিলিজ দেয়নি। টেলিভিশনে একটা কথা বলতে দেয়নি। ওরা কী রাজনীতি করে জানি না।
বাংলাদেশে যা উন্নয়ন হচ্ছে এগুলো কী উন্নয়ন? এগুলো উন্নয়নের একটা পার্ট। আমার ছেলেটা মেয়েটা যদি দুবেলা খেতে না পারে, নিশ্চিন্তে যদি স্কুলে যেতে না পারে, সুন্দর একটা কাপড় পরতে না পারে, নিজেকে নিয়ে সে ভাবতেই না পারে, তাহলে সে কী দেবে দেশকে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আপনারা রাজনীতির বলয়ের মধ্যে বন্ধ করে রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে হবে। সর্বত্র এবং সব সেক্টরের মানুষের কাছে। তাহলে মানুষ বুঝবে কোনটা জঙ্গি আর কোনটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কীভাবে কম্পেয়ার করবে?
রাজনীতি করতে গিয়ে যে লোভের একটা পয়দা হয়। আমি যদি গাড়ি কিনতে না পারি, বাড়ি করতে না পারি, ড্রয়িং রুম যদি সাজাতে না পারি। গান্ধীজী যে লেংটি পরেছেন, তিনি রাজনীতির কাছে নিজেকে সমপর্ণ করেছেন। তিনি তো মরতে চাননি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তার স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।
আমি যদি মরে যাই, আমি যে দুইটা কথা বলতে পেরেছি, কোন লেখনী যদি থাকে, কখনো যদি পুরনো কাগজ ঘাঁটতে ঘাঁটতে নতুন প্রজন্ম আমার সম্পর্কে জানতে পারে এ মানুষটি দেশ এবং দেশের মানুষের মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছেন, এর চেয়ে বড় আর কী চেতনা হতে পারে। এটা তো টাকা দিয়ে কেনা যাবে না। আমরা কী কখনও এভাবে ভাবি? লক্ষ লক্ষ শহীদের কথা চিন্তা করতে হবে। যে মা নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন, যে বাবা নিজের প্লেটের মাছ সন্তানদের পাতে তুলে দিয়েছেন, সেই সন্তানকে আর ফিরে পাবেন? সেই চিঠিগুলো পড়ে চোখের পানি রাখা যায় না। ভাত কাপড় দিতে না পারলে একটা মানুষের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলেও তার কিছুটা স্বস্তি আসে। কিন্তু আমরা সেটা করছি?
মানবজমিনকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাতকারে কবরী বলেন, আমার ছেলেরা যখন ভাল রেজাল্ট করে, আমি যখন সেমিনারে যাই, তখন খুব ভাল লাগে। আমি একজন প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছি। জুনিয়র শিল্পীদের সম্পর্কে বলেন, আমি চাই তারা যেন আমার চেয়েও ভাল করে। নামকরা শিল্পী হতে পারে। সবাই যেন বলতে পারে কবরী যাকে এনেছেন সে কবরীর চেয়ে ভাল করছেন। সৃষ্টি আমাকে আনন্দ দেয়। ছোটবেলা থেকেই আমি স্যোসাল ওয়ার্ক করি। আমার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ছবির সময় লাহোরে একজন লোক মারা গেছে। অবজারভার পত্রিকার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। আমি তখন ৮০০ টাকা সাহায্য করেছিলাম। সেই থেকে আমার সোস্যাল ওয়ার্ক শুরু।
আমি অনেক ছবি বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। আজিম ভাইয়ের রংবাজ ছবিতে পয়সা নেইনি। আমার গুরু দত্ত দা। খান আতা আমার একজন প্রিয় মানুষ। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। তার কথা বলা, ডায়লগ বলার স্টাইল, অভিনয় শেখানো, সবকিছু মিলিয়ে বহুগুণের প্রতিভা ছিল তার মধ্যে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
কবরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তলে তলে করাপশন করবেন, এটা কোন চেতনা? আমাদের দেশটা সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেন উদ্ভাসিত হয়। শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করলে হবে না। আমার সেক্টরকে আপনি তালাবদ্ধ করে রাখছেন। গ্রামের স্কুলগুলো সম্পূর্ণ রাজনীতি দিয়ে চালিত করা হচ্ছে। এটা চেতনা হলো মুক্তিযুদ্ধের? এতে মুক্তিযুদ্ধকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এই কথা যদি বলি আমাকে মেরে ফেলবেন? মেরে ফেলেন, আমি চাই মেরে ফেলাই ভাল। এরকম ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে আমাদের মতো লোকদের ব্রাশফায়ারে মেরে ফেলা ভাল। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ভাঙ্গিয়ে এবং বিক্রি করে খাচ্ছে, তারা কী করবেন? তারা আরও টাকা বানাবেন, মিথ্যা কথা বলবেন। আমাদের অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখেন কত টাকা আছে। কী সম্পদ বানিয়েছি। একটা স্বাধীন দেশে যদি আমি কথা বলতে না পারি তাহলে কীভাবে চলবো। বিএনপি জ্বালাইছে না? কম জ্বালায় নাই। যখন জুরিবোর্ড আমাদের ছবি সিলেক্ট করেছে, তখন কবরী আওয়ামী লীগ করে বলে আমাদের ছবি রিলিজ দেয়নি। টেলিভিশনে একটা কথা বলতে দেয়নি। ওরা কী রাজনীতি করে জানি না।
বাংলাদেশে যা উন্নয়ন হচ্ছে এগুলো কী উন্নয়ন? এগুলো উন্নয়নের একটা পার্ট। আমার ছেলেটা মেয়েটা যদি দুবেলা খেতে না পারে, নিশ্চিন্তে যদি স্কুলে যেতে না পারে, সুন্দর একটা কাপড় পরতে না পারে, নিজেকে নিয়ে সে ভাবতেই না পারে, তাহলে সে কী দেবে দেশকে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আপনারা রাজনীতির বলয়ের মধ্যে বন্ধ করে রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে হবে। সর্বত্র এবং সব সেক্টরের মানুষের কাছে। তাহলে মানুষ বুঝবে কোনটা জঙ্গি আর কোনটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কীভাবে কম্পেয়ার করবে?
রাজনীতি করতে গিয়ে যে লোভের একটা পয়দা হয়। আমি যদি গাড়ি কিনতে না পারি, বাড়ি করতে না পারি, ড্রয়িং রুম যদি সাজাতে না পারি। গান্ধীজী যে লেংটি পরেছেন, তিনি রাজনীতির কাছে নিজেকে সমপর্ণ করেছেন। তিনি তো মরতে চাননি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তার স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।
আমি যদি মরে যাই, আমি যে দুইটা কথা বলতে পেরেছি, কোন লেখনী যদি থাকে, কখনো যদি পুরনো কাগজ ঘাঁটতে ঘাঁটতে নতুন প্রজন্ম আমার সম্পর্কে জানতে পারে এ মানুষটি দেশ এবং দেশের মানুষের মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছেন, এর চেয়ে বড় আর কী চেতনা হতে পারে। এটা তো টাকা দিয়ে কেনা যাবে না। আমরা কী কখনও এভাবে ভাবি? লক্ষ লক্ষ শহীদের কথা চিন্তা করতে হবে। যে মা নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন, যে বাবা নিজের প্লেটের মাছ সন্তানদের পাতে তুলে দিয়েছেন, সেই সন্তানকে আর ফিরে পাবেন? সেই চিঠিগুলো পড়ে চোখের পানি রাখা যায় না। ভাত কাপড় দিতে না পারলে একটা মানুষের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলেও তার কিছুটা স্বস্তি আসে। কিন্তু আমরা সেটা করছি?
No comments