ঢাকা দক্ষিণে পায়ে চলার পথে কাঁচাবাজার by অরূপ দত্ত
রাজধানীর
ওয়ারীর লারমিনি স্ট্রিটের বাসিন্দারা আকাশে কালো মেঘ দেখলেই ভয় পান।
কারণ, এক পশলা বৃষ্টি হলেই রাস্তা তলিয়ে যায়। বাসা থেকে বেরোতে হলে
যানবাহন ছাড়া উপায় নেই।
ওয়ারীর সানাই কমিউনিটি সেন্টার ও আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা বলেছেন, ১১ জুন সকালের ভারী বৃষ্টির পর প্রায় চার ঘণ্টা এলাকার রাস্তা জলমগ্ন ছিল। মাত্র ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
শুধু জলাবদ্ধতা নয়, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় সবগুলো রাস্তাই ভাঙাচোরা। যানজট, ঘন ঘন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে এই ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডের অন্তত ২০টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের আগে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন ঘরে ঘরে গিয়ে যেসব আশ্বাস দিয়েছিলেন, তা পূরণে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ তাঁরা দেখতে পাননি। পায়ে চলা পথ বন্ধ করে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করা কাঁচাবাজারটিও বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেই।
টিপু সুলতান রোড, লালমোহন সাহা স্ট্রিট, ভজহরি সাহা স্ট্রিট, দক্ষিণ মৈশুন্ডি, জয়কালী মন্দির রোড, নবাব স্ট্রিট, র্যাঙ্কিন স্ট্রিটসহ আশপাশের এলাকা নিয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড। গতকাল রোববার ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ রাস্তাই খানাখন্দে ভরা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লালমোহন সাহা স্ট্রিট ও দক্ষিণ মৈশুন্ডি এলাকার। প্রতিটি সড়কের নর্দমার দুদিকের দেয়াল ভেঙে গেছে। লালমোহন সাহা স্ট্রিটের প্রবীণ বাসিন্দা আবদুল মতিন বলেন, আশির দশকের শুরুতে মিউনিসিপ্যালিটি এখানে কিছু নর্দমা করেছিল। পরে সেগুলো পরিষ্কার করা ছাড়া কোনো সংস্কার হয়নি। নর্দমার সংখ্যাও কম। সংস্কার না করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগদলীয় কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শপথ নেওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিন আবর্জনা পরিষ্কার করাচ্ছি। প্রতি শনিবার বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সব সমস্যার সমাধান এত দ্রুত সম্ভব নয়। জলাবদ্ধতা দূর করতে নিজের পকেটের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার কাছে পানিনিষ্কাশন পাম্প চাইলে তারা বলে যন্ত্র নষ্ট। পরে টাকা দিলে কাজ হয়।’
কাউন্সিলর জানান, এলাকার সব রাস্তা মেরামত করতে হবে। ২০ বছর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। সব ঠিকঠাক করতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বাজেট করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তহবিল পাননি। মেয়র বলেছেন, বর্ষা যাক।
পায়ে চলা পথে কাঁচাবাজার: ওয়ারীর নবাব স্ট্রিটে প্রথমে মার্কেট ও পরে পথচারীদের পায়ে চলা পথ বন্ধ করে তৈরি করা হয়েছে কাঁচাবাজার। এখানে আগে বস্তি ছিল। মাদকাসক্তদের উপদ্রব বন্ধ করতে বস্তি উচ্ছেদ করে এলাকাবাসীর চলাচলের পথ তৈরি করা হয়।
কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেনের নিজেরও একাধিক দোকানঘর রয়েছে এই কাঁচাবাজারে। নির্বাচনের আগে গত ১২ এপ্রিল এই প্রার্থী প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি এলাকায় নাগরিক সেবার পাশাপাশি ওয়ার্ড এলাকাকে পরিবেশবান্ধব করে তুলবেন। গতকাল রোববার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘কাঁচাবাজারটি পরিবেশ নষ্ট করছে, এটা ঠিক নয়। তা ছাড়া, এই বাজার বন্ধ করার দায়িত্ব তাঁর নয়, সিটি করপোরেশনের।’ তিনি নিজের দোকান বহাল রেখেছেন কেন—এই প্রশ্নের কোনো জবাব তিনি দেননি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, প্রভাব খাটিয়ে রাস্তার মধ্যে এই বাজার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে তাঁর অনুমোদন নেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, উল্লিখিত জায়গাটি ওয়ারী মৌজার ২০ নম্বর দাগে অবস্থিত। এর একপাশে বলধা গার্ডেন, অন্যপাশে ৬/২ নবাব স্ট্রিট। জায়গাটি দখল করে বস্তি বানিয়ে প্রায় ৮০টি পরিবার বসবাস করত। সিটি করপোরেশন ২০১১ সালে বস্তি উচ্ছেদ করে। পরে বলধা গার্ডেনের পশ্চিম প্রান্তের দেয়াল ঘেঁষা এই জায়গাটিতে পায়ে চলার পথ তৈরি করা হয়। পায়ে চলা পথটি উত্তরে নবাব স্ট্রিট ও দক্ষিণে হেয়ার স্ট্রিটের বড় সড়কের সংযোগ তৈরি করেছিল।
৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি আবুল হোসেন দাবি করেন, পথটি অকেজো হয়ে পড়েছিল। বখাটেদের আড্ডা হতো। এখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মার্কেট করে ৪৪ জনের নামে আলাদাভাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে দোকান বরাদ্দ দেয়। প্রথমে কাপড় ও খাবারের দোকান করা হয়। পরে সবজির দোকান করা হয়। ক্রমে ক্রমে রাস্তাজুড়ে কাঁচাবাজার বসে যায়। দোকান বরাদ্দপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনি নিজে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা রয়েছেন। সিটি করপোরেশনের লোকজনও আটটির মতো দোকান পান। কিন্তু দোকানগুলো ভালো না চলায় সেখানে কাঁচাবাজার করা হয়।
নবাব স্ট্রিটের বাসিন্দা অপূর্ব পাল বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বলধা গার্ডেনে আগেই পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে। কাঁচাবাজারটি তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ওয়ারীর সানাই কমিউনিটি সেন্টার ও আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা বলেছেন, ১১ জুন সকালের ভারী বৃষ্টির পর প্রায় চার ঘণ্টা এলাকার রাস্তা জলমগ্ন ছিল। মাত্র ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
শুধু জলাবদ্ধতা নয়, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় সবগুলো রাস্তাই ভাঙাচোরা। যানজট, ঘন ঘন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে এই ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডের অন্তত ২০টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের আগে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন ঘরে ঘরে গিয়ে যেসব আশ্বাস দিয়েছিলেন, তা পূরণে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ তাঁরা দেখতে পাননি। পায়ে চলা পথ বন্ধ করে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করা কাঁচাবাজারটিও বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেই।
টিপু সুলতান রোড, লালমোহন সাহা স্ট্রিট, ভজহরি সাহা স্ট্রিট, দক্ষিণ মৈশুন্ডি, জয়কালী মন্দির রোড, নবাব স্ট্রিট, র্যাঙ্কিন স্ট্রিটসহ আশপাশের এলাকা নিয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড। গতকাল রোববার ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ রাস্তাই খানাখন্দে ভরা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লালমোহন সাহা স্ট্রিট ও দক্ষিণ মৈশুন্ডি এলাকার। প্রতিটি সড়কের নর্দমার দুদিকের দেয়াল ভেঙে গেছে। লালমোহন সাহা স্ট্রিটের প্রবীণ বাসিন্দা আবদুল মতিন বলেন, আশির দশকের শুরুতে মিউনিসিপ্যালিটি এখানে কিছু নর্দমা করেছিল। পরে সেগুলো পরিষ্কার করা ছাড়া কোনো সংস্কার হয়নি। নর্দমার সংখ্যাও কম। সংস্কার না করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগদলীয় কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শপথ নেওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিন আবর্জনা পরিষ্কার করাচ্ছি। প্রতি শনিবার বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সব সমস্যার সমাধান এত দ্রুত সম্ভব নয়। জলাবদ্ধতা দূর করতে নিজের পকেটের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার কাছে পানিনিষ্কাশন পাম্প চাইলে তারা বলে যন্ত্র নষ্ট। পরে টাকা দিলে কাজ হয়।’
কাউন্সিলর জানান, এলাকার সব রাস্তা মেরামত করতে হবে। ২০ বছর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। সব ঠিকঠাক করতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বাজেট করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তহবিল পাননি। মেয়র বলেছেন, বর্ষা যাক।
পায়ে চলা পথে কাঁচাবাজার: ওয়ারীর নবাব স্ট্রিটে প্রথমে মার্কেট ও পরে পথচারীদের পায়ে চলা পথ বন্ধ করে তৈরি করা হয়েছে কাঁচাবাজার। এখানে আগে বস্তি ছিল। মাদকাসক্তদের উপদ্রব বন্ধ করতে বস্তি উচ্ছেদ করে এলাকাবাসীর চলাচলের পথ তৈরি করা হয়।
কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেনের নিজেরও একাধিক দোকানঘর রয়েছে এই কাঁচাবাজারে। নির্বাচনের আগে গত ১২ এপ্রিল এই প্রার্থী প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি এলাকায় নাগরিক সেবার পাশাপাশি ওয়ার্ড এলাকাকে পরিবেশবান্ধব করে তুলবেন। গতকাল রোববার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘কাঁচাবাজারটি পরিবেশ নষ্ট করছে, এটা ঠিক নয়। তা ছাড়া, এই বাজার বন্ধ করার দায়িত্ব তাঁর নয়, সিটি করপোরেশনের।’ তিনি নিজের দোকান বহাল রেখেছেন কেন—এই প্রশ্নের কোনো জবাব তিনি দেননি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, প্রভাব খাটিয়ে রাস্তার মধ্যে এই বাজার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে তাঁর অনুমোদন নেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, উল্লিখিত জায়গাটি ওয়ারী মৌজার ২০ নম্বর দাগে অবস্থিত। এর একপাশে বলধা গার্ডেন, অন্যপাশে ৬/২ নবাব স্ট্রিট। জায়গাটি দখল করে বস্তি বানিয়ে প্রায় ৮০টি পরিবার বসবাস করত। সিটি করপোরেশন ২০১১ সালে বস্তি উচ্ছেদ করে। পরে বলধা গার্ডেনের পশ্চিম প্রান্তের দেয়াল ঘেঁষা এই জায়গাটিতে পায়ে চলার পথ তৈরি করা হয়। পায়ে চলা পথটি উত্তরে নবাব স্ট্রিট ও দক্ষিণে হেয়ার স্ট্রিটের বড় সড়কের সংযোগ তৈরি করেছিল।
৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি আবুল হোসেন দাবি করেন, পথটি অকেজো হয়ে পড়েছিল। বখাটেদের আড্ডা হতো। এখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মার্কেট করে ৪৪ জনের নামে আলাদাভাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে দোকান বরাদ্দ দেয়। প্রথমে কাপড় ও খাবারের দোকান করা হয়। পরে সবজির দোকান করা হয়। ক্রমে ক্রমে রাস্তাজুড়ে কাঁচাবাজার বসে যায়। দোকান বরাদ্দপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনি নিজে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা রয়েছেন। সিটি করপোরেশনের লোকজনও আটটির মতো দোকান পান। কিন্তু দোকানগুলো ভালো না চলায় সেখানে কাঁচাবাজার করা হয়।
নবাব স্ট্রিটের বাসিন্দা অপূর্ব পাল বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বলধা গার্ডেনে আগেই পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে। কাঁচাবাজারটি তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
No comments