বাজেট ২০১৫–১৬, প্রবৃদ্ধির হামাগুড়ি ও অর্থনীতির ক্ষুধামান্দ্য by মাহফুজ কবীর
দেরিতে
হলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাঁর বাজেট বক্তৃতায় স্বীকার করে
নিয়েছেন যে গত কয়েক বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের যোগ্য ছিল না।
আসলে এ বছরের মধ্যেই ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধির হার ৮
শতাংশ হওয়ার কথা ছিল। অবশ্য সাম্প্রতিক কালের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭
শতাংশ ছিল বছর তিনেক আগের ঘটনা। গত বছর বাজেট ঘোষণার সময় প্রবৃদ্ধির
লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশের ওপরে ধরা হয়েছিল। অর্থবছরের শেষে এ হার ৬ দশমিক ৫১
শতাংশে নেমে আসে, যার মূল কারণ হলো বিদায়ী অর্থবছরের মাঝামাঝি থেকে শুরু
হওয়া রাজনৈতিক ধ্বংসলীলা। অবশ্য ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদে
প্রবৃদ্ধির কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ হয়নি। পুরো সময়েই প্রবৃদ্ধি যেন
হামাগুড়ি দিয়ে চলেছে।
বেসরকারি বিনিয়োগে চাঙাভাব দেখা না গেলে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি আসবে কোত্থেকে? বিদায়ী অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। পাঁচ বছর ধরে এ হার অনেকটাই শ্লথ, বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি এসেছে মূলত সরকারি বিনিয়োগ থেকে। অবশ্য বেশ কয়েক বছর থেকেই বেশি সঞ্চয় আর কম বিনিয়োগ নিয়ে নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা অনেকখানি উদ্বিগ্ন ছিলেন।
কিন্তু এ বছরের উপাত্ত থেকে সঞ্চয়ের পুরোটাই বিনিয়োগ করা হয়েছে, এমনটি দেখা গেলেও তাতে উল্লসিত হওয়ার সুযোগ নেই। বিদায়ী অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয় ছিল জিডিপির ২৯ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা কিনা ২০১১-১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে সঞ্চয়ের প্রবণতা দিন দিন আনুপাতিক হারে কমছে। এটি নিশ্চয়ই উদ্বেগের বিষয়, কেননা এ বছর মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির মাত্র ২৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা আসলে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরা সে অর্থে নিচু সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ভারসাম্যের ফাঁদে পড়ে গেছি।
প্রস্তাবিত বাজেটে কি উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারি অর্থায়নের কৌশল আছে? এ বাজেট গতবারের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি, যা কিনা মোটামুটি গতানুগতিক বৃদ্ধি। অবশ্য সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এটি ছিল ২৪ শতাংশ বেশি। উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি পূর্বশর্ত হলো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ও এর বাস্তবায়নের হার। এ বছরের এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৯৩ শতাংশ, আর ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে প্রথম নয় মাসে। তার মানে, এডিপির অর্ধেকটা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে শেষ তিন মাসে। তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাপক রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে বাস্তবায়নের মান তেমন ভালো না হওয়াই স্বাভাবিক। প্রস্তাবিত এডিপি ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। তবে যেহেতু আগের বছরে এডিপির ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি মাত্র ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে, তাই ২৯ শতাংশ এডিপি বৃদ্ধি ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কতটা সহায়তা করবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
এ বছর বাজেট রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে বেশ খানিকটা চাপের মধ্যে আছে। এ কারণে সংশোধিত বাজেট মূল বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব ১৯ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা কম হওয়ার কারণে অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংক ও দেশীয় অন্যান্য খাত থেকে আরও বেশি ধার করতে হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে দেশি উৎস থেকে সরকারি ঋণ ৪৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা, যদিও ব্যাংক থেকে ধার বাড়েনি। এতে করে ব্যাংক–বহির্ভূত খাত যেমন সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া বাজেট ঘাটতি বিদায়ী অর্থবছরে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। সংশোধিত বাজেটে এটি দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশ, অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে এ হার ২৭ শতাংশ ধরা হয়েছিল। আগামী বাজেটে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ শতাংশ। ব্যাংক থেকে ধারের লক্ষ্যমাত্রা ৩১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক সাহায্য প্রত্যাশা অনুযায়ী না এলে ব্যাংক থেকে ধারকর্জ আরও বাড়বে। ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে দৈত্যাকারের ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকায় ঘাটতি আগামী অর্থবছরে দেশীয় সম্পদে এডিপি অর্থায়নের সক্ষমতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এডিপির ৮৯ শতাংশ দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ধার করে অর্থায়ন করা হলে ঋণের এ দায়ভার পড়বে আসলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর। এরপরও এডিপির আকার বিবেচনায় নিলে অর্থনীতি ক্ষুধামান্দ্যর শিকার হবে, যা কিনা প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির আলোকরেখাকে মরীচিকায় পরিণত করতে পারে।
প্রস্তাবিত এডিপির কাঠামো কি অবকাঠামো ও জ্বালানির ‘দ্বৈত ঘাটতি’ মোকাবিলা করতে সক্ষম, যা উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে বড় বাধা হয়ে আছে। এডিবির বাড়তি অংশের বেশ খানিকটা চলে যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো আর পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে। বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি দ্বিগুণের প্রস্তাব করা হয়েছে, আর সেতু বিভাগের এডিপি বাড়ছে ৬৮ শতাংশ। সড়ক ও রাজপথের গুণমান বাড়াতে এ খাতে বিনিয়োগ অনেক গুণ বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হলেও এখানে এডিপি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ। ফলে সড়ক ও রাজপথের গুণমান বাড়বে না, আর পরিবহন অবকাঠামোর তীব্র ঘাটতিও দূর হবে না। সড়কে গাড়ির সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ার কারণে যানজটও বাড়বে।
আর এসব কারণেই ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধিকরণ পথে যে বাধাগুলো রয়েছে, তা দূর করতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সময়কালের প্রথম বাজেট কতটা সফল হবে, তা যথার্থই প্রশ্নসাপেক্ষ। প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে কোনো জাদুকরি চমক নেই, না আছে কোনো কর্মপরিকল্পনা। এ কারণে ‘দৃশ্যকল্প ২০২১’ অনুযায়ী প্রবৃদ্ধির সোপানে উন্নীত হতে চাইলে বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব বাড়াতেই হবে। এ জন্য বাজেট আলোচনা সংসদে চলাকালে অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা আমরা আশা করতেই পারি।
ড. মাহফুজ কবীর: অর্থনীতিবিদ, ঊর্ধ্বতন গবেষণা ফেলো, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ।
mahfuzkabir¦yahoo.com
বেসরকারি বিনিয়োগে চাঙাভাব দেখা না গেলে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি আসবে কোত্থেকে? বিদায়ী অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। পাঁচ বছর ধরে এ হার অনেকটাই শ্লথ, বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি এসেছে মূলত সরকারি বিনিয়োগ থেকে। অবশ্য বেশ কয়েক বছর থেকেই বেশি সঞ্চয় আর কম বিনিয়োগ নিয়ে নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা অনেকখানি উদ্বিগ্ন ছিলেন।
কিন্তু এ বছরের উপাত্ত থেকে সঞ্চয়ের পুরোটাই বিনিয়োগ করা হয়েছে, এমনটি দেখা গেলেও তাতে উল্লসিত হওয়ার সুযোগ নেই। বিদায়ী অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয় ছিল জিডিপির ২৯ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা কিনা ২০১১-১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে সঞ্চয়ের প্রবণতা দিন দিন আনুপাতিক হারে কমছে। এটি নিশ্চয়ই উদ্বেগের বিষয়, কেননা এ বছর মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির মাত্র ২৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা আসলে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরা সে অর্থে নিচু সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ভারসাম্যের ফাঁদে পড়ে গেছি।
প্রস্তাবিত বাজেটে কি উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারি অর্থায়নের কৌশল আছে? এ বাজেট গতবারের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি, যা কিনা মোটামুটি গতানুগতিক বৃদ্ধি। অবশ্য সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এটি ছিল ২৪ শতাংশ বেশি। উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি পূর্বশর্ত হলো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ও এর বাস্তবায়নের হার। এ বছরের এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৯৩ শতাংশ, আর ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে প্রথম নয় মাসে। তার মানে, এডিপির অর্ধেকটা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে শেষ তিন মাসে। তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাপক রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে বাস্তবায়নের মান তেমন ভালো না হওয়াই স্বাভাবিক। প্রস্তাবিত এডিপি ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। তবে যেহেতু আগের বছরে এডিপির ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি মাত্র ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে, তাই ২৯ শতাংশ এডিপি বৃদ্ধি ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কতটা সহায়তা করবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
এ বছর বাজেট রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে বেশ খানিকটা চাপের মধ্যে আছে। এ কারণে সংশোধিত বাজেট মূল বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব ১৯ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা কম হওয়ার কারণে অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংক ও দেশীয় অন্যান্য খাত থেকে আরও বেশি ধার করতে হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে দেশি উৎস থেকে সরকারি ঋণ ৪৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা, যদিও ব্যাংক থেকে ধার বাড়েনি। এতে করে ব্যাংক–বহির্ভূত খাত যেমন সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া বাজেট ঘাটতি বিদায়ী অর্থবছরে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। সংশোধিত বাজেটে এটি দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশ, অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে এ হার ২৭ শতাংশ ধরা হয়েছিল। আগামী বাজেটে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ শতাংশ। ব্যাংক থেকে ধারের লক্ষ্যমাত্রা ৩১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক সাহায্য প্রত্যাশা অনুযায়ী না এলে ব্যাংক থেকে ধারকর্জ আরও বাড়বে। ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে দৈত্যাকারের ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকায় ঘাটতি আগামী অর্থবছরে দেশীয় সম্পদে এডিপি অর্থায়নের সক্ষমতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এডিপির ৮৯ শতাংশ দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ধার করে অর্থায়ন করা হলে ঋণের এ দায়ভার পড়বে আসলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর। এরপরও এডিপির আকার বিবেচনায় নিলে অর্থনীতি ক্ষুধামান্দ্যর শিকার হবে, যা কিনা প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির আলোকরেখাকে মরীচিকায় পরিণত করতে পারে।
প্রস্তাবিত এডিপির কাঠামো কি অবকাঠামো ও জ্বালানির ‘দ্বৈত ঘাটতি’ মোকাবিলা করতে সক্ষম, যা উঁচু প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে বড় বাধা হয়ে আছে। এডিবির বাড়তি অংশের বেশ খানিকটা চলে যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো আর পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে। বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি দ্বিগুণের প্রস্তাব করা হয়েছে, আর সেতু বিভাগের এডিপি বাড়ছে ৬৮ শতাংশ। সড়ক ও রাজপথের গুণমান বাড়াতে এ খাতে বিনিয়োগ অনেক গুণ বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হলেও এখানে এডিপি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ। ফলে সড়ক ও রাজপথের গুণমান বাড়বে না, আর পরিবহন অবকাঠামোর তীব্র ঘাটতিও দূর হবে না। সড়কে গাড়ির সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ার কারণে যানজটও বাড়বে।
আর এসব কারণেই ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধিকরণ পথে যে বাধাগুলো রয়েছে, তা দূর করতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সময়কালের প্রথম বাজেট কতটা সফল হবে, তা যথার্থই প্রশ্নসাপেক্ষ। প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে কোনো জাদুকরি চমক নেই, না আছে কোনো কর্মপরিকল্পনা। এ কারণে ‘দৃশ্যকল্প ২০২১’ অনুযায়ী প্রবৃদ্ধির সোপানে উন্নীত হতে চাইলে বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব বাড়াতেই হবে। এ জন্য বাজেট আলোচনা সংসদে চলাকালে অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা আমরা আশা করতেই পারি।
ড. মাহফুজ কবীর: অর্থনীতিবিদ, ঊর্ধ্বতন গবেষণা ফেলো, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ।
mahfuzkabir¦yahoo.com
No comments