পটুয়াখালীতে বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামত হয়নি- ৩৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী
পটুয়াখালীতে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত না করায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বাড়িঘর ও ফসলি জমি। ছবিটি গত রোববার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো |
পটুয়াখালী
জেলায় আট কিলোমিটার বিধ্বস্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত না করায় জোয়ারের
পানি বেড়ে ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। পাঁচ দিন ধরে প্লাবিত হচ্ছে ফসলি
জমি। এতে অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালী ও কলাপাড়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। পটুয়াখালী পাউবোর অধীনে ৮০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ৪৫০ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া পাউবোর অধীনে ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩৫০ কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে।
এদিকে অমাবস্যার প্রভাবে নদ-নদীর পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া লোনা পানিতে ডুবে রয়েছে ফসলি জমি।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলাপাড়ার উপকূলীয় লালুয়া ইউনিয়ন ও মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর এলাকা। রামনাবাদ নদীঘেঁষা লালুয়া ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুই কিলোমিটার তিন বছর আগেই ভেঙে গেছে। এখন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া, ছোট পাঁচ নম্বর, বড় পাঁচ নম্বরসহ ১২টি গ্রাম। ভাটার সময় পানি কিছুটা নামলেও জলাবদ্ধতা থাকছেই।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন পার করছে। বাঁধ নির্মাণ করে দিতে ব্যর্থ হলে জনজীবন মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে।
এদিকে মহিপুরের নিজামপুর এলাকার দেড় কিলোমিটার বাঁধ এক বছর আগে বিধ্বস্ত হয়। উপকূলীয় এই এলাকার নিজামপুর, কমরপুর, সুধীরপুর, বিপিনপুরের অধিকাংশ এলাকা ও মহিপুরের কিছু অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান বলেন, শুধু লালুয়ায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০০ হেক্টর জমিতে আউশ ও রবি ফসল কৃষকেরা চাষাবাদ করতে পারছেন না। তবে ২০০ হেক্টর জমিতে চাষিরা স্থানীয় মোটা জাতের ধান চাষাবাদ করছেন। নিজামপুরে আট হেক্টর ফসলি জমি লোনা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কলাপাড়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে লালুয়া এবং জাইকা নিজামপুরের বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে। বর্তমানে জরিপসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বাঁধের নির্মাণকাজ যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সে ব্যাপারে তাঁদের উদ্যোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পটুয়াখালীর পাউবো কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, জেলার দশমিনা উপজেলার রণগোপালদি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে ৫৫/বি-২ডি পোল্ডারের দেড় কিলোমিটার বাঁধও প্রায় এক বছর আগে বিধ্বস্ত হওয়ায় জোয়ারের পানিতে এখন আউলিয়াপুর, জৌতা, খালিশাখালীসহ সাতটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাউবোকে জানানোর পরও বাঁধ ঠিক করা হচ্ছে না।
গলাচিপার চর কাজলের ৫৫/৩ পোল্ডারের দুই কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ছোট চর কাজল ও বড় চর কাজল প্লাবিত হচ্ছে। সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বলইকাঠি গ্রামের ৪৩/২বি পোল্ডারের ৪০০ মিটার ভেঙে গিয়ে তিনটি গ্রামে পানি ঢুকছে। ইটবাড়িয়া-লেবুখালী পোল্ডারের ৬০০ মিটার বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচটি গ্রামের খেত ও বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মির্জাগঞ্জের রামপুরা পোল্ডারের ৬০ মিটার বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ইউনিয়নের অর্ধেকেরও বেশি এলাকার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামত ও নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন আ ক ম মোস্তফা জামান বলেন, লবণাক্ত পানিতে ফসলি জমির ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে ফসলে পলি পড়ে উৎপাদন কমে যাবে। দীর্ঘমেয়াদি এই দুর্যোগ থাকলে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকেই। তাই দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালী ও কলাপাড়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। পটুয়াখালী পাউবোর অধীনে ৮০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ৪৫০ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া পাউবোর অধীনে ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩৫০ কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে।
এদিকে অমাবস্যার প্রভাবে নদ-নদীর পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া লোনা পানিতে ডুবে রয়েছে ফসলি জমি।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলাপাড়ার উপকূলীয় লালুয়া ইউনিয়ন ও মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর এলাকা। রামনাবাদ নদীঘেঁষা লালুয়া ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুই কিলোমিটার তিন বছর আগেই ভেঙে গেছে। এখন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া, ছোট পাঁচ নম্বর, বড় পাঁচ নম্বরসহ ১২টি গ্রাম। ভাটার সময় পানি কিছুটা নামলেও জলাবদ্ধতা থাকছেই।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন পার করছে। বাঁধ নির্মাণ করে দিতে ব্যর্থ হলে জনজীবন মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে।
এদিকে মহিপুরের নিজামপুর এলাকার দেড় কিলোমিটার বাঁধ এক বছর আগে বিধ্বস্ত হয়। উপকূলীয় এই এলাকার নিজামপুর, কমরপুর, সুধীরপুর, বিপিনপুরের অধিকাংশ এলাকা ও মহিপুরের কিছু অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান বলেন, শুধু লালুয়ায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০০ হেক্টর জমিতে আউশ ও রবি ফসল কৃষকেরা চাষাবাদ করতে পারছেন না। তবে ২০০ হেক্টর জমিতে চাষিরা স্থানীয় মোটা জাতের ধান চাষাবাদ করছেন। নিজামপুরে আট হেক্টর ফসলি জমি লোনা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কলাপাড়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে লালুয়া এবং জাইকা নিজামপুরের বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে। বর্তমানে জরিপসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বাঁধের নির্মাণকাজ যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সে ব্যাপারে তাঁদের উদ্যোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পটুয়াখালীর পাউবো কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, জেলার দশমিনা উপজেলার রণগোপালদি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে ৫৫/বি-২ডি পোল্ডারের দেড় কিলোমিটার বাঁধও প্রায় এক বছর আগে বিধ্বস্ত হওয়ায় জোয়ারের পানিতে এখন আউলিয়াপুর, জৌতা, খালিশাখালীসহ সাতটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাউবোকে জানানোর পরও বাঁধ ঠিক করা হচ্ছে না।
গলাচিপার চর কাজলের ৫৫/৩ পোল্ডারের দুই কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ছোট চর কাজল ও বড় চর কাজল প্লাবিত হচ্ছে। সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বলইকাঠি গ্রামের ৪৩/২বি পোল্ডারের ৪০০ মিটার ভেঙে গিয়ে তিনটি গ্রামে পানি ঢুকছে। ইটবাড়িয়া-লেবুখালী পোল্ডারের ৬০০ মিটার বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচটি গ্রামের খেত ও বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মির্জাগঞ্জের রামপুরা পোল্ডারের ৬০ মিটার বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ইউনিয়নের অর্ধেকেরও বেশি এলাকার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামত ও নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন আ ক ম মোস্তফা জামান বলেন, লবণাক্ত পানিতে ফসলি জমির ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে ফসলে পলি পড়ে উৎপাদন কমে যাবে। দীর্ঘমেয়াদি এই দুর্যোগ থাকলে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকেই। তাই দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
No comments