ফরিদের আসল খুনি কে?
সরাইলের শাহজাদাপুরের এক বৃদ্ধ হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে দুটি। নিহতের স্বজনদের দাবি প্রতিপক্ষের লোকজন এই হত্যায় জড়িত। অন্যপক্ষ বলছে, ফাঁসানোর জন্যে বৃদ্ধের স্বজনরাই তাকে হত্যা করেছে। দুপক্ষ থেকেই হয়েছে হত্যা মামলা। তবে পুলিশ এ হত্যা রহস্যের কোন কূল-কিনারা করতে পারেনি। হত্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত খুনিদের সন্ধানও করতে পারেনি পুলিশ। শাহজাদপুরের ফরিদ মিয়া (৮২) খুন হন গত ১৮ই মে। হত্যা ঘটনার পর থেকে গ্রামের মানুষের আলোচনায় এই খুনের সঙ্গে কারা জড়িত, নিরাপরাধ এই বৃদ্ধকে কেন খুন করা হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীর অনেকে খুনিদের নাম জানান সরাসরি। এ হত্যাকাণ্ডের আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিলের এলাকায় দেয়া ঘোষণাও ফিরছে মানুষের মুখে মুখে। নিজের ছেলেকে হত্যা করে হলেও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মফিল। গ্রামের একটি পুকুর ইজারা পেতে ব্যর্থ হয়ে নতুন ইজারা পাওয়া লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হন মফিল। আর তখনই এ ঘোষণা দেন। পুকুরটির ইজারা চূড়ান্ত হওয়ার ১০/১২ দিনের মাথায় ঠিকই লাশ পড়ে গ্রামে। তবে মফিলের নিজের ছেলে না হলেও বংশের চাচা বৃদ্ধ ফরিদ মিয়া খুন হন। আর এই খুনের আসামী হন পুকুর বন্দোবস্ত পাওয়া স্বাধীন সমিতির সভাপতি ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সালেক মিয়া। এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল মিয়াকেও আসামি করা হয়। জানা গেছে, মফিল মিয়ার মালিকানাধীন সুরমা সমিতিসহ মোট ৩টি সমিতি পুকুরটি ইজারা পেতে আবেদন করে। এর মধ্যে একতা নামের সমিতিটি স্বাধীন সমিতির পক্ষে নিজেদের আবেদন উঠিয়ে নেয়। এ কারণে একতা সমিতির সঙ্গে জড়িতদেরও এই হত্যা মামলার আসামি করা হয়। এই হত্যার একদিন পর গত ১৯শে মে দুটি সমিতির সদস্যসহ মোট ২৬ জনের বিরুদ্ধে বৃদ্ধের ছেলে দীন ইসলাম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলাটি দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়- পূর্বপরিকল্পনা মতো কাউসার মিয়া ও তাউস মিয়ার নেতৃত্বে আসামিরা ফিরোজ মিয়াকে হত্যা করে। দা, পল, লাঠি, রড নিয়ে খলিফা হাজীর পুকুরের উত্তরপাড়ের রাস্তায় ওত পেতে বসে থাকে। মাগরিবের নামাজের পর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফিরোজকে তারা মারধর করে গুরুতর জখম করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর ১৩ দিন পর গত ২রা জুন ফরিদ মিয়ার হত্যার বিষয়ে আদালতে আরেকটি মামলা করেন নাসির মিয়া নামে প্রতিপক্ষের একজন। তার এজাহারে আসামি করা হয় ১৫ জনকে। আদালত এই মামলা এবং এর আগে থানায় দায়ের করা মামলা দুটি একই সঙ্গে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। নাসিরের করা মামলার আর্জিতে বলা হয়- শাহজাদাপুর বাজার সংলগ্ন কুজুরিয়া খাস পুকুরটি ১৭ বছর ধরে ইজারা এনে মাছ চাষ করেন মফিল। এ বছর পুকুরটির ইজারা পায়নি সে। পুকুরটি পেয়েছে স্বাধীন নামের একটি সমিতি। ইউপি সদস্য সালেক মিয়া, কাউছার আজমল ও আজহার প্রমুখ এই সমিতি পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। ফলে তাদের উপর চরম ক্ষুব্ধ হন মফিল ও তার লোকজন। মফিল প্রয়োজনে নিজের পুত্রকে খুন করে তাদেরকে মামলায় ফাঁসানোর ঘোষণা দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয় এ বিষয়ে মফিল গোপনে একাধিক সভা করে। পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। পরিকল্পনা মতো ১৮ ই মে বাদ মাগরিব তারা বৃদ্ধ ফরিদ মিয়াকে দাওয়াত দিয়ে কফিলের বাড়িতে নিয়ে যান। ঘরে ঢুকার পর কফিল. রাজিব, ছাইদ, রাকিবসহ ১৫-২০ জনে মিলে দা পল কিরিচ দিয়ে আঘাত করে ফরিদ মিয়াকে হত্যা করে। একাধিকবার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েও তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি ওই বৃদ্ধ। পরে তারা বৃদ্ধের লাশ কফিলের ঘরের কোণায় চোচ ধানের নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে।
সরজমিনে ঐ গ্রামে গেলে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল হক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ধন মিয়াসহ আরও অনেকে বলেন- তারা ফরিদ মিয়াকে হত্যার পর সংঘর্ষে সে মারা গেছে বলে একটা ঘটনা সাজাতে চেয়েছিল। সেজন্য রাতে তাদের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের কাউছার মিয়াকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। কাউছার কোনরকমে নিজেকে মুক্ত করে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে চলে আসে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কাউছারকে আটকে রাখলে ওই পক্ষের লোকজন সেখানে যাবে। তখন তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে। এরপর বৃদ্ধ ফরিদ মিয়া সংঘর্ষে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেবে। আবদুল হক আরও জানান-১৮ই মে সন্ধ্যার পর সকল কাজ সম্পন্ন করে মফিল মেম্বার চলে যায় সরাইলে। স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে চলে তার যোগাযোগ। রাত ৮টার দিকে কফিল ছাইদসহ মফিলের বাড়ির লোকজন মাইরা লাইছে বলে চিৎকার করতে শুরু করে। লোকজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় ফরিদ মিয়ার লাশ কফিলের ঘরের পাশে পড়ে রয়েছে। এই ইউপি সদস্য বলেন পুলিশ আমাদের এ ব্যাপারে কোন কিছু জিজ্ঞেস করে না বলে আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু বলছি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মফিল মিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্য বলেন, আজহারদের (একতা সমিতির সদস্য) ফাঁসানোর জন্য ঘটনার কয়েক দিন আগে থেকে মফিলের বাড়িতে মিটিং হচ্ছিল। প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল ছাইদকে (মফিলের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে) হত্যা করে মামলা করা। বিষয়টি ছাইদের স্ত্রী জেনে যায়। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হয় বৃদ্ধ ফরিদ মিয়াকে হত্যা করে তাদেরকে ফাঁসানোর। ১৮ তারিখ সন্ধ্যার পরই বাড়ির কয়েকজনে মিলে কুবাইয়া গাওয়াইয়া বুড়া বেডারে মাইরা চোচা ধান দিয়া ঢাইক্কা রাখে। রাতে হঠাৎ সকলে লাঠি দা বল্লম হাতে নিয়া প্রন্তুত হয়। রাস্তা দিয়া ওই বাড়ির কাউছার যাওয়ার সময় তাকে ধরে এনে মারতে থাকে। কোন রকমে শার্ট ছিড়ে লাফিয়ে পুকুরে পড়ে চলে যায় কাউছার। ২০-২৫ মিনিট পর কফিলসহ সকলে মাইরা লাইছে বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপর লোকজন দৌড়াইয়া আসে। পরে লাশটারে উঠাইয়া রাস্তায় নিয়া যায়। মো. জালাল মিয়া (৩৮) নামে গ্রামের আরেকজন বলেন, মাগরিবের পর আমি একজন সর্দারকে খুঁজতে মফিলের বাড়ির দিকে যাই। চারদিকে অন্ধকার। টর্চের আলোতে দেখি কফিল ছাইদসহ কয়েকজন লাঠি দা বল্লম হাতে দাঁড়িয়ে আছে। একটু সামনে গিয়ে দেখি ফরিদ মিয়ার রক্তাক্ত লাশ ধানের চোচার কাছে পড়ে আছে। ভয়ে চলে আসি। বাজারে আসার ২০-২৫ মিনিট পর চিৎকার শুনি। নাসির মিয়া (৩৫) নামের আরেক যুবক জানান, দিনের বেলা মফিলের পাশের বাড়িতে কাজ করেছিলাম। দুটি আম পেয়ে বনের ভেতরে রেখে ভুলে চলে আসি। মাগরিবের সময় আমের কথা মনে পড়লে সেখানে যায়। গিয়ে দেখি ফরিদ মিয়ার মৃতদেহ পড়ে আছে। একটু দূরে অস্ত্রশস্ত্র হাতে কফিল রাজিব রাকিবসহ অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেশী নান্টু মিয়ার ১৩ বছর বয়সী ছেলে নজরুল মিয়া এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নজরুল জানান- ‘রাইতে আইন্দারের মইধ্যে আমি তারার (কফিলের) উডান আইয়া দেহি দাউ লাডি আত মেলা মানুষ। মেচ লাইট জলাইয়া দেখি কোহিল্লা (কফিল), ছাইদ, সৈয়দ আম্মদ, মগবুল, রাকিবরা ফিরোজ মিয়ারে (নিহত ফরিদ মিয়া) মাডিত ফালাইয়া কুব গাই দিতাছে। এই অবস্থা দেইখ্খা আমি চিল্লি মারি। হেসময় স্কুলের এক মাস্টার আইয়া কইতাছে আফনেরা এইডা কিতা করতাছুইন। হেরে দমক দিয়া কইছে চুপ তাখ, নাইলে তোমার হবর আছে।’ গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি মো. ধন মিয়া (৫৭) বলেন, ফরিদ মিয়ারে তারা নিজেরাই মারছে। আমাকে যেখানে নেয়া হয়, সেখানে গিয়ে আমি এই সত্যই বলব। সারা গ্রামের মানুষ বলবে। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের আরও ২০-৩০ জন লোক বলেন, বৃদ্ধ ফরিদ মিয়ার গ্রামে কোন শত্রু নেই। ওইদিন গ্রামে কোন সংঘর্ষও হয়নি। বৃদ্ধকে কফিলরাই খুন করেছে। লোকজন ভয়ে মুখ খুলছে না। মফিলের পাশের একটি হিন্দু পরিবার ঘটনার পর ভারত চলে গেছে। তারা কেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল তা নিয়েও আলোচনা আছে। আরও কয়েকটি পরিবার চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মফিলের বাড়ির উত্তর পাশে ভূজনদের বাড়ি। এই বাড়ির লোকজন ফিরোজ হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। মুখ খুললে তাদের জীবন শেষ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপরই তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু এই হত্যা ঘটনার একমাস পরও পুলিশ রহস্য বের করতে পারেনি। আসল ঘাতককে তারও সন্ধান করতে পারেনি। এ ব্যাপারে দুটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবদুল আলিম বলেন-তদন্ত চলছে। দেখা যাক কি হয়।
সরজমিনে ঐ গ্রামে গেলে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল হক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ধন মিয়াসহ আরও অনেকে বলেন- তারা ফরিদ মিয়াকে হত্যার পর সংঘর্ষে সে মারা গেছে বলে একটা ঘটনা সাজাতে চেয়েছিল। সেজন্য রাতে তাদের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের কাউছার মিয়াকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। কাউছার কোনরকমে নিজেকে মুক্ত করে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে চলে আসে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কাউছারকে আটকে রাখলে ওই পক্ষের লোকজন সেখানে যাবে। তখন তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে। এরপর বৃদ্ধ ফরিদ মিয়া সংঘর্ষে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেবে। আবদুল হক আরও জানান-১৮ই মে সন্ধ্যার পর সকল কাজ সম্পন্ন করে মফিল মেম্বার চলে যায় সরাইলে। স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে চলে তার যোগাযোগ। রাত ৮টার দিকে কফিল ছাইদসহ মফিলের বাড়ির লোকজন মাইরা লাইছে বলে চিৎকার করতে শুরু করে। লোকজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় ফরিদ মিয়ার লাশ কফিলের ঘরের পাশে পড়ে রয়েছে। এই ইউপি সদস্য বলেন পুলিশ আমাদের এ ব্যাপারে কোন কিছু জিজ্ঞেস করে না বলে আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু বলছি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মফিল মিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্য বলেন, আজহারদের (একতা সমিতির সদস্য) ফাঁসানোর জন্য ঘটনার কয়েক দিন আগে থেকে মফিলের বাড়িতে মিটিং হচ্ছিল। প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল ছাইদকে (মফিলের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে) হত্যা করে মামলা করা। বিষয়টি ছাইদের স্ত্রী জেনে যায়। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হয় বৃদ্ধ ফরিদ মিয়াকে হত্যা করে তাদেরকে ফাঁসানোর। ১৮ তারিখ সন্ধ্যার পরই বাড়ির কয়েকজনে মিলে কুবাইয়া গাওয়াইয়া বুড়া বেডারে মাইরা চোচা ধান দিয়া ঢাইক্কা রাখে। রাতে হঠাৎ সকলে লাঠি দা বল্লম হাতে নিয়া প্রন্তুত হয়। রাস্তা দিয়া ওই বাড়ির কাউছার যাওয়ার সময় তাকে ধরে এনে মারতে থাকে। কোন রকমে শার্ট ছিড়ে লাফিয়ে পুকুরে পড়ে চলে যায় কাউছার। ২০-২৫ মিনিট পর কফিলসহ সকলে মাইরা লাইছে বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপর লোকজন দৌড়াইয়া আসে। পরে লাশটারে উঠাইয়া রাস্তায় নিয়া যায়। মো. জালাল মিয়া (৩৮) নামে গ্রামের আরেকজন বলেন, মাগরিবের পর আমি একজন সর্দারকে খুঁজতে মফিলের বাড়ির দিকে যাই। চারদিকে অন্ধকার। টর্চের আলোতে দেখি কফিল ছাইদসহ কয়েকজন লাঠি দা বল্লম হাতে দাঁড়িয়ে আছে। একটু সামনে গিয়ে দেখি ফরিদ মিয়ার রক্তাক্ত লাশ ধানের চোচার কাছে পড়ে আছে। ভয়ে চলে আসি। বাজারে আসার ২০-২৫ মিনিট পর চিৎকার শুনি। নাসির মিয়া (৩৫) নামের আরেক যুবক জানান, দিনের বেলা মফিলের পাশের বাড়িতে কাজ করেছিলাম। দুটি আম পেয়ে বনের ভেতরে রেখে ভুলে চলে আসি। মাগরিবের সময় আমের কথা মনে পড়লে সেখানে যায়। গিয়ে দেখি ফরিদ মিয়ার মৃতদেহ পড়ে আছে। একটু দূরে অস্ত্রশস্ত্র হাতে কফিল রাজিব রাকিবসহ অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেশী নান্টু মিয়ার ১৩ বছর বয়সী ছেলে নজরুল মিয়া এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নজরুল জানান- ‘রাইতে আইন্দারের মইধ্যে আমি তারার (কফিলের) উডান আইয়া দেহি দাউ লাডি আত মেলা মানুষ। মেচ লাইট জলাইয়া দেখি কোহিল্লা (কফিল), ছাইদ, সৈয়দ আম্মদ, মগবুল, রাকিবরা ফিরোজ মিয়ারে (নিহত ফরিদ মিয়া) মাডিত ফালাইয়া কুব গাই দিতাছে। এই অবস্থা দেইখ্খা আমি চিল্লি মারি। হেসময় স্কুলের এক মাস্টার আইয়া কইতাছে আফনেরা এইডা কিতা করতাছুইন। হেরে দমক দিয়া কইছে চুপ তাখ, নাইলে তোমার হবর আছে।’ গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি মো. ধন মিয়া (৫৭) বলেন, ফরিদ মিয়ারে তারা নিজেরাই মারছে। আমাকে যেখানে নেয়া হয়, সেখানে গিয়ে আমি এই সত্যই বলব। সারা গ্রামের মানুষ বলবে। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের আরও ২০-৩০ জন লোক বলেন, বৃদ্ধ ফরিদ মিয়ার গ্রামে কোন শত্রু নেই। ওইদিন গ্রামে কোন সংঘর্ষও হয়নি। বৃদ্ধকে কফিলরাই খুন করেছে। লোকজন ভয়ে মুখ খুলছে না। মফিলের পাশের একটি হিন্দু পরিবার ঘটনার পর ভারত চলে গেছে। তারা কেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল তা নিয়েও আলোচনা আছে। আরও কয়েকটি পরিবার চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মফিলের বাড়ির উত্তর পাশে ভূজনদের বাড়ি। এই বাড়ির লোকজন ফিরোজ হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। মুখ খুললে তাদের জীবন শেষ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপরই তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু এই হত্যা ঘটনার একমাস পরও পুলিশ রহস্য বের করতে পারেনি। আসল ঘাতককে তারও সন্ধান করতে পারেনি। এ ব্যাপারে দুটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবদুল আলিম বলেন-তদন্ত চলছে। দেখা যাক কি হয়।
No comments