দাবি আদায়ে বাস ধর্মঘট, জিম্মি যাত্রীরা by শেখ আল-এহসান
তিন দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা-খুলনা রুটে দূরপাল্লার বাস ধর্মঘট চলছে। বাড়ি ফেরার বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা। ছবিটি রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে শনিবার সকালে তোলা। ছবি: সাজিদ হোসেন |
ঢাকা-আরিচা-খুলনা
রুটে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ধর্মঘট অব্যাহত থাকায় যাত্রীরা বিপাকে
পড়েছেন। ট্রেনের বা অন্য রুটের গাড়ি ধরে কেউ কেউ গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেও
অনেককে যাত্রা বাতিল করতে হচ্ছে।
১৯ মে সকালে ফরিদপুরের মধুখালীতে ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিসহ তিন দফা দাবিতে ২০ মে থেকে খুলনা অঞ্চলের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকে।
খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শনিবার কথা হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আরিফুল রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, অফিসের জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হবে। খুলনা-আরিচা রুটের বাস বন্ধ থাকায় অন্য রুটের বাসের ধরার চেষ্টা করছেন তিনি। দুই হাতে দুটি ব্যাগ নিয়ে যশোর যেতে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষা করছিলেন রমিছা খাতুন (৭০)। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে যশোরে থাকে। মেয়ে অসুস্থ—খবর পেয়ে মংলা থেকে খুলনা এসেছেন। ওই পথে গাড়ি না চলায় কীভাবে মেয়ের বাড়ি যাবেন, তিনি সেই চিন্তা করছেন।
যশোর রুটে দূরপাল্লার সব বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা নসিমন, ইজিবাইক ও টেম্পোতে করে যশোর যাচ্ছেন। খুলনা নগরের রয়েলের মোড়ে দেখা যায়, সেখানকার খুলনা-আরিচা-ঢাকা রুটের চলাচলকারী বাসের কাউন্টারগুলো খোলা। কিন্তু টিকিট বিক্রি না করায় অনেক যাত্রী টিকিট কিনতে এসে ফিরে গেছেন। এমনই একজন গৃহিণী মিতুয়া রহমান। তিনি জানান, অসুস্থ বোনকে দেখতে ঢাকার সাভারের আমিনবাজার যেতে হবে তাঁকে। আরিচা হয়ে কোনো বাস না চলায় তিনি রাতের ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ছেলে-মেয়ের বিদ্যালয় ছুটি, তাই সপরিবারে ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের টিকিট কেটেছিলেন তন্ময় রায়। কাউন্টার থেকে টিকিট ফেরত দেওয়ায় ঢাকায় না গিয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন বলে তিনি জানালেন।
এ ব্যাপারে খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দফা দাবিতে আঞ্চলিক কমিটি ধর্মঘট ডেকেছে। আমরাও এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ধর্মঘট পালন করছি।’ গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়াতে আইনি সহায়তা না নিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন কেন?—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাসে ডাকাতির ঘটনায় মামলা করতে গেলে, পুলিশ মামলা না নিয়ে শ্রমিকদেরই জেলে পাঠিয়েছে। আমরা আইনের সহায়তা নেওয়ার জন্যই থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমাদের সহায়তা করেননি। এ কারণে ধর্মঘট করা হচ্ছে। আটক শ্রমিকদের মুক্তি, ওই সময় কর্তব্যরত পুলিশ ও ফরিদপুর পুলিশ সুপারের অপসারণ না করা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার জামিল হাসান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯ মে ভোরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়া বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, যাত্রীবেশী সাত ডাকাত আশুলিয়া থেকে বাসে ওঠে। ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকা পার হওয়ার পরপরই ওই ডাকাতেরা বিনা বাধায় চালকের কাছ থেকে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতির পর যাত্রীদের দাবির মুখে বাধ্য হয়ে চালক বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালী রেলগেট এলাকায় থামালে যাত্রীরাই মধুখালী থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। পুলিশ সুপার বলেন, ‘মালিক সমিতির নেতারা আমার কাছে বাসচালক ও হেলপারের জামিনের ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু আমার পক্ষে কোনোভাবেই সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার।’ তিনি বলেন, মালিক ও শ্রমিকেরা জনগণকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে এবং তাঁদের জিম্মি করে ধর্মঘট করে বাস ডাকাতির মামলার আসামিদের জামিনের সুযোগ নিতে চান। কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
১৯ মে সকালে ফরিদপুরের মধুখালীতে ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিসহ তিন দফা দাবিতে ২০ মে থেকে খুলনা অঞ্চলের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকে।
খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শনিবার কথা হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আরিফুল রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, অফিসের জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হবে। খুলনা-আরিচা রুটের বাস বন্ধ থাকায় অন্য রুটের বাসের ধরার চেষ্টা করছেন তিনি। দুই হাতে দুটি ব্যাগ নিয়ে যশোর যেতে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষা করছিলেন রমিছা খাতুন (৭০)। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে যশোরে থাকে। মেয়ে অসুস্থ—খবর পেয়ে মংলা থেকে খুলনা এসেছেন। ওই পথে গাড়ি না চলায় কীভাবে মেয়ের বাড়ি যাবেন, তিনি সেই চিন্তা করছেন।
যশোর রুটে দূরপাল্লার সব বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা নসিমন, ইজিবাইক ও টেম্পোতে করে যশোর যাচ্ছেন। খুলনা নগরের রয়েলের মোড়ে দেখা যায়, সেখানকার খুলনা-আরিচা-ঢাকা রুটের চলাচলকারী বাসের কাউন্টারগুলো খোলা। কিন্তু টিকিট বিক্রি না করায় অনেক যাত্রী টিকিট কিনতে এসে ফিরে গেছেন। এমনই একজন গৃহিণী মিতুয়া রহমান। তিনি জানান, অসুস্থ বোনকে দেখতে ঢাকার সাভারের আমিনবাজার যেতে হবে তাঁকে। আরিচা হয়ে কোনো বাস না চলায় তিনি রাতের ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ছেলে-মেয়ের বিদ্যালয় ছুটি, তাই সপরিবারে ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের টিকিট কেটেছিলেন তন্ময় রায়। কাউন্টার থেকে টিকিট ফেরত দেওয়ায় ঢাকায় না গিয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন বলে তিনি জানালেন।
এ ব্যাপারে খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দফা দাবিতে আঞ্চলিক কমিটি ধর্মঘট ডেকেছে। আমরাও এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ধর্মঘট পালন করছি।’ গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়াতে আইনি সহায়তা না নিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন কেন?—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাসে ডাকাতির ঘটনায় মামলা করতে গেলে, পুলিশ মামলা না নিয়ে শ্রমিকদেরই জেলে পাঠিয়েছে। আমরা আইনের সহায়তা নেওয়ার জন্যই থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমাদের সহায়তা করেননি। এ কারণে ধর্মঘট করা হচ্ছে। আটক শ্রমিকদের মুক্তি, ওই সময় কর্তব্যরত পুলিশ ও ফরিদপুর পুলিশ সুপারের অপসারণ না করা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার জামিল হাসান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯ মে ভোরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়া বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, যাত্রীবেশী সাত ডাকাত আশুলিয়া থেকে বাসে ওঠে। ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকা পার হওয়ার পরপরই ওই ডাকাতেরা বিনা বাধায় চালকের কাছ থেকে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতির পর যাত্রীদের দাবির মুখে বাধ্য হয়ে চালক বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালী রেলগেট এলাকায় থামালে যাত্রীরাই মধুখালী থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। পুলিশ সুপার বলেন, ‘মালিক সমিতির নেতারা আমার কাছে বাসচালক ও হেলপারের জামিনের ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু আমার পক্ষে কোনোভাবেই সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার।’ তিনি বলেন, মালিক ও শ্রমিকেরা জনগণকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে এবং তাঁদের জিম্মি করে ধর্মঘট করে বাস ডাকাতির মামলার আসামিদের জামিনের সুযোগ নিতে চান। কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
No comments