হাটজুড়ে কাঁঠাল, বাতাসে ম-ম ঘ্রাণ by আকমল হোসেন
মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের ব্রাহ্মণবাজারে প্রতিবছর বসে মৌসুমি কাঁঠালের হাট। কাঁঠালের সরবরাহও হয় প্রচুর |
রাস্তার
দুই পাশজুড়ে কাঁঠালের স্তূপ। বাতাসে কাঁঠালের ম ম ঘ্রাণ। সকাল থেকে
আশপাশের পাহাড়, টিলা ও বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই কাঁঠাল এনে জড়ো করা হয়েছে।
এক-দুই হাত ঘুরে এই কাঁঠাল ছড়িয়ে পড়বে দূর-দূরান্তের হাট-বাজারে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজারে (মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কে)
বসেছে কাঁঠালের এই হাট।
সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে বাজারবসলেও সোম ও বৃহস্পতিবার এখানে সাপ্তাহিক হাটের দিন। তবে এই হাটটি আম-কাঁঠালের মৌসুমে অন্যদিনের মতো থাকে না। পায় আলাদা চেহারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণবাজারের পূর্ব দিকে রাস্তার দুপাশে কাঁঠাল আর কাঁঠাল। শুধু স্তূপ করা কাঁঠালই নয়, কাঁধে করে এবং সাইকেলে ঝুলিয়ে কাঁঠাল নিয়ে হাঁটে আসছেন চাষিরা। ক্রেতা-বিক্রেতার দরদাম, হাঁকাহাঁকিতে বাজার গমগম করছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণ।
গত সোমবার ওই হাটে গিয়েক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর, লংলা, বুধপাশা, কাজলধারা, ব্রাহ্মণবাজারের ৮ নম্বর এলাকা, বিভিন্ন টিলা, বাড়ি ও চা-বাগান থেকে চাষিরা কাঁধে, ঠেলাগাড়িতে ও সাইকেলে করে কাঁঠাল নিয়ে সকাল থেকে হাটে আসা শুরু করেন। এসব চাষির কাছ থেকে স্থানীয় পাইকারেরা কাঁঠাল কিনে নিয়ে রাস্তার পাশে স্তূপ করেছেন। একেকটি স্তূপে ৫০ থেকে ৩০০ কাঁঠাল। সন্ধ্যা পর্যন্ত কাঁঠাল কেনাবেচা চলে। বৈশাখ থেকে শুরু হয়। আষাঢ় পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাজারে কাঁঠালের হাট বসে।
দুপুরে রাস্তার পাশে কাঁঠালের বিশাল স্তূপ নিয়ে বসে থাকা কুলাউড়ার হিংগাজিয়া গ্রামের করুণাময় দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এখানে (স্তূপ) ১০০ কাঁঠাল আছে। হাটে আসা লোকজনের কাছ থেকে এই কাঁঠাল সাড়ে সাত হাজার টাকায় কিনেছি। এখন দরদামে পোষালে পাইকারের কাছে বিক্রি করব।’
ব্রাহ্মণবাজারে করুণাময় দাসের মতো এ রকম অর্ধশতাধিক পাইকার আছেন, যাঁরা স্থানীয় চাষিদের কাঁঠাল কিনে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারের কাছে বিক্রি করেন। এভাবে দুই-তিন হাত ঘুরে পাইকারি দরের চেয়ে প্রায় দেড়-দুই গুণ বেশি দামে কাঁঠাল পৌঁছে খুচরা ক্রেতার কাছে।
অপর ব্যবসায়ী মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি ২৫০টি কাঁঠাল কিনেছি সাড়ে ১২ হাজার টাকায়। এখন ক্রেতার অপেক্ষায় আছি।’ সময়টা তখন এমন—সবার চোখ ক্রেতার দিকে। বাড়তি কথা বলার ফুরসত কারও নেই।
কয়েকজন পাইকার জানান, এই হাটে কাঁঠাল কিনতে মৌলভীবাজার, সিলেটের বিশ্বনাথ, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, ছাতকসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা আসেন। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ১০টি ছোট ট্রাককে কাঁঠাল নিয়ে হাট ছাড়তে দেখা গেল। পাইকারেরা জানান, হাটবারে এখান থেকে প্রায় ৫০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।
লংলা থেকে নিজের গাছের আটটি কাঁঠাল সাইকেলে ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছেন সুখময় ধর। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। সুখময় বলেন, ‘প্রত্যেক বাজারবারে কাঁঠাল নিয়ে আসি। আজ আটটা কাঁঠাল এনেছি। দাম চাইছি বারোশ টাকা। আট-নয় শ টাকা পেলে বিক্রি করে দেব।’ তাঁর মতো এভাবে সাইকেলে কাঁঠাল নিয়ে এসেছেন প্রায় অর্ধশত কাঁঠালচাষি। হাটটির যেদিকেই চোখ যায়, শুধু ছড়ানো-ছিটানো কাঁঠাল আর কাঁঠাল। চাষিরা জানালেন, এ বছর কাঁঠালের উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, এ জেলার টিলার মাটি কাঁঠাল চাষের উপযোগী। জেলায় এ বছর ২ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ৩৫ মেট্রিক টন।
সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে বাজারবসলেও সোম ও বৃহস্পতিবার এখানে সাপ্তাহিক হাটের দিন। তবে এই হাটটি আম-কাঁঠালের মৌসুমে অন্যদিনের মতো থাকে না। পায় আলাদা চেহারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণবাজারের পূর্ব দিকে রাস্তার দুপাশে কাঁঠাল আর কাঁঠাল। শুধু স্তূপ করা কাঁঠালই নয়, কাঁধে করে এবং সাইকেলে ঝুলিয়ে কাঁঠাল নিয়ে হাঁটে আসছেন চাষিরা। ক্রেতা-বিক্রেতার দরদাম, হাঁকাহাঁকিতে বাজার গমগম করছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণ।
গত সোমবার ওই হাটে গিয়েক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর, লংলা, বুধপাশা, কাজলধারা, ব্রাহ্মণবাজারের ৮ নম্বর এলাকা, বিভিন্ন টিলা, বাড়ি ও চা-বাগান থেকে চাষিরা কাঁধে, ঠেলাগাড়িতে ও সাইকেলে করে কাঁঠাল নিয়ে সকাল থেকে হাটে আসা শুরু করেন। এসব চাষির কাছ থেকে স্থানীয় পাইকারেরা কাঁঠাল কিনে নিয়ে রাস্তার পাশে স্তূপ করেছেন। একেকটি স্তূপে ৫০ থেকে ৩০০ কাঁঠাল। সন্ধ্যা পর্যন্ত কাঁঠাল কেনাবেচা চলে। বৈশাখ থেকে শুরু হয়। আষাঢ় পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাজারে কাঁঠালের হাট বসে।
দুপুরে রাস্তার পাশে কাঁঠালের বিশাল স্তূপ নিয়ে বসে থাকা কুলাউড়ার হিংগাজিয়া গ্রামের করুণাময় দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এখানে (স্তূপ) ১০০ কাঁঠাল আছে। হাটে আসা লোকজনের কাছ থেকে এই কাঁঠাল সাড়ে সাত হাজার টাকায় কিনেছি। এখন দরদামে পোষালে পাইকারের কাছে বিক্রি করব।’
ব্রাহ্মণবাজারে করুণাময় দাসের মতো এ রকম অর্ধশতাধিক পাইকার আছেন, যাঁরা স্থানীয় চাষিদের কাঁঠাল কিনে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারের কাছে বিক্রি করেন। এভাবে দুই-তিন হাত ঘুরে পাইকারি দরের চেয়ে প্রায় দেড়-দুই গুণ বেশি দামে কাঁঠাল পৌঁছে খুচরা ক্রেতার কাছে।
অপর ব্যবসায়ী মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি ২৫০টি কাঁঠাল কিনেছি সাড়ে ১২ হাজার টাকায়। এখন ক্রেতার অপেক্ষায় আছি।’ সময়টা তখন এমন—সবার চোখ ক্রেতার দিকে। বাড়তি কথা বলার ফুরসত কারও নেই।
কয়েকজন পাইকার জানান, এই হাটে কাঁঠাল কিনতে মৌলভীবাজার, সিলেটের বিশ্বনাথ, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, ছাতকসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা আসেন। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ১০টি ছোট ট্রাককে কাঁঠাল নিয়ে হাট ছাড়তে দেখা গেল। পাইকারেরা জানান, হাটবারে এখান থেকে প্রায় ৫০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।
লংলা থেকে নিজের গাছের আটটি কাঁঠাল সাইকেলে ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছেন সুখময় ধর। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। সুখময় বলেন, ‘প্রত্যেক বাজারবারে কাঁঠাল নিয়ে আসি। আজ আটটা কাঁঠাল এনেছি। দাম চাইছি বারোশ টাকা। আট-নয় শ টাকা পেলে বিক্রি করে দেব।’ তাঁর মতো এভাবে সাইকেলে কাঁঠাল নিয়ে এসেছেন প্রায় অর্ধশত কাঁঠালচাষি। হাটটির যেদিকেই চোখ যায়, শুধু ছড়ানো-ছিটানো কাঁঠাল আর কাঁঠাল। চাষিরা জানালেন, এ বছর কাঁঠালের উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, এ জেলার টিলার মাটি কাঁঠাল চাষের উপযোগী। জেলায় এ বছর ২ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ৩৫ মেট্রিক টন।
No comments