দালালদের কিছু হয় না ভুক্তভোগীরা হয় চুরি ছিনতাইয়ের আসামি by রোকনুজ্জামান পিয়াস
পানিভর্তি লোহার পাত্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রস্রাব করানো হতো। দেয়া হতো গরম আয়রনের ছ্যাঁকা। লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হতো। ২০১১ সালে মানব পাচারের শিকার হয়ে এ ধরনের নির্যাতনের মুখোমুখি হন বরিশালের মো. ইলিয়াছ হাওলাদার। শুধু তিনি নন, তার মতো অনেকেই এ ধরনের বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। মুক্তিপণ দেয়ার পরও মুক্তি মেলেনি তাদের। অবশেষে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশে ফেরেন তারা। ফিরে এসে সংশ্লিষ্ট দালালদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও আজও ক্ষতিপূরণ পাননি কেউ-ই। তাদের মতো ক্ষতিপূরণের আশায় এখনও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে পাচার ও প্রতারিত হওয়া প্রায় ১০০ মানুষ। এদের মধ্যে মামলা করেছেন কেউ মানব পাচার আইনে, কেউ অভিযোগ দিয়েছেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি)। অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও পেয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্তই। বাস্তবে কিছুই জোটেনি। উল্টো ছিনতাই-ডাকাতির মামলায় আসামি হয়েছেন কেউ। স্বয়ং মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। এদিকে দালালরা চিহ্নিত হলেও বীরদর্পেই রয়েছেন তারা। ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তেই। মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকিও দিয়ে যাচ্ছে বাদী পক্ষকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিকটিমরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়া এবং পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় সম্প্রতি মানব পাচার বেড়েছে। পাচারকারীরাও উৎসাহিত হয়েছে।
ইলিয়াছ পলি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির মাধ্যমে ২০০১ সালে আবুধাবিতে যান। তিনি জানান, সেখানে ১১ মাস একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করলেও কোন বেতন পাননি। এ নিয়ে পলি ট্রেড কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পলি ট্রেডের বারেক নামে এক কর্মকর্তা অন্য কোম্পানিতে তাদের চাকরি দেয়ার কথা বলে সেখান থেকে ৬ জনকে গাড়িতে করে শারজা নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ওমানের একটি জঙ্গলে। ওমান থেকে স্পিডবোটে করে ইরানের মিনাব নামে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাদের আটকে রাখা হয়। ১২ দিন পর সেখান থেকে দালালরা তাদের নিয়ে যায় বন্দর আব্বাসে। সেখানে তাদের ১ মাস আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। চালায় বর্বর নির্যাতন। ভিকটিমের দেয়া তথ্য মতে, ওই সময় তাদের পরিবার এসএ পরিবহন ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে সিলেটের একটি ঠিকানায় ৩ লাখ ১০ হাজার করে টাকা পাঠায়। মুক্তিপণ পাওয়ার পর তাদের আরেক বাংলাদেশী দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। ওই দালালের কাছ থেকে তারা পালিয়ে সে দেশের পুলিশের সাহায্য নেন। পরে সেখান থেকে দেশে ফেরেন তারা। দেশে ফিরে ইলিয়াসসহ অনেকে দালালের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কিন্তু আজও দালালদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বা তারা কোন ক্ষতিপূরণও পাননি। বিভিন্ন সময় ইরানে পাচারের শিকার হয়ে দেশে ফিরে এ পর্যন্ত ৪৪ জন মামলা করলেও কোন ফল হয়নি।
২০০৭ সালে ২৫শে জুন মেসার্স আল-আব্বাস নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়া যান মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার গোপিনাথপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মো. তাহাজ। কিন্তু সেখানে গিয়ে বৈধ ভিসা ও কাজ না থাকার কারণে মালয়েশিয়ার পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে জেলখানায় নির্যাতন চালায়। ২০০৮ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ২৪শে সেপ্টেম্বর বিএমইটিতে অভিযোগ দেন। তার অভিযোগপত্রটি হারিয়ে গেছে বিএমইটি থেকে এমন তথ্য জানানোর পর তিনি ২০০৯ সালের ২২শে মে আবারও অভিযোগ দেন। তদন্তপূর্বক এ অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তার ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ দিনের মধ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার জন্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই ক্ষতিপূরণ তিনি পাননি। একই রিক্রুটিং এজেন্সি ২০০৯ সালে পত্রিকায় রোমানিয়ায় লোক পাঠানোর বিজ্ঞাপন দিয়ে ১০০ জন বিদেশগমনেচ্ছু ১০০ ব্যক্তির কাছ থেকে ২ লাখ টাকা করে নেয়। এর মধ্যে কেউ কেউ দেশটিতে যান। কিন্তু বেতন ছাড়া কাজ করতে থাকেন তারা। পরে দেশে ফেরত এসে বিএমইটিতে অভিযোগ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর বলা হয় তাদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু ওই ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়ার পরও তা পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। মেসার্স আল-ওয়াসী ইন্টারন্যাশনাল নামে আরেকটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর গিয়ে প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরে ২০১১ সালের ১৫ই মে বিএমইটিতে অভিযোগ দেন মো. কামরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, এনামুল, মোমিন ও সুরুজ নামে ৫ ব্যক্তি। ওই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ জনের প্রত্যেককে ৮৪ হাজার টাকা করে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা একই বছরের ২১শে ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু কেউই আজ পর্যন্ত ওই ক্ষতিপূরণ পাননি।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিভিন্ন সময়ে রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স মর্নিং সান এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স মেঘনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স আইডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স ইস্ট বেঙ্গল ওভারাসিজ ও বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মাইগ্রেন্ট ফাউন্ডেশন (বিএমএফ) ও তাদের সহযোগীরা মাসিক বেতন ৩৫০ ইউএস ডলার বেতনের কথা বলে জনপ্রতি ৩-৪ লাখ টাকা নিয়ে ইরাকস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়া ৩ মাসের এন্ট্রি ভিসায় ২৭ বাংলাদেশীকে ইরাক পাঠায়। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে এন্ট্রি ভিসাকে এমপ্লয়মেন্ট ভিসা দেখিয়ে এবং ভুল তথ্য দিয়ে ভুয়া ছাড়পত্র/স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়।
ইরাক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর প্রতারকচক্র তাদের বন্দি করে। প্রতারিতদের অভিযোগ সেখানে দীর্ঘ ১০ মাসেও কোন কাজ ও বেতন দেয়া হয়নি, ঠিকমতো খাবার দেয়া হয়নি। এমনকি কাজ ও খাবার চাইলে কোম্পানির প্রতিনিধিসহ ইরাকে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সি মর্নিং সান এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ওলিউল করিম তাদের মারধর করে। পাসপোর্টে ভিসা না থাকার কারণে পরে ওই বছরের ৩০শে নভেম্বর ১১ জনকে এবং ২০১৪ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি আরও ১১ জনকে দেশে পাঠায়। দেশে ফিরে মানব পাচার আইনে মামলা ও বিএমইটিতে অভিযোগ করেন ১৯ ব্যক্তি। কিন্তু আজও কোন ক্ষতিপূরণ পাননি তারা। বিএমএফের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে ৫টি এবং প্রতারণার অভিযোগে আরও ৮টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় চার্জশিট হয়েছে। জেলও হয়েছে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি ভিকটিমদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নওগাঁর ইমাজউদ্দিন নামে এক ভিকটিমের বিরুদ্ধে তার ভাইকে দিয়ে মিথ্যা ছিনতাই ও ডাকাতির মামলাও মামলা করিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের অনেক প্রতারিত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ দাবি করে দালালদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে এবং বিভাগে অভিযোগ দিলেও ফল পাননি।
ইলিয়াছ পলি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির মাধ্যমে ২০০১ সালে আবুধাবিতে যান। তিনি জানান, সেখানে ১১ মাস একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করলেও কোন বেতন পাননি। এ নিয়ে পলি ট্রেড কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পলি ট্রেডের বারেক নামে এক কর্মকর্তা অন্য কোম্পানিতে তাদের চাকরি দেয়ার কথা বলে সেখান থেকে ৬ জনকে গাড়িতে করে শারজা নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ওমানের একটি জঙ্গলে। ওমান থেকে স্পিডবোটে করে ইরানের মিনাব নামে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাদের আটকে রাখা হয়। ১২ দিন পর সেখান থেকে দালালরা তাদের নিয়ে যায় বন্দর আব্বাসে। সেখানে তাদের ১ মাস আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। চালায় বর্বর নির্যাতন। ভিকটিমের দেয়া তথ্য মতে, ওই সময় তাদের পরিবার এসএ পরিবহন ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে সিলেটের একটি ঠিকানায় ৩ লাখ ১০ হাজার করে টাকা পাঠায়। মুক্তিপণ পাওয়ার পর তাদের আরেক বাংলাদেশী দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। ওই দালালের কাছ থেকে তারা পালিয়ে সে দেশের পুলিশের সাহায্য নেন। পরে সেখান থেকে দেশে ফেরেন তারা। দেশে ফিরে ইলিয়াসসহ অনেকে দালালের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কিন্তু আজও দালালদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বা তারা কোন ক্ষতিপূরণও পাননি। বিভিন্ন সময় ইরানে পাচারের শিকার হয়ে দেশে ফিরে এ পর্যন্ত ৪৪ জন মামলা করলেও কোন ফল হয়নি।
২০০৭ সালে ২৫শে জুন মেসার্স আল-আব্বাস নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়া যান মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার গোপিনাথপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মো. তাহাজ। কিন্তু সেখানে গিয়ে বৈধ ভিসা ও কাজ না থাকার কারণে মালয়েশিয়ার পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে জেলখানায় নির্যাতন চালায়। ২০০৮ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ২৪শে সেপ্টেম্বর বিএমইটিতে অভিযোগ দেন। তার অভিযোগপত্রটি হারিয়ে গেছে বিএমইটি থেকে এমন তথ্য জানানোর পর তিনি ২০০৯ সালের ২২শে মে আবারও অভিযোগ দেন। তদন্তপূর্বক এ অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তার ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ দিনের মধ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার জন্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই ক্ষতিপূরণ তিনি পাননি। একই রিক্রুটিং এজেন্সি ২০০৯ সালে পত্রিকায় রোমানিয়ায় লোক পাঠানোর বিজ্ঞাপন দিয়ে ১০০ জন বিদেশগমনেচ্ছু ১০০ ব্যক্তির কাছ থেকে ২ লাখ টাকা করে নেয়। এর মধ্যে কেউ কেউ দেশটিতে যান। কিন্তু বেতন ছাড়া কাজ করতে থাকেন তারা। পরে দেশে ফেরত এসে বিএমইটিতে অভিযোগ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর বলা হয় তাদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু ওই ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়ার পরও তা পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। মেসার্স আল-ওয়াসী ইন্টারন্যাশনাল নামে আরেকটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর গিয়ে প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরে ২০১১ সালের ১৫ই মে বিএমইটিতে অভিযোগ দেন মো. কামরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, এনামুল, মোমিন ও সুরুজ নামে ৫ ব্যক্তি। ওই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ জনের প্রত্যেককে ৮৪ হাজার টাকা করে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা একই বছরের ২১শে ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু কেউই আজ পর্যন্ত ওই ক্ষতিপূরণ পাননি।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিভিন্ন সময়ে রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স মর্নিং সান এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স মেঘনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স আইডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স ইস্ট বেঙ্গল ওভারাসিজ ও বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মাইগ্রেন্ট ফাউন্ডেশন (বিএমএফ) ও তাদের সহযোগীরা মাসিক বেতন ৩৫০ ইউএস ডলার বেতনের কথা বলে জনপ্রতি ৩-৪ লাখ টাকা নিয়ে ইরাকস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়া ৩ মাসের এন্ট্রি ভিসায় ২৭ বাংলাদেশীকে ইরাক পাঠায়। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে এন্ট্রি ভিসাকে এমপ্লয়মেন্ট ভিসা দেখিয়ে এবং ভুল তথ্য দিয়ে ভুয়া ছাড়পত্র/স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়।
ইরাক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর প্রতারকচক্র তাদের বন্দি করে। প্রতারিতদের অভিযোগ সেখানে দীর্ঘ ১০ মাসেও কোন কাজ ও বেতন দেয়া হয়নি, ঠিকমতো খাবার দেয়া হয়নি। এমনকি কাজ ও খাবার চাইলে কোম্পানির প্রতিনিধিসহ ইরাকে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সি মর্নিং সান এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ওলিউল করিম তাদের মারধর করে। পাসপোর্টে ভিসা না থাকার কারণে পরে ওই বছরের ৩০শে নভেম্বর ১১ জনকে এবং ২০১৪ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি আরও ১১ জনকে দেশে পাঠায়। দেশে ফিরে মানব পাচার আইনে মামলা ও বিএমইটিতে অভিযোগ করেন ১৯ ব্যক্তি। কিন্তু আজও কোন ক্ষতিপূরণ পাননি তারা। বিএমএফের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে ৫টি এবং প্রতারণার অভিযোগে আরও ৮টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় চার্জশিট হয়েছে। জেলও হয়েছে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি ভিকটিমদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নওগাঁর ইমাজউদ্দিন নামে এক ভিকটিমের বিরুদ্ধে তার ভাইকে দিয়ে মিথ্যা ছিনতাই ও ডাকাতির মামলাও মামলা করিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের অনেক প্রতারিত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ দাবি করে দালালদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে এবং বিভাগে অভিযোগ দিলেও ফল পাননি।
No comments