কাগজে-কলমে বাংলাদেশের অনুকূলে : বাস্তবতা ভিন্ন
কাগজে-কলমে
সব বাংলাদেশের অনুকূলে। কিন্তু বাস্তবে এর কার্যকারিতা সীমিত।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য কাঠামোয় এ ধরনের প্রবণতাই চলে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে।
তাই শুধু মদ আর অস্ত্র ছাড়া ভারত সব পণ্যে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত বাজার
সুবিধা দিয়ে এলেও এর থেকে বেশি সুবিধা আদায় করা যায়নি। বরং দুই দেশের
মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্যে সব সময়ই ভারতের অনুকূলে থেকেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্র মতে, ভারতে যে পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ রফতানি করছে, তার চেয়ে বেশি আমদানি হচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ২৭ কোটি ৬৬ লাখ মার্কিন ডলার। একই সময়ে আমদানি হয় ২৮২ কোটি ২১ লাখ ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৫৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। বাণিজ্য ঘাটতির এই পরিমাণ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৫৫৮ কোটি ডলারেরও বেশি।
দুই দেশের বিদ্যমান বাণিজ্যে এই দূরত্ব কমিয়ে আনার দৌড়ঝাঁপ দীর্ঘদিনের। এ ব্যাপারে সময় সময়ে উদ্যোগ নিয়েও তা শেষ পর্যন্ত ফলদায়ক হয়নি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারত দুটি পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার ঘোষণা শুধু কাগজে-কলমে রেখেছে। কিন্তু দেশটির সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য ব্যবস্থায় অলিখিতভাবে সীমাহীন বাধা তৈরি করেছে। যার কারণে বাংলাদেশ এর থেকে বেশি সুবিধা আদায় করতে পারছে না। যে কারণে কমছে না ঘাটতিও।
এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনেও অশুল্ক বাধার বিষয়টি জোরালোভাবে ওঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের কাস্টমস স্টেশনে কোনো ওয়্যার হাউস নেই। এছাড়া দেশটির সরকারে প্রশাসনিক বিভিন্ন স্তরের বাধ্যবাধকতা রফতানিতে বড় প্রতিবন্ধক। এর বাইরে এলসিসংক্রান্ত ঝামেলাসহ নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই প্রতিবেদনটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের বাণিজ্য সচিব শ্রী রাজিব খের এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন যে, বাধা কমানো হবে। ইতিমধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সমঝোতা হয়েছে, বাংলাদেশের বিএসটিআই কর্তৃক প্রদত্ত টেস্ট সার্টিফিকেটের ভারত কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান, ভারত থেকে পণ্যের আমদানিতে অস্থায়ী বাধা দূর করা, বর্ডার হাট সম্প্রসারণ ও ক্রয়ক্ষমতা এবং জনসমাগম বাড়ানোর ব্যাপারে ঐকমত্য, স্থল বন্দরগুলোর উন্নয়ন, খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর ভারত কর্তৃক আরোপিত সিভিডি প্রত্যাহার, বাংলাদেশের তৈরি পাটের ব্যাগ ভারতে রফতানির সমস্যা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারত সম্মতির কথা জানিয়েছে।
বিনিময়ে ভারত চাইছে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন, যেখানে ট্রানজিট বিষয়টি মুখ্য হয়ে উঠেছে। এছাড়া ভারত কর্তৃক স্পর্শকাতর চিহ্নিত ২২৫টি পণ্যের তালিকা প্রত্যাহার, বাংলাদেশে ভারতীয় কমলাজাতীয় ফলের আমদানির শুল্ক প্রত্যাহার, ভারতীয় দুগ্ধজাতীয় পণ্যের বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশ।
এমন পরিস্থিতিতে আগামী মাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হিসাব মিলাতে শুরু করেছেন তারা কি পাচ্ছেন আর কি দিতে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে শুধু এককভাবে ভারত সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলেই হবে না। দেশীয় উদ্যোক্তাদের রফতানি সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর ৫০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ কোটি ডলারের মতো। বিষয়টি এমন নয় যে, ভারত ইচ্ছে করেই বাংলাদেশকে এড়িয়ে যাচ্ছে। বরং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদানুযায়ী পণ্য সরবরাহ দিতে পারছে না।
ভারতের করিডোরে যে অশুল্ক বাধাগুলো রয়েছে, তা দূর করতে চলমান আলোচনা ও সমঝোতা ফলপ্রসূ না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে ভারতের উদ্যোক্তাদের এদেশে আরও বেশি করে বিনিয়োগে উৎসাহী করার জন্য তাগিদ দেন। তিনি জানান, পাশাপাশি দেশীয় বন্দর ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি, গুদামজাত প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, পণ্যমান বজায় নিশ্চিত ও পণ্যের বহুমুখীকরণ করে রফতানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোহাম্মদ আলী এ ব্যাপারে যুগান্তরকে বলেন, সরকার কিংবা বেসরকারি উদ্যোগ সবারই। কিন্তু বাণিজ্য বৃদ্ধি ও ঘাটতি কমানো মূল উদ্দেশ্য। সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। আমরা আশাবাদী। অবশ্যই রফতানি বাড়বে। পাশাপাশি সেদেশের বিনিয়োগও বাড়বে। এরই মধ্য দিয়ে ঘাটতি কমবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্র মতে, ভারতে যে পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ রফতানি করছে, তার চেয়ে বেশি আমদানি হচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ২৭ কোটি ৬৬ লাখ মার্কিন ডলার। একই সময়ে আমদানি হয় ২৮২ কোটি ২১ লাখ ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৫৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। বাণিজ্য ঘাটতির এই পরিমাণ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৫৫৮ কোটি ডলারেরও বেশি।
দুই দেশের বিদ্যমান বাণিজ্যে এই দূরত্ব কমিয়ে আনার দৌড়ঝাঁপ দীর্ঘদিনের। এ ব্যাপারে সময় সময়ে উদ্যোগ নিয়েও তা শেষ পর্যন্ত ফলদায়ক হয়নি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারত দুটি পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার ঘোষণা শুধু কাগজে-কলমে রেখেছে। কিন্তু দেশটির সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য ব্যবস্থায় অলিখিতভাবে সীমাহীন বাধা তৈরি করেছে। যার কারণে বাংলাদেশ এর থেকে বেশি সুবিধা আদায় করতে পারছে না। যে কারণে কমছে না ঘাটতিও।
এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনেও অশুল্ক বাধার বিষয়টি জোরালোভাবে ওঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের কাস্টমস স্টেশনে কোনো ওয়্যার হাউস নেই। এছাড়া দেশটির সরকারে প্রশাসনিক বিভিন্ন স্তরের বাধ্যবাধকতা রফতানিতে বড় প্রতিবন্ধক। এর বাইরে এলসিসংক্রান্ত ঝামেলাসহ নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই প্রতিবেদনটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের বাণিজ্য সচিব শ্রী রাজিব খের এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন যে, বাধা কমানো হবে। ইতিমধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সমঝোতা হয়েছে, বাংলাদেশের বিএসটিআই কর্তৃক প্রদত্ত টেস্ট সার্টিফিকেটের ভারত কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান, ভারত থেকে পণ্যের আমদানিতে অস্থায়ী বাধা দূর করা, বর্ডার হাট সম্প্রসারণ ও ক্রয়ক্ষমতা এবং জনসমাগম বাড়ানোর ব্যাপারে ঐকমত্য, স্থল বন্দরগুলোর উন্নয়ন, খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর ভারত কর্তৃক আরোপিত সিভিডি প্রত্যাহার, বাংলাদেশের তৈরি পাটের ব্যাগ ভারতে রফতানির সমস্যা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারত সম্মতির কথা জানিয়েছে।
বিনিময়ে ভারত চাইছে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন, যেখানে ট্রানজিট বিষয়টি মুখ্য হয়ে উঠেছে। এছাড়া ভারত কর্তৃক স্পর্শকাতর চিহ্নিত ২২৫টি পণ্যের তালিকা প্রত্যাহার, বাংলাদেশে ভারতীয় কমলাজাতীয় ফলের আমদানির শুল্ক প্রত্যাহার, ভারতীয় দুগ্ধজাতীয় পণ্যের বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশ।
এমন পরিস্থিতিতে আগামী মাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হিসাব মিলাতে শুরু করেছেন তারা কি পাচ্ছেন আর কি দিতে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে শুধু এককভাবে ভারত সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলেই হবে না। দেশীয় উদ্যোক্তাদের রফতানি সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর ৫০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ কোটি ডলারের মতো। বিষয়টি এমন নয় যে, ভারত ইচ্ছে করেই বাংলাদেশকে এড়িয়ে যাচ্ছে। বরং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদানুযায়ী পণ্য সরবরাহ দিতে পারছে না।
ভারতের করিডোরে যে অশুল্ক বাধাগুলো রয়েছে, তা দূর করতে চলমান আলোচনা ও সমঝোতা ফলপ্রসূ না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে ভারতের উদ্যোক্তাদের এদেশে আরও বেশি করে বিনিয়োগে উৎসাহী করার জন্য তাগিদ দেন। তিনি জানান, পাশাপাশি দেশীয় বন্দর ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি, গুদামজাত প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, পণ্যমান বজায় নিশ্চিত ও পণ্যের বহুমুখীকরণ করে রফতানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোহাম্মদ আলী এ ব্যাপারে যুগান্তরকে বলেন, সরকার কিংবা বেসরকারি উদ্যোগ সবারই। কিন্তু বাণিজ্য বৃদ্ধি ও ঘাটতি কমানো মূল উদ্দেশ্য। সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। আমরা আশাবাদী। অবশ্যই রফতানি বাড়বে। পাশাপাশি সেদেশের বিনিয়োগও বাড়বে। এরই মধ্য দিয়ে ঘাটতি কমবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
No comments