ব্যতিক্রমী জুটি
বলা
হয়ে থাকে, পৃথিবীতে সবার জন্যই কাউকে না কাউকে ঠিক করে রেখেছেন স্রষ্টা।
বিশ্বের তৃতীয় উঁচু ব্যক্তি জোয়েলসন ফার্নান্দেজের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম
হয়নি। নিজ উচ্চতার চেয়ে ৩ ফুট খাটো নারীর মাঝেই অবশেষে নিজের ভালবাসা খুঁজে
পেলেন তিনি। ব্রাজিলের নাগরিক ৭ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার জোয়েলসন
ফার্নান্দেজের স্ত্রীর নাম এভেম মেদেইরোস। ২১ বছর বয়সী এভেমের উচ্চতা মাত্র
৫ ফুট! এ খবর দিয়েছে ডেইলি মেইল। জোয়েলসন স্কুল থেকে ঝরে পড়েছিলেন। শৈশব
থেকে হঠাৎ তার উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে বাইরে তাকে খুব উত্ত্যক্ত
করা হতো। আর সে জ্বালাতন থেকে রক্ষা পেতে জীবনের প্রায় অর্ধেকটা সময় ঘরের
ভেতরই কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজের উচ্চতা নিয়ে লম্বা ব্যক্তিদের সমস্যার
অন্ত নেই। দরজা দিয়ে ঢুকতে হলে তাদের সতর্ক থাকতে হয়। বিমানে চড়ার সময়
অমানবিকভাবে গুটিয়ে রাখতে হয় পা। একই সঙ্গে এ প্রশ্নের উত্তর প্রতিটা সময়ই
তাদের দিতে হয়- ‘আপনি এত উঁচু কিভাবে হলেন?’ এছাড়া বিভিন্ন জ্বালাময়ী
মন্তব্য তো আছেই। বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, ৪৯ শতাংশ নারীই বলেন, নিজের চেয়ে
উঁচু কারো সঙ্গেই কেবল তারা প্রেম করবেন। তবে বেশি উঁচু হলে আবার সমস্যা।
কেননা, শোয়ার ঘরের খাটের সীমাবদ্ধতাকেও তো বিবেচনায় রাখতে হবে! এ অবস্থাটাই
হয়েছিল জোয়েলসনের ক্ষেত্রে। যাই হোক, তার গল্পটার মধুর সমাপ্তি হয়তো হতে
যাচ্ছে। যেহেতু জীবনের অর্ধেকটা সময় তিনি ঘরের প্রকোষ্ঠেই কাটিয়েছেন,
সেহেতু তার আর বাইরে প্রেম করার সুযোগ হয়নি। ২১ বছর বয়সী এভেমের সঙ্গে তার
পরিচয় ইন্টারনেটে। তিনি বলেন, আমি যেদিন তাকে প্রথম দেখেছিলাম, আমার মনে
হলো, আমি প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে গেছি। আমি তাকে দেখে মুগ্ধ হলাম। আমি তাকে
সবসময়ের জন্য আমার পাশে পেতে চাইলাম। সে আমার চেয়ে খাটো। তবে সেটা কোন
ব্যাপার ছিল না। ২০১৪ সালেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। তবে জোয়েলসন জানিয়েছেন,
তাদের রোমান্স সবসময় সহজ বিষয় ছিল না। কেননা, জোয়েলসনের আকার মেনে নিতে
কষ্ট হয়েছিল এভেমের পরিবারের। জোয়েলসনকে দেখার পর এভেমের বাবা তাকে বলে
উঠলেন, মেয়ে, আমি তোমাকে বলেছিলাম একজন মানুষকে বেছে নিতে। একজন মহান
মানুষকে বেছে নিতে। তুমি বেশি বুঝে ফেলেছো! তবে জোয়েলসনের মায়ের ক্ষেত্রে
ছেলের বউকে নিয়ে খুব সমস্যা হয়নি। তার মা আইভানলদে ফার্নান্দেজ বলেন, আমি
এভেমকে দেখে ঈর্ষায় ভুগছিলাম। কেননা, আমি জোয়েলসনের জন্য নিজের জীবনটাই
উৎসর্গ করে দিয়েছিলাম। তবে একজন মা হিসেবে আমি জোয়েলসনকে খুশি দেখতে চাই।
যাই হোক, আমি এখনও তার যত্ন নিই। এখনও এভেমের হাতে তার ভার ছেড়ে দিইনি।
কিন্তু একদিন এভেম সবকিছুতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। সেদিন আমি তার হাতেই আমার
ছেলের ভার ছেড়ে দেব। নিজের স্ত্রী সম্পর্কে কেবল প্রশংসার ফুলঝুরিই বের হলো
জোয়েলসনের মুখ থেকে। তিনি বলেন, সে ছিল মূলত আমার জীবনে প্রথম নারী। ২৮
বছর বয়সে আমি আমার জীবনের প্রথম নারী খুঁজে পেলাম। আমি তার সম্পর্কে যা-ই
ভাবি, তা-ই সুন্দর। তবে তার চোখ দু’টি বিশেষ করে বেশি সুন্দর। সে খুবই
যত্নবান। সে কখনও আমার সঙ্গে মিথ্যে বলেনি।
No comments