আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথা নত করবো না -শেখ হাসিনা
আন্তর্জাতিক
চাপে সরকার মাথা নত করবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,
আমার এমন কোন দুর্বলতা নেই যে কেউ এসে বলবে আর মাথা নত করে চলে যাবো।
গতকাল রাতে গণভবনে চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন
নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে
তিনি এসব কথা বলেন। তিন সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই ছিল বিএনপির মূল
উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯২ দিনের আন্দোলনে রাজনৈতিক
ব্যর্থতা ঢাকা দিতেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
আসলে নির্বাচনে আসাটাই ছিল তাদের একটা নাটক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯২ দিন
ধরে আন্দোলন-অবরোধের নামে নির্বিচারে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেও বিএনপি
নেত্রী কিছুই অর্জন করতে পারেননি। আন্দোলন ও রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে
ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন। ওই ব্যর্থতার গ্লানি মুছতেই উনি
নির্বাচনে অংশ নিলেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাঝপথে নির্বাচন বর্জন করে
এখন বিএনপি নেত্রী আন্তর্জাতিক চাপ দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে চান!
কিন্তু আমি কোন অন্যায় করিনি, দুর্বলতাও নেই যে মাথা নত করবো।
যারা অবরোধ-হরতালের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলো, নির্বিচারে বাস-ট্রাক পুড়িয়ে দিলো- সেই বিএনপি নেত্রীই নির্বাচনের মাঠে নেমে বাস মার্কায় ভোট চাইলেন। আর সেই বাস মার্কায় ৩ লাখ ভোট কীভাবে পড়লো?
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধ করে যাচ্ছেন। বিএনপি নেত্রীর দুর্নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রমাণ হয়েছে। এমনকি জয়কে অপহরণ ও ক্ষতি করার জন্য তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দিয়েছিল। সেই অপরাধে বিএনপির নেতার পুত্রের কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া সাত মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল এবং ভারতের বিজেপি সভাপতির সঙ্গে মিথ্যা ফোনালাপের কথা বলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এই খালেদা জিয়া। ফলে আমি নই, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও অপরাধ করে যাচ্ছেন।
তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপির কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, নিজে চোর বলেই উনি সবাইকে চোর ভাবেন। বিএনপি নেত্রী কি ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা ভুলে গেছেন। উনি ওই নির্বাচন কিভাবে করেছিলেন? ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মাগুরা, মিরপুর ও ফালুকে জেতাতে তেজগাঁও উপ-নির্বাচনে উনি কিভাবে ভোট ডাকাতি করেছিলেন, সেটাও কী ভুলে গেছেন? তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী ভুলে গেলেও দেশের মানুষ তা কোনদিনই ভুলবে না।
রাত সোয়া আটটায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছিরকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। আ জ ম নাছিরও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, এবি তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, আলাউদ্দিন চৌধুরী নাছিম, নুরুল ইসলাম বিএসসি, সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, আবদুচ ছালাম, সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, একরামুল হক, সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের নেয়া বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে দেশের ৭০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, এতে বিদ্যুতের চাহিদা কম হবে এবং গ্রাহকরাও স্বস্তি পাবেন। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪টি বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিদ্যুৎ খাতের ৬টি প্রকল্প উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গত ৬ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াটে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বর্তমানে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের দ্রুত ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে। তিনি বলেন, অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। কিন্তু দেশবাসী এমনকি রাজধানীর জনগণকে বিদ্যুৎ সংকটের ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তা কার্যকর করা খুবই কঠিন কাজ।
উদ্বোধন করা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে নাটোর ৫২ দশমিক ২০ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গগননগর (নারায়ণগঞ্জ) ১০২ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঘোড়াশাল (নরসিংদী) ১০৮ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং কাঠপট্টি (মুন্সীগঞ্জ) ৫২ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এগুলোর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ৩১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মেঘনাঘাট থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন এবং লালবাগ ১৩২/৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনও উদ্বোধন করেন। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলামও বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং বিদ্যুৎ অধিদপ্তর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, এখন দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে তা ছিল ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আওয়ামী লীগ সরকার পাঁচ বছর মেয়াদকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিল।
তিনি বলেন, কিন্তু বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার মেগাওয়াটে নেমে যাওয়ার কারণে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। জনগণের জীবন থেকে ৭ বছর হারিয়ে যাওয়ার পর বিদ্যুতের চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়নি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই এ কাজটিকে কঠিন ভেবেছিল। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি হচ্ছে উন্নয়নের মূল উপাদান এবং নাগরিকদের প্রতি কাজকর্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। এখন জনগণের চাহিদা বদলে গেছে। কারণ, তারা বিদ্যুৎ চান। এক সময় তারা কেবল খাদ্য ও বাসস্থান চাইতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করেছিল। তিনি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার সেচ কাজের জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অগ্রগতি লাভের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার নজির স্থাপন করে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ কেনার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট এবং আগরতলা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনা হবে। নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
যারা অবরোধ-হরতালের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলো, নির্বিচারে বাস-ট্রাক পুড়িয়ে দিলো- সেই বিএনপি নেত্রীই নির্বাচনের মাঠে নেমে বাস মার্কায় ভোট চাইলেন। আর সেই বাস মার্কায় ৩ লাখ ভোট কীভাবে পড়লো?
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধ করে যাচ্ছেন। বিএনপি নেত্রীর দুর্নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রমাণ হয়েছে। এমনকি জয়কে অপহরণ ও ক্ষতি করার জন্য তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দিয়েছিল। সেই অপরাধে বিএনপির নেতার পুত্রের কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া সাত মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল এবং ভারতের বিজেপি সভাপতির সঙ্গে মিথ্যা ফোনালাপের কথা বলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এই খালেদা জিয়া। ফলে আমি নই, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও অপরাধ করে যাচ্ছেন।
তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপির কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, নিজে চোর বলেই উনি সবাইকে চোর ভাবেন। বিএনপি নেত্রী কি ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা ভুলে গেছেন। উনি ওই নির্বাচন কিভাবে করেছিলেন? ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মাগুরা, মিরপুর ও ফালুকে জেতাতে তেজগাঁও উপ-নির্বাচনে উনি কিভাবে ভোট ডাকাতি করেছিলেন, সেটাও কী ভুলে গেছেন? তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী ভুলে গেলেও দেশের মানুষ তা কোনদিনই ভুলবে না।
রাত সোয়া আটটায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছিরকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। আ জ ম নাছিরও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, এবি তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, আলাউদ্দিন চৌধুরী নাছিম, নুরুল ইসলাম বিএসসি, সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, আবদুচ ছালাম, সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, একরামুল হক, সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের নেয়া বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে দেশের ৭০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, এতে বিদ্যুতের চাহিদা কম হবে এবং গ্রাহকরাও স্বস্তি পাবেন। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪টি বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিদ্যুৎ খাতের ৬টি প্রকল্প উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গত ৬ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াটে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বর্তমানে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের দ্রুত ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে। তিনি বলেন, অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। কিন্তু দেশবাসী এমনকি রাজধানীর জনগণকে বিদ্যুৎ সংকটের ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তা কার্যকর করা খুবই কঠিন কাজ।
উদ্বোধন করা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে নাটোর ৫২ দশমিক ২০ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গগননগর (নারায়ণগঞ্জ) ১০২ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঘোড়াশাল (নরসিংদী) ১০৮ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং কাঠপট্টি (মুন্সীগঞ্জ) ৫২ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এগুলোর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ৩১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মেঘনাঘাট থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন এবং লালবাগ ১৩২/৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনও উদ্বোধন করেন। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলামও বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং বিদ্যুৎ অধিদপ্তর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, এখন দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে তা ছিল ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আওয়ামী লীগ সরকার পাঁচ বছর মেয়াদকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিল।
তিনি বলেন, কিন্তু বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার মেগাওয়াটে নেমে যাওয়ার কারণে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। জনগণের জীবন থেকে ৭ বছর হারিয়ে যাওয়ার পর বিদ্যুতের চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়নি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই এ কাজটিকে কঠিন ভেবেছিল। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি হচ্ছে উন্নয়নের মূল উপাদান এবং নাগরিকদের প্রতি কাজকর্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। এখন জনগণের চাহিদা বদলে গেছে। কারণ, তারা বিদ্যুৎ চান। এক সময় তারা কেবল খাদ্য ও বাসস্থান চাইতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করেছিল। তিনি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার সেচ কাজের জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অগ্রগতি লাভের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার নজির স্থাপন করে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ কেনার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট এবং আগরতলা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনা হবে। নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
No comments