আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তারের দাবি ত্বকী মঞ্চের
আজমেরী ওসমান ও সুলতান শওকত |
নারায়ণগঞ্জ-৪
(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের ভাতিজা ও প্রয়াত সাংসদ
নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে সন্ত্রাস
নির্মূল ত্বকী মঞ্চ। একই সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিয়ে ‘জজ মিয়া’
নাটক তৈরির অপচেষ্টাকারীদেরও একদিন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে বলে
হুঁশিয়ারি দিয়েছে ত্বকী মঞ্চ। আজ রোববার বিকেলে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী
মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি
জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজাল তৈরির জন্য সম্প্রতি এ হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ওসমান পরিবার তাদের অনুগত সংবাদকর্মীদের নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের পুরোনো কিছু কথা দুই বছর পরে আজ নতুন করে উপস্থাপন করে তারা এ হত্যায় “জজমিয়া নাটক” তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। সম্প্রতি কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ থেকে অভিযুক্ত পরিবারটিকে রক্ষায় যে এ মিশন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
ওসমান পরিবারের কিছু বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ত্বকী মঞ্চ তাদের অবস্থান বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কতিপয় সংস্থার তদন্তে ত্বকী হত্যা নিয়ে কতগুলো অসংগতি উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে ওসমান পরিবার। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোন সংস্থা নতুন করে এখন ত্বকী হত্যা নিয়ে তদন্ত শুরু করল? সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট থেকে র্যাবকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়ার পর এর বাইরে কোনো সংস্থাই তদন্ত করছে না এবং করার সুযোগও নেই। সুতরাং এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর র্যাবের পক্ষ থেকে ‘আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন ত্বকীকে হত্যা করেছে’ বলে জানানোর পর আর নতুন কোনো তথ্য হাজির করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার প্রশ্ন তুলেছে র্যাবের অভিযানে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া প্যান্টটি ত্বকীর হলে, লাশ উদ্ধারের সময় ত্বকীর পরনে প্যান্ট এল কি করে? ’
এ ব্যাপারে মঞ্চের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া প্যান্টটিকে কখন কে বলেছে ওটা ত্বকীর প্যান্ট। এটি যেমন ত্বকীর পরিবারের পক্ষ থেকে কখনো বলা হয় নাই, তেমনি অভিযান পরিচালনাকারী র্যাবের পক্ষ থেকে কখনো তা বলা হয় নাই। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে “রক্তমাখা প্যান্ট”। আর এ মামলার বাদী ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি বরাবরই বলেছেন, ত্বকীর পরনে ত্বকীর প্যান্টই ছিল। আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া রক্তমাখা প্যান্টটি ত্বকীর নয়। শুধু শামীম ওসমানই শুরু থেকে ওই প্যান্টটিকে ত্বকীর প্যান্ট বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ত্বকী হত্যা মামলায় ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমরের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি ভিন্নতর বলে ওসমান পরিবার বলছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ত্বকী মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘উভয়ের জবানবন্দিতেই হত্যার ধরন ও হত্যাকারী হিসেবে যাদের নাম এসেছে তা অভিন্ন। উভয়ের জবানবন্দিতে লিটন, ভ্রমর, কালাম শিকদার, রাজিব, কাজল, শিপন, জ্যাকি, মামুন, অপু, ড্রাইভার জমশেদের নাম এসেছে। এরা সবাই ওসমান পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত। ভ্রমর তার জবানবন্দিতে বলেছে, টর্চার সেলে আজমেরীর নির্দেশে ও নেতৃত্বে তারা ত্বকীকে হত্যা করেছে। লিটন তার জবানবন্দিতে আজমেরীর নাম উল্লেখ করে নাই। কেন করে নাই তা বের করার দায়িত্ব তদন্তকারী সংস্থার। আর জবানবন্দি কখনোই একজনের সঙ্গে অপর জনেরটা হুবহু মিল হয় না। ঘটনার সত্য বের করবে তদন্তকারী সংস্থা—কখনোই অভিযুক্ত ব্যক্তি বা পরিবার নয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ওসমান পরিবার প্রশ্ন তুলে বলছে, ত্বকীকে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হলে বস্তা থেকে লাশ বের হলো কী করে? লিটন তাঁর জবানবন্দিতে বলেছে, ব্যাগ খুলে ত্বকীকে বের করে কুমুদিনী খালের পাড়ে ফেলে দেওয়ার পর তারা খালি ব্যাগটিতে ইট ভরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। লিটন বলেছে, ত্বকীকে ফেলে দেওয়ার সময় তার পায়ে স্যান্ডেল ছিল।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নতুন করে ত্বকী হত্যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে কোনো লাভ হবে না। এ সব করে ত্বকী হত্যার বিচার বিলম্বিত করা গেলেও কোনোভাবেই তা বন্ধ করা যাবে না। আমরা প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জানতে চাই, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যায় নেতৃত্বদানকারী হিসেবে আজমেরী ওসমানের নাম এলেও প্রকাশ্যে ও আপনাদের সামনে ঘুরে বেড়াতে পারেন কীভাবে? দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার এবং ত্বকী হত্যার অভিযোগপত্র প্রদানের জোর দাবি জানাচ্ছি। ত্বকী হত্যা নিয়ে কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। এ হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া অথবা “জজ মিয়া নাটক” তৈরির অপচেষ্টাকারীদেরও একদিন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজাল তৈরির জন্য সম্প্রতি এ হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ওসমান পরিবার তাদের অনুগত সংবাদকর্মীদের নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের পুরোনো কিছু কথা দুই বছর পরে আজ নতুন করে উপস্থাপন করে তারা এ হত্যায় “জজমিয়া নাটক” তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। সম্প্রতি কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ থেকে অভিযুক্ত পরিবারটিকে রক্ষায় যে এ মিশন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
ওসমান পরিবারের কিছু বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ত্বকী মঞ্চ তাদের অবস্থান বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কতিপয় সংস্থার তদন্তে ত্বকী হত্যা নিয়ে কতগুলো অসংগতি উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে ওসমান পরিবার। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোন সংস্থা নতুন করে এখন ত্বকী হত্যা নিয়ে তদন্ত শুরু করল? সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট থেকে র্যাবকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়ার পর এর বাইরে কোনো সংস্থাই তদন্ত করছে না এবং করার সুযোগও নেই। সুতরাং এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর র্যাবের পক্ষ থেকে ‘আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন ত্বকীকে হত্যা করেছে’ বলে জানানোর পর আর নতুন কোনো তথ্য হাজির করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার প্রশ্ন তুলেছে র্যাবের অভিযানে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া প্যান্টটি ত্বকীর হলে, লাশ উদ্ধারের সময় ত্বকীর পরনে প্যান্ট এল কি করে? ’
এ ব্যাপারে মঞ্চের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া প্যান্টটিকে কখন কে বলেছে ওটা ত্বকীর প্যান্ট। এটি যেমন ত্বকীর পরিবারের পক্ষ থেকে কখনো বলা হয় নাই, তেমনি অভিযান পরিচালনাকারী র্যাবের পক্ষ থেকে কখনো তা বলা হয় নাই। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে “রক্তমাখা প্যান্ট”। আর এ মামলার বাদী ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি বরাবরই বলেছেন, ত্বকীর পরনে ত্বকীর প্যান্টই ছিল। আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে পাওয়া রক্তমাখা প্যান্টটি ত্বকীর নয়। শুধু শামীম ওসমানই শুরু থেকে ওই প্যান্টটিকে ত্বকীর প্যান্ট বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ত্বকী হত্যা মামলায় ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমরের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি ভিন্নতর বলে ওসমান পরিবার বলছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ত্বকী মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘উভয়ের জবানবন্দিতেই হত্যার ধরন ও হত্যাকারী হিসেবে যাদের নাম এসেছে তা অভিন্ন। উভয়ের জবানবন্দিতে লিটন, ভ্রমর, কালাম শিকদার, রাজিব, কাজল, শিপন, জ্যাকি, মামুন, অপু, ড্রাইভার জমশেদের নাম এসেছে। এরা সবাই ওসমান পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত। ভ্রমর তার জবানবন্দিতে বলেছে, টর্চার সেলে আজমেরীর নির্দেশে ও নেতৃত্বে তারা ত্বকীকে হত্যা করেছে। লিটন তার জবানবন্দিতে আজমেরীর নাম উল্লেখ করে নাই। কেন করে নাই তা বের করার দায়িত্ব তদন্তকারী সংস্থার। আর জবানবন্দি কখনোই একজনের সঙ্গে অপর জনেরটা হুবহু মিল হয় না। ঘটনার সত্য বের করবে তদন্তকারী সংস্থা—কখনোই অভিযুক্ত ব্যক্তি বা পরিবার নয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ওসমান পরিবার প্রশ্ন তুলে বলছে, ত্বকীকে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হলে বস্তা থেকে লাশ বের হলো কী করে? লিটন তাঁর জবানবন্দিতে বলেছে, ব্যাগ খুলে ত্বকীকে বের করে কুমুদিনী খালের পাড়ে ফেলে দেওয়ার পর তারা খালি ব্যাগটিতে ইট ভরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। লিটন বলেছে, ত্বকীকে ফেলে দেওয়ার সময় তার পায়ে স্যান্ডেল ছিল।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নতুন করে ত্বকী হত্যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে কোনো লাভ হবে না। এ সব করে ত্বকী হত্যার বিচার বিলম্বিত করা গেলেও কোনোভাবেই তা বন্ধ করা যাবে না। আমরা প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জানতে চাই, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যায় নেতৃত্বদানকারী হিসেবে আজমেরী ওসমানের নাম এলেও প্রকাশ্যে ও আপনাদের সামনে ঘুরে বেড়াতে পারেন কীভাবে? দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার এবং ত্বকী হত্যার অভিযোগপত্র প্রদানের জোর দাবি জানাচ্ছি। ত্বকী হত্যা নিয়ে কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। এ হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া অথবা “জজ মিয়া নাটক” তৈরির অপচেষ্টাকারীদেরও একদিন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।’
আদালতে সুলতান শওকতের জবানবন্দি- আজমেরীর নেতৃত্বেই হত্যা
আপডেট: ১৫ নভেম্বর, ২০১৩
আজমেরী ওসমান ও সুলতান শওকতনারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার নেতৃত্বে ছিলেন আজমেরী ওসমান। তিনি জাতীয় পার্টির সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে এবং আওয়ামী লীগের নেতা শামীম ওসমানের ভাতিজা।
গত মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলার অন্যতম আসামি সুলতান শওকত ওরফে ভ্রমর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে সুলতান শওকত বলেন, গত ৬ মার্চ রাতে শহরের কলেজ রোডে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে খুন করা হয়। খুনের পর লাশ বস্তাবন্দী করে আজমেরী ওসমানের গাড়িতে তুলে চারারগোপে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
ত্বকী নারায়ণগঞ্জের নাগরিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতা রফিউর রাব্বির ছেলে। গত ৬ মার্চ সে নিখোঁজ হয়েছিল।
সূত্রমতে, সুলতান শওকত বলেন, তিনি ৬ মার্চ বিকেলে শহরের কলেজ রোডে আজমেরী ওসমানের অফিস উইনার ফ্যাশনে যান। অফিসের অভ্যর্থনাকক্ষে তখন কাজল, শিপন ও জেকিসহ আরও কয়েকজন বল খেলছিলেন। তিনি অনেকক্ষণ ধরে খেলা দেখেন। একপর্যায়ে তিনি অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরে দেখতে পান, রাজীব ও কালাম টয়োটা এক্স ফিল্ডার গাড়ি নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজীব, কালাম, মামুন ও লিটন ত্বকীকে নিয়ে আজমেরীর অফিসে আসেন। রাজীব ও কালাম ত্বকীকে আজমেরীর কক্ষে নিয়ে যান। এর দেড় ঘণ্টা পর কাজল তাঁকে (সুলতান শওকত) বলেন, ‘চলো তো দেখি, কাকে নিয়ে এসেছে।’ এরপর তাঁরা দুজন আজমেরীর পাশের কক্ষে যান। এ সময় আজমেরীর কক্ষ থেকে চিৎকার, চেঁচামেচি, গালিগালাজের শব্দ আসছিল। রাত ১২টার দিকে আজমেরী তাঁর কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন। দরজা খোলার পর তিনি (শওকত) দেখতে পান, আজমেরীর কক্ষের ভেতর কালাম, লিটন, রাজীব ও মামুন দাঁড়িয়ে আছেন। আর ত্বকীর লাশ চোঁখবাধা অবস্থায় পড়ে আছে মেঝেতে। দরজা খুলে বের হয়ে এসে আজমেরী ওসমান কাজলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সব শেষ। তোরা যেখানে পারিস লাশটা ফেলে আয়।’
সুলতান শওকত আরও বলেন, লিটন, রাজীব ও কালাম ত্বকীর লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় আজমেরী তাঁকেও (শওকত) তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন। তিনি এতে রাজি না হলে আজমেরী শোকেস লক্ষ্য করে পিস্তল থেকে দুটি গুলি করেন। এরপর তিনিসহ রাজীব, কালাম, লিটন ও মামুন মিলে ত্বকীর লাশ আজমেরীর টয়োটা এক্স ফিল্ডার গাড়ির পেছনে তোলেন। চালক জামশেদ গাড়ি চালিয়ে চারারগোপে নিয়ে যান। রাত দেড়টার দিকে চারারগোপে ১৬ তলা দেলোয়ার টাওয়ারের বিপরীতে গাড়িটি থামে। গাড়ি থামার পর চালকের পাশের আসনে বসে তিনি (শওকত) গাড়ি পাহারা দেন। রাজীব, লিটন, মামুন ও কালাম ত্বকীর বস্তাবন্দী লাশ নিয়ে নদীর ঘাটের দিকে যান। ১৫-২০ মিনিট পর তাঁরা লাশটি শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে ফিরে আসেন। এরপর সবাই আবার আজমেরীর অফিসে যান। পরে সেখান থেকে যে যার মতো চলে যান।
গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় রূপগঞ্জ থেকে সুলতান শওকতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার লিটন গত ৩০ জুলাই আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য জানান। ওই জবানবন্দিতে সুলতান শওকতের নাম আসে। এরপর থেকে র্যাব সুলতান শওকতকে খুঁজছিল। লিটন হচ্ছেন আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
লিটনের জবানবন্দির পর ৭ আগস্ট র্যাব-১১-এর সদস্যরা শহরের কলেজ রোডে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত আজমেরী ওসমানের অফিসে অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা জিনস প্যান্ট ও গজারির লাঠি এবং নাইলনের রশি উদ্ধার করেন। দেয়ালে ও শোকেসে অসংখ্য গুলির আলামত পাওয়া যায়।
এ অভিযানের কারণে শামীম ওসমান র্যাবের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। গত ৮ অক্টোবর শহীদ জিয়া হলে অনুগতদের এক সভায় শামীম ওসমান র্যাবের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। এর পরপরই ত্বকী হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা র্যাব-১১-এর কমান্ডিং অফিসার (পরিচালক) লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর আলমকে চট্টগ্রামে র্যাব-৭-এ বদলি করা হয়। এতে থমকে যায় আলোচিত এ মামলার তদন্তকাজ।
সুলতান শওকতের জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হিসেবে আরও যাঁদের নাম এসেছে, তাঁরা সবাই আজমেরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তাঁদের দেখা যেত।
গতকাল অনেক চেষ্টা করেও ওসমান পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ত্বকীর লাশ উদ্ধার করা হয় ৮ মার্চ। ওই দিন রাতেই বাবা রফিউর রাব্বি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। ১৮ মার্চ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি অবগতিপত্র দেন। এতে ছেলে হত্যার জন্য শামীম ওসমান ও তাঁর ছেলে অয়ন ওসমানসহ মোট আটজনকে অভিযুক্ত করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে রফিউর রাব্বি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাসিম ওসমান ও শামীম ওসমানের নির্দেশে আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমান তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ত্বকীকে অপহরণের পর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে খুন করেছে। আসামি ভ্রমরের (সুলতান শওকত) দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তদন্তকারী সংস্থার উচিত অবিলম্বে নাসিম ওসমান, শামীম ওসমান, আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমানসহ তাদের সহযোগী খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা। ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আমরা বলে আসছিলাম, ওসমান পরিবারই ত্বকীকে খুন করেছে। এ ছাড়া ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পরপরই ১৩ মার্চ সাংসদ নাসিম ওসমান তাঁর ছেলে আজমেরী ওসমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যেসব কথা বলেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে কারা ত্বকীকে খুন করেছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১১-এর সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল হক বলেন, সুলতান শওকতের জবানবন্দির অনুলিপি হাতে পেলে তা পর্যালোচনা করে অন্যদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সুলতান শওকত কে: সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুলতান শওকত। তাঁর বাবা মৃত সোহরাব মিয়া। বাসা শহরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়কে। তাঁর মা মেহের নিগার ওরফে মিতা জেলা জাতীয় মহিলা পার্টির সাবেক সভানেত্রী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আজমেরী ওসমানের গাড়ির বহরে সুলতান শওকতকে দেখা যায়।
আজমেরী ওসমান ও সুলতান শওকতনারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার নেতৃত্বে ছিলেন আজমেরী ওসমান। তিনি জাতীয় পার্টির সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে এবং আওয়ামী লীগের নেতা শামীম ওসমানের ভাতিজা।
গত মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলার অন্যতম আসামি সুলতান শওকত ওরফে ভ্রমর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে সুলতান শওকত বলেন, গত ৬ মার্চ রাতে শহরের কলেজ রোডে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে খুন করা হয়। খুনের পর লাশ বস্তাবন্দী করে আজমেরী ওসমানের গাড়িতে তুলে চারারগোপে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
ত্বকী নারায়ণগঞ্জের নাগরিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতা রফিউর রাব্বির ছেলে। গত ৬ মার্চ সে নিখোঁজ হয়েছিল।
সূত্রমতে, সুলতান শওকত বলেন, তিনি ৬ মার্চ বিকেলে শহরের কলেজ রোডে আজমেরী ওসমানের অফিস উইনার ফ্যাশনে যান। অফিসের অভ্যর্থনাকক্ষে তখন কাজল, শিপন ও জেকিসহ আরও কয়েকজন বল খেলছিলেন। তিনি অনেকক্ষণ ধরে খেলা দেখেন। একপর্যায়ে তিনি অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরে দেখতে পান, রাজীব ও কালাম টয়োটা এক্স ফিল্ডার গাড়ি নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজীব, কালাম, মামুন ও লিটন ত্বকীকে নিয়ে আজমেরীর অফিসে আসেন। রাজীব ও কালাম ত্বকীকে আজমেরীর কক্ষে নিয়ে যান। এর দেড় ঘণ্টা পর কাজল তাঁকে (সুলতান শওকত) বলেন, ‘চলো তো দেখি, কাকে নিয়ে এসেছে।’ এরপর তাঁরা দুজন আজমেরীর পাশের কক্ষে যান। এ সময় আজমেরীর কক্ষ থেকে চিৎকার, চেঁচামেচি, গালিগালাজের শব্দ আসছিল। রাত ১২টার দিকে আজমেরী তাঁর কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন। দরজা খোলার পর তিনি (শওকত) দেখতে পান, আজমেরীর কক্ষের ভেতর কালাম, লিটন, রাজীব ও মামুন দাঁড়িয়ে আছেন। আর ত্বকীর লাশ চোঁখবাধা অবস্থায় পড়ে আছে মেঝেতে। দরজা খুলে বের হয়ে এসে আজমেরী ওসমান কাজলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সব শেষ। তোরা যেখানে পারিস লাশটা ফেলে আয়।’
সুলতান শওকত আরও বলেন, লিটন, রাজীব ও কালাম ত্বকীর লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় আজমেরী তাঁকেও (শওকত) তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন। তিনি এতে রাজি না হলে আজমেরী শোকেস লক্ষ্য করে পিস্তল থেকে দুটি গুলি করেন। এরপর তিনিসহ রাজীব, কালাম, লিটন ও মামুন মিলে ত্বকীর লাশ আজমেরীর টয়োটা এক্স ফিল্ডার গাড়ির পেছনে তোলেন। চালক জামশেদ গাড়ি চালিয়ে চারারগোপে নিয়ে যান। রাত দেড়টার দিকে চারারগোপে ১৬ তলা দেলোয়ার টাওয়ারের বিপরীতে গাড়িটি থামে। গাড়ি থামার পর চালকের পাশের আসনে বসে তিনি (শওকত) গাড়ি পাহারা দেন। রাজীব, লিটন, মামুন ও কালাম ত্বকীর বস্তাবন্দী লাশ নিয়ে নদীর ঘাটের দিকে যান। ১৫-২০ মিনিট পর তাঁরা লাশটি শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে ফিরে আসেন। এরপর সবাই আবার আজমেরীর অফিসে যান। পরে সেখান থেকে যে যার মতো চলে যান।
গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় রূপগঞ্জ থেকে সুলতান শওকতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার লিটন গত ৩০ জুলাই আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য জানান। ওই জবানবন্দিতে সুলতান শওকতের নাম আসে। এরপর থেকে র্যাব সুলতান শওকতকে খুঁজছিল। লিটন হচ্ছেন আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
লিটনের জবানবন্দির পর ৭ আগস্ট র্যাব-১১-এর সদস্যরা শহরের কলেজ রোডে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত আজমেরী ওসমানের অফিসে অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা জিনস প্যান্ট ও গজারির লাঠি এবং নাইলনের রশি উদ্ধার করেন। দেয়ালে ও শোকেসে অসংখ্য গুলির আলামত পাওয়া যায়।
এ অভিযানের কারণে শামীম ওসমান র্যাবের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। গত ৮ অক্টোবর শহীদ জিয়া হলে অনুগতদের এক সভায় শামীম ওসমান র্যাবের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। এর পরপরই ত্বকী হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা র্যাব-১১-এর কমান্ডিং অফিসার (পরিচালক) লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর আলমকে চট্টগ্রামে র্যাব-৭-এ বদলি করা হয়। এতে থমকে যায় আলোচিত এ মামলার তদন্তকাজ।
সুলতান শওকতের জবানবন্দিতে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হিসেবে আরও যাঁদের নাম এসেছে, তাঁরা সবাই আজমেরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তাঁদের দেখা যেত।
গতকাল অনেক চেষ্টা করেও ওসমান পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ত্বকীর লাশ উদ্ধার করা হয় ৮ মার্চ। ওই দিন রাতেই বাবা রফিউর রাব্বি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। ১৮ মার্চ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি অবগতিপত্র দেন। এতে ছেলে হত্যার জন্য শামীম ওসমান ও তাঁর ছেলে অয়ন ওসমানসহ মোট আটজনকে অভিযুক্ত করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে রফিউর রাব্বি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাসিম ওসমান ও শামীম ওসমানের নির্দেশে আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমান তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ত্বকীকে অপহরণের পর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে খুন করেছে। আসামি ভ্রমরের (সুলতান শওকত) দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তদন্তকারী সংস্থার উচিত অবিলম্বে নাসিম ওসমান, শামীম ওসমান, আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমানসহ তাদের সহযোগী খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা। ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আমরা বলে আসছিলাম, ওসমান পরিবারই ত্বকীকে খুন করেছে। এ ছাড়া ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পরপরই ১৩ মার্চ সাংসদ নাসিম ওসমান তাঁর ছেলে আজমেরী ওসমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যেসব কথা বলেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে কারা ত্বকীকে খুন করেছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১১-এর সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল হক বলেন, সুলতান শওকতের জবানবন্দির অনুলিপি হাতে পেলে তা পর্যালোচনা করে অন্যদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সুলতান শওকত কে: সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুলতান শওকত। তাঁর বাবা মৃত সোহরাব মিয়া। বাসা শহরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়কে। তাঁর মা মেহের নিগার ওরফে মিতা জেলা জাতীয় মহিলা পার্টির সাবেক সভানেত্রী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আজমেরী ওসমানের গাড়ির বহরে সুলতান শওকতকে দেখা যায়।
No comments