ভোটে নামছে সেনাবাহিনী
আসন্ন
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন
কমিশন (ইসি)। ২৬শে এপ্রিল থেকে ভোটগ্রহণের পরদিন ২৯শে এপ্রিল পর্যন্ত
রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তিন সিটি করপোরেশন এলাকায় সেনাবাহিনী
মোতায়েন থাকবে। গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ
সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এ
সিদ্ধান্তের কথা জানান। সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে
আমরা সভা করেছি। ওই সভায় আমাদের সব সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচনী
পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। তারা বলেছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রস্তুতি আছে। আমরা যা
চেয়েছি তার চাইতে বেশি প্রস্তুতি তাদের আছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমরা
আগেও ৬টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন করেছি। সেখানে আমাদের সেনাবাহিনীর সহায়তার
প্রয়োজন পড়েনি। এবারেও একই পরিস্থিতি বিদ্যমান। তবুও অতি সম্প্রতি আমরা
খুব আতঙ্কিত সময় পার করেছি। জনগণ দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে
ভোটারদের মনে মানসিক স্বস্তির জন্য আমরা সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আনন্দমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। ভোটের সময় অনেক সংখ্যক সদস্য থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সঙ্গে থাকবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন সে সময়। ভোটের আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পর যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাস মার্কা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাবিথের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। রিটার্নিং অফিসার এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আমরা মনিটরিং করবো। কোনটাই বাদ যাবে না।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সিইসি বলেন, এই সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। আমরা খুব আশাবাদী। সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। আমরা কিন্তু ছাড় দিচ্ছি না। প্রতিদিন জরিমানা করা হচ্ছে। এগুলো যেন বারবার না হয় আমরা চাই।
সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী অত্যন্ত কার্যকরভাবে কাজ করবেন। বিচারিক ক্ষমতা আইন দিয়ে পরিচালিত। আইনে যেভাবে আছে সেভাবেই তারা কাজ করবেন। তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষুণ্ন হয়েছে- বিএনপির এমন দাবির প্রেক্ষিতে সিইসি বলেন, আমরা বলেছি সবাইকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। অভিযোগ যা আছে সুনির্দিষ্ট হতে হবে, ঢালাওভাবে হলে হবে না সবাইকে বদলি করে দেন। আমরা কিন্তু পিছপা হইনি। অতীতে আমরা অনেক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলি করেছি। শেষ মুহূর্তে যাদের বদলি করতে পারিনি তাদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছি।
খালেদা জিয়ার ওপর হামলার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমরা পুলিশের কাছে খবর নিয়েছি। তারা বলেছেন- দুইদিক থেকে মামলা হয়েছে। আমরা বলেছি নিরপেক্ষভাবে এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটা যেন নিষ্পত্তি হয়। এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ২৬শে এপ্রিল থেকে ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত সেনা মোতায়েন থাকবে। ইসি সচিবালয়ে নিজকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য এবং জনমনে যাতে কোন ভীতি না থাকে, ভোটাররা যাতে সুন্দরভাবে নির্বিঘ্নে, নিশ্চিতে ভোট দিতে পারে সে জন্য আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বাহিনী নির্বাচনের আগের দুইদিন ও নির্বাচনের পরের দিন অর্থাৎ ২৬ থেকে ২৯শে এপ্রিল পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবে ইসি।
তিনি বলেন, আমরা সেনাবাহিনীকে রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করব। যতই দরকার হবে, রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন চাইবেন তাতে সাড়া দিয়ে চলে আসবেন তারা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোন নির্বাচনেই সেনাবাহিনীকে ভোট সেন্টারের ভেতরে ডিউটি দেয়া হয় না। এবারও দেয়া হবে না। মূলত তারা রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
সংখ্যার পরিমাণ কি হবে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সংখ্যা কোন সমস্যা নয়। কখন দরকার, কতটুকু দরকার সেভাবেই আমরা নিতে পারব। তাদের সঙ্গে সবসময় ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ম্যাজিস্ট্রেট যখন যা করা দরকার করবেন।
এদিকে ঢাকা দুই সিটি (উত্তর-দক্ষিণ) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা সদস্য চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসি’র নির্বাচন পরিচালনা বিভাগ-২ এর উপ-সচিব মো. সামসুল আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সিটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য ভোটগ্রহণের আগের দুইদিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরের দিনসহ মোট চারদিনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভোটার এবং ভোটগ্রহণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রতিটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলাকায় এক ব্যাটালিয়ন করে সেনা সদস্য আগামী ২৬শে এপ্রিল থেকে ২৯শে এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। তারা মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার ডাকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন।
এছাড়া, সেনাবাহিনীর প্রতিটি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সেনা দেয়ার বিষয়ে কমিশনে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর প্রথা অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে চিঠি দেবে ইসি সচিবালয়। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। এক্ষেত্রে চিঠিতে বলা হয়, সশস্ত্রবাহিনীর কার্যপরিধির বিষয়ে চিঠিতে জানানো হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩০ ও ১৩১ ধারা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ‘ইন্সট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর সপ্তম ও দশম অনুচ্ছেদের ক্ষমতা ও নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের সময় সশস্ত্রবাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের কাজ হবে নির্বাচনী কাজে ম্যাজিস্ট্রেটের পরিচালনায় বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করা। সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা মহানগর এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নেবেন এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে থানায় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, তিন সিটিতে অন্তত ৫৮টি মেট্রোপলিটন থানা রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা উত্তরে ২১, দক্ষিণে ২১ ও চট্টগ্রামে ১৬ মেট্রোপলিটন থানা রয়েছে। প্রতি চার মেট্রোপলিটন থানায় এক কোম্পানি করে সেনা মোতায়েন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অন্তত ১৪ কোম্পানি সেনা সদস্য লাগবে। প্রতি কোম্পানিতে ৯০ থেকে একশ’ ১০ জন করে সেনা সদস্য থাকে বলে জানান এক কর্মকর্তা। এছাড়া, ভোটকেন্দ্র, রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মিলিয়ে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্য লাগবে প্রায় ৬৫ হাজারের মতো। এক্ষেত্রে কমিশনের চাহিদার দ্বিগুণ র্যাব ও বিজিবি রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে ৩০ প্লাটুন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে ৩৫ প্লাটুন করে বিজিবি ও ১৩৪টি র্যাবের টিম থাকবে। পুলিশ-আনসার-ভিডিপি নিয়ে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। কোস্টগার্ডও থাকবে চট্টগ্রামে ৩ প্লাটুন ও ঢাকা উত্তর-দক্ষিণে ২ প্লাটুন করে।
তিনি আরও বলেন, আনন্দমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। ভোটের সময় অনেক সংখ্যক সদস্য থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সঙ্গে থাকবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন সে সময়। ভোটের আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পর যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাস মার্কা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাবিথের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। রিটার্নিং অফিসার এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আমরা মনিটরিং করবো। কোনটাই বাদ যাবে না।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সিইসি বলেন, এই সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। আমরা খুব আশাবাদী। সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। আমরা কিন্তু ছাড় দিচ্ছি না। প্রতিদিন জরিমানা করা হচ্ছে। এগুলো যেন বারবার না হয় আমরা চাই।
সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী অত্যন্ত কার্যকরভাবে কাজ করবেন। বিচারিক ক্ষমতা আইন দিয়ে পরিচালিত। আইনে যেভাবে আছে সেভাবেই তারা কাজ করবেন। তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষুণ্ন হয়েছে- বিএনপির এমন দাবির প্রেক্ষিতে সিইসি বলেন, আমরা বলেছি সবাইকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। অভিযোগ যা আছে সুনির্দিষ্ট হতে হবে, ঢালাওভাবে হলে হবে না সবাইকে বদলি করে দেন। আমরা কিন্তু পিছপা হইনি। অতীতে আমরা অনেক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলি করেছি। শেষ মুহূর্তে যাদের বদলি করতে পারিনি তাদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছি।
খালেদা জিয়ার ওপর হামলার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমরা পুলিশের কাছে খবর নিয়েছি। তারা বলেছেন- দুইদিক থেকে মামলা হয়েছে। আমরা বলেছি নিরপেক্ষভাবে এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটা যেন নিষ্পত্তি হয়। এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ২৬শে এপ্রিল থেকে ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত সেনা মোতায়েন থাকবে। ইসি সচিবালয়ে নিজকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য এবং জনমনে যাতে কোন ভীতি না থাকে, ভোটাররা যাতে সুন্দরভাবে নির্বিঘ্নে, নিশ্চিতে ভোট দিতে পারে সে জন্য আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বাহিনী নির্বাচনের আগের দুইদিন ও নির্বাচনের পরের দিন অর্থাৎ ২৬ থেকে ২৯শে এপ্রিল পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবে ইসি।
তিনি বলেন, আমরা সেনাবাহিনীকে রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করব। যতই দরকার হবে, রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন চাইবেন তাতে সাড়া দিয়ে চলে আসবেন তারা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোন নির্বাচনেই সেনাবাহিনীকে ভোট সেন্টারের ভেতরে ডিউটি দেয়া হয় না। এবারও দেয়া হবে না। মূলত তারা রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
সংখ্যার পরিমাণ কি হবে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সংখ্যা কোন সমস্যা নয়। কখন দরকার, কতটুকু দরকার সেভাবেই আমরা নিতে পারব। তাদের সঙ্গে সবসময় ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ম্যাজিস্ট্রেট যখন যা করা দরকার করবেন।
এদিকে ঢাকা দুই সিটি (উত্তর-দক্ষিণ) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা সদস্য চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসি’র নির্বাচন পরিচালনা বিভাগ-২ এর উপ-সচিব মো. সামসুল আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সিটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য ভোটগ্রহণের আগের দুইদিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরের দিনসহ মোট চারদিনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভোটার এবং ভোটগ্রহণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রতিটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলাকায় এক ব্যাটালিয়ন করে সেনা সদস্য আগামী ২৬শে এপ্রিল থেকে ২৯শে এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। তারা মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার ডাকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন।
এছাড়া, সেনাবাহিনীর প্রতিটি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সেনা দেয়ার বিষয়ে কমিশনে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর প্রথা অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে চিঠি দেবে ইসি সচিবালয়। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। এক্ষেত্রে চিঠিতে বলা হয়, সশস্ত্রবাহিনীর কার্যপরিধির বিষয়ে চিঠিতে জানানো হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩০ ও ১৩১ ধারা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ‘ইন্সট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর সপ্তম ও দশম অনুচ্ছেদের ক্ষমতা ও নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের সময় সশস্ত্রবাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের কাজ হবে নির্বাচনী কাজে ম্যাজিস্ট্রেটের পরিচালনায় বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করা। সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা মহানগর এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নেবেন এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে থানায় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, তিন সিটিতে অন্তত ৫৮টি মেট্রোপলিটন থানা রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা উত্তরে ২১, দক্ষিণে ২১ ও চট্টগ্রামে ১৬ মেট্রোপলিটন থানা রয়েছে। প্রতি চার মেট্রোপলিটন থানায় এক কোম্পানি করে সেনা মোতায়েন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অন্তত ১৪ কোম্পানি সেনা সদস্য লাগবে। প্রতি কোম্পানিতে ৯০ থেকে একশ’ ১০ জন করে সেনা সদস্য থাকে বলে জানান এক কর্মকর্তা। এছাড়া, ভোটকেন্দ্র, রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মিলিয়ে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্য লাগবে প্রায় ৬৫ হাজারের মতো। এক্ষেত্রে কমিশনের চাহিদার দ্বিগুণ র্যাব ও বিজিবি রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে ৩০ প্লাটুন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে ৩৫ প্লাটুন করে বিজিবি ও ১৩৪টি র্যাবের টিম থাকবে। পুলিশ-আনসার-ভিডিপি নিয়ে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। কোস্টগার্ডও থাকবে চট্টগ্রামে ৩ প্লাটুন ও ঢাকা উত্তর-দক্ষিণে ২ প্লাটুন করে।
No comments