১৮ এবং ১৬! by সাবিনা পারভীন
গত জানুয়ারি মাসে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৪’-এর খসড়া মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খসড়ায় মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর ঠিক রেখে ‘যুক্তিসংগত কারণে’ মা-বাবা অথবা আদালতের সম্মতিতে ১৬ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেটি এক হঠকারী ও স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে বা মেয়েকে ‘শিশু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। নতুন আইন কার্যকর করতে গেলে তা হবে জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তা ছাড়া, বর্তমান আইন (মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮) বলবৎ থাকা সত্ত্বেও বাল্যবিবাহের মতো অভিশাপ ঠেকানো যাচ্ছে না; আর সেখানে আইন করে বাল্যবিবাহকে স্বীকৃতি দিলে এর ফল হবে আরও ভয়াবহ।
চিকিৎসকদের মতে, ১৮ বছর বয়সের আগে একটি মেয়ের শারীরিক বিকাশ হয় না। এই শারীরিক ঘাটতি নিয়ে কোনো মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হলে শুধু তার স্বাস্থ্যের ওপরই চাপ পড়ে না, বরং গর্ভের শিশুটিও অপুষ্ট কিংবা বিকলাঙ্গ হতে পারে। এই অপুষ্ট শিশু ও অসুস্থ মা জাতির জন্য বোঝা নয় কি?
এই আইন যদি কার্যকর হয়, তবে তা মূলত বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য, অশিক্ষা-কুশিক্ষাসহ নানা সামাজিক সমস্যার জন্ম দেবে। একবিংশ শতাব্দীর দোরগোড়ায় এসে সারা বিশ্বের নারীরা যখন সব ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের নীতিনির্ধারকেরা নারীকে টেনে ধরে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বনই পারে নারীর সঠিক উন্নয়ন ঘটাতে। এ জন্য বৃহত্তর স্বার্থে নারীবান্ধব আইন চাই। বিয়ের বয়স ১৮ কিংবা ১৬ নয়; বরং তা ২০ করা হোক। তা না হলে নারী উন্নয়নে আমাদের সব অর্জন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে এবং সত্যিকারের নারীমুক্তি সম্ভব হবে না।
লেখক: প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে বা মেয়েকে ‘শিশু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। নতুন আইন কার্যকর করতে গেলে তা হবে জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তা ছাড়া, বর্তমান আইন (মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮) বলবৎ থাকা সত্ত্বেও বাল্যবিবাহের মতো অভিশাপ ঠেকানো যাচ্ছে না; আর সেখানে আইন করে বাল্যবিবাহকে স্বীকৃতি দিলে এর ফল হবে আরও ভয়াবহ।
চিকিৎসকদের মতে, ১৮ বছর বয়সের আগে একটি মেয়ের শারীরিক বিকাশ হয় না। এই শারীরিক ঘাটতি নিয়ে কোনো মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হলে শুধু তার স্বাস্থ্যের ওপরই চাপ পড়ে না, বরং গর্ভের শিশুটিও অপুষ্ট কিংবা বিকলাঙ্গ হতে পারে। এই অপুষ্ট শিশু ও অসুস্থ মা জাতির জন্য বোঝা নয় কি?
এই আইন যদি কার্যকর হয়, তবে তা মূলত বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য, অশিক্ষা-কুশিক্ষাসহ নানা সামাজিক সমস্যার জন্ম দেবে। একবিংশ শতাব্দীর দোরগোড়ায় এসে সারা বিশ্বের নারীরা যখন সব ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের নীতিনির্ধারকেরা নারীকে টেনে ধরে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বনই পারে নারীর সঠিক উন্নয়ন ঘটাতে। এ জন্য বৃহত্তর স্বার্থে নারীবান্ধব আইন চাই। বিয়ের বয়স ১৮ কিংবা ১৬ নয়; বরং তা ২০ করা হোক। তা না হলে নারী উন্নয়নে আমাদের সব অর্জন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে এবং সত্যিকারের নারীমুক্তি সম্ভব হবে না।
লেখক: প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments