মধ্যপ্রাচ্যে বিপর্যস্ত ওবামার মহাপরিকল্পনা
পাঁচ
বছর আগে বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়ন এবং
মুসলিম বিশ্বে মার্কিন ভাবমূর্তি বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছিলেন প্রেসিডেন্ট
বারাক ওবামা। কিন্তু এখন ওবামা প্রশাসনের আঞ্চলিক কৌশল বিপর্যয়ের মধ্যে
রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান থেকে তিউনিসিয়া_ সবখানেই ওবামা
দ্রুত পরিবর্তনশীল ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। ইরান ও সৌদি
আরবের মধ্যে প্রকাশ্য ক্ষমতার তিক্ত দ্বন্দ্বও তাকে বিব্রত করছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের অবস্থান ও প্রভাব ধরে রাখতে প্রথম মেয়াদে
প্রেসিডেন্ট ওবামা যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছিলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে
তা নতুন করে সাজাতে হয়েছে। সিরিয়া, ইরাক, লেবানন, লিবিয়া, মিসর,
আফগানিস্তান_ সবখানেই নানামুখী জটিলতা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে ওবামাকে।
ওবামা প্রশাসন সিরিয়ার সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে। পশ্চিমা সমর্থিত
বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত এবং ইসলামপন্থি
উগ্রবাদীদের দমনে লড়াই করে যাচ্ছে। অস্থিতিশীলতা রয়েছে লেবানন ও ইরাকেও।
তিন বছর আগে মার্কিন বাহিনী ইরাক ত্যাগের পর সেখানে আল কায়দা মাথাচাড়া দিয়ে
উঠছে। মিসরে নিজেদের কী ভূমিকা হবে, তা নিয়েও জটিলতায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ
মুরসিকে সেনাবাহিনী উৎখাতের পর এ জটিলতায় পড়ে ওবামা প্রশাসন। একদিকে
গণতন্ত্র, অন্যদিকে মিসরীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সখ্যই এর মূল
কারণ। আফগানিস্তানেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই যুক্তরাষ্ট্র। আফগান
প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের।
চলতি বছর ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করার পরও কিছু মার্কিন সেনা
দেশটিতে রাখতে একটি চুক্তি হওয়ার কথা। কিন্তু হামিদ কারজাই কিছু শর্ত জুড়ে
দেওয়ায় এ নিয়ে বিপাকে রয়েছে ওবামা প্রশাসন। এ অবস্থায় ন্যাটো সেনারা বিদায়
নিলে দেশটিতে ফের তালেবানের উত্থানের জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে
চূড়ান্ত বিচারে এটি আফগানিস্তানে মার্কিন পরাজয় হিসেবেই বিবেচিত হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। খুব একটা
সাফল্যের মুখ দেখেননি তিনি। এপি।
No comments