দগ্ধ রুবেলের বেঁচে থাকার লড়াই by ইন্দ্রজিৎ সরকার
অবরোধের আগুন |
পেট্রোল বোমায় দগ্ধ কুমিল্লার সিএনজি
অটোরিকশার চালক রুবেল মিয়া এখনও সুস্থ নন। চিকিৎসকরা বলছেন, তার সেরে উঠতে
অন্তত এক মাস সময় লাগবে। কিন্তু চিকিৎসা শেষ না করেই বাড়ি ফিরতে চান রুবেল।
স্ত্রী নাসিমা বেগমও তাকে নিয়ে যেতে চাইছেন। কারণ, সংসারের একমাত্র
উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দেড় মাস শয্যাশায়ী থাকায় চরম অর্থকষ্টে পড়েছে
পরিবারটি। স্বামীকে সুস্থ করে তুলবেন, নাকি তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে
দেবেন_ বুঝতে পারছেন না নাসিমা। তাই তিনি স্বামীকে বাসায় নেওয়ার পর চাকরি
খোঁজার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি বলছেন, এ ছাড়া তার সামনে কোনো পথ খোলা নেই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দোতলায় হাই ডিপেন্ডেন্সি
ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন রুবেল মিয়া। গত ২৫ নভেম্বর তিনি কুমিল্লার
কচুয়া চৌমুহনী এলাকায় পেট্রোল বোমা হামলার শিকার হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার
দিকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে ফেরার সময় তার অটোরিকশায় বোমা ছোড়া হয়। গুরুতর
দগ্ধ রুবেলকে ওই রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়।
রুবেল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম সমকালকে জানান, তিনি কুমিল্লা শহরে স্বামী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। দুই মাস ধরে বাসার ভাড়া না দেওয়ায় মালিক বারবার তাগাদা দিচ্ছেন। ঘটনার পর থেকেই নাসিমা স্বামীর সঙ্গে হাসপাতালে রয়েছেন। তিন সন্তান রয়েছে প্রতিবেশীর বাসায়। তাদের খাওয়ার খরচও দিতে পারছেন না। সামান্য যেটুকু সঞ্চয় ছিল, তা আগেই শেষ হয়েছে। প্রতিবেশীর দয়ায় তাদের খাবার জুটছে। বড় মেয়ে স্বপ্না অষ্টম শ্রেণী, ছেলে ইমন ষষ্ঠ শ্রেণী ও শাওন দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের ভর্তি করানো যায়নি অর্থাভাবে।
নাসিমা বেগম জানান, রুবেল কবে সুস্থ হবেন, কবে কাজ করতে পারবেন তার ঠিক নেই। এ জন্য তিনি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ খুঁজবেন। এর আগে একসময় তিনি চট্টগ্রামে গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেছেন। আবারও সেই চেষ্টা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই তার। রুবেলকে অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'দ্যাশের বাড়িতে লইয়া যতটুকু পারুম, চিকিৎসা করামু। কিন্তু এইহানে থাকলে তো আমি কোনো কাম-কাজ করতে পারতেছি না। সংসার চলব কীভাবে? কপালে যা থাহে, তাই হইব।'
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রুবেল সমকালকে বলেন, 'আমি আর বাঁচুম না। বাড়ি যামু। কত দিন পোলাপাইনগুলারে দেহি না।'
নাসিমা জানান, আশপাশের বিছানায় দগ্ধ অনেককেই মারা যেতে দেখে রুবেলের মনে মৃত্যুভয় ঢুকে গেছে। এ জন্য তিনি 'মৃত্যুর আগে' বাড়ি ফিরতে চান, সন্তানদের দেখতে চান। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল সমকালকে বলেন, রুবেল কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শনিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করেছেন। পাশাপাশি তার দগ্ধ স্থানের চিকিৎসাও চলছে। তবে সেগুলো সারতে কিছুটা সময় লাগবে। দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। আমরা তাকে মানসিকভাবে সারিয়ে তোলারও চেষ্টা করছি। ডা. পার্থ শঙ্কর জানান, রুবেলের অর্থকষ্টের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলী লেনিনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, রুবেলকে অর্থ-সহায়তা দেওয়া হবে। তার দুই মাসের ঘরভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। অবরোধ-হরতালের আগুনে দগ্ধ ৩০ জন এখন বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে তিনজন রয়েছেন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল ইমাম উদ্দিন, পিকআপ ভ্যানচালক শরিফুল ইসলাম ও দিনমজুর বাচ্চু প্রধান। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রুবেল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম সমকালকে জানান, তিনি কুমিল্লা শহরে স্বামী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। দুই মাস ধরে বাসার ভাড়া না দেওয়ায় মালিক বারবার তাগাদা দিচ্ছেন। ঘটনার পর থেকেই নাসিমা স্বামীর সঙ্গে হাসপাতালে রয়েছেন। তিন সন্তান রয়েছে প্রতিবেশীর বাসায়। তাদের খাওয়ার খরচও দিতে পারছেন না। সামান্য যেটুকু সঞ্চয় ছিল, তা আগেই শেষ হয়েছে। প্রতিবেশীর দয়ায় তাদের খাবার জুটছে। বড় মেয়ে স্বপ্না অষ্টম শ্রেণী, ছেলে ইমন ষষ্ঠ শ্রেণী ও শাওন দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের ভর্তি করানো যায়নি অর্থাভাবে।
নাসিমা বেগম জানান, রুবেল কবে সুস্থ হবেন, কবে কাজ করতে পারবেন তার ঠিক নেই। এ জন্য তিনি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ খুঁজবেন। এর আগে একসময় তিনি চট্টগ্রামে গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেছেন। আবারও সেই চেষ্টা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই তার। রুবেলকে অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'দ্যাশের বাড়িতে লইয়া যতটুকু পারুম, চিকিৎসা করামু। কিন্তু এইহানে থাকলে তো আমি কোনো কাম-কাজ করতে পারতেছি না। সংসার চলব কীভাবে? কপালে যা থাহে, তাই হইব।'
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রুবেল সমকালকে বলেন, 'আমি আর বাঁচুম না। বাড়ি যামু। কত দিন পোলাপাইনগুলারে দেহি না।'
নাসিমা জানান, আশপাশের বিছানায় দগ্ধ অনেককেই মারা যেতে দেখে রুবেলের মনে মৃত্যুভয় ঢুকে গেছে। এ জন্য তিনি 'মৃত্যুর আগে' বাড়ি ফিরতে চান, সন্তানদের দেখতে চান। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল সমকালকে বলেন, রুবেল কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শনিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করেছেন। পাশাপাশি তার দগ্ধ স্থানের চিকিৎসাও চলছে। তবে সেগুলো সারতে কিছুটা সময় লাগবে। দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। আমরা তাকে মানসিকভাবে সারিয়ে তোলারও চেষ্টা করছি। ডা. পার্থ শঙ্কর জানান, রুবেলের অর্থকষ্টের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলী লেনিনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, রুবেলকে অর্থ-সহায়তা দেওয়া হবে। তার দুই মাসের ঘরভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। অবরোধ-হরতালের আগুনে দগ্ধ ৩০ জন এখন বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে তিনজন রয়েছেন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল ইমাম উদ্দিন, পিকআপ ভ্যানচালক শরিফুল ইসলাম ও দিনমজুর বাচ্চু প্রধান। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
No comments