বিশেষ সাক্ষাৎকার- দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে ভারত আন্তরিক by পঙ্কজ সরন
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষে ১৯৮২ সালে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন পঙ্কজ সরন। এ বছরের মার্চে তিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সালে ঢাকায় আসার আগ পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দপ্তরে যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকায় দায়িত্ব পালন করতে এলেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) হিসেবে কাজ করেছেন। পঙ্কজ সরন তাঁর তিন দশকের পেশাগত জীবনে মস্কো, ওয়াশিংটন, কায়রো ও জেনেভায় ভারতীয় মিশনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম ও রাহীদ এজাজ
প্রথম আলো ২০ বছর পর বাংলাদেশে এসে কী তফাত দেখছেন?
পঙ্কজ সরন চোখে পড়ার মতো অনেক পরিবর্তন বাংলাদেশে হয়েছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী এখানকার রাজনৈতিক দলগুলো অবাধে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিপক্বতা এসেছে। এ ছাড়া বৈচিত্র্যময় গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী নিজেদের গণতান্ত্রিক চর্চা সমুন্নত রাখতে সজাগ রয়েছে। এ দেশের তরুণেরা, যাঁরা দেশের জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে প্রত্যয়ী। দ্বিতীয় যে পরিবর্তন আমার চোখে পড়েছে, তা হলো, ব্যাপকভাবে আর্থসামাজিক অগ্রগতি। অর্থনীতি, দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা দূরীকরণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অগ্রগতি—এসব কিন্তু খুবই দৃশ্যমান। ধানসহ বিভিন্ন কৃষি উৎপাদন বেড়েছে।
তৃতীয় পরিবর্তনটা হলো বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সমন্বিত প্রয়াস। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্ব পাচ্ছে।
প্রথম আলো দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে এলেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
পঙ্কজ সরন আমি আশাবাদী। কারণ, সম্পর্কের মূল ভিত্তি ইতিমধ্যেই আমাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয়, যা ২০-৩০ বছর ধরে অমীমাংসিত ছিল, সেগুলোর সুরাহা হয়েছে। তা ছাড়া, গত কয়েক বছরে অমীমাংসিত কিছু সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আমরা এমন একটা অবস্থানে এসেছি, যার ফলে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে পারি। দ্বিতীয়ত, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। তরুণ সমাজ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, শিক্ষক শ্রেণী কিংবা রাজনৈতিক নেতৃত্ব—এদের সবাই ভারতের সঙ্গে একটি সমন্বিত ও অর্থবহ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। ‘সমস্যার সমাধান খুঁজে নেওয়ার পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার’ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার যে প্রক্রিয়া চলছে, তা বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। আমাদের সমস্যাগুলো কী, তা জানা আছে। গুণগত পরিবর্তনটা হচ্ছে, সমস্যা সমাধানে আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আন্তরিক। এসবই আশাবাদের কারণ।
প্রথম আলো ২০১০ সালে শেখ হাসিনার দিল্লি সফর, ২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়াকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
পঙ্কজ সরন ভালোই অগ্রগতি হয়েছে। ঐতিহাসিক এই দুটো সফরের ফলাফল বেশ উচ্চাভিলাষী। শীর্ষ দুই নেতাই সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার কথা বলেছেন। সফর দুটিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে উচ্চাভিলাষের প্রতিফলন ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে গত দুই বছরে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি মন্দ নয়। বাণিজ্য উদারীকরণ, উন্নয়ন সহযোগিতা ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এ ছাড়া গত বছর সই হওয়া উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য একটি নতুন মৌলিক দলিল। এই চুক্তিতে সহযোগিতার সব ক্ষেত্র নিয়ে কথা বলা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের নতুন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও পাশে রাখতে আগ্রহী। উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তিতে এ অঙ্গীকার রয়েছে। এটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তিন বিঘা করিডর সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে কিছু হতাশা রয়েছে।
প্রথম আলো বাংলাদেশের জনগণের একটি অংশ মনে করে বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনে সহযোগিতা দিলেও ভারতের দিক থেকে পরিপূরক সহযোগিতার ক্ষেত্রে তেমন সাড়া নেই। এ ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তি সই না হওয়া এবং ভারতের টিপাইমুখ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা যায়। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
পঙ্কজ সরন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা করেছে, তাতে ভারত সরকার অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এ সহায়তাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করছি। ঢাকার এ ধরনের উদার সহযোগিতার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্ধুত্বের নতুন ক্ষেত্র তৈরির পথ সুগম হয়েছে। এর ফলে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা করেছে, তার বিনিময়ে ভারত তেমন কিছু করেনি—এ ধারণা সঠিক নয়। কয়েক দশক ধরে ভারতের বাজারে পণ্যের প্রবেশাধিকারের অনুরোধ জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। আপনাদের স্বার্থেই এতে আমাদের সায় রয়েছে। কারণ, তৈরি পোশাকে আপনাদের যে সম্ভাবনা, পণ্যের প্রবেশাধিকার আপনাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে। অতীতে বাজারসুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে নানাভাবে সহায়তা করলেও আমাদের দেশে বাংলাদেশের পণ্যের প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা এখনো রয়েছে। তবে জামদানি শাড়ি দিয়ে প্রথম ভারতে বাংলাদেশের পণ্যের প্রবেশাধিকার শুরু হয়। পরবর্তীকালে ইলিশ ও তৈরি পোশাক এ সুবিধা পেয়েছে। গত বছর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার ফলে ভারতের পুরো বাজার উন্মুক্ত। এর সুফল বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প ভোগ করছে। ভারতের বিশাল বাজার এ শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিল্প ও শ্রমিকেরা যাতে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে, সে জন্যই এ সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। আমরা আন্তরিকভাবেই চাই বাংলাদেশ এ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করুক।
১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তিটি দীর্ঘদিন আগে সই হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ছিটমহল ও অপদখলীয় ভূমি বিনিময় এবং অচিহ্নিত সীমানা চিহ্নিত করার বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে সীমান্তের সবগুলো সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গত বছর আমরা একটি প্রটোকল সই করেছি।
এদিকে উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় পানি, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ-সহায়তা প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া, ভারতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সম্পদের অপর্যাপ্ততা থাকার পরও বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা এসবই করছি সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে।
প্রথম আলো শুল্ক ও অশুল্ক বাধা?
পঙ্কজ সরন এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। নন-ট্যারিফ ও প্যারা-ট্যারিফ সমস্যা দূর করতে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। প্রায় সাত-আট বছর পর দুই দেশের বাণিজ্যসচিবেরা গত মার্চে বৈঠক করেন। নন-ট্যারিফ ও প্যারা-ট্যারিফ সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গটি বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা এ সমস্যা দূর করব। তবে বাণিজ্য অবাধ করতে ইতিমধ্যেই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে জামদানির শাড়ি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা, পাটের তৈরি ব্যাগের লেবেল দেওয়া কিংবা সাবান রপ্তানির বিষয়গুলো। এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এসব সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। তবে ভারতের পণ্য রপ্তানির প্রসঙ্গ এলে মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যে সমন্বয় করা উচিত, সে ব্যাপারে আমরা একমত। এ লক্ষ্যেই বিএসটিআইয়ের আধুনিকায়নে আমরা সহায়তা করছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে বিএসটিআই যে সনদ দেবে, আমরা তা গ্রহণ করব। তার পরও আমি বলব, আমাদের নজর দিতে হবে সীমান্ত অবকাঠামো, বিশেষ করে স্থলবন্দরগুলোর ওপর। ৩০টির বেশি স্থলবন্দরের মধ্যে কয়েকটি বেশ ব্যস্ত আর কয়েকটি দিয়ে মোটামুটি পণ্য আসা-যাওয়া করে। বেনাপোল-পেট্রাপোল, আখাউড়া-আগরতলা, তামাবিল-ডাউকি আধুনিকায়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আশা করছি, স্থলবন্দরগুলো সমন্বিত চেকপোস্ট হিসেবে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে ভারতের ও বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে, মানুষের চলাচল সুগম হবে।
প্রথম আলো ভারতের পক্ষ থেকে লোকসভার চলতি অধিবেশনে চুয়াত্তরের সীমান্ত প্রটোকল অনুসমর্থনের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। এমন এক সময়ে ভারতের এ আশ্বাস এসেছে, যখন সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্ত প্রটোকল নিয়ে বাংলাদেশ কতটা আশাবাদী হতে পারে?
পঙ্কজ সরন লোকসভায় প্রটোকল অনুসমর্থনের বিষয়ে ভারতের নেতারা অবগত রয়েছেন। এ লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের বিষয়ে সরকার বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধী দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলসহ অন্যান্য দল সংবিধান সংশোধনী বিলে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছে। তাই আমরা এ বিলে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সমর্থন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হলেই প্রটোকলটি অনুসমর্থন হয়ে যাবে।
প্রথম আলো বাংলাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে ২০১০ সালে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কবে বাস্তবায়িত হবে? এর পাশাপাশি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ পেতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করাটা ভারতের পক্ষে সম্ভব কি?
পঙ্কজ সরন অবশ্যই সম্ভব। আমি আগেই বলেছি, বাংলাদেশের আগ্রহের কথা ভেবেই আমরা উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তিতে পানি, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে সহযোগিতায় রাজি হয়েছি। কাজেই নেপাল ও ভুটান থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পেতে চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে রাজি আছি।
তবে আমাদের চার দেশের মধ্যে এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নেই। আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করতে যাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের সঙ্গে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এ সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে ভারত। তখন ২৫০ নয়, বাংলাদেশকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
প্রথম আলো খালেদা জিয়ার দিল্লি সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
পঙ্কজ সরন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভারত সফরে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে তাঁর দলের দৃষ্টিভঙ্গি ভারতের নেতাদের সঙ্গে বলেছেন। তিনি ও তাঁর দল দুই প্রতিবেশীর মধ্যে যে নিবিড় সম্পর্ক চান, সেটি এ সফরের মধ্য দিয়ে ভারতের নেতাদের কাছে তুলে ধরেছেন।
প্রথম আলো খালেদা জিয়া, এইচ এম এরশাদ, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম—একের পর এক এসব সফরের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না...
পঙ্কজ সরন তেমন কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তাই প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যেই আমরা এখানকার সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার পক্ষপাতী।
তা ছাড়া আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করতে হয়। সেটি হচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই দেশের রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আগ্রহ বাড়ছে। দুই দেশই সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে লাভবান হতে চায়। তাই একে অন্যকে ভালোভাবে বোঝা এবং নিজেদের মতামত তুলে ধরতেই এসব সফর হচ্ছে।
প্রথম আলো ভিসা নিয়ে অনেক সমালোচনা?
পঙ্কজ সরন জনগণের চলাচল অবাধ করতেই আমরা ভিসা-প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনেছি। চালু হয়েছে অনলাইন ভিসা পদ্ধতি। এ ছাড়া ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, পর্যটকদের এখন মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নাগরিকদের সর্বাধিক ভারতীয় ভিসা দেওয়া হয়। এই বিশাল চাপ সামলানো সহজ নয়। তাও আমরা ভিসা-প্রক্রিয়া আরও সহজ করার চেষ্টা করছি।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
পঙ্কজ সরন আপনাদেরও ধন্যবাদ।
No comments