স্বপ্নের ফ্লাইওভার এখন মূর্তিমান আতঙ্ক by ভূঁইয়া নজরুল
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষের কাছে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারটি ছিল স্বপ্নের। গত তিন মাসে তিনটি দুর্ঘটনার পর এখন সেটা তাদের জন্য আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এটা একেবারে বাস্তব হয়ে গেল গতকাল শনিবার রাতের দুর্ঘটনায়।
রাত পৌনে ৮টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কের বহদ্দারহাট পুকুরপাড়ে ফ্লাইওভারের তিনটি গার্ডার ধসে পড়ে।নির্মাণ ত্রুটির কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন স্থানীয় লোক ও প্রকৌশলীরা। তাঁরা বলছেন, গতকাল গার্ডার তিনটি ধসে পড়ার কারণও তাই।
ঘটনাস্থলের শাহ আমানত ডেকোরেটরের মালিক সৈয়দ মাঈনুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কয়েক দিন ধরে ফ্লাইওভারের
গার্ডারগুলো নড়বড়ে অবস্থায় দেখা গেছে। বিষয়টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার ও পারিসা এন্টারপ্রাইজ এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্মকর্তাদের জানানোর পর ফ্লাইওভারের নিচের ভাসমান বাজারটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওপরে গার্ডার মজবুত রাখার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সিডিএর অবহেলার কারণেই আজকের (শনিবার) এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।'
বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্লাইওভারের নিচে পিলার এবং ঠিকাদারের বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে ফ্লাইওভার নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি, এই ফ্লাইওভার বারবার মৃত্যুর কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। এর আগের ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এবার বেশ কয়েকজন প্রাণ হারাল। তাই এই ফ্লাইওভারের প্রয়োজন নেই।
প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত জুনে ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে পড়ার অন্যতম কারণ ছিল নির্মাণ ত্রুটি। প্রায় ৪০ ফুট ওপরে থাকা নির্মাণাধীন গার্ডারগুলো পর্যাপ্ত সাপোর্ট (টানা) না থাকার কারণেই ধসে পড়েছিল। এ জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান 'পারিসা' ও 'মীর আক্তার'-কে সতর্ক করেছিল সিডিএ।
সিডিএ ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এম এন হাবিবুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে গত জুনে ফ্লাইওভার ধসে পড়ার কারণ সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া বলেছিলেন, 'প্রকৌশলগত ত্রুটির কারণেই ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে পড়েছিল।'
No comments