ইংলাকের পদত্যাগ দাবিতে ব্যাংককে বিক্ষোভ-পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৩৭ আটক ১৩৭
থাইল্যান্ডের রাজপথ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এবার প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে রাজার সমর্থক গোষ্ঠী 'পিতাক সিয়াম' বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। গত বছর ক্ষমতা নেওয়ার পর ইংলাকের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম বিক্ষোভ।
গতকাল শনিবার রাজধানী ব্যাংককে বিক্ষোভের সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৭ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর তিনটি এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা আইন জারি করেছে সরকার।রাজধানীতে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে রয়েল প্লাজায় গতকালের বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে পিতাক সিয়ামের (থাইল্যান্ড বাঁচাও) সমর্থকরা। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল বুনলার্ত কেউপ্রাসিত। তাদের অভিযোগ, ইংলাকের প্রশাসন ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িত এবং তারা রাজতন্ত্রকেও অপমানিত করেছে। বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন সরকারকে থাকসিনের হাতের পুতুল বলেও অভিহিত করে।
বিক্ষোভ সমাবেশ প্রথমে শান্তিপূর্ণ ছিল। তারা 'ইংলাক চলে যাও, ইংলাক চলে যাও' বলে স্লোগান দিতে থাকে। দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতে ৩৭ জন আহত হয়। এ সময় পুলিশ ১৩৭ জনকে আটক করে। বিক্ষোভের আয়োজক বুনলার্তের হিসাব অনুযায়ী সমাবেশে ৭০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, বিক্ষোভে ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল।
বুনলার্ত বলেন, 'পিতাক সিয়াম আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন করবে_এ বিষয়ে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি।' ধারণা করা হচ্ছে, বুনলার্তের সঙ্গে থাকসিনবিরোধী 'হলুদ শার্ট' বিক্ষোভকারীদের যোগযোগ থাকতে পারে।
বিক্ষোভের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে ইংলাক ও তাঁর মন্ত্রিসভা। রাজধানীতে অতিরিক্ত ১৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে মন্ত্রিসভা গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ব্যাংককের তিন এলাকায় 'অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইন' নামে নতুন আইন জারি করেছে। এ আইনে নিরাপত্তা বাহিনী চাইলে কোনো এলাকায় রাস্তা বন্ধ, কারফিউ জারি এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে।
সরকার পতনের জন্য বিক্ষোভের ইতিহাস থাইল্যান্ডে নতুন নয়। ২০০৬ সাল সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাকসিন সিনাওয়াত্রার পতনের পর থেকেই সেখানে নিয়মিত বিরতিতে বিক্ষোভ চলছে। সূত্র : বিবিসি, ব্যাংকক পোস্ট।
No comments